somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টারান্টুলা (গোয়েন্দা গল্প)

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Target A in motion.
Target B in motion.
Target A and B getting closer to each other.
Target locked.
Shoot.
নি‌‌‌ঃশব্দে তোলা হয়ে গেল কয়েকটি ছবি।
Target A: শামীমা আক্তার, শ্রেণী: ৯ম, শাখা: ক, রোল: ২৮
Target B: ইমতিয়াজ মোর্শেদ, শ্রেণী: ১০ম, শাখা: গ, রোল: unknown
কী ভাবছেন? কোন ভয়ংকর সন্ত্রাসী বা জঙ্গী গ্রুপ স্কুলের কোমলমতী ছাত্র-ছাত্রীদের অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করছে? শান্ত হোন। ব্যাপার এতটা ভয়ংকর না, আবার একেবারে ফেলনাও না।

আমি আরিফ, আরিফ হোসেন (৮ম শ্রেণী, ক শাখা, রোল: ০০১)। উচ্চতা ৪ ফিট ৫ ইঞ্চি, মোটা আর গায়ের রং কালো বলে অনেকে ডাকে হোঁদল কুৎকুৎ, কেউ বলে কুমড়ো পটাশ। কম উচ্চতা, চেহারা-সুরত বাচ্চাদের মত আর আপাতদৃষ্টিতে নন-ভেজ বিষয়াবলীতে আগ্রহ নেই দেখে অনেকে ‘ছোট্ট সোনামণি’ বলেও ডাকে। এখন এখানে কী চলছে আর আমার ভূমিকা কী- সে বৃত্তান্ত বলতে গেলে গোড়া থেকেই শুরু করতে হয়।
আমি ছোট থেকেই কো-এজুগেশন স্কুলে পড়ি। ক্লাস ৪-৫ পর্যন্ত দেখতাম ছেলে আর মেয়েদের মধ্যে প্রবল প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দিতা। এর পেছনের কোন সুনির্দিষ্ট কারণ আজও বের করতে পারিনি। হয়তোবা তখন পড়াশুনোয় মনোযোগ বেশি থাকে বলেই এ অবস্থা। ক্লাস ৬ থেকেই তাদের আচার-আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা শুরু করলাম। ছেলেরা হঠাৎ মেয়েদের সাথে কথা বলার জন্য ছোঁক ছোঁক করা শুরু করল। মেয়েরাও আমাদের নামে নালিশ করার সুযোগ খোঁজা বন্ধ করল আর ছেলেদেরকে প্রশ্রয় দেয়া শুরু করল, যদিও আগের মনোভাবধারী ছেলে-মেয়েও ছিল। তারা প্রথম দলকে তিরস্কার করত। আমি ছিলাম দ্বিতীয় দলে, এখনও আছি। দিনে দিনে দ্বিতীয় দলের লোকজন কমতে থাকল। অনেক কাছের বন্ধু ধীরে ধীরে দূরে সরে গেল আর আমি একা হয়ে যেতে লাগলাম।

যত উপরের ক্লাসে উঠতে থাকলাম, রঙ ততই চড়তে থাকল। এ ওকে লাইক করে, সে তাকে লাইক করে- এ জাতীয় কথা শুনতে থাকলাম। উপরের ক্লাসের সিনিয়র ভাইরা টিফিন পিরিয়ডে আমাদের ক্লাসের চারপাশে ভিড় জমাতে থাকল। মেয়েরা এতে অনেক আগ্রহ পেত। যেসব মেয়েদের বড় ভাইরা তাদের স্কুলে আনা-নেওয়া করত তারাও টি-শার্ট tug করে, গগলস, কেডস পড়ে স্কুলে আসা শুরু করল। ফিটফাট হয়ে আসা বহিরাগত ছেলেদেরও দেখলতে লাগলাম স্কুল থেকে একটু দূরে। অসামাজিক কার্যকালাপওয়ালা হুড-তোলা রিকশাও দেখতে লাগলাম অনেক। আসলে এসব ব্যাপার আগেও দেখতাম। কিন্তু বুঝতাম না বলে চোখেও লাগত না। ক্লাস নাইন, টেনের কথা নাহয় বাদই দিলাম।

