somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১৯৭১-এর একটি ঘটনা

২৬ শে মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আমার বিশ্বাস এদেশের প্রায় সকল পরিবারেরই ৭১-এর সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কোন না কোন স্মৃতিময় সংশ্লিষ্টতা আছে। হয়ত কালের গর্ভে না বলা কাহিনী হিসেবে সেই ঘটনাগুলো আজ আর উচ্চারিত হয়না। হয়ত কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে সেই সব যুদ্ধদিনের কথা। অথবা সেই কথাগুলোকে কালের অতীত গর্ভ থেকে টেনে তোলার কেঊ নেই আজ আর। তবুও বলতে হবে, অজানা সেই ঘটনার গুরুত্ব কোন অংশে কম নয় আমাদের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে।

এই লেখায় সেই ধরণের একটি ঘটনার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করব, যেটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘঠিত হয়েছিল। বিষয়টির গুরুত্ব কিংবা অগুরুত্বের বিচার করবেন এ লেখা যাঁরা পড়ছেন তাঁরা। ৭১ আমি দেখিনি ৭১-এর যা কিছু তা আমার কানে শোনা। সুতরাং শোনা ঘটনাই আপনাদের জানাচ্ছি। ঘটনাটি ঘটে ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের দিকে, অর্থাৎ যুদ্ধ শুরুরের কিছুকাল পরে। আমার পিতা ছিলেন তখন একটি হাই স্কুলের শিক্ষক। স্বাভাবিকভাবেই স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর। মনের মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় দেশের জন্য কিছু করা দরকার। হানাদার পাকিস্থানিদের প্রতিহত বা শায়েস্তা করার প্রতিজ্ঞা মনের মধ্যে তীব্র এক আকাঙ্ক্ষা হয়ে দানা বেঁধে উঠেছে। এই ভাবনা থেকেই পরিকল্পনা করতে লাগলেন কি করা যায়। বুদ্ধি আসল মাথায় বোমা বানাতে হবে। এবং তা দিয়েই প্রতিহত করতে হবে পাক-আর্মিদের। যথারীতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমে পড়লেন তিনি। সঙ্গী হলেন তারই কিছু ছাত্র এবং বন্ধু।

আমার পিতা ছিলেন স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক। স্কুলের বিজ্ঞান ক্লাসের ল্যাবরোটারিতেই রাতদিন চলতে লাগল বোমা তৈরির কাজ। উদ্দেশ্য এই বোমা দিয়েই প্রতিহত করা হবে পাকিস্থানিদের। জেলা শহরের উঁচু ভবন থেকে আক্রমন করতে আসা পাক-হানাদারদের উদ্দেশ্যে ছুড়ে মারা হবে ঐ বোমা। এরপর দু,তিনটি বোমাও বানিয়ে ফেললেন তাঁরা। একদিন সবকিছু যখন চুড়ান্ত তখন বোমাগুলোকে অধিকতর শক্তিশালী করার জন্য রসদ জোগাড়ে গেছেন আমার পিতা। আর অন্যরা ল্যাবরেটরিতে তাঁর অপেক্ষায় অপেক্ষমান। এই সময়ে কারো কোন ভূলে বোমাগুলোকে নাড়াছাড়া করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়ে গেল একটি বোমা। সেখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত হন। পরে এর প্রভাবেই তিনজনের একজন অকালে মারা যান। আমার পিতা সেদিন কারণ বশত সেখানে ছিলেন না বলে অক্ষত থেকে যান।

ঘটনাটির গুরুত্ব অন্যদের কাছে কিভাবে ধরা দিবে জানি না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও লেখা হয়নি ঘটনাটি হয়ত কোনদিন হবেও না। কিন্তু দেশ মাতৃকার জন্য এই স্মৃতিময় ঘটনাটির গুরুত্ব কখনও হারিয়ে যাবে না। যা একাত্তরের পটভূমিতে ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তির আকাক্ষায় স্বপ্নময় এজাতীয় অসংখ্য ঘটনা আছে সেই ১৯৭১-এর যুদ্ধের সময়গুলোতে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১০ দুপুর ১:০১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×