বিদেশী সংস্থার পরামর্শে রেলের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। ২০১২ সালে রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, ভাড়া বাড়ানো হলেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে দিন দিন রেলের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন উভয়ই কমছে। রেলওয়ের উন্নয়নে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন এবং রেল বাজেট বৃদ্ধি পেলেও যাত্রীসাধারণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না রেলওয়ে।
এক সময় ছিল যখন রেলওয়েকে অবহেলা করে সড়ক যোগাযোগকেই মুখ্য করে তোলা হয়। পৃথক রেল মন্ত্রণালয় তুলে দিয়ে রেলওয়েকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অঙ্গীভূত করা হয়। ফলে রেল হয়ে পড়ে লোকসানের আস্তানা। কিন্তু পরিবেশ দূষণরোধ, কম খরচে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের স্বার্থে রেল যোগাযোগ উন্নয়ন ও বাড়ানোর তাগিদ উঠতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে।
শেষ পর্যন্ত সরকার রেল নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করে পুরনো রেলপথ চালুর পাশাপাশি নতুন রেলপথ তৈরির কাজ হাতে নেয়। রেলস্টেশন, রেল লাইন সংস্কার, প্লাটফর্ম উন্নয়ন, নতুন বগি ও ইঞ্জিন আমদানি করা হয়। সরকারের এই পদক্ষেপে আশার আলো দেখে দেশের মানুষ। রেলের লোকসান পোষাতে ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়। মানুষ আশা করেছিল ভাড়া বৃদ্ধির সাথে সাথে রেল সেবার মানও বাড়ানো হবে। কিন্তু যাত্রীদের সেই আশা পূরণ করতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। এখন টাইম সিডিউল ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে না। পাশাপাশি রয়েছে রেল ও স্টেশনে যাত্রী সেবার অনুন্নত মান। মানুষ একটু স্বস্তিতে রেল ভ্রমণ করতে চাইলেও বিনা টিকিট ও বিনা সিটের যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়, হকার, ভিক্ষুক, হিজড়াদের উৎপাতে তা আর হয়ে ওঠে না। তারপর রয়েছে অপরিষ্কার ও ভাঙ্গাচোরা সিট, বাথরুমগুলোর দুরবস্থা। তাই ব্যয় বাড়লেও রেল সেবায় মানুষ এখনও খুশি নয়। তাই এর মধ্যে যদি সরকার রেল ভাড়া বাড়ায় তা হলে তা যাত্রীদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দেখা দেবে। মানুষ রেল বিমুখও হয়ে পড়তে পারে।
যাই হোক, রেলখাত নিয়ে সরকারের আন্তরিকতা সে আশার সৃষ্টি করেছে তা যাতে বাস্তবায়ন হতে পারে সরকারের উচিৎ সেই বিষয়টি মাথায় রাখা।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৬