(বাংলা ভাষায় সম্বোধনের ক্ষেত্রে যে বিশেষ ভিন্নতা সেটা বেশ ব্যাতিক্রমি বলতে হয়। অন্তত ইংরেজিতে আপনি তুমি তুই এর ক্ষেত্রে কোন বাছবিচার নেই। সেক্ষেত্রে খুব আপন কিংবা কারো প্রতি ক্ষুব্ধতার মাত্রা নির্ণয়ে তুচ্ছার্থে তুই শব্দটি ব্যাবহার করা হয়। এই লেখাটির শিরোনামেও তাই তুচ্ছার্থ ব্যাবহার করা হয়েছে, সেটা সঙ্গত কারণেই।)
পর পর কয়েকটি ইস্যুতে দেশের সাথে সাথে ব্লগও উত্তপ্ত। বিশেষ করে সহব্লগার রাগ ইমনের স্টিকি পোস্টটি প্রচন্ড আলোড়ন সৃস্টি করেছে। (এই হতভাগ্যের কমেন্ট ব্যান, নইলে অন্তত সহমত জানিয়ে কৃতার্থ হতে পারতাম।)
শুধু নরপিশাচ পরিমল জয়ধর শাস্তির ব্যাপারে উচ্চকন্ঠ বলেই নয়, ভিকির অধ্যক্ষ হোসনে আরার কলংকিত ভুমিকার জন্যও শুধু নয়, বরং মানবতাবাদ-স্বাধীনতার চেতনা-নারী অধিকার-অসাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদির আড়ালে চরম সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করা এবং ইসলামে বিশ্বাসিদের সময় সুযোগ বুঝে রাজাকার-সাম্প্রদায়িক ইত্যাদি তকমা এটে দেয়া সামুর বিশেষ গোষ্ঠি এব্যাপারে মুখে একেবারে তালা দিয়ে রাখায়, পরিমল ইস্যুটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। (সবচেয়ে অবাক হয়েছি ব্লগার পারভেজ আলমের অনুপস্থিতি দেখে।) এমন কি ব্লগের পিতা মাতা দুজনকেই এব্যাপারে একেবারে নিশ্চুপ দেখে মনে হচ্ছে তাদের আদর্শিক অবস্থান নিয়ে লোকে যে দুকথা বলে, সেটা নিছক গুজব নয়।
আগে থেকেই সহব্লগার অনেকেই বলে আসছিলেন যে, এই বিশেষ গোষ্ঠি আসলে নাস্তিকতার ছদ্মাবরণে পরিমল বাবুর সম্প্রদায়ের লোক। পরিমল ইস্যুতে তাদের নিরব কন্ঠ প্রমান করে যে সহব্লগারদের কথ ঠিক। নইলে পরিমল ইস্যুর আগে যেখানে লাগাতার ইসলামকে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করে লেখার অভাব ছিল না, সেখানে সেই কামেল লেখকগুলি হঠাৎ নিরুদ্দেশ হবে কেন? বোধ করি পরিমলের দুরবস্থা দেখে ওর পক্ষ্যে থাকার চেয়ে মুখ লুকিয়ে পালিয়ে থাকাটাই এরা শ্রেয় জ্ঞান করেছে।
তাই সাধারণ ব্লগারদের আহবান করছি, কোনদিন যদি এই অজাত কুজাতদের দেখেন চেতনা-মানবতা ইত্যাদি ফেরি করছে, তখন দুকথা শুনিয়ে দিতে ছাড়বেন না। পারলে দুচারটা গদামও দিয়ে রাখতে পারেন। যাতে এই নরকের কিটগুলি দেশ ও ব্লগের পরিবেশ নস্ট না করতে পারে।
ধর্ষক-সন্ত্রাসি-খুনি-দেশদ্রোহি এদের কোন ধর্ম নেই। একথা চিরসত্য। সমস্যা হয়ে যায়, যখন এই চিরসত্য কথার পরিপন্থা করে মুসলমানদের তকমা এটে দেয়া হয়। মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক হেন তেন, ইমাম কর্তৃক এটা সেটা, এধরণের খবর বেশ উৎসাহের সাথে বাংলাদেশের চিহ্নিত কিছু পত্রিকায় গুরত্বের সাথে প্রকাশিত হয়। তখন তথাকথিত মানবতাবাদিদের পায় কে? কে কত বড় মানবতাবাদি সেটা প্রচার করার জন্য তারা করে না এহেন কোন কাজ নেই। ব্লগেও প্রায়্ একই দশা।
অথচ বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত পরিমল ইস্যুতে তারা অন্তত প্রতিবাদটুকু করতে পারতেন? সে গুড়ে বালি! "প্রথম আলো" এমন ভাব করলো, যে তারা ভাজা মাছটি উলটে খেতে জানে না। আর "সংবাদ" নির্যাতিত ছাত্রিটির নাম ঠিকানা ছাপিয়ে এমনকি গর্ভবতি পর্যন্ত করিয়ে পর্যন্ত ছাড়লো। বুঝে দেখুন, এদের নীতি কোন দেবির অর্ঘে উৎসর্গিত !
