somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঁচ বছরের মধ্যেই রামপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের কর্মকর্তাদের এক বৈঠক থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে সুন্দরবনের কাছে রামপালে বির্তকিত কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে পরিবেশবাদীদের আপত্তি সত্ত্বেও পাঁচ বছরের মধ্যেই এই কেন্দ্র উৎপাদনক্ষম হতে যাচ্ছে।

সুন্দরবনের কাছে বাংলাদেশ ভারত যৌথ অংশীদারিত্বে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পরিবেশবাদীরা এবং স্থানীয়রা আন্দোলন করছে।

সুন্দরবনের অদূরে রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অংশিদারিত্বে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের সচিব মনোয়ার ইসলাম এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সে দেশের বিদ্যুৎ সচিব প্রদীপ কুমার সিনহা।

বৈঠকের পর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে।



মি: ইসলাম বলেন ২০১৮ সাল নাগাদ একটি ইউনিট অর্থাৎ ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন এ ধরনের বড় প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ১০-১২ বছর সময় লাগে।

তবে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুততার সাথে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে বলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব জানিয়েছেন।

এই প্রকল্প থেকে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য রেখে দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৬৭০ মেগাওয়াট।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিদ্যুৎ সংস্থা এনটিপিসি এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বা পিডিবি যৌথভাবে একটি কোম্পানিও গঠন করেছে।



বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি নামের এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলামকে।

৫ই জানুয়ারী বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার আবারও ক্ষমতাসীন হবার পর পাঁচটি প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে বাগেরহাটে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যতম।

কাজের অগ্রগতি দেখতে দুই দেশের বিদ্যুৎ সচিব রামপালে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেছেন। কাজের অগ্রগতি দেখে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে জানালেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিব।

সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদীর তীর ঘেঁষে এই প্রকল্পে ১৮৩৪ একর জমির সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে।



প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক

গত বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।



কিন্তু পরিবেশবাদীদের তীব্র আপত্তি সত্বেও রামপালেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের বিষয়ে সরকারের দিক থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়।

রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সেটির ক্ষতিকর প্রভাব সুন্দরবনের উপরে পড়বে বলে পরিবেশবাদীদের আশংকা রয়েছে। তারা বলছেন প্রস্তাবিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের কাছাকাছি হওয়ায় এই আশংকা প্রবল।

কিন্তু সরকারের দিকে থেকে পরিবেশবাদীদের উদ্বেগকে বারবারই নাকচ করে দেয়া হয়েছে।



বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, “কেন এটা (রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র) বিতর্কিত হবে? আমি এটার কোন যুক্তিই খুঁজে পাচ্ছি না।”

মি: ইসলাম বলেন সরকার অনেক চিন্তা-ভাবনা করে সবচেয়ে নিরাপদ জায়গায় এই প্রকল্পের জন্য জায়গা নির্ধারন করেছে।



প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় দেখতে গত বছর গিয়েছিলাম বাগেরহাটের রামপালে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে বলেই আমার মনে হয়েছে।

কিন্তু বিদ্যুৎ সচিব দাবী করছেন এই প্রকল্প নিয়ে রামপালের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কোন আপত্তি নেই।



কিন্তু স্থানীয়রা এই প্রকল্পের বিরোধীতা করে একটি সাংগঠনও তৈরী করেছেন। যার নাম কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি। এই কমিটির সভাপতি সুশান্ত কুমার দাশ সরকারের সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ এবং হতাশ।

মি: দাশ বলেন, “আমাদের দাবী উপেক্ষা করে সরকার গায়ের জোরে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।”

বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বলেন ভবিষ্যতে বিদ্যৎ-এর চাহিদা মেটাতে হলে বড় আকারের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান ছাড়া কোন বিকল্প নেই।

কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান এবং পরিচালনায় ভারতের যথেষ্ঠ অভিজ্ঞতা থাকায় বাংলাদেশ তাদের সাথে যৌথ অংশিদারিত্বে গেছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন ।



লেখাটি BBC বাংলা হতে সংগ্রহীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৫
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×