somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নগদের খেসারত

২৮ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নগদের খেসারত
শামীমুল হক
নগদ চাই, নগদ। আর এ নগদ নিয়ে চারদিকে কাড়াকাড়ি। রাজনীতিতে নগদের জন্য মারামারি, হানাহানি চলছে অবিরাম। টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, মামলাবাজদের দৌরাত্ম্য চলছে সমানে। কথায় কথায় অস্ত্রের ঝনঝনানি শুরু হয়। প্রাণ যায় কারও কারও। তাতে কি? নগদতো পাচ্ছি। এ নগদেরও যে বিড়ম্বনা আছে সেদিকে কেউই নজর দেন না। বরং বুক ফুলিয়ে বলেন, একটু আধটুতো হবেই। আমরা দল করি। আমাদের দল সরকারে। এ অবস্থায় নেতা-কর্মীরা কিছু এদিক-সেদিক না করলে তারা দল করবে কেন? এই তারাই একবারও মনে করেন না ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। এসব কারণেই তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল সাধারণ মানুষ। আসলে ক্ষমতার স্বাদ বড়ই মধুর। এ স্বাদ একবার যিনি পেয়েছেন, তিনি আর ভুলতে পারেন না। ফলে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা করেন ওয়াদা। ক্ষমতায় থাকার জন্যও করেন ওয়াদা। কিন্তু তারা ওয়াদার দিকে নজর দেন খুব কমই। নিজের দিকে নজর দিতে গিয়েই সময় চলে যায়। সাধারণ মানুষতো আর বোকা নন। তারা ঠিকই বুঝতে পারেন। আর ঠিক সময় ঠিক সিদ্ধান্তই নেন। নগদের কথা বলতে গিয়ে মনে পড়েছে সেই নগদ পাওয়ার স্বপ্নের কথা। এক যুবক বিয়ে করেছে। নতুন বউ ঘরে এনেছে আজই। বাসর হবে। সারা বাড়িজুড়ে আনন্দ-উল্লাস। নানা নিয়ম-কানুন পালন শেষে বাসর ঘরে বর কনে উপস্থিত হলো। তাদের মধ্যে নানা কথা-বার্তার মধ্যে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে কনে বলতেই পারেন না। সকালে ঘুম থেকে যখন জেগেছে তখন তার নাকে একটা গন্ধ এসে লাগছে। একটু খেয়াল করে দেখে প্রস্রাবের গন্ধ। একটু নড়ে চড়ে দেখে বিছানাও ভেজা। একি তাহলে তার স্বামীই প্রস্রাব করেছে। নতুন বউ তাড়াতাড়ি করে বিছানা উঠিয়ে নিয়ে যায় বাথরুমে। ভাল করে ধুয়ে তা শুকাতে দেয়। এরপর সারাদিন ব্যস্ত থাকে নানাকাজে। আবার যথারীতি রাত হয়। ঘুমাতে যায় তারা। নতুন বর কনে। নানা কথা। যেন কথাই ফুরায় না। আজও কথার ফাঁকে কখন যে ঘুমিয়ে যায় তারা খেয়ালই করেনি। সকালে ঘুম থেকে জেগে নতুন বউ দেখতে পায় একি আজও একই গন্ধ। আজও বিছানা ভেজা। বুঝতে পারে ঘুমে প্রস্রাব করা তার স্বামীর অভ্যাস। এভাবে আরও ক’দিন যায়। প্রতিদিন সকালে ওঠে বউকে দৌড়াতে হয় ভেজা চাদর আর বিছানা নিয়ে। একরাতে স্ত্রী তার স্বামীকে বলে, আচ্ছা তুমি রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে দাও কেন? স্বামী বেচারা অসহায়। স্ত্রী’র কাছে বলতেই হচ্ছে তার কাহিনী। স্বামী বললেন, প্রতিরাতেই আমি ঘুমালে দেখতে পাই এক লোক আমার সামনে হাজির। তিনি আমাকে ১০০ টাকা দেখিয়ে বলেন, এুণই প্রস্রাব কর। আর প্রস্রাব করলেই পাবি ১০ হাজার টাকা। আর আমি টাকার লোভে প্রস্রাব করি। প্রস্রাব শেষে দেখি লোকটি