পানি সম্পদ মন্ত্রি রমেশ্চন্দ্র শীল বলেছিলেন, টিপাইমুখ বাধ হলে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবে না। সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছিলেন, বিসমিল্লা থাকবে কি থাকবে না, সেটা তিনি ভেবে দেখবেন। সুনিল কান্তি বোস এমন আহামরি মেধাবি কেউ নন, এর পরেও এতগ্লি গুরুত্বপুর্ণ পদ দখল করে বসে আছেন। বাংলাদেশ মৎস রফতানি কারক সমিতির সভাপতি ভারতে ইলিশ রফতানির মুল্য কমাতে যেভাবে ঝুলাঝুলি করছিলেন, তাতে বিশ্বাস হয় বাংলাদেশের স্বার্থ চুলায় যাক, ভারত খুশি থাকলেই হলো।
লিস্টি বাড়ানো যায়। খামাখা কলেবর বৃদ্ধি করে কি লাভ? তবে যা লিখলাম, সেটা কোন গুজব নয়। অথচ এনিয়ে কথা বলতে গেলেই বিশেষ গোষ্ঠি সেখানে সাম্প্রদায়িকতা আবিস্কার করে বসবে।কেননা সত্য প্রকাশিত হলে, তাদের দেশ বিরোধি অবস্থান সবার সামনে প্রকাশিত হয়ে যায়। (আমাদের সৌভাগ্য বটে! পরিমল ইস্যুতে জল ঘোলা করা হয়নি।)
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিসদের সাথে ভারতের কংগ্রেস এবং বিজেপির নির্লজ্জ মাখামাখি দেখে অনেক আগেই লেখক মহাদেব সরকার হাত জোর করে বলেছিলেন, এইসব করে তারা যেন বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যলঘুদের প্রতি সংখ্যাগুরুদের দুরত্বের সৃস্টি না করেন। এই চাছাছোলা কঠিন সত্যি কথার জন্য আজ অবদি মহাদেব সাহাকে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে।
অবস্থাদৃস্টে মনে হচ্ছে সুরঞ্জিত-রমেশ-সি আর দত্ত গং বিশেষ পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই সুকৌশলে সেকাজটি সারতে চাচ্ছে। সাথে পাচ্ছে সুলতানা কামাল চক্রবর্তি-শাহরিয়ার কবির-হাসান ইমামদের। যারা বাংলাদেশ বিরোধি কর্মকান্ডের জন্য মার্কামারা বলেই স্বীকৃত।
এদের পরিকল্পনা হলো, বাংলাদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ পদে ধর্মীয় সংখ্যলঘুদের আসীন করে (যারা ভারতের আস্থাভাজন শুধু তাদেরই) বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকান্ড চালানো। বাংলাদেশের স্বার্থ ভাষা সংস্কৃতি ঐতিহ্য ইত্যাদির উপর আঘাত এনে সংখ্যাগুরুদের মনে সংখ্যলঘুদের জন্য বিতৃষ্ণা সৃস্টি করা। সেই বিতৃষ্ণা থেকে যদি কোন অনভিপ্রেত ঘটনার সৃস্টি হয় তাহলে তার পুর্ণ সুযোগ গ্রহন করে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীন বাংলাদেশে ভারতীয় অপবিত্র গেরুয়া বাহিনীর আগমন। এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ। হাসিনা ও আওয়ামি লিগ তো লেন্দুপ দর্জির মত মুখ্যমন্ত্রির ভুমিকায় ইতিমধ্যেই অবতীর্ণ। গেরুয়া বাহিনী এলে বরং তার গদি চিরস্থায়ি হয়ে যাবার সম্ভাবনাই প্রবল।