আমি ছোটবেলা থেকেই গোয়েন্দা গল্পের পোকা। সবসময় এসব নিয়েই অবসেসড থাকি। আমার গোয়েন্দা হবার প্রবল ইচ্ছা। কিন্তু গল্পের বইয়ের মত স্যারের কলম চোর খোঁজার মত ব্যাপারগুলো আমাকে আকর্ষণ করত না, আবার কিশোর দলের হাতে দুর্ধর্ষ স্মাগলার দল ধরা পড়ার উচ্চাভিলাষী গল্পগুলোও দিশা দেখাত না। আমি আমার ইচ্ছাটাকে একটা মিনিংফুল আর প্র্যাকটিক্যাল রূপ দিতে চাচ্ছিলাম। চলমান পরিস্থিতি আমাকে সে সুযোগ এনে দিল।

অবস্থা যখন এরকম, ক্লাস এইটে পড়া অবস্থায় একটা কাণ্ড ঘটালাম। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রেমোদ্যানে হিরোশিমা-নাগাসাকির মত দু’টা বোমা আছড়ে পড়ল। গার্জিয়ানরা যেখানে ভিড় করে, পেপার বিছিয়ে আড্ডা দেয়- স্কুলের মেইন গেটের দেয়ালে আর উল্টো দিকের ফুটপাথের দেয়ালে দু’টা বিজ্ঞাপনের পোস্টার লাগালাম গোপনে। লেখা ছিল,

“আপনার সন্তানের আচার-আচরণে পরিবর্তন লক্ষ করছেন?
সে কি একা একা হাসে?
আপনার মোবাইলের বিল বেড়েই যাচ্ছে কিন্তু কল লিস্টে লক্ষণীয় কিছু নেই?
সন্তানের রেজাল্ট পড়তির দিকে?
বেশি অন্যমনস্ক থাকে?
আপনার সন্তান প্রেমে পড়েছে কিনা যত্নসহকারে খুঁজে বের করার দায়িত্ব নিতে আগ্রহী গোয়েন্দা

--- টারান্টুলা ---

যোগাযোগ: ***-******** ”
গোয়েন্দাদের জন্য টিকটিকি নামটা ভাল লাগত না, তাই ভয়াল দর্শন মাকড়শা টারান্টুলার নামটাই মনে ধরল। আমি তো ভেবেছিলাম গার্জিয়ানরা এটাকে ফাজলামি ভেবে উড়িয়ে দিবে। কিন্ত যেরকম সাড়া পেলাম তাতে আমি অবাক। কৌতূহল বড়ই অপ্রতিরোধ্য ব্যাপার।

ছাত্র-ছাত্রীরা কেউই সিরিয়াসলি নিল না প্রথমে। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন এক একটা কেসে সফল হতে থাকলাম তখন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়ে গেল। ফেইসবুকে রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস হাইড করা শুরু হয়ে গেল, প্রিয়তম/প্রিয়তমার সাথে ছবি আপলোড করা বন্ধ হয়ে গেল। ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রুপগুলো একে-অপরের দিকে সন্দেহের আঙ্গুল তোলা শুরু করল, সংঘর্ষ বাড়তে থাকল। বড় ভাইরা এসবের সমাধান করবে কি, তারা নিজেরাই তো দৌড়ের উপর। স্যারদের রিঅ্যাকশন দুই রকম। অনেকে মনে করলেন স্কুলের রেজাল্ট এতে আগের চেয়ে ভাল হচ্ছে। আরেক দল মনে করলেন গার্জিয়ান মহল এটাকে স্যারদের কর্তব্য পালনে ব্যর্থতা হিসেবে দেখবেন। যে যাই বলুক, আমি আমার ধান্ধায় থাকলাম। আমি ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করছি এটাই বড় কথা। সবাই টারান্টুলা নামক এক আতঙ্কে ডুবে থাকল। টারান্টুলার অদৃশ্য জাল সর্বত্র বিস্তৃত, তার আটটা চোখ- সে সব দেখে, তার আটটা পা- সে সর্বত্র বিচরমান! টারান্টুলা হয়ে পড়ল আমাদের স্কুলের ফ্যান্টম- চলমান অশরীরী!

