প্রশ্ন: প্রকৃত সুখী মানুষ কে?
উত্তর: তিনিই প্রকৃত সুখী, যাঁর কোনো রোগ নেই। প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হয়েও অনেকে সুখী জীবনযাপন করতে পারেন না। আবার স্বল্প সম্পদে সন্তুষ্টচিত্তে যে ব্যক্তি সব সময় রোগমুক্ত জীবনযাপন করে থাকেন, সুখ তাঁর জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। কাজেই রোগমুক্ত বা নীরোগ ব্যক্তিই প্রকৃত সুখী মানুষ।
প্রশ্ন: হিতাহিত বোধ আছে এমন ব্যক্তি কে?
উত্তর: ‘হিতাহিত’ শব্দটির অর্থ কল্যাণ ও অকল্যাণ। ‘হিত’ শব্দের অর্থ কল্যাণ। ‘অহিত’ অর্থ অকল্যাণ। আর বোধ শব্দটির অর্থ হলো বোঝার ক্ষমতা। হিতাহিত বোধ বলতে আমরা বুঝি কল্যাণ ও অকল্যাণ বোঝার ক্ষমতা। কাজেই যে ব্যক্তির ভালো-মন্দ বোধ আছে, যিনি কল্যাণ ও অকল্যাণ বুঝে কাজ করে থাকেন, তিনিই হিতাহিত বোধসম্পন্ন ব্যক্তি। হিতাহিত বোধসম্পন্ন ব্যক্তি সমাজে বিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন: সাধু ও মূর্খ ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: সাধু ও মূর্খ ব্যক্তির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। সাধু বলতে আমরা সেই ব্যক্তিকে বুঝে থাকি যিনি পরের ভালো করে থাকেন, পরের কারণে স্বার্থ বলি দেন। সব সময় অপরের বিপদে-আপদে সাহায্য ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। পরোপকারে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। অপরদিকে মূর্খ বলতে আমরা সেই ব্যক্তিকে বুঝে থাকি, যিনি নিতান্ত বোকা, যাঁর বোধশক্তি নেই, নিজের ভালো-মন্দ বোঝেন না, নিজের ক্ষতি নিজেই করেন। সাধু হলেন সত্ ও ধার্মিক ব্যক্তি। আর মূর্খ হলেন নিতান্ত বোকা ও নির্বোধ ব্যক্তি।
প্রশ্ন: প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির কোন গুণ থাকা উচিত?
উত্তর: স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি যাঁর অসীম দয়া ও সহানুভূতি রয়েছে তিনিই প্রকৃত ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির যেসব গুণ থাকা উচিত তা হলো: স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য, স্রষ্টার সৃষ্ট সব জীবের প্রতি সমান দয়া ও সহানুভূতি, ধৈর্যশীল ও সর্বজীবে সেবা প্রদানের মনোবৃত্তি।
প্রশ্ন: জ্ঞানী ব্যক্তি কে?
উত্তর: নিজের সম্পর্কে যাঁর ভালো-মন্দ জ্ঞান আছে, যাঁর ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা আছে, তাঁকেই জ্ঞানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োজিত থেকে যে ব্যক্তি সুশীল সমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন এবং স্বীয় কর্ম বৈশিষ্ট্যে সচেতন থেকে, মানবকল্যাণে নিবেদিত থেকে, ভালো-মন্দ মূল্যায়নের ক্ষমতা রাখেন, এ জগতে তিনিই জ্ঞানী ব্যক্তি।
ব্যাখ্যা লেখ: ‘বিপদে যে স্থির থাকে, ধীর বলি তারে’
উত্তর: আলোচ্য পদ্যাংশটুকু কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচিত ‘কে?’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে। এখানে ধীর স্বভাবসম্পন্ন ব্যক্তির প্রকৃতি ব্যক্ত করা হয়েছে।
ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ নিয়ে মানবজীবন। যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ মানুষের সুন্দর জীবনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। যে ব্যক্তি বিপদ-আপদে, দুঃখ-শোকে স্থির থাকতে পারেন, বিচলিত না হয়ে সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি, বিপদ-আপদ মোকাবিলা করতে জানেন, সেই ব্যক্তিই সমাজে ধীর স্বভাবের ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন।
প্রকৃত অর্থে তিনিই প্রকৃত ধীর, যিনি বিপদে বিচলিত হন না।