somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার অজয়ে সাকা হাফং এর জয়ি কাহিনি( রুমা থেকে থানচি)

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা অনেক দিনের প্লান থানচি দিয়ে ডুকে সাকা দেখে তারপর সাতভাইখুম , আমিয়াখুম, নাফাখুম দেখে আবার রেমাক্রি দিয়ে থানচি চলে আসব।
যেই ভাবা সেই কাজ আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে। প্রথমে ৮ জন নিয়ে যাত্রা শুরু করার কথা থাকলে পরে তা ১৩ জনের দলে পরিনত হয়।সবচাইতে মজার ব্যাপার হল আমাদের দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের বয়স ১৬ আর সবচাইতে অধিক বয়স ছিল ৩৪ :)
যাইহোক দেখতে দেখতে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত চলেই আসল ( ঈদের দিন)। এক এক করে আমরা সবাই সায়দাবাদ চলে আসলাম ৯ জনের টিকিট ছিল সৌদিয়াতে, ১ জন ঈগলে, দুইজন শ্যামলিতে আর একজন চিটাগাং থেকে উঠবে।রাত ১১.১৫ যথা সময় গারি ছেরে দিল। কিন্তু আমাদের একজন (উইসুফ ভাই) না আসায় তাকে ছারাই আমরা চলে যাই আমরা এক এক করে সবাই ৬:৩০ এর মধ্যে বান্দরবন পৌছে গেলাম।যেহেতু থানচি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে তাই আমরা থানচি দিয়ে না যাবার সিধান্ত নেই। হালকা নাস্তা সেরে আমরা চান্দের গারি ভাড়া করলাম রুমা বাজার যাবার জন্য, রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকায় কেও রুমা বাজার পর্যন্ত যেতে রাজি হচ্ছিল না। অবশেষে একজন যেতে রাজি হল আমরা তাকে নিয়ে রওনা দিলাম। ১০:৩০ নাগাদ আমরা রুমা চলে আসলাম।আমাদের গাইড আগে থেকেই ঠিক ছিল, তাই আমরা গারি থেকে নামেই রুমা গাইড বেলাল এর সাথে দেখা করলাম।তারপর আমি, রেজওয়ান ভাই,সাজু ভাই, সায়েম ভাই আর রাফিদ নাস্তা করতে বসলাম আর বাকিরা ট্রেকিং করার জন্য হালকা সেন্ডেল, পলিথিন কিনল। ওইদিকে বেলাল আমাদের গাইড আমাদের ৭ দিনের জন্য তেল, ডাল ও মসলা কিনল।সব জামেলা শেষ এখন আবার আরেকটা চান্দের গারি করতে হবে। আমরা লাইন ম্যান মিজান ভাইএর সাথে কথা বলে গারি ঠিক করলাম।তারপর আরমি ক্যাম্প এ গেলাম সবাই, পারমিশন নিয়ে এখন সবাই গাড়িতে চেপে বসলাম। আমাদের রুমা থেকে ১১ কি:মি নিয়ে যাবে চান্দের গাড়ি। ৪০ মিনিট পর আমরা গাড়ি থেকে নেমে শুরু করলাম ট্রেকিং। তিন ঘন্টা ট্রেকিং করার পর আমরা সবাই চলে গেলাম বগা লেক। আমাদের টিমের ৫ জনের কারই আগে ট্রেকিং করার অবিগ্যতা না থাকায় তাদের নিয়া গভির ভাবে লক্ষ্যে রাখতে থাকি। আমার ধারনা ছিল যে বগা লেক যাবার পর ইচ্ছা শক্তি হারাবে না সেই আমাদের সাথে যেতে পারবে। বগা লেক যাবার পর শিপু আর যেতে পারবে না, তাই ওকে সিয়াম দিদির কাছে রেখেই আমরা একটু রেস্ট নিয়ে সামনে আগাব আমাদের ইচ্ছা আজ ই সুংসাং পারায় চলে যাব।আমরা বগা লেক এ আর্মি ক্যাম্প থেকে সব কাজ শেষ করি দুপুর ৩:০০ টার মধ্যে। তার পর আবার হাটা। দার্জিলিং পারা পার হবার পর সূর্য ডুবতে শুরু করল। আমরা সবাই নিজ নিজ টর্চ লাইট বের করে নিলাম। সবাই আমরা লাইটের আলোতে হাটতে লাগলাম সন্ধা ৭:৩০ আমরা কেওকারাডাং গেলাম। আমাদের কারও শরিরে আর শক্তি নাই যে আর এগুব। কিন্তু রেজওয়ান ভাই এর খুব ইচ্ছা ছিল যে আমরা সুংসাং পারাতে থাকি। সবার কথা চিন্তা করে আমরা কেওকারাডং এ থাকলাম। কেওকারাডং এ এত শীতল হাওয়া বইতে লাগলে যেন শরিরে পৌষের কাপন তুলছে। লালার কটেজে উঠেছিলাম আমরা। আমরা রাতে খাবার এর অর্ডার করে হাত মুখ ধুয়ে কম্বল জরিয়ে কেওকারাডাং এর চুরায় উঠলাম।চুরায় উঠে তো দেখি অবস্থা আর খারাপ হার গুলি সমান তালে কাপছে।অল্পকিছুক্ষন থাকার পরে রুমে চলে আসলাম। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে চলে গেলাম।