নাই। আমি টাকাও পাই না। এ কথা শুনে অস্থির স্ত্রী। অনেক চিন্তা তার। কিভাবে টাকাটা লোকটির কাছ থেকে পাওয়া যাবে। অনেক ভেবে সে বের করে পন্থা। স্বামীকে বলে, ওগো তুমি এখন থেকে নগদ টাকা নিয়ে তারপর প্রস্রাব করবে। তুমি বিছানায় প্রস্রাব কর অসুবিধা নাই। আমরাতো টাকাটা পেলাম। স্বামী বেচারাও বলে, আজই আমি নগদ টাকা নেয়ার পরই প্রস্রাব করবো। আজ মনে আনন্দ নিয়েই স্বামী-স্ত্রী বিছানায় যায়। এক সময় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। প্রতিদিনের মতো আজও লোকটি তার সামনে আসে। ১০০ টাকা দেখিয়ে বলে প্রস্রাব কর। প্রস্রাব কর। তুই প্রস্রাব করলেই ১০ হাজার টাকা পাবি। আজ বেঁকে বসেছে বেচারা। বলে ওঠে না নগদ না দিলে আমি প্রস্রাব করবো না। লোকটি বলে বাহ! আজ দেখি বেচারা সেয়ানা হয়েছে। এটা কেন হলো। লোকটিও ভাবতে থাকে। একপর্যায়ে একটি গাছ সামনে এনে দাঁড় করিয়ে বলে, তুই এই গাছে উঠলেই নগদ ১০ হাজার টাকা পাবি। সেও নগদের আশায় তরতর করে গাছে উঠতে থাকে। গাছ বাইতে বাইতে একেবারে মাথায় গিয়ে ঠেকে। দেখে ওখানে একটি সাপ ফণা তুলে বসে আছে। ভয় পেয়ে যায়। নিচের দিকে তাকিয়ে লোকটির উদ্দেশে বলে, ভাই ওখানেতো সাপ। লোকটি নিচ থেকে বলে তাহলে নেমে আসো। আবার সে নিচের দিকে নামতে থাকে। অর্ধেকেরও বেশি নেমে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে একটি বাঘ হাঁ করে মুখ তুলে তার দিকে চেয়ে আছে। আবারও চিৎকার দিয়ে বলে, ভাই নিচেতো বাঘ। এবার লোকটি বলে পায়খানা করে দে। সঙ্গে সঙ্গে সে পায়খানা করে দেয়। পায়খানা গিয়ে পড়ে একেবারে বাঘের মুখে। এরপরই ঘুম ভেঙে যায় তার। নিজেকে প্রতিদিনের মতো বিছানায় দেখতে পায়। ওদিকে সকাল হয়ে গেছে। স্ত্রীও আজ খুশি মনে ঘুম থেকে জেগেছে। একি সর্বনাশ। প্রতিদিন প্রস্রাবের গন্ধ পেলেও আজতো বিষ্ঠার গন্ধ পাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে দেখে গোটা বিছানায় বিষ্ঠা। স্বামীকে বলে এ কি করলে তুমি? স্বামী বেচারা বলে- এটা নগদ নেয়ার খেসারত। তুমি বলেছিলে নগদ নিতে। আর নগদ নিতে গিয়েইতো এমনটি হয়েছে। আগে প্রস্রাব করতাম। এখন পায়খানা করেছি। নগদ নিতে গিয়ে খেসারত সমাজ মানুষ বারবার পাচ্ছে। তারপরও মনে রাখে না। সেই আগের মতোই কাজ করে। এই যে দেখুন না- ২৪শে এপ্রিল হয়ে যাওয়া ভোলা-৩ আসনের নির্বাচনের কথা। দেশবাসী, ভোলার ভোটাররা, রাজনীতিবিদ এবং নির্বাচন কমিশন সবাই দেখেছে নির্বাচনের হাল। দৃশ্যত কেন্দ্রগুলো ছিল অবরুদ্ধ। একটি দলের ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। হামলা, নির্যাতন চলেছে অব্যাহত। সবই হয়েছে নগদের জন্য। এ নগদ যে কত বিপদ ডেকে আনতে পারে তা সবারই জানা। পার্থক্য শুধু ক্ষমতায় থাকলে কেউ তা বুঝতে পারে না। সবাই শুধু নগদ চায়। যা হবার পরে হবে। আর হয়ও তা। সেই নতুন বর-এর মতো নগদ নিতে গিয়ে এক সময় বিষ্ঠায় বিছানা সয়লাব হয়ে যায়। তখন আর কিছুই করার থাকে না।
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×