somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হতাশার কাব্য-২

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফিরে এলাম দ্বিতীয় খণ্ড নিয়ে। আগে কি লেখা হয়েছিল তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলতে পারেন। আমিও ঝেরে ফেলেছি। তবে সেটা আপাত দৃষ্টি তে, একেবারে ঝেরে ফেলতে বলিনি। এই লেখার সাথে মিল খুঁজতে চেষ্টা না করার জন্য এরকম বলেছি। এখানে আমি আগের কথার জের ধরেই বলবো কি না, বুঝতে পারছি না। হা,তবে মিল খুঁজে না পেলে আমার কিছু করার নেই। আমি তো আর লেখক নই,অথবা কোন গল্প লিখতে বসিনি। নিজের কিছু ধারনা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রকাশ করতেই এসেছি। আর ধারনা গুলো বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লিখছি।আপনাদের মতামত আমার ধারনা খণ্ডন করার ক্ষেত্রে ভালই কাজ করবে, আশা করছি(যদি ধারনা গুলো খণ্ডন করার মত হয়,সত্য হলে তো হলই)।
যাই হোক, মূল কথায় ফিরে আসি। বলছিলাম মানুষ এর বদলে যাওয়ার ব্যাপার এ। যত টুকু বলতে চেয়েছিলাম, বলা হয়েছে। তাই এখানে আর যা বলা হয়ে গিয়েছে সেটা বলতে চাই না আলাদা করে। কথা প্রসঙ্গে চলে আসলে হয়তো বা বলবো।
আপনারা নিশ্চয়ই থ্রি ইডিয়টস মুভি টি দেখে থাকবেন। মুভি টার মূল থিম ছিল, সন্তান কে যেন তার ইচ্ছে মত লাইফ এর লক্ষ ঠিক করতে দেওয়া হয় যদি সন্তান এর নিজস্ব কোন ইচ্ছে থাকে। তার ওপর যেন কিছু জোর করে চাপিয়ে দেওয়া না হয়। তো আমার এই মুভি এর কথা টানার কারণ হচ্ছে। আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই। এখন এই যুগে হয়তো বেশ কিছু পরিবার এ ব্যাপার টায় সচেতন। কিন্তু আমার সময় ও এতটা ছিল না। যাই হোক, আমাদের দেশে বাবা মা, সন্তান কে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাতে যত টা স্বপ্ন দেখেন, কেউ ভাবেন না যে তাদের সন্তান একজন জল জ্যান্ত মানুষ, সেই মানুষ টাও স্বপ্ন দেখতে পারে। তার ও পেশা বেঁছে নেওয়ার আগ পর্যন্ত যেতে যেতে জীবন সম্পর্কে কিছু টা হলেও ধারনা আসবে( যদিও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় তা সম্ভব খুব কম,বাবা মা এর উপর নির্ভর করে এই বিষয়ক জ্ঞান পাওয়া টা),ইচ্ছা,স্বপ্ন ইত্যাদি জন্ম নিবে। কিন্তু সন্তান কি হতে চায় এ দিকে ফিরে তাকানোর ও সময় কিংবা সুযোগ(তাদের ভাব দেখলে তেমন তাই মনে হয়) পান না বাবা-মা রা। তারপর তো আছে দেশ এর শিক্ষা ব্যবস্থা, ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার না হইলে ভাত নাই ধরনের একটা কথা দেশে ব্যাপক হারে প্রচলিত। এবার আসি, মানুষ এর কথায়, মানুষ তো ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার শুনলে ভাবে না জানি কত কিছু। কিন্তু অন্য কোন কিছু শুনলে পাত্তাই পায় না ছেলে/মেয়ে টা।সমাজ ব্যবস্থাই এমন আমাদের। কি আর করা। তাই ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য চলতে থাকে সংগ্রাম।