ডে ১ রুট : বান্দরবন - রুমা-বগা লেক- দার্জিলিং পারা- কেওকারাডং

ডে ০২:
আজ আমাদের অনেক পথ পারি দিতে হবে। সকাল ৬:৩০ এর মধ্যে সবাই বের হয়ে পরলাম একটা করে ডিম সিদ্দ আর পাওরুটি খেয়ে। সাজু ভাই, সায়েম ভাই আর রেজওয়ান ভাই তারা ডাবল ফলস এ গিয়ে নাস্তা করবে তাই তারা নাস্তা না করেই হাটা দিল। আমরা সকাল ৮:০০ দিকে সুংসাং পারাতে গিয়ে পাওরুটি আর চা খাই সাথে একটু জিরিয়েও নিলাম। আবার হাটা শুরু ১:৩০ ঘন্টা হাটার পর ডাবল ফলস ( ত্লাবং) এ পৌছালাম। মাঝে একটা ঝিরি থেকে সবাই পানি খেয়ে নিই। অনেক টা সময় ডাবল ফলস ( ত্লাবং) থাকি। তারপর গোসল টা সেরে নিই ত্লাবং এর জলে। ত্লাবং থেকে উঠে আমরা যাব থাইকং পারা হয়ে লুমওয়াল পারা। থাইকং থেকে লুমওয়াল পারায় যেতে জিবন টা শেষ হয়ে যাবার মত অবস্থা। থাইকং থেকে একটু নামার পর আমরা এক্টু ভুল রাস্তায় চলে যাই, পুরা খারা একটা পাহার নামার পর ভুলের কারনে আবার সেই পাহার ভেয়ে উঠা কি জে পেরা দায়ক তখন বুজলাম। একটা জুম ঘরে একটু আশ্রয় নেই, প্রচন্ড গরমে সবার অবস্থা খারাপ তার মধ্যে আবার কার কাছে পানি নেই, চোখের সামনে কোন ঝিরি ও নাই। ঝুম ঘরে একটা পানির পাত্র পাওয়া গেলে যদিও পানিটা খুব একটা ভাল ছিল না, তাও সবাই সেই পানি পান করে হাটা শুরু করলাম।আবার একটা খারা পাহার বেয়ে নিচে নামতে হবে। নিচে নেমেই আমরা একটা ঝিরি পেলাম।
সবাই ক্লান্তি কমানোর জন্য ঝিরিতে একটা গোসল দিয়ে নিলাম, গোসল দেয়ার পর শরিরে অনেক আরাম অনুভুত হতে লাগল।আবার ব্যাগ গুছিয়ে হাটা শুরু করলাম, এইবার এমন খারা পাহার যেন শেষ না হয়েও হচ্ছে না।অবশেষে লুমওয়াল পারায় চলে আসলাম ততক্ষনে প্রায় সন্ধা। আমাদের তামলো পারায় রাতে থাকার কথা থাকলেও আমরা লুমওয়াল পারাতেই থাকব।শরির আর সায় দিচ্ছে না তাই তামলো পারায় থাকার প্লান বাদ।আমাদের গাইড বেলাল লুমওয়াল পারায় কারবারির ঘরে থাকার ব্যাবস্থা করল।
রাতে খাবার জন্য মুরগি আর ঝুমের চাল ব্যাবস্থা করা হল। বেলাল রান্না করতে বসে গেল কিছুক্ষণ পর কারবারি মুরগি আনলে আমি আর বেলাল মুরগি জবাই করি।ততক্ষনে সবাই হাত মুখ ধুয়ে খোশ গল্পে মজেছে।আমরা মাত্র দুই দিনে একে অন্যের সাথে দারুন ভাবে মিশে গেলাম। নিলয় আর আনাস ছিল সবার ছোট তাই ওদের প্রতি সবার খেয়াল টা একটু বেশিই থাকত। আমাদের গ্রুপ এর মোস্ট ইন্টারেস্টিং পারসন ছিল দীন ইসলাম যাকে দীলু বলেই ডাকে ওর সব ছোট ভাই আর বন্দুরা।আনাস, প্রভাত আর নিলয় এরা মুলত দীনের জন্যই মিশন সাকা হাফং এ আসতে পেরেছে। দীন সহজে সাকা হাফং বলতে পারত না সে সাকা কে সামাং হামাং বলে জানতো আর আলি কদম কে বলত আলি মদন :)
এই সব নিয়া ব্যাচারা রেজওয়ান ভাই থেকে শুরু করে সবার কাছ থেকে অনেক প্যারা খাইসে কিন্তু কখনই দীন বিরক্ত হত না। নিলয় কে বেশি যালাইত রেজওয়ান ভাই। লুমওয়াল পারাতে রাতটা বেশ হাসি ঠাট্টায় কেটে গেল। অতপর সবাই খাবার খেয়ে নিলাম।খাবার পর আমি আর সাজু ভাই চা বানাতে গেলাম। চা খেয়ে সবাই ঘুমাতে গেলাম।
ডে ০২ রুট: কেওকারাডং-পাসিংপারা-সুংসাং পারা- ডাবল ফলস- থাইকং পারা- লুমওয়াল পারা।

