somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বজ্রপাত কি? কি ভাবে এর সৃস্টি হয়?

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বছরের বিভিন্ন সময় পত্র-প্রত্রিকার পাতা খুললেই দেখতে পাই,দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে এত জন মারা গেছেন।আসুন জানার চেস্টা করি কেন কিভাবে এর সৃস্টি হয়।বায়ূমন্ডলের উপরের অংশে নীচের তুলনায় তাপমাত্রা কম থাকে।এ কারনে অনেক সময় দেখা যায় যে,নীচের দিক থেকে উপরের দিকে মেঘের প্রবাহ হয়।এ ধরনের মেঘকে থান্ডার ক্লাউড ( Thunder Clouds) বলে।



অন্যান্য মেঘের মত এ মেঘে ও ছোট ছোট পানির কনা থাকে।আর উপরে উঠতে উঠতে পানির পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে।এ ভাবে বৃদ্ধি পেতে পেতে পানির পরিমান যখন 5 মিঃমিঃ এর বেশী হয়,তখন পানির অনুগুলো আর পারস্পারিক বন্ধন ধরে রাখতে পাড়ে না।তখন এরা আলাদা (Disintegrate) হয়ে যায়, ফলে সেখানে বৈদ্যুতিক আধানের (Electric Charge) এর সৃস্টি হয়।আর এ আধানের মান নিচের অংশের চেয়ে বেশী হয়।এরকম বিভব পার্থক্যের (Potential difference) কারনেই ওপর হতে নিচের দিকে বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন (Transmission) হয়।এ সময় আমরা আলোর ঝলকানি (Lightning) দেখতে পাই।



আর ক্রিয়ার সময় উক্ত এলাকার বাতাসের প্রসারন (Expansion) এবং সংকোচনের (Contraction) ফলে আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই।এ ধরনের বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন দুটি মেঘের মধ্যে অথবা একটি মেঘ এবং ভূমির মধ্যে ও হতে পারে।



মার্চ থেকে মে মাসের গোড়া পর্যন্ত বিহারের মালভূমি অঞ্চলে নিম্নচাপের ক্ষেত্র সৃস্টি হয়।তখন বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাস্প পূর্ন বায়ু প্রবাহ এই নিম্নচাপ ক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে যায়।এই ছুটে আসা আদ্র বায়ু প্রবাহ এই দুয়ের সংঘাতে একটি দুটি করে বজ্র মেঘের সৃস্ট হয়।



আর সেগুলি ত্ত্রিব গতিতে মাথা তুলতে থাকে।এই মেঘগুলি থেকে নঃসৃত শীতল ঝড়ের জাপটা (Cold down draft) সামনের দিকে আঘাত করে।বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্র বায়ুস্তর ঐ ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটা খেয়ে ওপরে উঠ্র যায়,সঙ্গে সঙ্গে সেইসব জায়গায় নতুন করে বজ্র-মেঘ সৃস্টি হয়।



সবচেয়ে প্রথম যে একটি দুটি মেঘ তৈরী হয়েছিল তাদেরকে জননী (Mother Thunder Storm) বলা হয়।তবে সামনের দিকে সৃস্ট হওয়া নতুন বজ্র-মেঘ গুলো কে বলা হয় কন্যা (Daughter Thunder Storm)।এই ভাবে সামনের দিকে ক্রমে অনেক গুলি বজ্রমেঘ সৃস্টি হয়ে একটা রেখা বরাবর দক্ষিন-পূর্ব দিকে এগোয়।



রাডার যন্ত্রে স্বষ্ট দেখতে পাওয়া যায় যে,কালবৈশাখী মেঘের এই রেখাটি (Line Squacl Cloud)( ক্রমে উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিন-পূর্বে আগায়।এই রেখার দৈর্ঘ্য 50 থেকে 100 কিঃমিঃ পর্যন্ত হয়।আর বিস্তৃতি হয় প্রায় 15- থেকে 20 কিঃমিঃ’র মত হয়।এই রেখাটি যে অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝাপটা দিয়ে যায়,সেই অঞ্চলেই কালবৈশাখীর তান্ডবলীলা চলে।ক্রম্র ক্রমে এই মেঘ বঙ্গোপসাগরের কাছে পড়লেই এই কাল কালবৈশাখী ঝড় নিস্তেজ হয়ে যায়।



কারন সমুদ্রের ওপর কালবৈশাখী হয় না।মনে রাখতে হবে যে কালবৈশাখী মেঘের বিস্তৃতি হয় প্রায় 15- 20 কিঃমিঃ এর মতো।এবং মেঘগুলি সাধারনত প্রতি ঘন্টায় 25-30 কিঃমি গতিতে এগোয়।সুতরাং কোন কোন স্থান অতিক্রম করতে এই মেঘগুলির সাধারনত আধঘন্টা থেকে বড়জোর এক ঘন্টার মতো সময় লাগে।বৃস্টি ও ততক্ষন হয়।কিন্তু বজ্র মেঘের সঙ্গে অনেক সময় মধ্যস্তর মেঘ থেকেও অনেক সময় বৃস্টি হয়।এই জন্য কোন কোন সময়ে এক ঘন্টারও বেশী সময় বৃস্টি হতে পারে।



বজ্রপাতের সময় আমরা একটু সচেতন হলে আমরা এর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি।
১- বজ্রপাতের সময় কোন খোলা মাঠে বা খোলা স্থানে দাড়াবেন না,যদি ঐ স্থানে কোন বড় গাছ না থাকে,তবে আপনি সেই স্থানের সব থেকে উচু ব্যাক্তি।সেই সাথে কোন গাছের নীচে আশ্রয় নিবেন না।গাছের উপর বজ্রপাত বেশী হয়।
২- পানির কাছে থাকবেন না,রাস্তায় সাইকেল বা মটরসাইকেলের উপর থাকলে,দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহন করুন।
৩-যদি খোলা মাঠ বা খোলা জমিতে থাকেন,তবে লক্ষ্য করুন তার টানা কোন বৈদুত্যক খুটি আছে কিনা।যদি থাকে তবে দুই খুটির মাঝখানে তারের নিচে পায়ের পাতা উচু করে পাতার উপর মাথা নিচু করে বসে থাকুন।
৩-বজ্রাহত কোন ব্যাক্তিকে কখনো খালি হাতে স্পর্শ করবেন না,কারন তার শরিরে তখনও বিদুত্য থাকতে পারে।
পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে কোথাও না কোথাও 100 বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে,অতএবসাবধান।

ছবি-গুগল





৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×