somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এর চেয়ে আরো বেশি ভয়াবহ ভূমিকম্পের আশঙ্কা করা হচ্ছে

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশ ও ভারত এবং মিয়ানমারে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। বাংলাদেশে সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে এই ভূকম্পন অনুভূত হয়।
আর এই ভূমিকম্প এর আতঙ্কে ঢাকা রাজশাহী, লালমনিরহাট ও জামালপুর এবং পঞ্চগড়ে সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সব মিলে ৬ জন নিহত হয়েছে।সারাদেশে আহত এর সংখ্যা শতাধিক। অন্যদিকে ভূকম্পন এর কারনে ঢাকার পুরান ঢাকায় একটি বহুতল ভবন হেলে পড়েছে।ঢাকার কিছু স্থানে অনেক ভবন এবং রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে।


ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধসে কমপক্ষে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে শতাধিক।
আবারো ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা থেকে সারাদেশে দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছেন ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মণিপুরে। ভূমিকম্পটি মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের ২৯ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে তামেংলং জেলার ননি গ্রামে আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। আর ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল প্রায় ৩৫২ কিলোমিটার। এ তথ্য জানান ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া । তারা আরও জানিয়েছেন ভূমিকম্পে মণিপুরে ৮জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। ইম্ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে নেপাল এবং ভারতের অস্থিতিশীল প্রভাবে চলতি বছরে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আরও আশঙ্কা রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে যার কেন্দ্রস্থল হতে পারে বাংলাদেশের খুব কাছে। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এ সময়কে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন ভূ তত্ত্ব বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে ভূমিকম্পের ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন ঢাকা শহরে ৭২ হাজার বাড়িই ঝুঁকিপূর্ণ। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে ভূমিকম্প পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে এই হিসেব অনেক আগের আর এখন প্রকৃতপক্ষে এর দ্বিগুণেরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি রয়েছে। তাছাড়া ড্যাবের আওতাভুক্ত ঢাকার অভ্যন্তরের ১৩টি ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তী নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী, সাভার, গাজীপুর এলাকায় অনুমোদনহীন ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন রয়েছে কয়েক হাজার। বিশেষজ্ঞদের মতে মূলত টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষে ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশ এ ধরনের তিনটি প্লেটের মধ্যে অবস্থিত। তাছাড়াও দেশের মধ্যে থাকা চ্যুতি বা ফল্ট লাইনগুলো যে কোনো সময় ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প এর কারনে ।
সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে হঠাৎ করেই কেপে ওঠলো পুরো বাংলাদেশ। বেশিরভাগ মানুষ ছিলেন তখন ঘুমে আছন্ন। কী হচ্ছে কী ঘটছে তা বুঝে ওঠার আগেই দুই দফায় কেপে ওঠে বাড়ি ঘর ও ভবন। সে সময় মানুষ দিগাদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। অনেকে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান রাস্তায়। ভূমিকম্পের পরপরই সারাদেশের মানুষ একযোগে জেগে উঠেন। কোথায় কী ঘটল তা জানার জন্য মানুষ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় পর্দায় চোখ রাখে। আর তখন কী ঘটেছে তা জানতে সময় লেগে যায় অনেক সময়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ ভূমিকম্পের মাত্রা এবং কেন্দ্র সম্পর্কে জানতে পারেন।
ভূমিকম্প এর কারনে বাংলাদেশের মৃতু ব্যক্তিরা হলেন
রাজধানীর কদমতলী থানার পূর্ব জুরাইনে হুড়োহুড়ির মধ্যে আতঙ্কে আতিকুর রহমান আতিক (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী মেহেরচ-ি এলাকায় নিজ বাড়িতে বঙ্গবন্ধু হলের প্রধান বাবুর্চি খলিলুর রহমান (৬৫) মারা যান। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কদুরবাজার এলাকায় আব্দুল কুদ্দুস (৪০), জামালপুরে গাওকুড়া গ্রামের দর্জি সোনা মিয়া (৩৮) ও পঞ্চগড় শহরের তাহমিনা বেগম (৫৫) আতঙ্কে মারা যান। এছাড়া ভূমিকম্পের আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে গিয়ে আহত হয়ে ঢাকা ও সিলেটসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। ঢাকায় নিহত আতিকুর রহমান ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পূর্ব জুরাইনের ৯৫৬ নম্বর বাসার একটি মেসে তিনি ভাড়া থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুরে। বাবার নাম মঈন উদ্দিন। জুরাইনে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন আতিক। আমাদের লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, ভূমিকম্পের সময় ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে আতঙ্কে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার ঘোনাবাড়ী এলাকার আবদুল কুদ্দুস (৪০) নামের এক মুদি ব্যবসায়ী মারা যান। আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রধান বাবুর্চি খলিলুর রহমান (৬৫) ভূমিকম্পে আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।


মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে অন্তত ছয়জন এবং আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে দুইজন নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভূ-তত্ত্ব বিজ্ঞানীরা বলছেন রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৭ থেকে ৬.৮। প্রাথমিকভাবে নেপালের ভূ-তত্ত্ব বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন ভারত মিয়ানমার সীমান্তে মণিপুরের ইম্ফল থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরের তামেনলং ছিল গতকালের ভূমিকম্পের উৎসস্থল। গত বছরের ২৫ এপ্রিল নেপালের কাঠমান্ডু থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে নির্জন পাহাড়ি এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। এর প্রভাব পড়ে ভারত এবং বাংলাদেশে। ভূবিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবী প্লেট এবং সাব প্লেট দিয়ে গঠিত। এ রকম দুটি প্লেটের মাঝখানে যে ফাঁক থাকে তাকে বলা হয় ফল্ট লাইন। প্লেটগুলো গতিশীল। দুটি চলন্ত প্লেটের ফল্ট লাইনে পরস্পর সংঘর্ষ হলে অথবা হঠাৎ ফল্ট লাইনে শূন্য অবস্থার সৃষ্টি হলে ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশ অবস্থান করছে ভারতীয় ইউরেশীয় এবং মিয়ানমারের টেকটনিক প্লেটের মধ্যে । ভূ তত্ত্ব এর বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন ভারতীয় এবং ইউরেশীয় প্লেট দুটি ১৯৩৪ সালের পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে হিমালয়ের পাদদেশে আটকা পড়ে আছে। কিন্তু বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ভূ-তাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে। ২০১৫ সালের অভিজ্ঞতা দেশের জন্য আশঙ্কাজনক বলে মন্তব্য করেছেন ভূ-তত্ত্ব বিজ্ঞানীরা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ২০১৫ সালে কমবেশি ৩০ বারের মতো ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে বছরের শুরুতে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয় ২০ দফা। আর এবারও বছরের প্রথম সপ্তাহেই ভূমিকম্প অনুভূত হলো। এপ্রিল পর্যন্ত কী হয় সেটাই এখন ভূ-তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়। আশঙ্কাজনক বিষয় হচ্ছে গত বছরের প্রথম দিকে দুবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের ভেতর। তবে এগুলোর তীব্রতা ছিল তুলনামূলক অনেক কম। এর মধ্যে বছরের শুরুতে ৯ই জানুয়ারি ৩ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল ভৈরব বাজার। এ ছাড়াও ৮ই এপ্রিল ৪ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল বাগেরহাটের শরণখোলা। বুয়েটের গবেষকদের ভূমিকম্প ঝুঁকির মানচিত্রে দেখা যায় বাংলাদেশের ৪৩ শতাংশ এলাকা ভূমিকম্পের উচ্চমাত্রার ঝুঁকিতে জোন-১, ৪১ শতাংশ এলাকা মধ্যম জোন-২ এবং ১৬ শতাংশ এলাকা নিম্ন ঝুঁকিতে জোন-৩ রয়েছে। জোন-১-এ রয়েছে- পঞ্চগড়, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পূর্ণ অংশ এবং ঠাকুরগাঁও, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের অংশবিশেষ। রাজশাহী, নাটোর, মাগুরা, মেহেরপুর, কুমিল্লা, ফেনী ও ঢাকা রয়েছে জোন-২-এর অধীনে। জোন-৩-এর মধ্যে রয়েছে বরিশাল, পটুয়াখালী এবং সব দ্বীপ ও চর।

আন্তর্জাতিক গবেষণায় বাংলাদেশ সম্পর্কে সতর্কতা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ সম্পর্কে আশঙ্কাজনক তথ্য উপস্থাপন করা রয়েছে। ভূমিকম্প সম্পর্কে বিশ্বের নামিদামি আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত একটি প্রকল্পের ফলাফলের ভিত্তিতে এ ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় ২০০৯ সালে। প্রকল্পটির প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ‘বিনিথ বাংলাদেশ : দ্য নেক্সট গ্রেট আর্থকোয়েক’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ লেখেন বিখ্যাত সিসমোলজিস্ট কেভিন ক্রাজিক। সাথে ১০ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারিও যৌথভাবে প্রকাশ করে নিউ ইয়র্কে অবস্থিত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ ইনস্টিটিউট। তারা দেখিয়েছে, বাংলাদেশের গভীর তলদেশে সক্রিয় হচ্ছে বহু পূর্বে সমাহিত হওয়া ‘ফল্টস’। পৃথিবী অতীতে কীভাবে ঘূর্ণন সম্পন্ন করেছে এবং আকস্মিকভাবে নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ার তথ্যও বিশ্লেষণ করেছেন তারা। আর এইসব বিবেচনায় নিয়েই তাদের এই আশঙ্কা ব্যক্ত করা।

