সরকার বিশ্বকাপ উদ্বোধনের দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আসর, মাগরীব, এশা এই তিন ওয়াক্ত নামাযের আযানে মাইক বন্ধ রাখে। যাতে আযানের আওয়াজ খেলা উদ্বোধনের কর্মসূচিকে ব্যাহত না করে। বহু মুসল্লী যথারীতি জামায়াত ধরতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ডিজিটাল সরকারের কাছে নামাযের চেয়ে খেলার গুরুত্বই বেশি। অথচ সরকারের উচিত ছিল নামাযের সময়গুলোতে খেলা উদ্বোধন বিরত রাখা। সরকার তা না করে উদ্বোধনের সময় আযান বন্ধ রেখেছে। এতে ১৫ কোটি তাওহিদী জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে দারুণভাবে আঘাত লেগেছে। ফলে সরকার দেশবাসীর কাছে ঘৃণিত ও নিন্দিত হয়েছে।
প্রত্যেক নামাযের জামায়াতের পূর্বে আযান অনিবার্য শর্ত। আযান মামুলী ধরনের কোন বিষয় নয়। আযানের মাধ্যমে দিনে পাঁচবার বুলন্দ আওয়াজে আল্লাহতায়ালাকে ইলাহ এবং মুহাম্মদ (সাঃ)কে রসূল হিসেবে স্বীকৃতি দান, আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ত্ব ঘোষণা এবং মুসলিম উম্মাহকে নামায তথা কল্যাণের দিকে আহবান করা হয়। বাস্তবিকপক্ষে নামাযে দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য প্রকৃত কল্যাণ রয়েছে। আর খেলায় একটু চিত্তবিনোদন, এতে হয় প্রচুর অর্থ ও সময়ের অপচয়।
আল্লাহ ও রসূল (সাঃ) এর পক্ষ থেকেই দুনিয়াব্যাপী আযানের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এ ব্যবস্থার ওপরে হস্তক্ষেপ করা সরাসরি আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সামিল। যুগে যুগে যারাই আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে নেমেছে ইতিহাস সাক্ষী আল্লাহপাক তাদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন। তারা আল্লাহর কোন ক্ষতিই করতে পারেনি। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা, সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান।
আমাদের দেশের বর্তমান সরকারে অনেক নাস্তিক রয়েছে। আযান তাদের ভোরের মধুর ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। সে কারণে আযানের প্রতি তাদের দারুণ আক্রোশ। আল্লাহর ঐ সকল দুশমনেরা আযান বন্ধ রাখার ব্যাপারে ভূমিকা রাখবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার জানামতে সরকার প্রধান একজন ভাল নামাযী। তিনি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। প্রতিদিন ফজর নামায বাদে কুরআন তিলাওয়াত না করে নাকি অন্যকাজে হাত দেন না। পোশাক পরিচ্ছদেও অনেকটা শালীন। তিনি আল্লাহর পবিত্র ঘরকে কয়েকবার তাওয়াফ করে এসেছেন। তিনি খেলার জন্য আযান বন্ধের হুকুম দেবেন একথা ভাবতেও কষ্ট হয়। কিন্তু না ভেবেও উপায় অন্তর দেখি না। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া জাতীয় মসজিদে তিন ওয়াক্ত আযান বন্ধ রাখবে এমন বুকের পাটা কার আছে? আর যদি তার অগোচরেই এরকম ধৃষ্টতা দেখানো হয়ে থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত অনতিবিলম্বে ঐ সকল আল্লাহর দুশমনদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদান এবং জাতির কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাওয়ার ব্যবস্থা করা। নইলে আরেকটি গণবিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠতে পারে। যা সরকারের জন্য সুখপ্রদ হবে না।
সচেতন মুসল্লীরা বলেছেন, এই সরকার এ দেশ থেকে ইসলামকে নির্মূল করে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কায়েম করার জন্য ইতোমধ্যে বেশকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আযান বন্ধ রাখা তারই একটি অংশমাত্র। বাংলাদেশ পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। এখানে প্রায় ৯০% মুসলমান বাস করেন। ধর্মীয় অনুশীলনে কারো কারো কিছু ঘাটতি থাকলেও ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট তাদের অত্যন্ত দৃঢ়। তাই এদেশ থেকে ইসলাম নির্মূল করে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কায়েম করার ব্যাপারে যারা আদাপানি খেয়ে নেমেছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। ইসলাম বিরোধী দু'একটা কাজ করে তেমন বাধার সম্মুখীন হয়নি বলে তাদের এ ভাবা ঠিক হবে না যে তারা বিজয়ের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গেছে। বরং দিন যত যাচ্ছে দেশব্যাপী ইসলাম বিদ্বেষীদের ব্যাপারে ততবেশি সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। এই ঝড় যখন সম্মিলিত গতিলাভ করবে তখন ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের আশ্রয়স্থল খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাদের মনে রাখতে হবে এ শতাব্দী ইসলামের শতাব্দী বলে খ্যাত। আজ আমার মনে পড়ছে সেই সকল ধর্মীয় অনুভূতিওয়ালাদের কথা। যারা শিবিরের মহানগরীর সীরাত (সা.) মাহফিলে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের বক্তব্যে দারুণভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পেয়েছিলেন। জনাব খান তার বক্তব্যে বলেন যে, আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে গিয়ে রাসূল (সা.) নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন। আজও যারা দ্বীন কায়েমের কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে নামবেন তাদের ওপরেও তেমনি নির্যাতন নেমে আসবে।
আজ ইমাম প্রশিক্ষণে যুবক যুবতীদের নাচ দেখানো হচ্ছে। খেলার জন্য আযান বন্ধ রাখা হচ্ছে। তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে এখন কোন আঘাত লাগছে না কেন?
দুনিয়ার জীবন অতি সংক্ষিপ্ত। আখিরাতের জীবনের কোন শেষ নেই। দুনিয়ার সামান্য স্বার্থে আখিরাতকে বিক্রি করা কোন মতেই ঠিক নয়।
( মীর্যা সিকান্দার )
আযান বন্ধ করে ১৫ কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা
বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন
চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।