somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৩১

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদি বাংলার ইতিহাস
(প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৩১


ব্রহ্মপুত্র- যমুনা (২৭৬ কি.মি.)
ব্রহ্মপুত্র নদী তিব্বতের মানস সরোবর হতে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পূর্বদিকে ডিহং নাম ধারণ করে ভারতের আসামে প্রবেশ করে। এরপর প্রায় উল্টোদিকে ঘুরে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে আসামের আরো দুটি ধারা দিবং ও লোহিতের সাথে মিলিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নাম ধারণ করে। এ ধারা পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার মাজাহারালিতে দক্ষিণ দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তারপর থেকে এ নদী ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নামে পরিচিত। এ ধারা দক্ষিণে ২৭৬ কি.মি. প্রবাহিত হয়ে আরিচার নিকট আলেকদিয়ায় গঙ্গা-পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। এ মিলিত ধারা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ২১২ কি.মি. প্রবাহিত হয়ে চাঁদপুরের নিকট মেঘনা নদীতে মিশেছে। এই সঙ্গমস্থলে মেঘনা নদী প্রায় ১১ কি.মি. চওড়া। এখানে থেকে প্রায় দক্ষিণ দিকে ১৬০ কি.মি. প্রবাহিত হয়ে মেঘনা চরআচিয়ার কাছে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। এই নদীর প্রাচীনতম উলেখ চন্দ্রবংশীয় রাজা শ্রীচন্দ্রের পশ্চিমভাগ তাম্রলিপিতে পাওয়া যায়।৫৬
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর বাম তীরে (পুর্বতীর) ধলেশ্বরী নদীর আগ পর্যন্ত কোনো উলেখযোগ্য শাখানদী নেই। তবে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র বাহাদুরাবাদের নিকট হতে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বেঁকে জামালপুর ও ময়মনসিংহ শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব বাজারের নিকট মেঘনায় পতিত হয়েছে। এককালে এটি ছিল ব্রহ্মপুত্র নদের প্রধান ধারা। কাপাশিয়া থানার টোকের নিকট বর্তমানে এ নদী প্রায় শুকিয়ে গেছে। এ নদীর শাখা নদীগুলো হলো বংশী, বানার, শ্রীকালী ও সাতিয়া। বংশী দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে তুরাগের সাথে মিলিত ধারা হিসেবে ঢাকার অদূরে বুড়িগঙ্গায় পতিত হয়েছে। বানার, শ্রীকালী ও সাতিয়ার মিলিত ধারা শীতলক্ষ্যা নামে প্রবাহিত হয়ে মুন্সিগঞ্জের নিকট ধলেশ্বরীর সাথে মিশেছে। ফান ডেন ব্রোক (১৬৬০) শীতলক্ষ্যাকে Lechi নামে অভিহিত করেছেন। লক্ষ্যা ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিমদিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলাকে পূর্ব-পশ্চিমে দু’ভাগ করে নারায়ণগঞ্জ শহরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে সামান্য দক্ষিণে ধলেশ্বরী নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ফান ডেন ব্রোকের সময়কালে শীতলক্ষ্যা একটি প্রশস্ত বেগবতী নদী ছিল। কিন্তু বর্তমানে স্রোতের ধারা খুবই ক্ষীণ। খুব বেশিদিন এই স্রোতধারা বেঁচে থাকবে বলে মনে হয় না। ফান ডেন ব্রোক, আইজ্যাক টিরিয়ান, থর্নটন, রেনেলসহ সকলের নকশা পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, সপ্তদশ শতকের পূর্বেই ব্রহ্মপুত্র-লাঙ্গলবন্ধ খাত পরিত্যাগ করে ময়মনসিংহ-ভৈরব খাত দিয়ে মেঘনার সঙ্গে ভৈরব বাজারের দক্ষিণ পাশ দিয়ে মিলিত হয়েছে।৫৭ ব্রহ্মপুত্রের এই প্রবাহকে কেন্দ্র করে হিন্দুদের ধর্মীয় পবিত্রতার ধারণা গড়ে ওঠার ফলে ঐতিহাসিকরা একে ব্রহ্মপুত্রের প্রাচীনতম প্রবাহ বলে অনুমান করেছেন। ৫৮ এই প্রবাহও এখন মৃতপ্রায়। ধলেশ্বরী যমুনা নদীর দক্ষিণ তীরের বড় শাখানদী। এটি পার্বতী হতে আরম্ভ হয়ে দক্ষিণে শীতলক্ষ্যায় মুন্সিগঞ্জের নিকট মিশেছে। শীতলক্ষ্যা আরো দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে গজারিয়ার নিকট মেঘনায় পতিত হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে কালীগঙ্গা মানিকগঞ্জের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ধলেশ্বরীতে পড়েছে। বুড়িগঙ্গা ধলেশ্বরী হতে বের হয়ে ঢাকা নগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ধলেশ্বরীতে পতিত হয়েছ। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কি.মি.।

