somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের এই দেশ

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রবন্ধ সংক্ষেপ: ছায়াঘেরা, পাখি ডাকা প্রকৃতির রূপসী কন্যা আমাদের এই বাংলাদেশ। এ দেশের আঁকাবাঁকা নদী, বন-পাহাড় আর দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ আমাদের মুগ্ধ করে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। রাজধানী শহর ঢাকা ছাড়াও সারা দেশে আরও অনেক শহর রয়েছে। এসব শহরে রয়েছে উঁচু উঁচু দালানকোঠা। শহরের রাস্তাগুলো বেশ চওড়া। এসব রাস্তায় অনেক রকম যানবাহন চলাচল করে। শহরে অনেক পেশার মানুষ রয়েছে। কাজের ফাঁকে অবসর বিনোদনের জন্য শহরে রয়েছে পার্ক, উদ্যান, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা।
শহরের চেয়ে আমাদের দেশে গ্রামের সংখ্যাই বেশি। গ্রামের বাড়িঘর শহরের মতো নয়। সাধারণত বাঁশ, কাঠ, ছন, খড়, গোলপাতা, হোগলাপাতা ইত্যাদি দিয়ে গ্রামের বাড়িঘর তৈরি হয়ে থাকে।
আমাদের বাংলাদেশে রয়েছে ছোট-বড় অনেক নদী। নদীর সঙ্গে এ দেশের মানুষের গভীর মিতালি। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র এ দেশের বড় নদী। তিস্তা, করতোয়া, ইছামতী, গড়াই, মহানন্দা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা, সুরমা, কর্ণফুলী, সাংগু, মাতামুহুরী ইত্যাদি হলো ছোট নদী। নদীতে বিভিন্ন রকম নৌকা চলাচল করে। নৌকা আর জাল নিয়ে জেলেরা নদীর বুকে নানা রকমের মাছ ধরে। মাছ আমাদের প্রিয় খাবার। তাই আমাদের মাছে-ভাতে বাঙালি বলা হয়।
কৃষিপ্রধান আমাদের এ দেশের কৃষকেরা খুব পরিশ্রমী। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে তাঁরা মাঠে মাঠে ফসল ফলান। এ দেশের উর্বর মাটিতে বিভিন্ন রকম ধান হয়। হেমন্তে নতুন ধানের আগমনে নবান্ন উত্সবে মেতে ওঠে সবাই। শীতকালে পিঠাপুলির উত্সব হয়।
পাট বাংলাদেশের সোনালি আঁশ। কৃষকেরা বর্ষাকালে জাগ দেওয়া পাট ধোয়া শুরু করেন। কৃষকবধূরা ধোয়া পাটের সোনালি আঁশ রোদে শুকান। এ দেশের মেয়েরা অবসর সময়ে পাটের আঁশ দিয়ে নকশি শিকা তৈরি করেন। রঙিন সুতা দিয়ে তৈরি করে নকশি পাখা। বেত দিয়ে শীতল পাটি বোনে। বাংলাদেশের কামার, কুমার, স্বর্ণকারসহ বিভিন্ন পেশার লোক রয়েছে। সবুজ শ্যামলিমায় ঘেরা বাংলাদেশে বিস্তৃত সমতল ভূমির পাশাপাশি রয়েছে ঘন সবুজ গাছে ঘেরা পাহাড়ি টিলা। এসব পাহাড়ি এলাকায় বাস করে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার বিভিন্ন মানুষ।
প্রাচীনকালে বাংলাদেশ মসলিন কাপড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল। এ দেশের তাঁতিরা এখনো রেশমি, জামদানি, টাঙ্গাইল, মসলিন, রেশম, তসর, গরদ, মুগা, মটকা, বালুচরি ইত্যাদি মূল্যবান কাপড় বোনেন। এ দেশ আমাদের জন্মভূমি। এ দেশ ও এ দেশের মাটিকে আমরা ভালোবাসি।
প্রশ্ন: নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখো এবং মূল শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করো:
কলকাকলি, জাদুঘর, জনপদ, দিগন্ত, জাগ, শৌখিন, তৈজসপত্র, কুলঙ্গি, উপচার।
কলকাকলি: মধুর ধ্বনি, পাখির ডাক।
