জনৈক যুবক একজন পাদ্রীকে জিজ্ঞেস করেছিল, “ফাদার, কোন মেয়ের সাথে ঘুমানো কি পাপ?”
ফাদার জবাব দিয়েছিলেন, “কোন মেয়ের সাথে ঘুমানো মোটেও পাপ নয়। তবে কি বাছা, তোমরা তো ঘুমাও না!”
তেমনই ইন্টারনেট চালানোটা মোটেও খারাপ কিছু নয়, কিন্তু আমরা তো ইন্টারনেটে শুধু ভালো কিছু এক্সপ্লোর করি না! বাংলাদেশের বেশির ভাগ ছেলে ইন্টারনেটের সাথে পরিচিত হয় পর্ন সাইটের মাধ্যমে (মেয়েদের কথা জানি না। তবে ওরাও এক গোয়ালেরই গরু কিনা, মানে একই কারখানার প্রোডাক্ট- কাজেই......)। আমি নিজে প্রথম পর্ন সার্চ করেছিলাম ইন্টারনেট হাতে পেয়েই। একধরনের নেশা হয়ে গিয়েছিলো পর্ন দেখা। যেহেতু আমাদের দেশে সেক্স এজুকেশান নেই, তাই কৌতূহল মেটানোর উপায় ছিল ওটাই।
মজার ব্যাপার, তথ্য প্রতিমন্ত্রী পর্ন সাইট বন্ধের কথা বললেন, একটা কমেন্টের জবাবে। ভাবছি, একাত্তরে ফেসবুক থাকলে কী হতো! হয়তো, বঙ্গবন্ধু কাউকে ইনবক্সে বলতেন, স্বাধীনতা ঘোষণা করলাম। সেই ম্যাসেজের স্ক্রিনশট আবার ভাইরাল হয়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত!
যাই হোক। আমি জানি, পর্ন দেখা বাজে। কিন্তু আমি কী দেখবো না দেখবো সেটা নির্ধারণ করার সরকার কে?
আমি জানি, সিগারেট ক্ষতিকর, মদ খেলে প্রচুর ক্ষতি হয় শরীরের। কৈ সিগারেট তো নিষিদ্ধ হচ্ছে না! বারগুলো তো বন্ধ হচ্ছে না! যৌনপল্লীগুলোতে অনেক সময় ভুলিয়ে ভালিয়ে মেয়েদের এমনকি শিশুদেরও নিয়ে গিয়ে পতিতাবৃত্তিতে নামানো হচ্ছে, কিন্তু পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ করে ওদের পুনর্বাসন ও অন্য পেশাতে নিয়োগ তো করা হচ্ছে না!
হ্যাঁ, আপনি পাবলিককে বোঝাতে পারেন, পর্ন দেখার কুফল, তার ক্ষতিকর দিক। কিন্তু বন্ধ করাটা মুর্খামি। আমার স্বাধীনতায় হাত দেয়ার অধিকার কাউকে দেয়া হয়নি। আমি পর্ন দেখে আপনার ঘরে গিয়ে মাস্টারবেট না করলেই হয়েছে। তাছাড়া পর্ন দেখা নিষিদ্ধ হলে পোলাপান আরো বেশি করে দেখবে। কারণ নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষণ থাকে বেশি। ওটা এমনিতেই নিষিদ্ধ, তার উপর যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করে নিষিদ্ধ স্কয়ার করা হয়, তাহলে তো কথাই নেই......... ফেসবুক যখন বন্ধ ছিল তখনও অনেকে ফেসবুক ব্যবহার করেছে। আর সেটা প্রকাশও করেছে গর্বের সাথে। এবারে হয়তো পর্ন দেখাটা গর্বের সাথে প্রকাশ করবে!
তাই, এসব আউলফাউল কিছু না করে, সেক্স এজুকেশানের দিকে মনোযোগ দেয়া উচিৎ। একমাত্র যৌন শিক্ষাই পারে পর্ন দেখা থেকে তরুণদের দূরে রাখতে।
ও হ্যাঁ, একটা টিপস দিতে ভুলেই গেছি। যারা খুব টেনশনে আছেন, ভাবছেন, “কয়েকদিন পর আর পর্ন দেখতে পারবো না, রাত কাটবে কী করে”, তারা এখন থেকে ওগুলো কালেকশান শুরু করে দিন। যদি সত্যি সত্যিই বন্ধ করে দেয়
২
টকশো আমি জ্ঞানত দেখি না। কিন্তু কয়েকদিন থেকে বাবার পাল্লায় পরে নিয়মিত দেখতে হচ্ছে। সাধারণত খাওয়ার সময় ছাড়া টিভি দেখার সময় পাই না। রাতে যখন খেতে যাই, ঠিক তখনই এটিএন নিউজে ‘নিউজ আওয়ার এক্সট্রা’ শুরু হয়। বাবা দেখেন বলে আমাকেও দেখতে হয় বাধ্য হয়েই।
এই টকশোগুলো নির্মল বিনোদনের একটা মাধ্যম। যারা মনে করেন, বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোয় বিনোদনমূলক কিছু হয় না, তাদের এই টকশোগুলো দেখা উচিৎ!
একটি টকশো-
আ আ ম স কিছুএকটা সিদ্দিকি- এই শামসুল শালা একদম কানে শোনে না। দেখতেও পারে না বোধহয়। কীভাবে নাকেমুখে কথা বলছে দেখুন!
এনএন চৌধুরীঃ- আমি আপনার সাথে পুরোটা একমত নই। তবে একটা ব্যাপারে একমত, শামসুল ইসলাম আসলেই কানে কম শোনে। তবে তিনি দেখতে পারে। তিনি আমার মোবাইলেই কাল ইয়ে আরকি ভিডিও দেখেছেন। তবে, বাংলাদেশে ঐ ইয়ে দেখা নিষিদ্ধ তো তাই চুপি চুপি দেখেছেন। আর এই যে বললেন, তিনি আপনার শালা, এই কথাটারও আমি বিরোধিতা করছি। কারণ আপনি বিয়েই করেননি।
শামসুল ইসলামঃ- আমি আপনাদের সাথে একটু যোগ করতে চাই। আজ আমি গোসলে গিয়ে দেখি পানি নেই! আমি ভালমতো গোসলটাও করতে পারলাম না। দেশের উন্নতি কীভাবে হয় বলতে পারেন? আমার মতো একজন নামীদামী মানুষ কিনা কাল থেকে গোসল করিনি! আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?
আ স ম কিছুএকটা সিদ্দিকি- তাই তো বলি ঘামের গন্ধ কোথা থেকে আসছে!
এনএন চৌধুরীঃ- আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণভাবে একমত হতে পারলাম না, সিদ্দিকি ভাই। শামসুলের ভাইয়ের গা থেকে ঘামের সাথে সাথে কড়া পার্ফিউমের গন্ধও আসছে। সে কথাটা ভুলে গেলে চলবে না ........আমাদের সমস্যাটা হলো, আমরা ছোটছোট ব্যাপারগুলোয় গুরুত্ব দেই না..................
উপস্থাপকঃ- এনএন স্যার, আমি আপনার কাছে ফিরে আসবো বিরতির পর। প্রিয় দর্শক, ছোট্ট একটা বিরতি নিচ্ছি। কোত্থাও যাবেন না। সঙ্গে থাকুন, দেখতে থাকুন নিউজ আওয়ার এক্সট্রা!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৯