আই.ই.এল.টি.এস করতে একটা কোচিংয়ে ভর্তি হইছিলাম। ঐখানে স্যার স্পিকিং টেস্ট নিতো। আমি যদি বেশী না কৈতে পারতাম তাইলে স্যারে আবার শিখায় দিতো। স্যারে সব সময় কইতো একটু আলাদা কইবা যাতে কইরা এক্সামিনর না বুঝে যে তুমি মুখস্থ টাইপের কিছু কইতাছো। যত ইচ্ছা মিথ্যা কইতে পারবা, কিন্তু সেন্টেন্স ঠিক থাকলেই হইলো।
স্যারে আমারে দুইটা খুব ভালো মতো কইয়া দিছিলো। একটা হইলো aim in life আরেকটা হইলো tell something about yourself। আমি ভালোমতো দুইটা মনে রাখছিলাম।
স্পিকিং মেইন পরীক্ষার দিনে কেন্দ্রে একটু আগে গেলাম। বহুত টেনশান নিয়া। গিয়া তাগো জানাইলাম যে বাপধন পরীক্ষা দিবার আইছে তার নামটা লেখাও। নাম লেখার পর আমারে কইলো তিন তলায় যাইতে। আমি ভাবছিলাম নাম লেখাইয়া যাইয়া একটু বিড়ি টাইনা আমু। বহুত টেনশান হইতাছিলো আর বুক ধরফরাইতাছিলো। যাই হোক তিনতলায় গিয়া দেখি আরেকজন তার কাছে কইলাম ছাত্র হাজির। হেয় আমারে একটু খাড়াইতে কইলো। খাড়াইলাম মনে হয় মিনিট খানেক। একটু পরেই কয় আপ্নে ভিতরে যান।
আমার হার্টবিট বাড়তে বাড়তে একবারে বাইড়াইয়া মেঝেতে পরলো আবার বুকে আইলো। দরজায় ঢুইকা স্যাররে জিগাইলাম যে আমি ভিতরে ঢুকবার পারুম কিনা। আমারে ভিতরে ঢুক্তে কইলো। আমি ভিতরে ঢুকলে আমারে বইতে কইলো। ভিতরে তোল্পাড় শুরু হইয়া গেলো। কান দিয়া ধুয়া বাইরাইতে থাকলো। কোন আওয়াজ আমার কানে ঢুকতাছিলো না। সে নিজের পরিচয় দিলেও আমি ভোঁ ভোঁ ছাড়া আর কিছুই শুনলাম না।
আমার তারপর সব কাগজপত্র নিয়া আমার নাম জিগাইলো। মনে মনে ভাবলাম হালায় আন্ধা নাকি কত বড় হরফে নাম লেখা দেখোছ না। তারপরেও নাম কইলাম। এরপরেই সে ক্যাসেট প্লেয়ার অন কইরা দিলো। আর আমারে বিভিন্ন প্রশ্ন জিগাইতে থাকলো। মনে হইলো কয়েক শো প্রশ্নের উত্তর দিয়া দিছি। তারপর কইলো এইবার তোমারে টপিক্স দিমু। আমি তো পুরা থ। তাইলে এত প্রশ্ন জিগাইলা ক্যান।
টপিক্স দেইখাতো একটা ফাল দিলাম মনে মনে। দেখি লেখা tell something about ur goal। শুরু কইরা দিলাম স্যারের শেখানোটা
"আমার আসলে অনেক গুলা শখ আছিলো। যখন ছোট আছিলাম তখন কার্টুন দেইখা ভাবছিলাম বড় হইলে টারজান হমু। কিন্তু যথেষ্ট গাছপালা না থাকায় আমি আর হইতে পারলাম না। পরে ভাবলাম আমি নায়ক রাজ্জাক হমু। কিন্তু আমার বাসার কেউ তাও হইতে দিলো না। পরে মেট্রিক পাস কইরা ভাবলাম ডাক্তার হমু। কিন্তু বিড়ালের পেট কাইটা আবার জোড়া লাগাইতে যাইয়া আব্বা দেইখা ফালাইছিলো যার জন্য আমারে বেদম মাইর খাইতে হইছিলো। তাতেও আশা ছাড়ি নাই কিন্তু ইন্টারে রেজাল্ট খারাপ কইরা আর পারলাম না। পরে এখনের ইচ্ছা হইলো আমি শিক্ষক হমু তারপর সুন্দরী একটা মাইয়া দেইখা বিয়া করুমু যাতে আমার মায়ের সেবা করতে পারে।"
এই কথা শুইনা স্যারে দেখি চোখ বড় বড় কইরা ফালায়ছে। কয় ক্যান, " কালো মাইয়া তোমার মায়ের সেবা করবো না?"
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ২:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