ভোরবেলা পাখির কলকাকলি শুনতে ভালো লাগে।
জাদুঘর: যেখানে পুরোনো দিনের আশ্চর্য জিনিসপত্র প্রদর্শনের জন্য সংরক্ষণ করা হয়।
সেদিন জাদুঘরে গিয়ে নানা জিনিস দেখে আনন্দ পেয়েছি।
জনপদ: লোকালয়, যেখানে মানুষ বসবাস করে।
এই নদীতীরে এককালে সমৃদ্ধ জনপদ ছিল।
দিগন্ত: দিকের শেষ, দূর থেকে দেখলে যেখানে আকাশ ও পৃথিবী মিলিত হয়েছে বলে মনে হয়।
পূর্ব দিগন্তে এখন মেঘ জমেছে।
জাগ: খড়-পাতা দিয়ে পানিতে চাপা দেওয়া।
পাট কাটা হয়ে গেছে, এখন জাগ দেওয়ার পালা।
শৌখিন: যাতে শখ মেটে, বিলাসী, মনোরম।
করিম চাচা খুব শৌখিন মানুষ।
সংস্কৃতি: কৃষ্টি
জাতির পরিচয় হয় তার সংস্কৃতিতে।
শ্যামলিমা: শ্যাম বা সবুজাভ রংবিশেষ।
শ্যামলিমায় ঘেরা আমাদের গ্রাম।
ঘরামি: খড়ের ঘর নির্মাতা।
আমাদের গ্রামে বেশির ভাগ বাড়ি ঘরামি দ্বারা তৈরি।
তৈজসপত্র: বাসনকোসন
বাবা ঘরের জন্য কিছু তৈজসপত্র কিনেছেন।
কুলঙ্গি: মাটির ঘরের দেয়ালের ছোট খোপ।
কুলঙ্গিতে আয়না-চিরুনি রয়েছে।
উপচার: উপাদান
উপহারের ডালাটি নানা উপচারে সাজানো।
জাতিসত্তা: জাতি-পরিচয়।
পাহাড়ি এলাকায় অনেক ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ বাস করে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের শহরের একটি বর্ণনা লেখো।
উত্তর: বাংলাদেশে রয়েছে ছোট-বড় অনেক শহর। এসব শহরের উঁচু উঁচু দালানকোঠা, ইট-কাঠ আর পাথর দিয়ে তৈরি। শহরের রাস্তাগুলো বেশ চওড়া। পিচ ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি এসব রাস্তার দুই পাশ দিয়ে বাস, ট্রাক, রিকশা, অটোরিকশা, সাইকেল ইত্যাদি যানবাহন চলাচল করে। শহরে রাস্তার পাশে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করে পথচারী। বাংলাদেশের শহরের মানুষ বিচিত্র রকমের কাজে ব্যস্ত থাকে। কেউ অফিস আদালতে কাজ করে, কেউ ব্যবসা বাণিজ্য করে। শহরে শ্রমিকেরা কাজ করেন কলকারখানায়। এ ছাড়া নানা পেশার মানুষ জীবিকার জন্য শহরে এসে ভিড় করে।
কাজের ফাঁকে অবসর সময়ে বেড়ানোর জন্য শহরে রয়েছে বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যান। অনেক শহরে জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা রয়েছে। ছুটির দিনে শহরের লোকজন পার্ক, উদ্যান, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যায়। রাজধানী ঢাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শহর।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের শহরে ও গ্রামে কী কী ধরনের বাড়িঘর তৈরি হয়?
উত্তর: বাংলাদেশের শহর ও গ্রামে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বাড়িঘর তৈরি হয়। নিচে শহর ও গ্রামের বাড়িঘরের ধরন বর্ণনা করা হলো:
শহরের বাড়িঘর: বাংলাদেশের শহরের বাড়িঘর তৈরি করা হয় ইট, কাঠ আর পাথর দিয়ে। শহরের উঁচু উঁচু এসব বাড়িঘরকে দালানকোঠা বলা হয়।