***

মোবাইল ফোনে তোলা ছবিগুলো শামীমা আপুর আম্মুকে দ্রুত MMS করলাম। এবার আমি টিচার্স রুমে যাব। ক্লাস ওয়ার্কের খাতাগুলো আনতে হবে। গোয়েন্দাগিরির সুবিধার্থে আমি ক্লাস ক্যাপ্টেন হয়েছি। তাই যখন তখন ক্লাস থেকে বের হতে পারি। ক্লাস ওয়ার্ক, হোম ওয়ার্কের খাতার স্তূপ বহন করতে হয় বিধায় কেউ ক্লাস ক্যাপ্টেন হতে চায় না আর সেই সুযোগটা আমি নিয়েছি। টিচার্স রুমে ক্লাস টেনের গ শাখার হাজিরা খাতাটা দেখতে হবে। ইমতিয়াজ ভাইয়ের রোল নাম্বার, অনুপস্থিতির সংখ্যা আর দিনগুলো নোট করতে হবে।

টিচার্স রুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে না দিতেই শামীমার আম্মুর কল। মোবাইল ফোন নিয়ে বসে ছিল নাকি! কি বিপদ! SMS করতে পারে না? ওয়াশরুমে ঢুকে রিসিভ করলাম। কল ধরা মাত্রই “ছবি ক্লিয়ার আসেনি কেন? অ্যাডভান্স নিয়েছ কী করতে ?”- এক রাশ ঝাড়ি। আরে, আমি কি ফটোগ্রাফার নাকি- যে ছবি তোলার আগে গিয়ে বলব- এদিকে তাকান, আরও ঘনিষ্ঠ হন! ছবি ফ্যামিলি ফটো অ্যালবামে ভরবে নাকি! কোনমতে একটা বুঝ দিয়ে মুক্তি পেলাম। মোবাইল ফোনটা মোজার ভেতর লুকিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলাম।

কোন স্কুলের সাথে যেসব নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী জড়িত থাকে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর ভয়ংকর হল গার্জিয়ান গোষ্ঠী। অর্থনৈতিক কারণে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ। আর কী কারণে ভয়ংকর তা বলে শেষ করা যাবে না। অবশ্য ভয়ংকর মূলত নারী সদস্যরাই। কার মেয়ে কার ছেলের চেয়ে কম মার্কস পেয়েছে- তার প্রতি তাঁদের সদাসতর্ক দৃষ্টি। স্যার-ম্যাডামদের কাছে কে তাঁর সন্তানকে সবচেয়ে ভালভাবে ইন্ট্রোডিউস করতে পারবে তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। গার্জিয়ান সমাজের কোন সদস্যা কোন কারণে আপনার উপর অসন্তুষ্ট হলেই হল, তাঁরা আপনাকে কল্পনাশক্তি আর বর্ণনাশৈলীর জোরে ডাকু বীরাপ্পন সিং বানিয়ে দিবেন। অবস্থা এরকম হলে আপনাকে যদি এনার্জি ড্রিংকও খেতে দেখে, তাঁদের কথার জোরে এনার্জি ড্রিংকের নিরীহ বোতলও ডাইলের বোতল হয়ে যেতে পারে। তারপরও এই গোষ্ঠীই আমার সবচেয়ে প্রিয়। সন্তানদের প্রতি তাঁদের অতি সতর্কতার প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।

তো, এরকম গোষ্ঠীর কেউ যখন আপনার ক্লায়েন্ট হবে, আপনাকে ভালোই ঝক্কি পোহাতে হবে। আমার কাজ হল প্রেমের উপযুক্ত প্রমাণ দেখানো। মোবাইলে তোলা ফটোর জন্য ৫০০ টাকা। আর ডেটিং-স্পটে সশরীরে উপস্থিত হবার সুযোগ করে দেওয়ার ফি ১০০০ টাকা। আমি কখনই সরাসরি দেখা দেই না। টাকা পাঠানো হয় বিকাশ দিয়ে। ফটো যায় MMS এ, ডাকে পাঠানোরও ব্যবস্থা আছে। “এই ফটো তো ঘোলা আসছে, আরো ক্লিয়ার তুলে পাঠাও”, এই কর, সেই কর- শুনতে শুনতে মাথা নষ্ট হবার যোগাড়। অনেক গার্জিয়ান আবার আমাকে স্কুলের সামনে ভ্যানগাড়ির সবজি বিক্রেতার সাথে গুলিয়ে ফেলেন- দর কষাকষির চেষ্টা চালান। আমি এসব ব্যাপারে অনেক স্ট্রিক্ট। কারণ আমি জানি, কাউকে একটু ছাড় দিলেই ওটা রাষ্ট্র করে ফেলবেন। তখন সবাই তার সুযোগ নিবে। মেয়ের বয়ফ্রেন্ড চাকরি করলে অনেকে আবার ভাল ইন্টারেস্ট পান। কী করে, কেমন চাকরি, বেতন কেমন– এসব দিয়ে কী করেন আমি বুঝি না। শুধু ঝামেলা!

