ইতিমধ্যেই নির্বাচিত হয়েছেন ২৩৪ টি পৌরসভার মেয়র। যার বেশিরভাগই মেয়রের টিকিট নিশ্চিত করেছেন গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর। ওইদিন দেশের বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রই ছিল ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তাদের প্রশিক্ষিত ক্যাডার বাহিনীর দখলে। সকাল ৮টা থেকেই শুরু হয় ভোটকেন্দ্রে ভোট চুরির মহা-উৎসব। ভোটকেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি শেষে প্রাণে বেঁচে গেলে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় কিংবা স্রষ্টার প্রতি ভরসা রেখে রেহাই পেয়ে যান। পছন্দের প্রার্থীদের ভোটদান থাকুক দূরের কথা, সামনের দিনগুলোতেও ভোটকেন্দ্রে যাবে না এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েও ক্যাডার বাহিনীদের থাবা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। সারাদিন ভোটকেন্দ্র দখল, কারচুপি আর জাল ভোট প্রদান শেষে সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে ফুলের তোড়া নিয়ে ছুটে গেছেন ক্যাডার বাহিনীরা। তাদের সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ের মুকুট নিশ্চিত করতে সারাদিন অনেক কষ্ট করে ক্লান্ত দেহ নিয়ে ছুটেছেন সেখানে।
কোন কোন পৌরসভা নির্বাচনে আগের রাতেই ব্যালট পেপার ছিনতাই, কেন্দ্রের আশ-পাশে ককটেল বিস্ফোরণ থেকে শুরু করে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে না যাওয়ার আগাম ইঙ্গিত দিয়েছেন। ভোট চলাকালীন সময়ে বিএনপির এজেন্টদের মারধর, কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, পিটিয়ে আহত করা ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দলের লালিত ক্যাডার বাহিনীদের প্রধান কাজ।
যাক মূল কথায় ফেরা যাক। এতক্ষণ যা বললাম আমি, তা আমার কিংবা বিএনপির কথা নয়। তবে হুম নির্বাচনের দিন এর চেয়ে বেশি তান্ডব চালিয়েছে আওয়ামীলীগের ছেলে-পুলেরা- এমনটা দাবি করেছেন বিএনপি। তাতেই ক্ষান্ত হন নি তারা, নির্বাচনের আগেও নির্বাচনী প্রচারণাতে বাঁধা, মাইকিং করার সময় সমর্থকদের উপর হামলাসহ মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগও বিএনপি করেছে। বিএনপির কথা নয় আমি শুরুতে যে কথাগুলো বলেছি তা কেবলই এদেশের আপামর জনগণের কথা। যারা নির্বাচনের দিন কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখেছেন তাদেরই কথা বলেছি কেবল। তবে দেশের সকল পৌরবাসীদের উদ্দেশ্যে বলছি- আপনারা হয়তবা বিগত দিনের কর্মতৎপরতা পর্যবেক্ষণ করে আপনারা বিএনপি প্রার্থীকে বিজয়ী করতে চেয়েছেন। হিতে বিপরীতে বিজয়ী হয়ে গেল আওয়ামীলীগ প্রার্থী! আপনারা তাকে নির্বাচিত করেন নি, বিজয়ী করেছে তাদের লালিত লাঠিয়াল বাহিনীরা। এ বিষয়টি আপনাদের মাথায় রয়েছে। তবে মাথায় যাই থাকুক, এ কথাটা আপনাদের অবশ্যই মেনে নিতে হবে যে, পৌরসভার যে কোন কাজের জন্য আবার আপনারাই ওই আপনাদের ঘৃণিত ব্যাক্তির দ্বারেই যেতে হবে।.................।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২