somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বাদশ অলিম্পিয়ান নিয়ে কিছু কথা

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রাচীন গ্রিক ধর্মের ও গ্রিক পুরাণ অনুসারে দ্বাদশ অলিম্পিয়ান হলেন সর্ব দেবতার মন্দিরে প্যান্থিয়ান অধিষ্টিত বারোজন প্রধান দেব ও দেবী। এই বারোজন দেবতা হলেনঃ
১। জিউস
২।হেরা
৩।পসেইডন
৪।দেমেতের
৫। এথেনা
৬ এ্যাপোলো
৭। আর্থেমিস
৮।আরেস
৯। আফ্রোদিতি
১০। হেফাইস্তুস
১১। হর্মিস
১২। হেস্টিয়া অথবা ডায়ানসাস
হাদেস এবং পার্সিফোনকে মাঝে মধ্যে দ্বাদশ অলিম্পিয়ানদের একজন বলে মন করা হয়। তবে বেশীরভাগ কাহিনিতে হাদেসকে অন্তর্ভূক্ত করা হয় না কারন তি‌নি ছিলেন পাতালপুরীর বাসিন্দা এবং তিনি কখনই অলিম্পিয়ায় বসবাস করেননি।তবে ধারনা বা দ্বাদশ অলিম্পিয়ান যারা Dodekatheon নামেও পরিচিত তারা অলিম্পিক পর্বতে বসবাস করতেন। অলিম্পিয়ানরা দেবতাদের যুদ্ধে টাইটানদের বিরুদ্ধে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। দ্বাদশ দেবতার ধারণাটি এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত গ্রিক বা রোমান পুরাণে উ‌ল্লে‌খিত সবচেয়ে প্রাচীন একটি বিষয়।


জিউস
দেবতাদের রাজা এবং অলিম্পাস পর্বতের শাসকঃ আকাশ, বজ্র, বিদ্যুৎ, আইন, শাসন ও বিচারের দেবতা। টাইটান ক্রোনাস এবং রেয়ার কনিষ্ঠ সন্তান। জিউসের প্রতীকগুলো হল বজ্র, ঈগল, ওক, রাজদন্ড এবং তুলাদন্ড। জিউস হেরার ভাই ও স্বামী, যদিও তার আরো কয়েকজন প্রেমিকা ছিল। জিউস পসিডন, হেডস, দিমিতার এবং হেসটিয়ার ভাই।


হেরা বা জুনো
তিনি হলেন দেবতাদের রানী ও বিবাহ এবং প্রেমের দেবী। এর প্রতীক হলোঃ ময়ুর, কোকিল এবং গরু। ক্রোনাস ও রেয়ার কনিষ্ঠা কন্যা। দেবরাজ জিউসের বোন ও স্ত্রী। প্রেমের দেবী হওয়ার সুবাদে সে প্রায়শ জিউসের প্রেমিকা এবং তাদের সন্তানদের উপর প্রতিশোধ নিত।


পসিডোন বা নেপচুন
তিনি সমুদ্র, ভূমিকম্প এবং জলচ্ছ্বাসের দেবতা। তার প্রতীক হলঃ ঘোড়া, ষাড়, ডলফিন, এবং ত্রিশূল। ক্রোনাস এবং রেয়ার মধ্যম সন্তান।. নেরেইড এম্ফিরাইড, যদিও অন্যান্য দেবতাদের মতো, তারও অনেক প্রেমিকা ছিল।


দেমেতের বা সেরেস
তিনি উর্বরতা, কৃষি, প্রকৃতি এবং ঋতুর দেবী। তার প্রতীক হলোঃ পপি ফুল, যব, মশাল,প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ ভাণ্ডার এবং শূকর। ক্রোনাস এবং রেয়ার মেঝ সন্তান।


এথেনা বা মিনার্ভা
তিনি হলেন জ্ঞান, প্রজ্ঞা, যু্ক্তি, সাহিত্য, কারুশিল্প এবং বিজ্ঞান, প্রতিক্ষা এবং সমর কৌশলের দেবী। তার প্রতীক হলোঃ পেঁচা এবং জলপাই গাছ। জিউস ও ওসেনিড মেটিসের কন্যা, এথেনা সম্পূর্ণ যুদ্ধসাজে তার বাবার মাথা থেকে উত্থিত হয়।


এ্যাপোলো[ বা Apollo
তিনি হলেন আলো, ভবিষ্যদ্বাণী, অনুপ্রেরণা, কাব্য, সংগীত এবং চারুকলা, ঔষধ এবং আরোগ্যের দেবী। জিউস এবং লেটোর পুত্র। তার প্রতীক হলোঃ সূর্য, বীণা, হংস, এবং ইদুর। আর্থেমিসের যমজ ভাই।


