প্রশ্ন: চাষির কয় মেয়ে? তাদের কার কী নাম এবং কার কেমন স্বভাব?
উত্তর: ‘দুখু আর সুখু’ গল্পটি বাংলাদেশের লোক-কাহিনি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষি ও তার মেয়েদের কথা বলা হয়েছে।
চাষির দুই মেয়ে। এই দুই মেয়ের নাম দুটিও ভারি সুন্দর। বড় মেয়ের নাম দুখু আর ছোট মেয়ের নাম সুখু। নামের মতোই দুই মেয়ের স্বভাবে রয়েছে ভিন্নতা। বড় মেয়ে দুখু হলো শান্ত আর কাজে পটু। অন্যদিকে ছোট মেয়ে সুখু বদমেজাজি আর আলসে। বলা যায়, আচার-আচরণে দুখু আর সুখু সম্পূর্ণ বিপরীত।
প্রশ্ন: দুখুর তুলো উড়ে গেল কীভাবে?
উত্তর: বাংলাদেশের লোক-কাহিনির একটি শিক্ষামূলক গল্প ‘দুখু আর সুখু’। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পের অন্যতম চরিত্র হলো দুখু।
দুখু কখনও অলস বসে থাকত না। সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য সে চরকায় সুতো কাটত। একদিন দুখু উঠানে বসে চরকায় সুতো কাটছিল। এমন সময় হঠাত্ জোরে বাতাস বইতে শুরু করল। এ জোর বাতাসে দুখুর তুলো উড়ে গেল।
প্রশ্ন: তুলোর পিছু ছুটতে ছুটতে কার সঙ্গে দুখুর প্রথম দেখা হলো এবং কী ঘটল?
উত্তর: ‘দুখু আর সুখু’ গল্পটি বাংলাদেশের চিরায়ত লোক-কাহিনির একটি অন্যতম গল্প। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে চাষির বড় মেয়ে দুখুর একটি অভিযানের চমত্কার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
কাজে পটু শান্ত স্বভাবের দুখু একদিন উঠানে বসে চরকায় সুতো কাটছিল। এমন সময় হঠাত্ জোর বাতাস উঠল। বাতাস দুখুর তুলো উড়িয়ে নিয়ে গেল। দুখু পিছু পিছু ছুটল।
তুলোর পিছু ফুটতে ছুটতে দুখুর সঙ্গে প্রথম দেখা হলো এক গাইয়ের সঙ্গে। সেখানে ঘটল এক মজার ঘটনা। গাই দুখুকে তার গোয়ালটা পরিষ্কার করে দিতে বলল। দুখু কুয়ো থেকে পানি এনে ঝাঁটা দিয়ে ধুয়ে গোয়ালটা তকতকে করে পরিষ্কার করে দিল। দুখুর কাজে গাই খুব খুশি হলো।
প্রশ্ন: ঘোড়ার সঙ্গে দুখুর দেখা হওয়ার পর কী ঘটল?
উত্তর: তুলোর পিছু ছুটতে ছুটতে দুখুর সঙ্গে অনেকের দেখা হয়। গাই আর কলাগাছের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর দুখুর সঙ্গে একটা ঘোড়ার দেখা হয়। ঘোড়া দুখুর গন্তব্য জানতে চায়। তারপর বলে, লাগাম আর জিনপোশ তার পিঠে কেটে বসেছে। ঘাস খাওয়ার জন্য সে নিচু হতে পারছে না। ওগুলো খুলে দেওয়ার জন্য ঘোড়া দুখুকে অনুনয় করলে দুখু তখনই ঘোড়ার লাগাম আর জিনপোশ খুলে দেয়। ঘোড়া খুব খুশি হয় ও বলে, দুখুর এ উপকারের কথা তার মনে থাকবে।
প্রশ্ন: প্রাসাদের কাছাকাছি এসে বাতাস দুখুকে কী বলল?
উত্তর: বাতাসে উড়িয়ে নেওয়া তুলো ফিরে পাওয়ার আশায় দুখু বাতাসের পেছন পেছন চলছিল। চলতে চলতে ওরা এক প্রাসাদের কাছে এসে থামল। প্রাসাদের কাছাকাছি এসে বাতাস দুখুকে বলল, ওই প্রাসাদে চাঁদের মা বুড়ি থাকে। ওর কাছে গিয়ে তুলো চাওয়ার জন্য বাতাস দুখুকে বলে। বাতাস দুখুকে আরও বলে, চাঁদের মা বুড়ির কাছে দুখু যত তুলো চাইবে চাঁদের মা বুড়ি তাকে তত তুলো দেবে।
প্রশ্ন: কলাগাছের সঙ্গে দুখুর দেখা হওয়ার পর কী ঘটল?
উত্তর: ‘দুখু আর সুখু’ গল্পটি বাংলাদেশের লোক-কাহিনি থেকে সংগৃহীত। ড. মাহবুবুল হকের পুনর্লিখিত এ গল্পে এক চাষির দুই মেয়ে দুখু আর সুখুর জীবনে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
চাষির বড় মেয়ের নাম দুখু। একদিন দুখু উঠানে বসে চরকায় সুতো কাটছিল। এমন সময় বাতাস এসে তার সবগুলো তুলো উড়িয়ে নিয়ে গেল। দুখুও তুলোর পিছু পিছু ছুটতে লাগল। তুলোর পিছু পিছু ছুটতে ছুটতে দুখুর সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল এক গাইয়ের সঙ্গে, তারপর দেখা হলো কলাগাছের সঙ্গে।
কলাগাছ দুখুকে ডেকে বলল, আগাছা আর লতাপাতা তাকে জাপটে ধরেছে। সে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে। আগাছা আর লতাপাতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কলাগাছ দুখুর সাহায্য চাইলে সে কলাগাছকে সাহায্য করল। দুখু কলাগাছের লতাপাতা, আগাছা সরিয়ে দিল। কলাগাছ হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।
প্রশ্ন: ফেরার পথে দুখু কার কার কাছ থেকে কী কী উপহার পেয়েছিল?
উত্তর: চাঁদের মা বুড়িকে সালাম ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুখু অনেকের কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছিল।
ফেরার পথে একে একে ঘোড়া, কলাগাছ ও গাইয়ের সঙ্গে দুখুর আবার দেখা হলো। ঘোড়ার কাছ থেকে সে একটা পক্ষীরাজের ছানা উপহার পেয়েছিল। কলাগাছ উপহার দিয়েছিল সোনার বরণ একছড়া কলা ও সেই সঙ্গে এক ঘড়া মোহর। আর গাইয়ের কাছ থেকে উপহার পেয়েছিল কপিলা গাইয়ের বকনা, যার বাঁটে কখনো দুধ শুকোয় না।
সবাইকে ধন্যি ধন্যি করে দুখু পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চেপে বাড়ি ফিরল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