ডে ০৩: খুব সকাল সকাল সবাই ঘুম থেকে উঠে সবাই যে যার মত প্রক্রিতির ডাকে সারা দিতে খোলা আকাশের নিচে বসে গেল। সবাই ফ্রেশ হতে ডাল আর ভাত খেয়ে ব্যাগ নিয়ে রেডি হলাম হাটার জন্য।আমরা মাজে তামলো পারা পার হয়ে একটা ঝিরিতে নেমে আসলাম। পাহারিদের বাসায় এর নাম Rathangva বা বাশের ঝিরি। এই ঝিরি থেকে পানি খেয়ে আর সাথের বোতল বরে নিলাম। মাজে কিছু ছবিও তোলা হল। এবার ঝিরি থেকে খারা পাহার উঠে গেছে উপরের দিকে খারা পাহার পার হবার পর অল্প কিছু দুর হেটেই পেয়ে গেলাম থান্দুই পারা। এই পারাতে সবাই গিয়ে একটু জিরিয়ে নিলাম।এই পারাটাকে দেখে মনে হলে এরা খুব গান পাগল। আমরা যেই ঘরটাতে রেস্ট নিলাম তাদের ঘরে পিয়ানো, বাশি আরো অনেক বাদ্যযন্ত্র দেখতে পেলাম। তাদের ঘরের দরজার সামনেই নিজাম ভাই এর বাংলা ট্রেকার এর ছবি জুলছে, দেখে খুব ভালই লাগল। এক পাহারি মেয়ে পিয়ানোতে শুর তুলল তার সাথে গান ও ধরল। বেশকিছুক্ষন উপভোগ করলাম মেয়েটির গান বেশ লাগল গানটা। অন্য দিকে দীন ইসলাম দীলু গিটার নিয়ে গান গাওয়ার চেস্টা করলেন সাথে নিলয় আর প্রভাত গান ধরলো। বেশ ধারুন এক সময় কাটালাম।অনেক হয়েছে যেতে হবে বহু দুর তাই সবাই আবার কাদে ব্যাগ হাতে লাঠি নিয়ে হাটা শুরু করলাম।থান্দুই পারার পর থেকেই জোকের উতপাত বেরে গেলে সবাই কম বেশি এর ধারা রক্ত জরালো। খারা কয়েকটা পাহার শেষে এবার এক্টু জোক চেক দেয়ার পালা। বেশ কয়েকটা জোক ছারালাম পা থেকে। জোকের কামর থেকে জোক চেক দেয়া আরো বেশি বিরক্ত কর।কিছুক্ষন পরে দেখি নিলয় এর সামনে অনেক রক্ত, বুজতে আর বাকি থাকলো না। ওকে জায়গা মত কামরে দিসে জোক মামু। আবার হাটা শুরু করলাম কিছুক্ষণ পরেই পাহার চুরা থেকে রেমাক্রি খাল দেখতে পেলাম, ভরা থইথই পানিতে রেমাক্রি যেন আরো সুন্দর লাগছিল। এই চোখ জুরিয়ে এল রেমাক্রি এর এমন রুপ দেখে। তখন মোনে হল যদি নিষেধাজ্ঞার ভয়ে ঘরের কোনে পরে থাকতাম তবে হইতো রেমাক্রির এমন রুপ আমার কাছে অধরাই থেকে যেত। পাহার চুরা থেকে নেমে ব্যাগ রেখেই নেমে গেলাম রেমাক্রির ভরা যৌবনে আমার গা বাসাতে। পানিতে নামার পর নিজেকে এক বদ্ধ পাগল মোনে হচ্ছিল। অতপর লাফালাফি জাপাজাপি শেষে আমরা সিদ্বান্ত নিলাম আমরা নয়াচরন পারাতেই থাকব যদিও থাকার কথা ছিল নেফিও পারাতে। বিকাল ৪:০০ নাগাত আমরা নয়াচরন পারায় চলে গেলাম। গাইড বেলাল কারবারির ঘরে থাকার ব্যাবস্থা করেছে। তিন দিন ধরে অনেকেই বারিতে যোগাযোগ করতে পারে নাই, যেই সুনলো এই পারার একটা ঘর থেকে কথা বলা যায় ফোনে, ওই ঘরটার একটা কোনে মোবাইলে রবির নেট পাওয়া যায়। আমাদের গ্রুপ এর দুই জন যেই পারাতেই যেত তাদের মেইন কাজ ভাই নেটওয়ার্ক আসে, নেট পাব কই, বাসায় কথা বলা লাগব ইত্যাদি। এই দুই জন আর কেও না একজন হল জাহিরুল ইসলাম সজিব আরেক জন হল প্রভাত। যতারিতি তারা কথা বলতে চলে গেলে। প্রভাত এর বাসা থেকে খবর জানতে পারল ওর খালু মারা গেছে গতকাল, প্রভাত এর মা ফোনের ওপাস থেকে কান্না করছে আর প্রভাত কে চলে আসতে বলল। প্রভাত বুজতে পারলো এখন আর ব্যাক করা সম্বব না। এখন ওকে ব্যাক করতে হলেও তিন দিন লাগবে। খুব সান্ত বাবে সব কিছু সামলে নিল ও পুরোটা টুরে বুজতেই দিল না ওর জে এত সমস্যা।জহির আর প্রভাতের কথা শেষ হলে এই দলে আমি আনাস, রেজওয়ান ভাই, ম্যাকগাইভার সাজু ভাই যোগ দেই এবং বাসার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করি।
কথা বলার আগে বুস্টার সাজু আর আমাদের আরেক জন গ্রুপ ম্যাট বিল্লাল যে কিনা আমাদের গাইড বেলালের সাথে সমান তালে হাটে। তারা দুইজন পারার শিশুদের সাথে ফুটবল খেলে দুইটা গোল দিতে সক্ষম হয়।এত হাটা হাটির পর এত তেল তাদের ছিল যে তারা ফুটবল খেলতেও নেম গেল :)। যাথারিতি গাইড বেলাল আমাদের রাতের খাবার রেডি করে ফেলেছে। ওই দিন খুব তারা তারি রাতের খাবার সেরে নেই, যেন তারাতারি ঘুমাতে পারি। আগামি কাল আমাদের সাকা হাফং এর চুরায় বিজয় নিশান উরাতে হবে তারপর আবার ব্যাক করতে হবে নয়াচরন পারাতে, এইখান থেকে ব্যাগ নিয়ে বোলোং পারায় যেতে হবে।যেই কথা সেই কাজ তারা তারি খাবার শেষ করে সবাই ঘুমিয়ে পরলাম।