আর্থেমিস বা ডায়না
তিনি হলেন শিকার, কুমারীত্ব, ধনুর্বিদ্যা, চাঁদ, এবং সকল পশুর দেবী। তার প্রতীক হলোঃ হরিণ, শিকারী কুকুর, ভালুক, সাপ, দেবদারু গাছ, তীর এবং ধনুকের দেবী। জিউস ও লেটোর যমজ সন্তানের একজন। এ্পোলোর বোন।


আরেস বা মার্স
তিনি হলেন যুদ্ধ, হিংসা এবং রক্তপাতের দেবতা। তার প্রতীক হলোঃ বন্য শূকর, শর্প, কুকুর, শকুন, বর্শা এবং বর্মের দেবতা। জিউস এবং হেরার পুত্র, অন্য সকল দেবদেবীগন (আফ্রোদিতে ব্যাতীত) তাকে অবজ্ঞা করত। তার ল্যাটিন নাম মার্স। আর এই মার্স শব্দ থেকেই ইংরেজি martial শব্দটি থেকে এসেছে।


আফ্রোদিতে বা ভেনাস
তিনি প্রেম, রূপ, এবং কামের দেবী। তার প্রতীক হলোঃ ঘুঘু, পাখি, আপেল, মধুমক্ষি, হংস মেদিগাছ, এবং গোলাপ। জিউসের কন্যা। মতান্তরে তার জন্ম হয়েছিল তার কনিষ্ঠ পুত্র ক্রোনাস কর্তৃক ইউরেনাসের কর্তিত লিঙ্গ থেকে বের হওয়া সমুদ্রের পানিতে মিশ্রিত শুক্রবিন্দু থেকে। ক্রোনাস তার পিতার লিঙ্গ কর্তন করার পর তা সমুদ্রের পানিতে ছুড়ে ফেলেছি। আফ্রোদাইতের বিয়ে হয় হাপেস্টাস এর সাথে, যদিও তার প্রচুর বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক ছিল। বিশেষ করে আরেস এর সাথে।


হেফেসটাস বাভালক্যান
তিনি হলেন দেবতাদের কারিগর। অগ্নি এবং কামারশালার দেবতা।তার প্রতীক হলোঃ অগ্নি, নেহাই (কামারের যন্ত্র বিশেষ), কুঠার, গর্ধব, হাতুড়ি, এবং চিমটা। হেরার পুত্র, জিউসের সাথে অথবা শুধুমাত্র মাতা থেকে। আফ্রোদাইতের সাথে তার বিয়ে হয়, যদিও অন্যান্য দেবতাদের মতো লম্পট হিসাবে তার চরিত্র চিত্রিত করা হয়নি। তার ল্যাটিন নাম ভালকান, সেখান থেকে ইংরেজি volcano শব্দটি থেকে এসেছে।


হারমিস বা মার্কারি
তিনি হলেন দেবতাদের বার্তাবাহক; বানিজ্য, তষ্কর, বাগ্মিতা এবং পথের দেবতা। তার প্রতীক হলোঃ সারস এবং কচ্ছপ (যার খোলস দিয়ে হারমিস বীণা তৈরী করেছি। জিউস এবং নিম্ফ মিয়ার পুত্র। দ্বিতীয় কনিষ্ঠ্য অলিম্পিয়ান, ডাইনোসাসের চেয়ে বড়।


হেস্টিয়া বা Vesta
তিনি হলেন চুল্লির এবং পারিবারিক ও গৃহস্থালীর সুখশান্তি দেবী । হেস্টিয়া প্রথম অলিম্পিয়ান প্রজন্মে জন্ম গ্রহণ করে এবং প্রকৃত অলিম্পিয়ানদের একজন। কিছু কিছু তালিকায় হেস্টিায়র পরিবর্তে ডাইওনিসাসকে অলিম্পিয়ান হিসাবে গন্য করা হয়। আধুনিক মতবাদে আন্দাজ করা হেয় যে, শান্তি রক্ষার জন্য হেস্টিয়া ডািইওনিাসকে তার সিংহাসন ছেড়ে দেয়। হেস্টিয়া ক্রোনাস এবং রেয়ার প্রথম সন্তান, হেদেস, দিমিতার, পসিডন, হেরা এবং জিউসের বোন।


ডায়নিসাস বা বাচচুস
তিনি হলেন মদিরা উৎসব এবং পরমানন্দের দেবতা। থিয়েটারের পৃষ্ঠপোষক দেবতা। তার প্রতীক হলো আঙুরলতা, আইভিলতা, সুরাপাত্র, ব্রাঘ্র, প্যান্থার, চিতা, ডলফিন, ছাগ ও পাইনফল। জিউসের পুত্র। জিউস এবং দিবানের রাজকুমারী সেমেলের রাজকন্যা। সর্ব কনিষ্ঠ গ্রিক দেবতা, এবং সাথে অমর নয় এমন একজন মাতার সন্তান।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৫৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×