somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণ যে ভাবে কমানো সম্ভব…(আমার নিজস্ব মতামত)।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি মুহূর্ত; সামান্য সময়ের জন্য ভাল লাগা, যা একটি মেয়ের ফুলের মত সুন্দর জীবনটিকে নিমেষেই করে দিতে পারে ধংশ। একজন ধর্ষকের সামান্য সময়ের কর্মকাণ্ডের জন্য একজন মেয়ের জীবনে নেমে আসতে পারে কঠিন দুর্যোগ। এই অবস্থা অনেকেই সামাল দিতে পারে, আবার অনেকেই আত্মহত্যার শরণাপন্ন হয়; কেও আবার ধর্ষক দ্বারায় হত্যা হন। ভিকটিম এবং তার পরিবারে নেমে আসে অভিশাপের ছায়া। ধর্ষণকারী যেন এক মহান কাজ করেছেন এই ভঙ্গিতে হেঁটে বেড়ান। কারো কিছু বলার সাহস নেই কারণ ধর্ষক যে এলাকার চেয়ারম্যানের ছেলে। বিচার চাইতে হলে যে তার বাপের কাছেই চাইতে হবে। ধর্ষক ছেলের গমচোর চেয়ারম্যান বাবা আর কি বিচার করবেন? ছেলেকে কিছু না বলে উল্টা মেয়ের ঘাড়েই দোষ চাপান। গমচোরের নানান অভিযোগ- মেয়ে পর্দা করে চলে না, মেয়ের চলা ভাল না; মেয়ের বলা ভাল না; মেয়ে উগ্র স্বভাবের; মেয়ে যার তার সাথে কথা বলে ব্লা ব্লা ব্লা আরো অনেক। একবার ভেবে দেখুন যে মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে তার বয়স ১২ বছর; সাদা পাখির মতো মন তার, উচ্ছল, চঞ্চল, সর্বদা হাসি খুশি। যে কিনা কেবল তার শারীরিক পরিবর্তন গুলো কেবল বুঝতে শিখেছে। সেই ছোট্ট মেয়েটিকে কিভাবে চেয়ারম্যানের দেওয়া অন্যায় অভিযোগ গুলোতে অভিযুক্ত করা যাবে? হাই রে সমাজ! তার পরেও সব দোষ মেয়ের। বিচারের রায় দেওয়া হয়, গ্রাম থেকে মেয়ের পরিবারকে বিতাড়ন কিংবা সামান্য কিছু টাকা। শেষমেশ মেয়েটা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে। শেষ হয়ে যায় ফুলের মতন একটি মেয়ের জীবন। স্থানীয় পত্রিকার শেষের পাতার এক কোনায় ছাপানো হয় যে খবর। ধর্ষক তার বন্ধুদের ডেকে দেখায় সে খবর, করন তার নাম এবং সাহসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ যে পেপারে উঠেছে। কিছুদিন এটা নিয়ে আলোচনা হয় তারপর সবাই সেটা ভুলে যায়। থানা পুলিশ হলেও আস্তে আস্তে সেই ফাইলটা নিচে চলে যায়। বিচার আর হয়ে উঠেনা। এভাবেই একটি ধর্ষণ সহজেই মাটি চাপা পড়ে যায়। ধর্ষক পেয়ে যায় অনেক বড় প্রশ্রয়।
কিন্তু আর কত দিন??? আর কত মেয়ে এভাবে নিজকে বলি দিবে??? আর কত কাল এইসব নরপশু ধর্ষণ করার পরও সমাজে বুক ফুলিয়ে হেঁটে বেড়াবে??? আর কত কাল ধর্ষিত হবার এম এম এস মোবাইল থেকে মোবাইলে ঘুরবে??? জবাব চাই।