ডে ০৩ রুট: লুমওয়াল পারা-থান্দুই পারা-নয়াচরন পারা

ডে ০৪ঃ
ভোর ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে একটু আলো ফুটতেই সকাল ৬:০০ বেরিয়ে পরলাম, আনাস কে ঘরে রেখে বেরিয়ে পরলাম,গতদিন লুমওয়াল পারা থেকে আসার সময় পায়ে ব্যাথা পায় তাই ওকে নিয়ে কোন রিস্ক নিলাম না কারন এখনো অনেক পথ পারি দিতে হবে। আমরা ১০ জন বের হলাম কিছু পথ যাবার পর সায়েম ভাই ও আর যাবে না কারন উনি এর আগেও সাকার চুরায় উঠেন। সায়েম ভাই এর শরির এখন এতটাই বারি হয়ে গেসে উনি আমাদের সাথে এক রেসে থাকতে পারেন না। যখন সায়েম ভাই বলল যাবে না তখন খুশিই হইসিলাম ;)। যাইহোক এইবার খারা একটা ডালু নেমেই আমরা রেমাক্রির পারে চলে আসলাম। আমাদের আজ ই প্রথম রেমাক্রি পার হতে হবে। একে তো ভয়াবহ স্রোত তার উপর আবার পিচ্ছিল পাথর এর মধ্যে আবার সাতার জানে না রাফিদ, প্রবাত আর সাজু ভাই। আস্তে ধিরে আল্লাহর নামে নেমে পরলাম। একে অন্যের হাত ধরে সেতু তৈরি করলাম।আস্তে আস্তে রেমাক্রি পার হয়ে হাজরায় পারাতে পৌছালাম। হাজরায় পারা থেকে রেমাক্রির পার ধরে কিছু পথ আগানোর পর আবার খারা পাহার আর ঝিরি ধরে হাটা শুরু হাটতে হাটতে একটা ঝিরিতে জিরিয়ে নিলাম। আরো কিছুক্ষণ হাটার পর আমরা পৌছে গেলাম নেফিও পারাতে।নেফিও পারাতে পেয়ারা আর আক্ষ খেলাম। এবার গন্তব্যে আমার অজয়ে সাকা। সবাই হাটা দিলাম সাকার দিকে আমরা যেই গাইড নিয়ে সাকা যাচ্ছিলাম সে রাস্তা না চেনায় আমরা আরেকটা গাইড নেই, সেই গাইড দুইজনের আরেকটা টিম নিয়ে নামার পথেই আমরা তাকে নিয়ে আমাদের গন্তব্যে রওনা দেই। নেফিওর জংগল টা অনেক ভুতুড়ে আমরা অনেক ভাল্লুকের পায়ের ছাপ দেখতে পাই, আমরা উপরের দিকে উঠতে থাকলাম, রেজওয়ান ভাই ততক্ষনে নেফিও ঝরনার কয়েকটা ছবি তুলে নিল।সাকার চুরায় উঠার ঠিক মিনিট দশেক আগে জহিরুল আরে যাবে না বলে বসে পরল, পরে সবাই অকে বুজালো সাকা দেখা যাচ্ছে এত কাছে এসে না জাওয়াটা বোকামি হবে। হটাত দেখি সাজু ভাইয়ে লিক করে দিসে জোক মামু। অতপর জহিরকে নিয়ে সবাই হাটা দিলাম। সবার আগে দীন ইসলাম আর আমি সাকায় উঠে চিল্লাইতে লাগলাম। হে অবশেষে আমি জয় করলাম আমার অজয়ে সাকা হাফং যাকে মোদক মোয়াল বলে থাকে।
আমরা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:১০ মিনিটে সাকার চুরায় সামিট করি। একটা মাম পানির বোতলে আমাদের দীন ইসলাম এর দেয়া নাম সামাং হামাং লিখে সবার নাম লিখে বোতল বন্ধি করে সাকার গর্তে রাখি।সাকাতে আমরা ২০ মিনিট অবস্থান করি, গ্রুপ ফটো তুলে আবার রওনা দেই। নামার সময় আমি বিল্লাল, সাজু আর জহির দৌরে নামতে থাকি জোক থেকে বাচার জন্য, অল্প কিছুটা নামার পর প্রভাত আমাদের থামতে বলে রেজওয়ান ভাই এর পায়ের রগে টান খাইসে, আমরা এত সামনে চলে আসছিলাম যে তাই আর পেছনে ব্যাক করতে পারলাম না, আবার আমরা দৌরাতে লাগলাম। ৩০ মিনিটের মধ্যে আমরা নিচে চলে আসলাম।আমরা চার জন নেফিও পারাতে একটা মাচাতে বসলাম আস্তে আস্তে সবাই চলে আসল।
সাকায় উঠতে গিয়ে বেশি সমস্যায় পরেছিল রাফিদ হঠাত ওর স্বাস নিতে কস্ট হচ্ছিল, পরে সায়েম ভাই এর দেয়া একটা ওষুধ নেয়ার পর ও একটু স্বাভাবিক হয়, আর জহির এর অবস্থা তো আরো খারাপ ওর আর পা চলে না। মানুসিক ভাবে ও দূর্বল হয়ে পরেছিল।সবাই এক সাথে হয়ে আবার হাটা শুরু করলাম। আজ আমাদের অনেক পথ হাটা লাগবে।আমরা দুপুর ২:০০ টার দিকে হাজরায় পারায় আসি, একে একে সবাই রেমাক্রি পার হয়ে ব্যাগ রেখে এবার সবাই জল কেলিতে মাতি। সবার মুখে শুধু আজ ব্লু পানি পানি সানি সানি গান ;) আমি, সাজু ভাই শুরু করি এক এক করে সবাই আসে। রেজওয়ান ভাই দুর থেকে তা ক্যামেরা বন্দি করেন।ও হে আমাদের সাজু ভাই কোন ছবি তোলে না, ওনার ছবি কেও তুললে তার মোন খারাপ হয়ে যায়, একবার সে আমাদের ছেরে চলে যেতেও চায় তার ছবি তোলার কারনে। কিন্তু সে সবার ছবি ভিডিও করে দিতেন নিজের মোবাইল দিয়ে। পুরাই আজব মাল মাইরি।যাই হোক শান্তিময় জলকেলি শেষে আবার নয়াচরন পারার দিকে হাটা দিলাম।
আমরা দুপুর ৩:৩০ নাগাত নয়াচরন পারায় চলে আসি। আম গাইড বেলাল আমাদের জন্য ভাত আর ডাল রান্না করে রাখায় আমরা তা খেয়ে বোলোং পারার দিকে রওনা দিব। নয়াচরন পারায় আসতে না আসতেই আকাশে মেঘের ঘর্যন, মেঘ আসার আগেই আমাদের বোলোং পারায় যেতে হবে, তাই তারাতারি আহার শেষে দিলাম হাটা। নয়াচরন পারা থেকে নেমে রেমাক্রি ধরে কিছু পথ আগালাম তারপর খারা এক পাহারে উঠতেই হালকা বৃষ্টি শুরু হল। আমরা কোনরকমে একটা ঝুম ঘরে আশ্রয় নিলাম। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই বৃষ্টি শেষ হলে আমরা আবার হাটা শুরু করি। অল্প বৃষ্টি হওয়াতে বেচে গেলাম রাস্তা তেমন কাদা না হওয়াতে হাটতে তেমন বেগ পেতে হল না। ঝুম ঘর থেকে সোজা খারা পাহার উঠে আবার একটু নেমে একটা ঝিরি তারপর আবার খারা পাহার, এই বার সবার অবস্থা খারাপ হয়ে গেল পিচ্ছিল পাহার বেয়ে উপরে উঠতে। একটু
বৃষ্টি হয়াতে জোক গুলো মাথা নারা চারা দিয়ে উঠলো, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ জোকের খুব পছন্দের, আমাদের রক্ত চোসার জন্য ওরা আরো ক্ষেপাটে হয়ে গেছে।
কাওকে জোকে কামরালেই সাজু ভাই সাজু ভাই বলে চিল্লাত, কারন তার হাতে একটা কাচি (সিজার) ছিল যা দিয়ে জোক কে গেচাং করে দিত ঠিক মাজ বরাবর দিয়ে।তখন জোক আর কামরে থাকতে পারতো না।নানা চরাই উতরাই পেরিয়ে সন্ধা ৬:৩০ আমরা চলে আসলাম বোলোং পারাতে।বোলোং পারাতে আসার সাথে সাথে আবার গুরি গুরি বৃষ্টি শুরু হল। আমরা যেই ঘর টাতে থাকব তার সামনে দারুন এক বারান্দা ছিল, আমরা সেখানে বসেই সবাই আড্ডা দিচ্ছিলাম।পরে আস্তে আস্তে এক এক করে সবাই ফ্রেশ হয়ে নিল। সাজু ভাই শুধু বৃষ্টি তে বেঝার জন্য বাহিরে ছিল। আমি, সায়েম ভাই আর আনাস ঘরের জানলা দিয়ে চাদ আর মেঘের লুকুচুরি খেলা দেখছিলাম। বৃষ্টি শেষ আমরা ক্যামেরা নিয়ে বের হয় ভরাট চাদের ছবি তুলতে।আমাদের রাতের খাবার রেডি হয়ে গেছে তাই খাবার জন্য ডাক আসল তাই আবার রুমে চলে আসলাম।খাবার দাবার শেষে এখন ঘুমাতে যাব। সকালে আমরা মাথবারা খুম হয়ে সাতভাইখুম, নাইক্ষং মুখ দেখে ভেলায় চরে আমিয়াখুম যাব তাই আমাদের বেলা লাগবে।বেলা বানানোর জন্য আমাদের গাইড বেলাল বোলোং পারা থেকে তিন জন লোক ঠিক করল ওরা সকাল ৬:০০ টায় বেলা বানাতে চলে যাবে। এখন আমাদের বিছানা রেডী করলাম ঘুমানোর জন্য। রাতের খাবারে এত জাল ছিল বুক জলছিল, একটু পানি খেয়ে ঘুমাতে গেলাম।রেজওয়ান ভাই নাক ডাকায় ছিল সবার সেরা তারপর জহির আর বেলাল ( গাইড না আমাদের টিম মেম্বার বেলাল) তারা তাদের কাজ শুরু করে দিল, আর বুস্টার সাজু কানে হেডফোন গুজে মুভি দেখতে লাগল।আস্তে আস্তে এক এক করে সবাই ঘুমিয়ে পরলাম