গ্রামের বাড়িঘর: বাংলাদেশের গ্রামের বাড়িঘরের কাঠামো তৈরি হয় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে। ঘরের চাল ছাওয়া হয় ছন, খড়, গোলপাতা ও হোগলা পাতা দিয়ে। ঘরের চারপাশের দেয়াল তৈরি হয় বাঁশের চাঁচারি, পাটকাঠি বা মাটি দিয়ে। গ্রামের এসব বাড়িঘর সাধারণত দোচালা ও চৌচালা হয়ে থাকে। ঘরামিরা বাঁশের চাঁচারি, বেত ও শীতল পাটি দিয়ে ঘরের দেয়াল ও চালের ভেতরের দিকটা চমত্কারভাবে সাজিয়ে তোলেন। গ্রামে কোনো কোনো বাড়িঘর টিন দিয়েও তৈরি করা হয়। গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়িতেই ঢেঁকিঘর ও রান্নাঘর থাকে।
প্রশ্ন: ‘নদীর সঙ্গে এ দেশের মানুষের গভীর মিতালি।’ এ কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: ‘নদীর সঙ্গে এ দেশের মানুষের গভীর মিতালি।’এ কথাটির মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের জন্য নদীর নিঃস্বার্থ উপকারিতার কথা বোঝানো হয়েছে। ‘মিতালি’ শব্দের অর্থ বন্ধুত্ব বা বন্ধু যেমন বন্ধুকে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকে, তেমনি করে এ দেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট-বড় সব নদীই এ দেশের মানুষকে যুগ-যুগ ধরে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও সাহায্য করে আসছে। নদীর বানে ভেসে আসা পলি এ দেশের মাটিকে উর্বরা করেছে। নদীর কারণেই এ দেশে সোনালি ফসলে ভরা কৃষিকাজের বিকাশ ঘটেছে। নদীর তীরে গড়ে উঠেছে এ দেশের প্রধান প্রধান শহর, বন্দর ও ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র। বর্ষাকালে নদীই গ্রামের যাতায়াতের প্রধান উপায়। এ দেশের জেলে ও মাঝিসমাজ নদীর ওপর নির্ভর করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ দেশের মানুষ নদীর সঙ্গে সত্যিকার অর্থেই গভীর মিতালির বন্ধনে আবদ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৪৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার মাঈনউদ্দিন মইনুলকে ১৩ বছর পুর্তি উপলক্ষে অভিনন্দন।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৭



সামুর সুসময়ের আদর্শ ব্লগারদের মাঝে মাঈনউদ্দিন মইনুল হচ্ছেন একজন খুবই আধুনিক মনের ব্লগার; তিনি এখনো ব্লগে আছেন, পড়েন, কমেন্ট করেন, কম লেখেন। গত সপ্তাহে উনার ব্লগিং;এর ১৩ বছর পুর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিয়তির খেলায়: ইউনুস ও এনসিপিনামা

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৪



২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া আমেরিকান চলচ্চিত্র 'আনব্রোকেন' একটি সত্যি ঘটনার ওপর নির্মিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, আমেরিকান বোমারু বিমানের কিছু ক্রু একটি মিশন পরিচালনা করার সময় জাপানিজ যুদ্ধ বিমানের আঘাতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাষ্ট্রপতি হিসাবে ড. ইউনুসের বিকল্প বাংলাদেশে নেই !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৪


রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সাহেবের মন ভালো নেই। জুলাই আন্দোলনের পর থেকে তিনি রীতিমতো কোণঠাসা! শেখ হাসিনা ভারতে প্রস্থানের পূর্বে তাকে জানিয়ে যান নি। শেখ হাসিনা চুপ্পু সাহেবকে উনার দুরবস্থার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×