সবাই তো আর পারে না। সেখান থেকে শুরু হয় হতাশা। দেশ,সমাজ,সমাজের মানুষ, সবার প্রতি এক রকমের ঘৃণা জন্মে যায়।নিজেকে অনেকটা অসামাজিক মনে হতে শুরু করে।কারও কারও সৃষ্টিকর্তার ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে যায়। নিজের জন্ম কেই অনেকে দোষ দিয়ে বসে। আসলে সবাই কে দিয়ে তো সব কিছু হয় না। মন থেকে চেষ্টা করার একটা ব্যাপার আছে। যার যেটা করতে অথবা পড়তে ভালো লাগে,তাকে সেটা করতে দিলে, সে বেশ ভালো ভাবে করতে পারবে বলেই আমি মনে করি। যেহেতু সে মন দিয়েই চেষ্টা করবে এবং তার যেহেতু সেটা স্বপ্ন সেহেতু সে কঠোর পরিশ্রম করবে। একটা উদাহরণ দেই, আমার এক খুব কাছের বড় ভাই আছেন, তিনি ছোট বেলা থেকেই বেশ ভালো ক্রিকেট খেলেন। সারাক্ষণ খেলা নিয়েই পরে থাকতেন। স্কুল পালিয়ে খেলতেন। পড়াশুনা ফাকি দিতেন বেশ ভালো ভাবেই খেলার জন্য। যাই হোক, তিনি তার আম্মার কাছে বেশ মার ও খেতেন এ জন্য। তার বাবা আবার ইঞ্জিনিয়ার। তাই, তার ও ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে, এরকম কিছু ঠিক করে রেখেছেন তার বাবা-মা। এবং আমি দেখতাম বেচারা কে কি পরিমাণ মারধোর করা হতো খেলতে যান বলে সব কিছু বাদ দিয়ে। যাই হোক স্বাভাবিক ভাবেই তিনি এখন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। চাকরি করছেন। ছাত্র তেমন ভালো ছিলেন না। যেহেতু খেলার দিকেই তার নেশা ছিল তাই পড়াশুনা তেও খুব যে বেশি সাফল্য পেয়েছেন তা নয়। এখন আপনারাই বলুন, ভাই যদি খেলায় যেতেন অন্তত চেষ্টা তো করতেন মন দিয়ে, কঠোর পরিশ্রম ও করতেন নিশ্চয়ই। কিন্তু কি আর করার। বেচারা এখন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। এভাবে সন্তান এর স্বপ্ন,ইচ্ছে কে মাটি চাপা দিয়ে আসছে কত বাবা-মা। আসলে দেশ এর সাধারণ মানুষ গুলোর এসব ধারনা পরিবর্তন হওয়া বেশ জরুরি। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সন্তান কে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া অন্য কিছু বানাবেন না, এটা তো সন্তান এর ওপর চাপ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এভাবে যে কত মানুষ এর স্বপ্ন,ইচ্ছে সব ধামাচাপা পরে যাচ্ছে দিনের পর দিন। কতজন হয়তো তা মেনে নিতে না পেরে জীবন এর কাছে নতি স্বীকার করে নিয়েছে তার হিসেব নেই।
এখন আসছি আরেকটা ব্যাপার নিয়ে, আমরা সাধারণ মানুষ আর কিছু পারি আর না পারি, একটা কাজ বেশ ভালো পারি। মানুষ কে কটাক্ষ করে কথা বলতে। কেউ একটু অন্যরকম ভাবে চিন্তা করলে তাকে বেশ ভালই কথা শুনিয়ে দিতে পারি। ভেবে দেখি না যে আসলেই ওভাবে ব্যাপার টা সম্ভব কি না। কেউ নতুন কিছু বললে সহজে টা স্বীকৃতি দিতে আমাদের কেন যেন বেশ সমস্যা হয়। গতানুগতিক ধারা থেকে সরে গিয়ে একটু অন্য ভাবে কেউ চিন্তা করলেই তাকে আমরা মন ভরে কথা শুনিয়ে দিতে বেশ ভালবাসি। কেন? জানিনা। সামান্য কথার কারণে কত জনের কত উদ্যোগ নষ্ট হয়ে যায়, থেমে যায় ঐ ভাবনা পর্যন্তই তার হিসেব ও কেউ কোনদিন করেনি। করবেও না। আর অদম্য ইচ্ছে থাকলে মাথা তুলে দাঁড়ানো যায়, কথা টা ঠিক বটে। তবে, তাই বলে কি এভাবে একজন কে দমিয়ে ফেলবো আমরা? আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, কেন করি আমরা এটা?
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×