টিচার্সরুম থেকে খাতার স্তূপ নিয়ে ফেরার পথে দেখি করিডরের উল্টোদিক থেকে তামান্না আসছে। তামান্না রহমান ভাল ছাত্রী, অনেক সুন্দর দেখতে আর চুপচাপমত একটা মেয়ে। এতই চুপচাপ যে ছেলেদের সাথে তো দূর, মেয়েদের সাথেও খুব বেশি কথা বলে না। কিন্তু একে কোন অজানা কারণে সবসময় এড়িয়ে চলতে চাই। ও মাথা তুলে আমার দিকে তাকাল আর আমার হাতের খাতাগুলো হঠাৎ খুব ভারী মনে হল, বুকের ধুকপুকানি বেড়ে গেল। কী হচ্ছে আমার সাথে? ও আমার কাছে এসে হাসল। আমাকে মাথা তুলে ওর চেহারার দিকে তাকাতে হল কারণ ওর হাইট অনেক ভাল আর আমার চেয়ে বেশি। বলল, “তুমি তো আমাদের জন্য অনেক কষ্ট কর দেখছি। আমাকে কিছু খাতা দাও।” শুনে কেন যেন লজ্জায় হুট করে আমার কান দুইটা গরম হয়ে গেল। মুখ দিয়ে কথা বের হতে চায় না। কোনমতে আমতা আমতা করে না করলাম। তামান্না চলে গেল। পেছন ফিরে দেখলাম মুখে হাত দিয়ে হাসি ঢাকার চেষ্টা করছে। শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল। ও আমার নার্ভাসনেসের ব্যাপারটা ধরে ফেলেছে নাকি?

ওর সামনে এরকম আমার সাথে আগেও হয়েছে। বাংলার আজাদ স্যারের ক্লাসে কাকতালীয়ভাবে যখন আমাদের দু’জনকে ক্লাসের সামনে ডাকা হয়েছিল নাটক রিডিং দিতে, তখন কোন অজানা কারণে আমার স্বর আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আর ক্লাসের সবাই কি হাসাহাসি! বিরাট লজ্জা পেয়েছিলাম সে বার। তবে কেউ আসল ঘটনা ধরতে পারে নি। প্রায় সময়ই তামান্নাকে নিয়ে বিভিন্ন চিন্তা বারবার মনে আসে। যখনই সম্বিৎ ফিরে পাই, অনেক লজ্জা পাই আর ভুলে যেতে চেষ্টা করি। এসব তো হবার কথা না। কারণ ওর সাথে আজ পর্যন্ত কয়বার কোন কথা বলেছি(সবই ক্লাসের বিভিন্ন প্রয়োজনে, আমি যেহেতু ক্যাপ্টেন) আঙ্গুলে গোনা যাবে। আমার সাথে এরকম কেন হয় তার সমাধান যত দ্রুত সম্ভব বের করতে হবে। তবে কি ডাক্তারকেও রোগীর রোগ পেয়ে বসল? পুরো ব্যাপারটা যথাসম্ভব ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম।