ধর্ষণ কিভাবে কমানো যাবে সে সম্পর্কে আমার নিজস্ব কিছু মতামত নিচে তুলে ধরলাম।
১. শাস্তিঃ আমি মনে করি যে ধর্ষণ কমাতে বা রোধ করতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা পালন করবে ধর্ষণকারীকে শাস্তি প্রদান করলে। দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কাজ সমাপ্ত করতে হবে। ধর্ষণকারীকে যে শাস্তি দেওয়া হবে তা প্রকাশ্যে, সবার সামনে। সবাই দেখবে আর শঙ্কিত হবে। যখন দেখবে রাস্তার মোড়ে প্রকাশ্য একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে আর তাকে ঘিরে হাজারও জনতার ভীড়, টেলিভিশন চ্যানেলে লাইভ টেলিকাস্ট করা হচ্ছে, সারা দেশের মানুষ সেই দৃশ্য দেখছে। কোন ধর্ষক যদি সেই দৃশ্য একবার দেখে তাহলে এই বীভৎস কাজটি করার আগে একটি বারের জন্য হলেও তার হাতটি কেঁপে উঠবে। তার মনে হবে আমারও যদি এ অবস্থা হয়?

২. ধর্মীয় অনুশাসনঃ আমরা যে ধর্মেরই অনুসারী হই না কেন সেটা মেনে চলার চেষ্টা করি। কারন কোন ধর্মেই কোন প্রকার অন্যায়কে সমরথন করা হয় না। তাই আসুন আমরা ধর্মীয় অনুশাসন গুলো মেনে চলি।

৩. শালীনতাঃ আসুন নারী পুরুষ নির্বিশেষে আমরা সবাই শালীন ভাবে জীবন যাপন করি। অশ্লীল কোন কিছু ভাল নয়। আসুন আমরা সবাই অশ্লীলতাকে না বলি। আধুনিকতার নামে অশ্লীলতাকে বরণ না করে বর্জন করি।

৪. আত্মরক্ষার কৌশল রপ্ত করাঃ মেয়েদের আত্মরক্ষার বিভিন্ন পদ্ধতি শেখা প্রয়োজন। এতে প্রয়োজনের সময় সে নিজকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে। এতে সে ধর্ষককে প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। এছাড়াও আত্মরক্ষা মূলক বিভিন্ন বস্তু যেমন- স্প্রে, মরিচের গুড়া কাছে রাখা প্রয়োজন।

৫. নির্ভরশীল মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনঃ কারো সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার আগে নারীদের তার উপর পূর্ণ নির্ভরশীলতা অর্জন করা উচিত। প্রিয় মানুষ দ্বারায় ধর্ষিত হবার সংখ্যা অনেক। একটি মেয়ে যে মানুষটিকে নিজের প্রানের চেয়ে ভালবাসে যদি সে সেই মানুষটি দ্বারায় ধর্ষিত হয় তাহলে দুঃখটা অনেক বেশি হয়। তাই আপনি তার সাথেই সম্পর্ক স্থাপন করবেন যাকে আপনি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেন।

৬. অভিভাবকদের সচেতনতাঃ আপনার সন্তান কোথায় যায় কি করে আপনি কি তার খোঁজ রাখেন? একটি ছেলেকে সুপথে পরিচালিত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করে তার পরিবার, তার অভিভাবক। আসুন আমরা আমাদের প্রচণ্ড ব্যাস্ততার মধ্যেও খেয়াল রাখি আমাদের সন্তানেরা কোথাই যাচ্ছে কি করছে?

৭. পর্নোমুভি এবং সাইট গুলি বন্ধ করাঃ পর্নো মুভি দেখে একজন ছেলে সহজেই উত্তেজিত হয়ে যেতে পারে। তখন সে তার উত্তেজনা কমানোর জন্য এই বীভৎস কাজটি করার জন্য নরপশু রুপ ধারন করতে পারে। আবার এসব ক্লিপ দেখে একজন ধর্ষণ মনভাবাপন্ন মানুষ খুব সহজেই ধর্ষণের কৌশল আয়ত্ত করতে পারে।


উপরে যা লিখেছি তা একান্ত আমার নিজস্ব মতামত। আমার ধরনাতে ভূল থাকতেই পারে। আশাকরি আপনারা সেটা সংশোধন করবেন। আরো যদি কিছু যোগ করা লাগে তাহলে প্লিজ জানাবেন। আসুন আমরা একযোগে ধর্ষণের বিরুধে যুদ্ধ ঘোষণা করি।
ধন্যবাদ।

২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×