জীবন মোড় নিয়েছে যেখানে সেখানে ঘড়ির কাঁটা "অমানবিকের" ঘরে আঠা ছুঁইয়ে নিথর হয়ে যায়। ব্লগে লেখা তো দূরের কথা , পড়ার সুযোগও কঠিন দুর্লভ। তার উপর মনটাও খারাপই আছে বেশ কিছুদিন ধরে। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিস্থিতি সংবাদ , তা সে নেটেই হোক আর অন্য কোন মাধ্যমে , মনের পক্ষে মোটেই আরামপ্রদ নয় । এই রকম বিষন্নতা চেপে বসলে মাঝে মাঝে ব্লগের জানালা খুলে দু'একটা মজারোস্ট ( মজার পোস্ট) পড়ার তাগিদ অনুভব করি। এই হেন হীন উদ্দেশ্য নিয়ে ছাই উড়াতে উড়াতে পেয়ে গেলাম নুশেরার পোস্ট । বিমার প্রত্যাবর্তনকে উৎসর্গ করে তাঁর ( বিবাহে তিনি আমার থেকে এক ছানা এগিয়ে , প্রতিভায় চন্দ্রবিন্দু যুক্ত ব্লগার , রীতিমতন মুরুব্বী ) মজারোস্টকেই শ্রেষ্ঠত্বের তাজটি সঁপে দেব ভেবেছিলাম। বহুদিন পরে এমন ঝরঝরে কৌতুকময় লেখা পড়েছি । কিন্তু সে বাড়া ভাতে এ্যাশ রায় এর লাস্য নিয়ে ঢুকে পড়লো আরো দুটি পোস্ট । ওমন হাসান আল জাহিদের এই পোস্ট এবং সুমন অহেমদ এর মূল পোস্ট পড়ে বিশ্বাস করুন , আমার নিদ উড়ে গেছে । মন্তব্য গুলো পড়ুন , নাহ থুক্কু, পাঠ করুন । পুরুষ হলে উত্তেজিত হবেন । মানুষ হলে প্রতিবাদী হবেন । নারী হলে ক্ষুব্ধ হবেন । আর ভুল ক্রমে যদি কিঞ্চিত " দৃষ্টিশক্তি " ধারন করেন , তাহলে নিখাঁদ কৌতুক উপভোগ করতে পারবেন ।
আহ ! এই জন্যই ব্লগ ছাড়তে চাই না । এমন " পিওর কমেডি " আর কোথায় পাব ? তাও আবার বিনে পয়সায় ?
[আফসোস ! অস্কার , নোবেল কোন কমিটিতেই আমার কোন প্রভাব নেই ]
মেধায় নারী না পুরুষ শ্রেষ্ঠতর তাই নিয়ে বিশাল কমেডি । তুরুপ মন্তব্য !! কিন্তু কেউই দেখি সংজ্ঞায় গেলো না । মানে আমার ক্ষুদ্র বিদ্যায় ও অভিজ্ঞতায় দেখেছি , কোন কিছুকে পরিমাপ করতে গেলে তাকে আগে সংজ্ঞায়িত করে নিতে হয় । সীমানা নির্ধারন করে দিতে হয় । এই যেমন উল্লেখ্য মাপামাপি , চাপাচাপি , দাপাদাপিতে "মেধা কি" , "নারী কি" , "পুরুষ কি " , "বিকাশ কি" , " এগিয়ে থাকা কি" , " সাফল্য কি" ইত্যাদি। তারপর পরিমাপকের সীমানা নির্ধারন বলতে ধরুন "সাফল্য" কে পরিমাপ করার জন্য কি ধরনের নির্দেশক ( ইন্ডিকেটর) ব্যবহার করা হবে - সেইটা হয়ত বলা যেতে পারে নারী ও পুরুষের মধ্যে শারীরিক পার্থক্য , পেশীশক্তি , কিংবা কে কেমন রান্না করে , কিংবা কে কেমন লাফায়, কে কত ভালো মদ খায় , কে কয়টা নোবেল পেয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি । তো সেই সব নির্দেশক আবার কেন "প্রযোজ্য" (রিজেনেবল , লজিকাল) সেইটাও ব্যাখ্যা করা লাগে । এই সমস্ত খুঁটিনাটি ঠিক ঠাক করার পরে অবশেষে তুলনা করার কাজটা করা যায় । তার উপর , একক পরিমাপ্য ( ভ্যারিয়েবল) মাপতে হলে ( যেমন ঃ "মেধা" ) বাকি সব সীমানা (প্যারামিটার) এবং শর্ত ( কন্ডিশন, কনটেক্সট, কো ফাউন্ডার ) গুলোকে দুই ক্ষেত্রেই সমান রাখতে হবে । মানে এক মেধা ছাড়া বাকি সব কিছু সম্পূর্ণ এক রকম রেখে তারপর নারী ও পুরুষ শিশুকে একই পরিবেশে একই রকম সুযোগ দিয়ে বড় হতে দিলে কোন এক সময়ে (এন্ড লাইন) নির্বাচিত নির্দেশক ব্যবহার করে মেধা পরিমাপ করা যাইতে পারে ।