খাতাগুলো নিয়ে ক্লাসরুমে ঢুকলাম। ঢুকেই দেখি কপাল খারাপ। টিচার তখনও আসেনি আর সানি আমার দিকে তাকিয়ে কুটিল হাসি হাসছে। নিশ্চয়ই কোন বদ মতলব আছে। এই ছেলের অনেক পছন্দের কাজ মেয়েদের সামনে আমাকে bully করা। সানি শিকদার স্কুলের স্মোকিং এইস। রোল নং ২, অনেক লম্বা, হ্যান্ডসাম, মাসক্যুলার ফিজিক, নাইনে উঠলে স্কুলের ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন হবে– টিনএজ মেয়েদের আকর্ষণ করার মত সবই আছে তার কাছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, এরকম একটা ছেলের আমার পেছনে লাগার কোন কারণ থাকতে পারে না। কিন্তু আমি বের করেছি কারণ আছে। তার সবকিছু টপ ক্লাস হলেও আমার জন্য তার ফার্স্ট হওয়াটা বাকি রয়ে গেছে। এজন্য ওর আম্মু ওকে বেশ কথা শোনায় বলে গোপন সূত্রে খবর পেয়েছি। মনে হয় তার ঝাল আমার উপর ঝাড়ার জন্য এমন করে। “আহা! ছোট্ট সোনামণিটা আমাদের জন্য কত কষ্টই না করে!”, বলে আমার গালের উদ্দেশ্যে তার বিরাট থাবা বাড়িয়ে দিল। ও আমার গাল এত জোরে টিপে দিল যে, চেহারা বিকৃত করে আ‌‌‌‌‌ঃ করে উঠলাম আমি, হাত থেকে খাতাগুলো পড়ে গেল। আর ওদিকে মেয়েদের সারিতে হাসির রোল পড়ে গেল। ওখানে দেখলাম তামান্নাও বসে মুচকি হাসছে। আমার গরম কান আরও গরম হল, তবে এবার অপমানে। মাথা নিচু করে নিজের বেঞ্চে ফিরে আসতে লাগলাম আমি। দাঁড়া সানি, তোর আম্মুও আমাকে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছে। আমি নিশ্চিত কিছু না কিছু বের হবেই। তোর গোপন প্রণয়ের কথা সবাইকে জানানোর ব্যবস্থা করব। তখন তোর ভ্যাবাচ্যাকা মুখের দিকে তাকিয়ে তামান্না একইভাবে হাসবে। ধুর! তামান্নার চিন্তা বারবার আসে কেন?

কে হতে পারে তার গার্লফ্রেন্ড? মেয়েদের সারির দিকে তাকালাম। দেখলাম স্বাতী হাসতে হাসতে শান্তাকে কাঁধ দিয়ে গুঁতো দিল আর শান্তা একটা বই দিয়ে মুখ ঢেকে লাজুক ভঙ্গিতে সানির দিকে তাকিয়ে আছে। হুমম... স্বাতী, শবনম, সাদিয়া, সানজিদা, সুমি, শান্তা– এরা সবাই আমার সন্দেহের তালিকায়। এদের সবার নাম S দিয়ে শুরু আর হাইট ভাল। কেন এই ব্যাপারটার উপর জোর দিচ্ছি পরে আসছি। জুনিয়রদের মধ্যে কেউ সন্দেহে নেই।

আজাদ স্যারের ক্লাস চলাকালীন সময়ে দেখলাম মেয়েদের সারিতে শান্তা চুপি চুপি এক টুকরো কাগজে কী যেন লিখে পেছনের বেঞ্চে তাসলিমা আর সুমিকে দিল। আর ওরাও বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ল। মেয়েদের এই অভ্যাস আমার অনেক কাজে দেয়। স্কুল ছুটি হবার পর আমাদের ক্লাসের সবাই যখন চলে গেল আমি ওদের বেঞ্চের দিকে গেলাম। কাগজের টুকরোটা দলা পাকানো অবস্থায় ঠিক বেঞ্চের নিচেই পড়ে আছে। কাগজটা খুলে সাথে সাথেই চোখ সরিয়ে আবার দলা নিজেই পাকিয়ে দিলাম। ছি ছি! এটা কি দেখে ফেলাম! গোপনীয় মেয়েলি ব্যাপার নিয়ে লেখা। এটা আমার দেখা উচিত হয় নি। একটা চিন্তা আমাকে ভালভাবেই গ্রাস করল। এই যে আমি টাকার বিনিময়ে অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছি- এটা নৈতিক ভাবে কতটুকু গ্রহণযোগ্য? এতদিন চিন্তাটা মাথায় আসেনি। আজকের এই কাগজের দলা আমাকে ভাবিয়ে তুলল। কিন্তু আমি তো আসলে তাদের ভালোর জন্যই কাজ করছি আর তাদের অভিভাবকদের চাওয়াতেই এটা হচ্ছে। বয়সন্ধিতে আবেগের টাল-মাতাল সময়েই আসে জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি আর ভর্তি পরীক্ষা। হয়তবা এই বয়সে গার্জিয়ানদের কাছে প্রাইভেসি একটু উন্মুক্ত থাকলে আখেরে তাদেরই লাভ। আর তাছাড়া এসবকে অনেকে প্রেম-ভালবাসার সংজ্ঞায় ফেলতে চান না, এসবকে বলেন ইনফ্যাচুয়েশন। “এ্যাই ছেলে, এখনও কী কর? বাইর হও, ঝাড়ু দিমু।” পেছনে তাকিয়ে দেখি বিরাট ঝাড়ু হাতে স্কুলের আয়া মাজেদা খালা। চিন্তায় ছেদ পড়ল। বের হতে হতে ভাবলাম এসব বিতর্ক পরেও করা যাবে। আপাতত যেগুলোর অ্যাডভান্স নিয়ে রেখেছি, সেগুলোর কাজ শেষ করি।