দেশের উত্তর প্রান্ত থেকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর ডান তীরের উপনদীগুলো হচ্ছে ধরলা, দুধকুমার, তিস্তা, করতোয়া ও আত্রাই। ধরলা ও দুধকুমারের উৎস হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে। তিস্তা ব্রহ্মপুত্রের অন্যতম উপনদী। এটি হিমালয় হতে উৎপন্ন হয়ে সিকিমের পার্বত্য অঞ্চলের ভিতর দিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গের সমভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ডোমারের উত্তরে খড়িবাড়িতে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অতঃপর দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ২৮০ কি.মি. প্রবাহিত হয়ে চিলমারির নিকট ব্রহ্মপুত্রে পতিত হয়েছে। ঘাগট তিস্তার একটি শাখানদী। এটি রংপুর ও গাইবান্ধা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ফুলছড়ি ঘাটের নিকট যমুনায় পতিত হয়েছে। তিস্তা নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থিত ৩টি ছোট উপনদী সর্বমঙ্গলা, ডালিজান ও যমুনেশ্বরী যমুনায় পতিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পূর্বের খাতেই গড়ে উঠেছিল অনেক পবিত্র তীর্থভূমি। ময়মনসিংহ- জামালপুর-লাঙ্গলবন্ধে অষ্টমী সড়বান এদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর একটি তীর্থোৎসব।

করতোয়া আত্রাই গুর-গুর্মাণ-হুর সাগর (৫৯৭ কিমিঃ)
এই নদীগুলি সমন্বয়ে দিনাজপুর (২৫৯), রাজশাহী (২৫৮) এবং পাবনা (৮০) জিলার মধ্য দিয়ে ৫৯৭ কিমি দৈর্ঘ্যে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদীর মূলধারা ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার বৈকুণ্ঠপুর জলাভূমিতে উৎপন্ন হয়ে পঞ্চগড় জেলার ভিটগড়ের নিকট বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর দিনাজপুর জেলার খানসামার নিকট হতে এটি আত্রাই নামে পরিচিত। এই নদী করতোয়ার মতোই ক্ষীণকায়া হতে পড়েছে। এই নদীর দুরবস্থার কারণ হিসেবে ইংরেজ ঐতিহাসিক উইলিয়াম হান্টার ১৭৮৭ সাথে সংঘটিত সর্বগ্রাসী প্লাবনের বিষয় উল্লেখ করেছেন;৫৯

এই প্লাবনে তিস্তার প্রধান প্রবাহ পূর্বপথ পরিহার করে দক্ষিণ-পূর্বে সরে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হলে এরা দুর্দশার সম্মুখীন হয়। এই প্লাবনের পূর্ব পর্যন্ত তিস্তা করতোয়া ছিল হিমালয়ের পাদদেশ থেকে বঙ্গোপসাগরে যাবার একটি প্রধান নদীপথ। এই পথ বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়।

সেখান থেকে দক্ষিণ দিকে সমাধি ঘাট পর্যন্ত বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে। এ ধারা পুনরায় রাজশাহী জেলার দেওয়ানপুরে বাংলাদেশে ঢুকে বড়াল নদীর মধ্যে দিয়ে পাবনার বেড়ার নিকট যমুনায় পতিত হয়েছে; আত্রাই নদীর নিন্মাংশ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবহমান। এ অংশের নাম গুর। এ নদী ছোট যমুনা, আত্রাই, করতোয়া বিভিন্ন নামে দেশের উত্তরাংশে ছড়িয়ে আছে। দিনাজপুর-করতোয়া পূর্বে খানসামার উত্তরে রংপুর-করতোয়ার সাথে মিলিত হতো;বর্তমানে রংপুর-করতোয়া সৈয়দপুরের নিকট উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণ দিকে এঁকেবেঁকে গোবিন্দগঞ্জ পৌঁছে। এখান হতে কাটাখালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঙালি নদীতে পতিত হয়েছে। বগুড়া-করতোয়া মিঠাপুকুরের নিকট উৎপন্ন হয়ে বগুড়ার দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঙালি নদীতে পতিত হয়েছে। এর মিলিত ধারা ফুলঝুরিতে মিশেছে; অতঃপর বাঘাবাড়িতে এসে হুরাসাগরে পড়েছে। পরবর্তীকালে যমুনায় পতিত হয়েছে।

করতোয়ার আরেকটি অংশ জলপাইগুড়ি জেলায় উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে আত্রাইতে পতিত হয়েছে। করতোয়ার এ অংশ পাবনা-করতোয়া নামে পরিচিত। করতোয়া মাত্র তিনশ বছর পূর্বেও দুর্বার, ভয়ংকর খরস্রোতা ও বিরাট নদী ছিল এ প্রমাণ আছে। মেজর রেনেলের অঙ্কিত নকশায় করতোয়াকে দেশের একটি বড় নদী হিসেবে দেখানো হয়েছে। চীনা পরিব্রাজকদের বর্ণনাতেও এরকম পাওয়া যায়। বৈদিক যুগেও করতোয়ার সগর্ব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এই নদীর তীরে, এদেশের সভ্যতার আদি লগ্নে গড়ে উঠেছিল শহর ও বন্দর। পুণ্ড্রনগর (বর্তমান মহাস্থানগড়) করতোয়ার পশ্চিম তীরে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু বর্তমানে এই নদীর স্রোতধারা শুকিয়ে অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে।

৫৬. রমেশচন্দ্র মজুমদার: বাংলার ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)
৫৭. রমেশচন্দ্র মজুমদার: বাংলার ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)
৫৮. আনিসুজ্জামান: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস।
৫৯. W.W. Hunter: Statistical Account of Bengal.

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৩০
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×