এখন এই পদ্ধতিটা কি কেউই জানে না ? বিজ্ঞানীরা এখনো এই কাজটা করে নাই কেন? উত্তরটা সোজা । মেধাকে সংজ্ঞায়িত করা খুবই কঠিন। যেমন কঠিন সাফল্যকে মাপা। কেউ বিলিওনার হয়ে ভাবে সে সফল । আর কেউ সারাজীবন সন্ন্যাস যাপন করে ভাবে সেই শ্রেষ্ঠ। অতদূর না যাই । স্রেফ নারী কি আর পুরুষ কি নিয়েই মারামারি করে রাত শেষ করে ফেলা যাবে । শরীর দিয়ে মাপা হবে নাকি মন দিয়ে ? কন্ট্রোল হবে কারা ? বৃহন্নলারা কই যাবে ? যে নিজেকে নারী , পুরুষ কোনটাই ভাবে না , সে কোন দলে যাবে ? শুধু কি জননাঙ্গ থাকলেই চলবে নাকি সেইটা আবার কাজও করতে হবে ? কাজ বলতে কি সঙ্গম করতে পারলেই হবে নাকি সন্তান জন্ম দিতে হবে ?
এই রকম অনেক কিছু নিয়েই তর্ক করা যায় । "মেধা" অথবা "সাফল্য" জিনিস দুইটা কি এবং সেইটা নারী ও পুরুষে সমান নাকি ভিন্ন এই সব নিয়ে নানা রকম বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষন করা সম্ভব উপরের পদ্ধতিতে । আবার উপরের কোন বিশ্লেষন , কোন যুক্তি বুদ্ধির " খ্যাতা পুড়ি" মনভাব নিয়েও নিজের বক্তব্যটা "তালগাছটা আমার" করে নেওয়া যায় । যার যা ইচ্ছা তাই করুক। আমার কোন কিছুতেই কোন সমস্যা নাই ।
আমার আফসোস শুধু দুইটা জায়গায় ।
১। নারী বেশি মেধাবী না পুরুষ বেশি মেধাবী এইটা যদি কোন পাগল বা ছাগল কোনদিন মেপে প্রমান করতেও পারে , তাইলেই বা কার কি লাভ ? এইটাতে যে কোন কচু , হাতি , ঘন্টা হবে না বা বদলায় যাবে না এইটা কেন কেউ বুঝলো না ?
২। তার চেয়েও বড় কথা , সত্যের কাছাকাছি পৌছানোর জন্য কি ভাবে "বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে" চিন্তা / বিশ্লেষন করতে হয় , সেইটা মানুষ যে শত শত বছর ধরে গবেষনা করে বের করলো , এইটার ব্যবহার কই ?
মানলাম , আজকাল অনেকেই বই টই পড়তে চায় না । তাই বলে দশম , একাদশ শ্রেনীর বই গুলাও কি মানুষ পড়া ছেড়ে দিয়েছে ? [ যে কোন দুইটা বিষয়ের তুলনা করার যে বৈজ্ঞানিক বা যৌক্তিক পদ্ধতিটা বর্ননা করেছি সেইটা আমার সময়ের এস এস সি এবং এইচ এস সি -এর বই থেকে নেওয়া ]
নারী বা পুরুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে দুর্দান্ত সব মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছে মানবের ইতিহাস জুড়ে । শুধুমাত্র সংখ্যা দিয়ে উদাহরন মাপতে বসলে এক এক ক্ষেত্রে এক এক রকম উত্তর পাওয়া যাবে সেইটা আমি জানি । কিন্তু যেটা জানতাম না এই দুইটা মজারোস্ট পড়ার আগে যে ,
" মেধা বা সাফল্য মানুষের জীবনে আসে তাদের যৌনাঙ্গ থেকে " ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