আমি স্কুলের পেছন দিকে আসলাম। একটি বিশেষ জায়গায় এসে দেয়ালের দিকে তাকালাম। এই জায়গাটা আমার কাছে বিশেষ জায়গা দেয়ালে একটা লেখনির জন্য। রিসেন্টলি খুঁজে পেয়েছি। ইটের টুকরা দিয়ে একটা মাঝারি আকৃতির হার্ট চিহ্ন একে ভেতরে $ + S লেখা। ইটের টুকরার দাগ থেকে চাপ দেওয়ার তারতম্য দেখে বুঝতে পেরেছিলাম এটা করেছে দুইজন এবং যে হার্ট এঁকেছে আর $ লিখেছে সে বামহাতি। সানিও বামহাতি আর নামের আদ্যক্ষর এভাবে লিখতে পছন্দ করে। মাটি থেকে হার্টটার উচ্চতা এর আঁকিয়ের ভাল হাইটের দিকেই নির্দেশ করে। পাশের S টা যে লিখেছে তার হাইটও খারাপ না, কারণ লেখা দেখে মনে হয় না তাকে $ এর সাথে সামঞ্জস্য রাখতে পায়ের আঙ্গুলে ভর দিয়ে লিখতে হয়েছে, সে শুধু হাত উঁচু করেই লিখতে পেরেছে। এই লেখা দেখে মনে বল পাই, আমার ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স দূর হয়।

মেইন গেইট দিয়ে বের হবার সময় দারোয়ান চাচাকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করলাম। ইনি আমাকে খুব পছন্দ করেন। “আজকালকার পোলাপাইনরা যে কী করে না...” প্রসঙ্গ তুলে ইনার কাছ থেকে বহু বার অনেক মূল্যবান তথ্য আদায় করেছি। বের হয়েই দেখি শান্তা দাঁড়িয়ে, অস্থির দেখাচ্ছে। আমার উত্তেজনা শুরু হয়ে গেল। এই বিশেষ অস্থিরতা আমি চিনি। কেন যেন মনে হতে লাগল আজকেই আমার লাকি ডে। এত তাড়াতাড়ি সানিকে ধরে ফেলব! সব জায়গায়ই ছবি তোলার সুবিধার জন্য আমি লুকানোর জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখি। সেই রকম একটা স্পটে গিয়ে লুকালাম। যাহ্, হলো না! দেখলাম, স্কুল থেকে একটু দূরে গিয়ে একটা টাগ করা ফুল স্লিভ শার্টপড়া বেশি বয়সি ছেলে শান্তার সাথে দেখা করল। তারপর শান্তা ছেলেটার বাইকে উঠে পড়ল। আমি নিশ্চিত এ কোন ভাবেই তার বড় ভাই জাতীয় কেউ না। ফটো তুলতে শুরু করলাম।