ডে ০৪ রুট: নয়াচরন পারা- হাজরায় পারা- নেফিও পারা- আবার নয়াচরন পারায় ব্যাক করে - বোলোং পারা।
ডে ০৫:
খুব সকাল সকাল সবাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা না করেই আজ বেরিয়ে পরলাম।আজ রেমাক্রি ধরেই আগাতে হবে, গাইড বেলাল বলল আজ ১০-১২ বার রেমাক্রি পার হতে হবে।কিছুক্ষন হাটার পরই আমারা আজকের দিনের মত প্রথম বার রেমাক্রি পার হব, সবার আগে বেলাল পানিতে নেমে আমাদের দেখালো সব ঠিক আছে, তারপর একে একে সবাই পার হলাম। ঘন্টা দুই হাটার পর আমরা চলে গেলাম মাথবারাখুমে।সেখানে গিয়ে সবাই ছবি তুলতে লাগল। আমরা ৩০ মিনিটের মত ছিলাম সেখানে।তার পর আবার হাটা শুরু প্রায় দুই ঘন্টা পর আমরা চলে আসলাম সাতভাইখুম, নাইক্ষং মুখ। নাইক্ষং মুখের ঠিক সামনেই আমাদের ভেলা বানানোর কাজ চলছে।আমরা সাতভাইখুম ও নাইক্ষং মুখের ছবি তুলে ভেলায় চরার জন্য ওয়েট করতে থাকি।
আমাদের জন্য দুইটা ভেলা বানানো হবে। প্রথম ভেলা প্রায় রেডি এখন শুধু পানিতে ছারার পালা। পানিতে অনেক স্রোত থাকায় ভেলাকে একটা রশির সাথে বেদে দিয়ে এক এক করে সব গুলা ব্যাগ আমাদের প্রথম বেলাতে উঠানো হল। বেলাতে আমাদের ব্যাগ উঠানোর আগে সবাই ব্যাগ গুলাকে ভাল করে পলিথিনে মুরিয়ে দেই যেন পানিতে না বিজে।সবার ব্যাগ উঠানো শেষ। এমন সময় বেলা থেকে একটা ব্যাগ বেসে চলে যেতে থাকে, যারা আমাদের বেলা বানিয়েছিল তাদের একজনকে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে দেয়া হল। সে মারল এক যাপ, সাতরে সে ব্যাগের নাগাল পেল এবং ব্যাগ নিয়ে এক পাশে দারাল। এখন এক এক করে নামার পালা ভেলাতে। সবাই লাইফ জ্যাকেট পরা।সাজু ভাই সবার আগে নামলো বেলাতে,তারপর বন্ধু বেলাল, জহির,আনাস। সবাই ভেলার ভিবিন্ন কোনে শক্ত করে ধরে রেখেছে। হঠাত আনাসের হাত ফসকে সে ভেলা থেকে ছিটকে অনেক দুর ভেসে যায়। সবাই ভয় পে।য়ে গেলেম, কিছু দুর জাবার পর আনাস সবাইকে জয় চিন্হ দেখালে সবার মাজে সস্তি ফি।রে আসে। বেলাখুম এর মুখের সামনেতেই যত স্রোত একটু সামনে এগুলেই একদম নিরব শান্ত ভেলাখুমটা। প্রথম ভেলার যাত্রি হল সবার ব্যাগ, বুস্টার সাজু, দীন,প্রভাত বেলাল,জহির,আনাস।প্রথম বেলাকে লিড দেন বেলাল। এবার ২য় ভেলাও রেডী। আমি, রাফিদ, রেজওয়ান ভাই, উত্তম দেহি সায়েম ভাই আর নিলয় ২য় ভেলার যাত্রি। আমাদের ভেলাও পানিতে নামানো হল রশি বেদে। আমি নামলাম সবার আগে ভেলাতে একে একে নিলয়,রেজওয়ান ভাই, সায়েম ভাই আর রাফিদ ভেলাতে নামলো। আমাদের ভেলাটা ছিল ছোট তাই এর উপরে কেও না উঠে সবাই চার পাসে ধরে রাখলাম। আমাদের ভেলা রশি দিয়ে বাধা তাই ভেলা সামনের দিকে আগাচ্ছিল না,তাই গাইড বেলাল অর হাতের ছুরি দিয়ে রশি কাটতেই ভেলা ভো করে চলতে শুরু করে কিছু দুর যাবার পর ভেলা আর এগুচ্ছিল না স্রোত না থাকায় তাই ভেলা কে সাতরে আগিয়ে নিতে হবে।
আমি সাতরে ভেলা টানছি আর সবাই পা নারাচ্ছে ভেলাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য।মাঝে দুইবার ভেলা উল্টে যায় কিন্তু কিন্তু যারা সাতার জানত না তারা শক্ত করে ভেলা দরায় কোন জামেলা ছারাই আমরা ভেলা খুম পার হই।আমরা দুইটা ভেলা আমিয়াখুম এর সামনে ছেরে দেই। ভেলা থেকে সব ব্যাগ নামিয়ে দেখি সব কিছু পানিতে বিজে একাকার।কয়েজ জনের মোবাইল নস্ট হয়, কারও ক্যামেরাতে সমস্যা হয়। নিলয় এর হ্যান্ডি ক্যামে পানি ডুকে যায়, দীনের মোবাইল নস্ট হয়। এমন ছোট বড় অনেক ক্ষতি, কম বেশি সবার কপালেই জুটল। রাফিদের সমস্ত জামা কাপর বিজে যায়।
আমরা সবাই আমিয়াখুম এর সামনে দারালাম, সবাই অনেক ক্লান্ত সারা দিন পেটে তেমন কিছুই ডুকে নাই। আমরা খেজুর খেয়ে নিলাম আর আমিয়াখুমের পানি।
তারপএ যাথারিতি ব্যাপক ফটোশেসন। আমিয়াখুমএ সায়েম ভাই তার ডি-৬০ এর ব্যাটারি খুয়ান। হাত থেকে ব্যাটারি পরে সরাসরি আমিয়াখুম এর স্রোতে ভেসে যায়।আমরা প্রায় ১ ঘন্টা আমিয়াখুমএ অবস্থান করি। এবার যেতে হবে বেলাল সবাই কে তারাতারি ব্যাগ নিয়ে হাটতে বলল। আমরা আজ থুইসা পারায় থাকব এখান থেকে প্রায় তিন ঘন্টার পথ। তাই সবাই হাটা শুরু করলাম। কিছু দুর যাবার পরই নিলয় কে ২য় বারের মত জায়গা মত জোকে ধরসে। দীন আর রেজওয়ান ভাই ওর জোক সারালো।কিছুদুর আগানোর পর এমন খারা পাহার পরলো, সারা দিনে আজ এটাই প্রথম পাহার তাও এমন খারা শেষই হতে চাইছে না। অনেক চরাই উতরাই করে খারা পাহার শেষ করে আবার নামতে শুরু করলাম।কিছুখানি পথ জাবার পর একটা ঝিরি পেলাম সেখান থেকে পানি খেয়ে আবার হাটা শুরু করলাম।কিছুদূর যেতে না যেতেই আবার খারা মানে সেই লেবেলের খারা একটা পাহার। এই খারা পাহার উঠতে সবার ই কম বেশি ফাটাসে :)। খারা পাহার শেষে আমরা অতিরাম পারায় পৌছালাম। কিছুক্ষন জিরিয়ে নিলাম। একেতো সারাদিন পেটে পানি ছারা কিছুই পরে নাই তার উপর আবার সেই লেভেলের আপ হিল।পুরাই মাথা নস্ট ম্যান। আবার আমরা হাটা শুরু করলাম রাত যতই হোক আমাদের থুইসা পারাতে যেতে হবে তাই সবাই আবার ব্যাগ কাদে নিয়ে হাটা শুরু করলাম। মাঝ পথে দিনের আলো নেমে আসল তাই সবাই আমরা নিজ নিজ টর্চ লাইট জ্বালিয়ে হাটা শুরু করলাম।রেজওয়ান ভাই আর সায়েম ভাই আনেক পিছনে থাকায় সবাই তাদের জন্য ওয়েট করলাম, তারা আসলে আবার হাটা শুরু করলাম। সায়েম ভাই খুব দূর্বল হয়ে পরল।থুইসা পারার ঠিক ৩০ গজ আগে সে পায়ে ব্যাথা পেল, পরে সাজু ভাই তার ব্যাগ কাদে নিয়ে আস্তে আস্তে সবাই থুইসা পারায় উঠি। থুইসা পারায় এসেই আমরা মুরি আর বিস্কিট খেয়ে একে একে সবাই গোসলে যাই।রাতে আমাদের জন্য মুরগি আর লাউ রান্না করা হচ্ছে।৯ টার দীকে সবাইকে খাবার দেয়া হল।আমি, সাজু ভাই,বিল্লাল আর গাইড বেলাল আমরা আজ অন্যকিছুর স্বাদ নিব তাই পরে ভাত খাব। আমাদের খাবার চলেও আসল আমরা খেয়ে নিলাম সাথে লাউ আর মুরগি ছিল ;)। গাইড বেলাল একের পর এক গান গেয়েই চলছে আমরাও তার গানে মাঝেছি।কিছুক্ষন পর আরও একটা চলে আসল সেটা মেরে দিলাম সবাই। তারপর বিল্লাল ১০০০ টাকা দিয়ে একটা মুরগি আর আরেকটা সেই জিনিস ;) আনতে বলে।ঘন্টা খানিক পর সেই জিনিস আর মুরগির ৬ পিস মাংস দিয়ে বলে মুরগী নাকি ছোট তাই ৭ পিস হইসে। কি আর করার আমরাই মুরগি হয়ে গেলাম। ওদের কে বুঝাবে মুরগি বরই হোক আর ছোটই হোক পা তো দুইটা থাকবে। অনেক্ষন বেলাল এর গান শুনে ভাত খেতে গেলাম। সবাই আমাদের নিয়ে চিন্তায় আছে আমরা সকালে কি করে ঘুম থেকে উঠব।দেখা গেল ওই দিনই আমরা সবাই তারাতারি ঘুমথেকে উঠে গেলাম কার জন্যই লেট হল না।
