somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্বত্য চট্টগ্রামের চরম দূর্দিনে সুশীলরা কোথায়?

২০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




পার্বত্য চট্টগ্রামেম কোনো কিছু হলেই বাংলাদেশের কিছু সুশীল ঝাঁপিয়ে পড়েন। গণমাধ্যম, স্যোশাল মিডিয়া লেখার বন্যা বইয়ে দেন। প্রেসক্লাব, শাহাবাগে কথার ফুলঝুঁড়ি ছোটান। সেমিনারে, টক শোতে মুখ খিঁচিয়ে কথা বলেন। বিশাল বিশাল টিম নিয়ে পার্বত্যাঞ্চল ভিজিট করেন। মানবাধিকার চর্চার পরাকাষ্ঠা দেখান।



কিন্তু মারাত্মক পাহাড় ধসে পার্বত্য চট্টগ্রাম স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয়ে যখন ধুঁকছে তখন কোথায় এই সুশীল সমাজের নটরাজ ও নটীরাণীগণ। গণমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া, টকশো, প্রেসক্লাব, শাহাবাগ কোথাও তাদের টিকিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বিশাল টিম নিয়ে কাউকে পার্বত্যাঞ্চল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যেতে দেখছি না। ভয়াবহ প্রকৃতিক বিপর্যয়ে অপ্রতুল ত্রাণ তৎপরতায় যে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে হিউম্যান রাইটস, মানবাধিকার কমিশন ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে সরব হতে দেখলাম না। এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অতি স্পর্শকাতর ও মুক্তহস্ত বিভিন্ন বিদেশী রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোকে এক ছটাক চালও দূর্গতদের জন্য বরাদ্দ করতে দেখলাম না। অথচ তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ৬ লাখ বাঙালী সমতলে পুনর্বাসনের জন্য সকল ব্যয় বহনের অগ্রিম অফার দিয়ে রেখেছেন। এমনতো না যে পাহাড় ধসে শুধু বাঙালীরা মরেছে, বরং তালিকার হিসাবে দেখা যায়, বাঙালীদের থেকে পাহাড়িদের মৃতের সংখ্যা ঢের বেশী। কাজেই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা তাদের ভাষায় আদিবাসীদের জন্য যারা এক ঘটীজল বেশী পান করেন সেই দেশী বিদেশী ব্যক্তি, দেশ ও সংস্থাগুলোর নীরবতা প্রমাণ করে তাদের ব্যবসা মৃতদের নিয়ে নয়, জীবিতদের জন্য। কারণ মৃতদের তো ক্রিশ্চিয়ানাইজেশন করা যায় না।


ওবায়দুল কাদের মতে, বাঙালীরা যদি পাহাড়ের ভারসাম্য নষ্টের জন্য দায়ী হতো তাহলে বাঙালী মৃতের সংখ্যা ঢের হতো। কাদের সাহেব হয়তো ওই সুশীলদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই কথাটি বলেছেন। কিন্তু কাদের সাহেব খোজ নিয়ে জানুন, জিয়ার পাঠানো এই চার লাখ বাঙালী পার্বত্য চট্টগ্রামে না থাকলে তার দল আওয়ামী লীগের অস্তিত্বও থাকতো না। বছরের পর বছর আওয়ামী লীগ যে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সংসদীয় আসন লাভ করে, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জয়লাভ করে তার প্রধান কারণ এই জিয়ার পাঠানো চার লাখ বাঙালীর ভোট! বিশ্বাস না হলে স্থানীয় নেতাদের জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন। এই তথাকথিত সুশীল সমাজ, মানবাধিকার কর্মী, বিদেশী রাষ্ট্র, সংস্থাগুলোর পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রধান টার্গেট বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালী জনগোষ্ঠী। তাদের মতে, যতো নষ্টের গোড়া এই দুটি। অথচ বাস্তবে আমরা কি দেখছি? স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম যখন বিধস্ত, ধংসস্তুপ, মৃত্যুকুপে পরিণত হয়েছে। যখন বেসামরিক প্রশাসন, স্থানীয় সরকার নিরুপায়, অসহায়, হতোদ্যম হয়ে পড়েছে তখন দূর্গত মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল হয়ে এগিয়ে এসেছে সেনাবাহিনী। আর তাদের সহায়তায় পাশে রয়েছে প্রধানত বাঙালীরাই। নূন্যতম সন্দেহ থাকলে এই মূহুর্তে সুশীলদের পার্বত্য চট্টগ্রামে যাবার আহ্বান জানাচ্ছি। সচক্ষে দেখে আসুন পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় অর্ধশত পয়েন্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জীবন বাজী রেখে ধংসস্তুপ অপসারণ করে জীবন প্রবাহ ও যান চলাচল স্বাভাবিক করতে, দূর্গতদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করতে, চিকিৎসা সেবা দিতে, সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তৎপর হতে দেখতে পাবেন। আমি নিশ্চিৎ জীবনের ভয়ে বা কষ্টের আশঙ্কায় আপনার মানিকছড়ির ধস এলাকার ধংসস্তুপ পার হওয়ার সাহস করবেন না। কিন্তু সেনাবাহিনী করেছে। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সদা প্রস্তুত সেনাবাহিনীর ২ অফিসারসহ ৫ জীবন উৎসর্গ ও ১০ জন মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার পরও সেনাবাহিনী পিছিয়ে আসেনি কর্তব্য কাজে।রমজান মাসের রোজা রেখেই প্রায় ২৪ ঘন্টা আত্মনিয়োগ করেছে দূর্গত মানুষের সেবায়। আর তাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সেই বাঙালীরা আপনাদের চোখে যারা বাঙালী নয়, মানুষও নয়- স্যাটেলার। অথচ আপনাদের কাছে যিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের স্পোকসম্যান, হর্তাকর্তা, গডফাদার সেই সন্তু লারমা ও তার আঞ্চলিক পরিষদের কোন সদস্যকেউ এ যাবতকালে কোথাও এক কোদাল মাটি সরাতে দেখিনি। কোনো ক্ষুধার্তকে এক প্লেট খাবার বেড়ে দিতে দেখিনি। পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজত্ব ও ঢাল-তলোয়ার বিহীন রাজা রাণী রয়েছেন। মাঝে মাঝেই যারা ফেসবুকে লেখালেখি করে, নানা কর্মসূচীর ডাক দিয়ে নিজেদের জাহির করেন। নিজের ‘প্রজাদের’ এই চরম বিপন্ন মুহুর্তে পাইক-পেয়াদা, লোক-লস্কর নিয়ে কোথাও কোনো ধংসস্তুপ অপসারণে তৎপর দেখতে পাইনি।


অথচ তাদের চক্ষুশূল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও তার সহায়তাকারী হিসাবে বাঙালীরাই আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাতা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সক্রিয় তথাকথিত সুশীল সমাজ, দাতাদেশ ও সংস্থারা বসন্তের কোকিল ও দুধের মাছি।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:০৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×