ফটো তোলা শেষ করে আমার সমস্ত মনোযোগ ছেলেটার গেটআপ পর্যবেক্ষণে ঢেলে দিলাম। আমি গেটআপ দেখে মানুষ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। প্রথম প্রথম ভালো পারতাম না। প্র্যাকটিস করে উন্নতি করেছি। সাইকোলজির উপর বইপত্রও পড়ি। অনেকেই ফরমাল গেটআপে ডেটিংয়ে আসতে পছন্দ করে। তারপরও তার ব্যাগটার দিকে তাকিয়ে মনে হল - ছেলেটা চাকরি করে আর কাজ থেকে ফিরে শান্তার সাথে দেখা করতে এসেছে। হাতে বহন করার রেক্সিনের ব্যাগ, ভেতরে বইখাতা নেই, কাগজপত্র আছে বলেই মালুম হচ্ছে। তলাটা অনেক বেশি ধূলায় ভরা আর ঘষা খেয়ে তলার অনেক জায়গারই চামড়া উঠে গেছে। তাকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় আর ব্যাগটা অমসৃণ ফ্লোরে রাখতে হয় বলেই এই অবস্থা। তার মানে ডেস্ক-জব করে না, বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় এমন কাজ, salesএ কাজ করে মনে হয়। শপিংয়ে যাই না, তাই জামাকাপড়ের দরদামও বুঝি না। এখন এটার অভাব প্রবলভাবে বোধ করলাম। জামা-কাপড়ের রুচি, দরদাম দেখে মানুষ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়। এটা আমার অনেক বড় দূর্বলতা। ঠিক করেছি, আসছে ঈদে বাবার সাথে মার্কেটিংয়ে গিয়ে জামাকাপড়ের দরদাম সম্পর্কে ভাল ধারণা তৈরি করব। সানির জন্য করা লিস্ট থেকে শান্তার নাম কেটে দিলাম। সানিকে নিয়ে সবসময় চিন্তা করা বাদ দিতে হবে। আমি যদি সব কেসেই সানিকে খুঁজি তবে আমার ডিডাকশনের উপর খুব বাজে প্রভাব পড়বে। একজন ভাল ডিটেকটিভের কখনই উচিত না আগে থেকেই মনে মনে কোন সিদ্ধান্ত দাঁড় করিয়ে ফেলা বা কোন নির্দিষ্ট ফলাফলের আশা করা। সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে কেবল পরিপূর্ণ তদন্তের পর।

বিকেলে হামিদ স্যারের ম্যাথ কোচিংয়ে আসলাম। যদিও আমার কোচিং তেমন দরকার হয় না, তারপরও শুধু তথ্য সংগ্রহের লোভে অনেকগুলোয় ভর্তি হয়েছি। শুরু হবার পনেরো মিনিট আগে এসে স্যারের বাসার বাইরে গেটের কাছেই ঘোরাঘুরি করছিলাম। হঠাৎ “কটাক্, কটাক্, কটাক্” আওয়াজ শুনে পেছন ফিরলাম। তামান্না হাইহিল পড়ে এসেছে, তার আওয়াজ। এমনিতেই লম্বা, আবার হাইহিল পড়ার কী দরকার? বুকের ধুকপুকানি আবার বেড়ে গেল। ওর পারফিউমের গন্ধে আমার দমবন্ধ হয়ে এল। মেয়েদের পারফিউমের গন্ধ আমার একেবারেই সহ্য হয় না, তা যতই হালকা হোক না কেন। বুকের ধুকপুকানি জাতীয় দুর্বলতা থেকে যত দ্রুত সম্ভব মুক্তি পেতে হবে। এভাবে চলে না। কোন কেস সলভ করার সময় এসবের জন্য সব পণ্ডও হয়ে যেতে পারে।

কোচিংয়ে এসে সানিকে দেখে মন ভাল হয়ে গেল। ও আজকে ভাল গেটআপে এসেছে। এই গেটআপের উদ্দেশ্য যদি দাওয়াত খাওয়া না হয় তবে আজ আমার শুভদিন হলেও হতে পারে। আজ মঙ্গলবার, ওয়ার্কিং ডে। কোচিংয়ে সানজিদা, সাদিয়া, সুমিও এসেছে। যদিও মেয়েদের গেটআপ কেমন হলে ভালো, কেমন হলে খারাপ বুঝি না, তারপরও কিছুটা হলেও বুঝলাম সুমির গেটআপও অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে বেশ গোছানো মনে হচ্ছে। এদিকে আবার সানি আর সুমির একই দিনে স্কুলে অনুপস্থিতির রেকর্ডও আছে। পরপর দুই কাকতাল তো দুইয়ে দুইয়ে চারও মিলাতে পারে। আজকের দুপুরের ঘটনা মনে করে সংযত হলাম। যথারীতি কোচিং করলাম। সানি জলদি জলদি অংক শেষ করে সবার আগে বেরিয়ে গেল। আমিও অংক শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম।