ডে ০৫ রুট:বোলোং পারা - মাথবারা খুম - সাতভাইখুম - নাইক্ষং মুখ - ভেলা খুম - আমিয়াখুম - অতিরাম পারা - থুইসা পারা।
ডে ০৬:
সকালে আমরা কেও নাস্তা করি নাই,থুইসা পারা থেকে বিস্কিট কিনে নিলাম খাবার জন্য। সকাল ৬.০৫ মিনিটে আমরা থুইসা পারা থেকে হাটা সুরু করলাম। কিছু দুর যাবার পর আমরা জিন্না পারা পেলাম।জিন্না পারা থেকে কিছুদূর হাটার পর রেমাক্রি পারে চলে আসলাম। হাটা শুরু করলাম এইবার আবার খাল পার হতে হবে। সবার আগে বেলাল পানিতে নেমে দেখে নিল পানির স্রোত কেমন বা আমরা পার হতে পারব কিনা। বেলাল এর গ্রীন সিগনাল পেয়ে আমরা একে একে সবাই নেমে পরলাম।রেমাক্রি পার হয়ে আবার শুরু করলাম হাটা। কিন্তু এখন এমন এক জায়গাতে ছিলাম যেখান থেকে সবাইকে নিয়ে পার হবার কোন উপায় ছিল না। বেলাল আমাদের কে বসিয়ে পানিতে নেমে পরল, ওর গলা সমান পানি স্রোতের কারনে ঠিক মত দারাতেও পারছে না।এই সুযোগে আমরা সবাই টোস্ট আর মেওনিজ খেয়ে নিলাম। ততক্ষনে বেলাল চলে আসল ও নাস্তা করে সবাইকে নিয়ে আবার পিছনে ব্যাক করলো। যেখান দিয়ে পানি কম হবে আমরা সেখান দিয়ে পার হব।অবশেষে একটু পিছনে ফিরতেই আমরা রাস্তা পেয়ে গেলাম,সবাই অতি সহজেই পারও হয়ে গেলাম।তার পর আরো কিছুদূর যাবার পর এখন হয় আমাদের খারা পাহার বেয়ে অথবা সাতরে পার হতে হবে।আমরা এবার সিধান্ত নিলাম আমরা ভেলা বানিয়ে পার হব।
আমি, বিল্লাল,বেলাল গাইড, আর দীন সাতরে খাল পার হয়ে কলাগাছ কেটে আনলাম ভেলা বানানোর জন্য।কিছুক্ষন পরে খেয়াল করে দেখলাম পাসের ঝিরি দিয়ে কয়েক জন পাহারি বাস কেটে নামিয়ে আনছেন।আমরা কলাগাছ বাদ দিয়ে ওদের কাছ থেকে বাস নিয়ে ভেলা বানাই।ভেলা দিয়ে আগে সব ব্যাগ গুলা পার করলাম তারপর যারা সাতার জানতোনা তাদের পার করি। বাসের ভেলা গুলোকে ফিরিয়ে দিয়ে চলে আসলাম। তারপর আবার সেই এক কাজ কাদে ব্যাগ নিয়ে হাটা।কিছুদূর যাবার পর আবার বেলাল পানিতে নেমে রাস্তা খুজতে লাগল এবার খুব পিচ্ছিল পাথর পায়ের নিচে আর পানির স্রোতও বেশি তাই খুব ভয়ে ভয়ে পার হলাম তারপর সাতার না জানাদের পার করলাম।যাক এ যাত্রাও আমরা কোন দূর্ঘটনা ছারাই রেমাক্রি খাল পার হলাম।বেলাল বলল আরো ১ ঘন্টা হাটলেই আমরা নাফাখুম চলে যাব। তাই সবাই আবার হাটা শুরু করলাম। অবশেষে দেখা মিলল আমাদের টুরের আরেক আর্কষন নাফাখুমের।আমরা সেখানে অনেকক্ষন অবস্থান করি, আরও একটা টিম নাফাখুমে আসল।তারা রিতি মত উতপাত শুরু করল তাই আর ভাল করে ছবি তুলতে পারলাম না। ওদের দেখে আমাদের কয়েক জনের লাফ দিতে ইচ্ছা করল। বিল্লাল আর জহির লাইফ জেকেট পরে রেডী লাফ দেয়ার জন্য।ওদের লাফ দেখে আমার আর তর সইলো না, একে একে দিন,নিলয় আনাস আমি আমরা সবাই লাফ দেই। লাফদিয়ে ভালই মজা পাইসিলাম। সাজু ভাই সাতার জানে না সেও লাফ দিবে তাকেও লাইফ জ্যাকেট দেয়া হল সে লাফ দেয়ার জন্য প্রস্তুত আমরাও নিচে সতর্ক অবস্থায় ছিলাম, যেই সে লাফ দিয়ে পানি থেকে ভেসে উঠলো আমরা তাকে দরে ফেলি এবং কিনারায় নিয়ে আসি।রেজওয়ান ভাইকেও বললাম লাফ দেয়ার জন্য সেও লাইফ জ্যাকেট পরে রেডী হয়ে কিনারায় দারালো পরে কি জানি মনে করে আর লাফ দিল না।আমাদের নাফাখুম দর্শন এখানেই শেষ হল।নাফাখুম থেকে আমরা রেমাক্রি বাজার যাব।নাফাখুম থেকে আমরা রেমাক্রি বাজারের পথ টা কেন জানি শেষ হতে চাইছিল না। ৭ দিন বাড়ীর মানুষ গুলারে দেখি না বাড়ি ফেরার টানটা তখন প্রবল ভাবে মনে হানা দিচ্ছিল। আমি আর সাজু ভাই সবার আগে রেমাক্রি বাজার চলে আসি। আমাদের সবার কাছে শুকনা খাবার শেষ হয়ে যাওয়াতে আমরা নাফাখুম থেকে রেমাক্রি আসতে শুধু ঝিরির পানি খেয়ে থাকি। তাই রেমাক্রি বাজারে গিয়ে আমি আর সাজু ভাই চা বিস্কিট কলা খেয়ে নিজেদের প্যাট শান্ত করে সবার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।আমাদের দলের সবাই অবুক্ত তাই সবাই জার জার মত খেয়ে নিল। হতাত আকাশে মেঘের গর্জন, আমাদের আজ রেমাক্রি তে থাকার কথা ,আকাশ খারাপ দেখে আমরা আজ ই রওনা দেয়ার সিধান্ত নিলাম। এমনিতেই সাঙ্গু নদির পানির অবস্থা ভাল না তার উপর আবার যদি গর্জন সহ বর্ষণ তখন বিপদ আরো বারতে পারে । তখন বেলা ৩.৪০ আমরা দুইটা বোট ঠিক করলাম ৬০০০ দিয়ে থাঞ্চি আসার জন্য। আমাদের বোট ঘাটে চলে আসল । আমরা যে যার আসন নিলাম। শুরু হল সাঙ্গু দর্শন। কিছুদূর যেতে না যেতেই আমরা দেখতে পেলাম এক ভয়ঙ্কর সাঙ্গু। স্রোত আর ডেউ যেন আমাদের ট্রলার কে আঁচরে ফেলে দিচ্চে এমন মনে হচ্ছিল। মাঝি আমাদের শক্ত করে নারাচারা না করে এক পজিশনে বসতে বলল। আমরা স্রোত, ডেউ আর বর বর পাথরে মাঝ দিয়ে ছুটে চলছিলাম আর আল্লাহর নাম নিতে থাকলাম। তখন ভাবলাম কেন বিজেবি নিশেধাজ্ঞা জারি করেছে। টানা দুই ঘণ্টার শ্বাস- রোধকর যাত্রা শেসে থাঞ্চি আসতে না আসতেই শুরু হয় গুরি গুরি বৃষ্টি। ট্রালার থেকে নেমে আল্লাহকে ধন্যবাদ জানালাম। সবাই ব্যাগ ট্যাগ নিএ নদীর ঘাট থেকে উপরে উঠলাম।আমরা পার হেড ১৫০ করে থাঞ্ছিতে একটা হোটেল এ উঠলাম । সবার ব্যাগ রেখে বের হলাম গোসল দেয়ার জন্য। থাঞ্ছি বাজারের মসজিদের পুকুরে সবাই অনেক খন জাপা জাপি করার পর মাগ্রিবের আজানের আগে চলে আসলাম। সবাই রুমে এসে রেডি হয়ে খেতে বের হলাম। অনেক দিন ভাল কিছু পেটে পরে নি তাই আজ পেট বরে খাব এই পন করে হোটেলে ডুকলাম। গরুর মাংস। মুরগির মাংস, সব্জি, ডাল দিয়ে মনটা বরে ভাত খেলাম। আহ কি যে শান্তি কি আর বলব মাইরি। খাবারের পর প্রভাত সবাইকে কোক পান করাইসে।তার পর আবার সবাই রুমের দিকে চলে আসলাম। কিছুক্ষন পর আমরা সবাই থাঞ্ছি ব্রিজে গেলাম হাওয়া খেতে। আমরা কাল সকালে হয় বাস অথবা চান্দের গারীতে করে বান্দরবন চলে আসব তাই আমাদের গাড়ি লাগবে। আমি বললাম এতোদিনের আনন্দটা মাটি করব না আমরা যত টাকাই লাগুক আমরা চান্দের গারিতেই যাব। থাঞ্ছিতে কোন চান্দের গাড়ি না থাকায় বান্দরবান থেকে গাড়ি আনার ব্যাবস্তা করা হল ৬০০০ লাগবে। আমরা তাতেই রাজি। সবাই রুমে এসে রাতে গুমাতে গেলাম। গাড়ি ৮.০০ মধ্যে চলে আসবে।