কেভিন ক্রাজিক তার নিবন্ধে বাংলাদেশ সম্পর্কে লিখেছেন ১৬ কোটির বেশি মানুষের এ দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং তা বাড়ছে দ্রুততার সঙ্গে। দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম নদী অববাহিকা এবং তা সমুদ্র উচ্চতার কাছাকাছি। এতে বাংলাদেশ সুনামি হুমকিতে রয়েছে। ভূমিকম্প হলে নদীগুলোর তীর লাফিয়ে লাফিয়ে গতিপথের পরিবর্তন ঘটাবে। বড় বড় ব্রিজ ও বহুতলবিশিষ্ট ভবনগুলো ধসে পড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বহু গুণ বাড়িয়ে দেবে। বিশেষজ্ঞ মতামত বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মুহূর্তে বেশ কিছু সক্রিয় টেকটনিক প্লেট বাউন্ডারি’ ঘেঁষে আছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে আছে সুমাত্রায় ২০০৪ সালের সেই প্রলয়ঙ্করী সুনামির লেজ, যে সুনামি দু’লাখ মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়েছিল। সুনামির ওই লেজ থেকে বাংলাদেশ মাত্র ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, এক কথায় বলা যায়, ঢাকা একটি টাইম বোমার ওপর রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীর কাছে ভূমিকম্প হলে তা সাম্প্রতিককালের অন্যসব বিপর্যয়কে ম্লান করে দেবে। তিনি বলেন, ভারত এবং বার্মা (মিয়ানমার) প্লেটের সংযোগস্থলে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পূর্বাংশ বার্মা প্লেটের মধ্যে, পশ্চিমাংশ ইন্ডিয়া (ভারত) প্লেটের মধ্যে। এমন ভূ-তাত্ত্বিক কাঠামোর মধ্যে ভূমিকম্প হবে এটাই স্বাভাবিক ব্যপার । বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ভূমিকম্প আমাদের দরজায় আঘাত হানতে শুরু করেছে। তিনি বলেন দেশের বাইরে কাছাকাছি এবং দেশের ভেতরে ভূমিকম্পের উৎস থাকায় যে কোনো সময় বাংলাদেশে ভূমিকম্প হতে পারে। আমাদের ঢাকা একটি অপরিকল্পিত ও জনবহুল নগরী। বড় ধরনের ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে ঢাকার অবস্থান ভূমিকম্পের উৎস থেকে ৫০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে হলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হতে পারে। পরিসংখ্যানেও ভয়াবহতার আশঙ্কা ভূমিকম্পের পরিসংখ্যান বলছে ভারতে ভূমিকম্প হলে এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশেও।

এমনকি ভারতে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর বাংলাদেশেও কিছুদিন পর ভূমিকম্প হয়েছে এমন নজিরও আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান মতে, ১৮৬৯ সালের ১০ জানুয়ারি ভারতে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এরপর ১৮৮৫ সালে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ১৮৯৭ সালের ১২ জুন ভারতবর্ষে আঘাত হানে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক’। এটা এখনও পৃথিবীর অন্যতম বড় ভূমিকম্প হিসেবে পরিচিত। এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভারতের শিলং শহর। এর প্রভাব বাংলাদেশসহ বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ঢাকায় অবস্থিত মিশনারিদের বিভিন্ন ভবন ভেঙে পড়েছিল এই ভূমিকম্পের কারণে। এ ছাড়া অনানুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় প্রায় ৪৫০ জন মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ১৯১৮ সালের ৮ জুলাই ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গল। ১৯৩০ সালের ২ জুলাই ভারতে (কেন্দ্র) ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ১৯৫০ সালের ১৫ আগস্ট আসামে হয় ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প। ১৯৫৪ সালের ২১ মার্চ ভারতের মণিপুরে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ভারতের আসামে (কেন্দ্র) ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয় ১৯৭৫ সালের ৮ জুলাই। ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের সিকিমে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র বাইরে হলেও তীব্র কম্পন অনুভব করে বাংলাদেশ। ১৯৯৭ সালের ২২ নভেম্বর, চট্টগ্রামে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল বাংলাদেশের কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপ। ঢাকায় ৭২ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি ঢাকা শহরে ৭২ হাজার বাড়িই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।


তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৪২
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×