বেরিয়ে দেখি সানি মোবাইল ফোন হাতে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে “ছোট্ট সোনামণি, তাড়াতাড়ি বাসায় যাও। আম্মু বকা দিবে।” বলে আবার আমার দিকে হাত বাড়াল। আমি চেহারা বিকৃত করে সরে এলাম। ও বলল, “ওমা! চেহারা অমন করছ কেন? প্যান্টে হাগু করে দিয়েছ?”। হুঁ, কপাল ভালো থাকলে প্যান্টে হাগু কে করবে তার ফয়সালা আজকেই হবে, দাঁড়া।

সানি হাঁটা দিল। কোনদিকে যাচ্ছে দেখে নিয়ে আমিও গলি থেকে বের হয়ে মুদির দোকান থেকে একটা বাটার বন কিনে খেতে খেতে হাঁটা দিলাম। এসময় রিল্যাক্সড থাকা জরুরি। এই এলাকার অলি-গলি সব ভাল করেই চিনি। লুকানোর অনেক স্পটও ঠিক করা আছে। সানি কোথায় যেতে পারে তার উপর ভিত্তি করে মনে মনে একটা বেছে নিলাম। নিশ্চয়ই ও সবার চোখের আড়াল কোন জায়গা বেছে নিবে।

এক গলি দিয়ে ঘুরে জায়গা মত আসতেই দেখি এখান থেকে ২৫-৩০ ফিট দূরে সানির পাশ দেখা যাচ্ছে। মারহাবা! অপেক্ষা করতে থাকলাম। ঘড়ির দিকে তাকালাম। সানির গার্লফ্রেন্ড যদি কোচিংয়েরই হয় তবে এতক্ষণে এসে পড়ার কথা। কারণ কোচিং শেষ হয়ে ৫ মিনিট হয়ে গেছে। আরও অনেক্ষণ পার হল। এত দেরী হলে তো মুসিবত। আকাশে মেঘ করেছে। সন্ধ্যা নেমে গেলে তো ফ্ল্যাশ বন্ধ রেখে ছবি তোলা যাবে না।

হঠাৎ দূর থেকে শুনি মৃদু “কটাক্, কটাক্, কটাক্”। তামান্না আসছে। এই রে, গেল বুঝি সব! নার্ভ শক্ত করলাম। কিন্তু তামান্না দেখলাম সানির দিকে হাঁটা দিল। ওরা কিছুক্ষণ হেসে হেসে কথা বলল। কী বলে শোনা যায় না। তারপর একটা রিকশা ঠিক করে উঠে পড়ল। মনে পড়ল তামান্না রহমানের ডাকনাম স্নিগ্ধা। এই নাম সর্বশেষ ক্লাস টু-তে শুনেছিলাম।

এমন সময় বৃষ্টি নেমে এল। ওরা রিকশার হুড তুলে দিল। আমি জানি, আমি জানি হুডের নিচে কী চলবে। হায়রে! এতটাই হতবিহ্বল হয়েছি যে একটাও ছবি তোলা হল না। বুকের ভেতর আর ধুকপুকানি নেই। তার বদলে কেমন যেন মোচড়াচ্ছে। হঠাৎ অনেক দু‌‌‌ঃখ পেল। এই দু‌‌‌ঃখের উৎস কী? বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছি আমি। ব্যাগ থেকে ছাতা বের করার তাড়া নেই। মোবাইল ফোন ভিজে যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মোবাইল ফোন ব্যাগে ভরারও তাড়া নেই। মরুকগে সব! চোখ ফেটে অশ্রু বের হল। সেই বিখ্যাত SMS টার মত অশ্রু বৃষ্টির পানিতে মিশে গেল, কেউ বুঝতে পারল না আমি কাঁদছি।





সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৪৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×