ডে ০৬ রুটঃ থুইসা পারা- জিনা পারা-নাফাখুম-রেমাক্রি-থাঞ্ছি
ডে ০৭ঃ
সকালে সবাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করতে যাব কিন্তু সেই লেভেলের বৃষ্টি শুরু হল । আমরা এর মধ্যেই নাস্তা করতে হোটেলে ডুকলাম। নাস্তা শেষ করতে না করতেই গারিও চলে আসল আর বৃষ্টিও থেমে গেল। সবাই এক এক করে গারীতে উঠে বসলাম।এবারের গন্তব্য থাঞ্চি থেকে বান্দরবন হয়ে ঢাকা।থাঞ্ছি থেকে বাসে আসলে যে কত কিছু মিস করতে হত টা চান্দের গাড়ি না নিলে বুজা যেত না। একটু পর পর মেঘের মধ্যে ডুকে পরা , মেঘের চাদর গায়ে জরিয়ে খেলা করা । এ সবই জেন এক দারুন অনুভূতি । অবশেষে ৩ ঘণ্টা পর চলে আসলাম বান্দরবন শহরে। তারপর একটা পাহারি সিএনজি যার ধারন খমতা ৬ জন আমরা ১০ জন উঠলাম সেই গারীতে। ৪০ মিনিট লাগলো কেরানির হাত আসতে। এখন বাড়ি যেতে হবে সবার বাস টিকিট এক সাথে পাওয়া যাবে না তাই কয়েকটা দলে আমরা ভাগ হয়ে ঢাকা বেক করার সিধান্ত নেই। এবাবেই আমরা একতাবদ্দ হয়ে এমন একটা মিশন শেষ করি।
ডে ০৭ রুটঃ থাঞ্ছি-বান্দরবন-ঢাকা