আর স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যে সশস্র বাহিনী রয়েছে, ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করিয়ে ইতিমধ্যেই হাসিনা ও ভারত তাদের মনবল ধবংস করে দিয়েছে। আর রইলো সাধারণ মানুষ? ইতিমধ্যেই মোনমহন শিং বলে রেখেছে যে বাংলাদেশে ভারত বিরোধী হলো, জামাতিরা। স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাতের ঘৃণ্য এবং পৈশাচিক ভুমিকার জন্য কোন দেশপ্রেমিক চাইবে না যে তাদের গায়ে জামাতি তকমা পড়ুক। ফলে বাংলাদেশে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহন প্রশ্নবিদ্ধ করে রাখা যাবে।
ভারতকে সমুদ্র আকাশ-নদী-সমুদ্র করিডোর দেবার পাশা পাশি এবার স্থল করিডোর দেবার বিষয়টি নিয়েও সহব্লগার দিনমজুর ভাই একটি গুরুত্বপুর্ণ লেখা লিখেছিলেন। ব্যাক্তিগভাবে পাঠকদের অনুরোধ করবো, যেন শক্তিশালি তথ্য নির্ভর এই লেখাটি প্রিয়তে যোগ করে রাখুন। কেননা এই দেশদ্রোহি পদক্ষেপের পক্ষ্যে ভারতের সেবাদাস হাসিনা থেকে শুরু করে জ্ঞানি বিজ্ঞানি রথি মহারথিরা অনেক বিভ্রান্তিকর কথা বলবে। ওদের কুযুক্তির মুখে ঝাটাপেটা করার জন্য এই লেখাটি মোক্ষম কাজে দেবে বলেই বিশ্বাস করি।
Click This Link
এই লেখাটি পড়ে শিরোনামটির যথার্থতা খুজে পেলাম। লেখাজোকা নেই, মাপ পরিমাপ জরিপ নেই, ভারতের সাথে আমাদের অনেকগুলি অমিমাংসিত বিষয়ে সমাধানের তাগিত নেই, ভারত মুখ দিয়ে যাইই চাইছে, হুকুমের চাকরের মত হাসিনা সরকার সবই দিয়ে দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই সিলেটে সাধারণ মানুষের প্রবল প্রতিরোধের মুখে ভারতকে বেশ কিছু জমি লাখেরাজ বানিয়ে দিয়ে দেবার ধান্ধা প্রতিহত হয়েছে। সেখানেও সন্ত্রাসি আওয়ামি লিগ নেতাকর্মিরা স্বাধীনচেতা বাংলাদেশিদের উপর আক্রমন চালিয়েছে। ভারতের নিষিদ্ধপল্লিতে জন্ম না নিলে, দেশের স্বার্থের বিপরীতে, সার্মবভৌমত্বের বিরুদ্ধে তো কারো যাওয়ার প্রশ্নই আসতো না।
আর সেজন্যই প্রধানমন্ত্রির পদটি আপনি সম্বোধনের উপযুক্ত হলেও, তাকে তুচ্ছার্থে সম্বোধন করে মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে যে, সে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রি মাত্র। বাংলাদেশের মালিক নয়। দেশটাকে পৈতৃক তালুক হিসাবে গণ্য করে দিল্লির বাঁদিগিরি করার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভটা তাই এতটাই প্রবল যে আপনাকে তুই তোকারি করতেও তাদের বিন্দুমাত্র দ্বিধা করতে হচ্ছে না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:৫৭