আমাদের কিছু ছবিঃ


#একটা অনুরোধ সবার কাছে পলেথিন , চিপস, চকলেট, বিস্কিট এ সকল জিনিসের পলেথিন গুলা দয়া করে নিজের পকেটে করে নিয়ে আসবেন। আপনার আর আমার সচেতনতাই পারে অনেক কিছু বদলে দিতে। আমরা আমাদের একটা পলেথিনও কোথাও রেখে আসিনি। যার যার খাবার প্যাকেট নিজেরাই নিয়ে এসেছি। আমাদের গাইড বেলাল অনেক জায়গায় ময়লা আবর্জনা আগুনে পুরিয়েছে। এমন তো হতে পারে আমার ফেলে আসা ময়লায় অন্যজন স্লিপ করে আহত হতে পারে।#
হ্যাপি ট্রাভেলিং.......................................

******কমলা বাজার***** বগালেকের পথে যাত্রা শুরু।

**************** আমদের পথ চলা *************

********ডাবল ফলস বা তলাবং*************

************ আমিয়া খুম************************

************** সাকার চুড়ায় জয় নিশান*****************

************* মাথবারা খুম***********************

**********রেমাক্রিতে জল কেলী***************


**** ***************পাহারি পথে ছুটে চলা****************************


****************থান্দুই পারায় সংগীতময় সময়**********

************************* সাঙ্গতে আমরা***************************

*********** পাহার চুরা থেকে রেমাক্রি খাল**************

************************ বেলাতে ভাসার অপেক্ষায়********************
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×