প্রশ্ন: হাতির সবচেয়ে অদ্ভুত অঙ্গটি কী? উত্তর: শুঁড়।
প্রশ্ন: জিরাফের সবচেয়ে বড় শত্রু কে? উত্তর: সিংহ।
প্রশ্ন: কোন পাখিকে ‘দৈত্য পাখি’ বলা হয়? উত্তর: উটপাখি।
প্রশ্ন: কোন প্রাণীকে গাছ বলে ভুল হয়? উত্তর: জিরাফ।
প্রশ্ন: কোন প্রাণীর শিং ঘন লোমে তৈরি? উত্তর: গন্ডার।
প্রশ্ন: গরিলা কোন মহাদেশে বাস করে? উত্তর: আফ্রিকা।
প্রশ্ন: কোন প্রাণী কুমির নয় অথচ কুমিরের মতো দেখতে? উত্তর: ঘড়িয়াল।
প্রশ্ন: হাতি দেখতে কেমন? শুঁড়ের সাহায্যে হাতি কী কী কাজ করতে পারে?
উত্তর: হাতি আমাদের খুব পরিচিত প্রাণী। ডাঙার প্রাণীদের মধ্যে হাতির মতো বড় দ্বিতীয় কোনো প্রাণী নেই। বিশাল দেহের অধিকারী হাতির চোখ দুটি খুব ছোট। হাতির কান দুটো দেখতে অনেকটা কুলার মতো আর পাগুলো লম্বা মোটা এবং পুরু। হাতির অদ্ভুত আকৃতির শুঁড় আছে।
শুঁড়ের সাহায্যে হাতি অনেক কাজ করতে পারে। শুঁড় দিয়ে গায়ে পানি ছিটিয়ে হাতি গোসল সেরে নেয়। শুঁড় দিয়ে হাতি বড় রকমের গাছ উপড়ে ফেলতে পারে এবং শুঁড়ের সাহায্যে হাতি বড় বড় গাছের গুঁড়িও টেনে নিয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন: গন্ডারকে আজব প্রাণী বলা হয়েছে কেন? রেগে গেলে সে কী করে?
উত্তর: ডাঙায় বাস করে এমন অনেক প্রাণীর মধ্যে গন্ডার অন্যতম। গন্ডারের নাকের ওপর একটা বা দুটো শিং থাকে। গন্ডারকে বনের অন্য সব প্রাণী ভীষণ ভয় পায়। এমনকি বাঘ-সিংহও গন্ডারের ধারে-কাছে ঘেঁষে না। বিপদে পড়লে সে শিং বাগিয়ে তীর বেগে তেড়ে যায়। গন্ডারের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। কিন্তু ঘ্রাণ শক্তি প্রখর। এ ছাড়া গন্ডার তার বিরাট দেহ নিয়ে চমৎকার সাঁতার কাটতে পারে। পানিতে একবার ডুব দিয়ে অনেকক্ষণ কাটিয়ে দেয় সে। গন্ডার দাঁড়িয়ে, কাত হয়ে বা হাঁটু মুড়ে উপুড় হয়ে ঘুমায়। ঘণ্টায় সে ৩০ থেকে ৪০ মাইল বেগে ছুটতে পারে। বিস্ময়কর আকৃতি ও অদ্ভুত স্বভাবের কারণে গন্ডারকে আজব প্রাণী বলা হয়েছে। গন্ডার বেশ রগচটা। রেগে গেলে সে বনে হুলুস্থূল কাণ্ড বাধিয়ে দেয়।
প্রশ্ন: জিরাফ দেখতে কেমন? বনপথে সে কীভাবে ও কত মাইল বেগে ছোটে?
উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের জন্তু জিরাফ দেখতে ভারি সুন্দর। প্রাণিজগতে উচ্চতায় আর সব প্রাণীকে হার মানায় জিরাফ। জিরাফ প্রায় ১৮ ফুট উঁচু হয়। জিরাফের গায়ের চামড়ায় অসংখ্য দাগ। জিরাফ পা বাঁকাতে পারে না। সামনের দুই পা ফাঁক করে সে নিচু হয়ে পানি খায়। জিরাফ দাঁড়িয়ে ঘুমায়। বিশাল শরীর নিয়ে বন পথে সে ঘণ্টায় ৩০ মাইলেরও বেশি বেগে ছুটতে পারে। ছোটার সময় সে মাথাটা বেশ নুইয়ে রাখে, যাতে গাছের ডালে না ঠেকে।
প্রশ্ন: উট পাখিকে দৈত্য পাখি বলা হয় কেন?
উত্তর: পাখির জগতে দৈত্য পাখি বলে যার নাম সে হচ্ছে উট পাখি বা অস্ট্রিস। উট পাখিকে দৈত্য পাখি বলার অন্যতম কারণ হলো এর খাবার-দাবার। গোশত, ফলমূল, শাকসবজি, লবণ সবই খায় উট পাখি। উট পাখির রাক্ষুসে খিদে। খিদে পেলে সামনে যা পায় গপাগপ গিলতে থাকে। এ ছাড়া দৌড়ে এদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে এমন জীবজন্তু ডাঙায় আর একটিও নেই।
প্রশ্ন: প্লাটিপাস বা হংসচঞ্চু কোথায় বাস করে?
উত্তর: প্রাণিজগতের আরেক বিস্ময় প্লাটিপাস বা হংসচঞ্চু। অস্ট্রেলিয়া ও তার কাছাকাছি দ্বীপ তাসমানিয়ার প্রাণী হংসচঞ্চু। পানির কয়েক ফুট ওপরে ডাঙায় এরা গর্ত করে এবং সেই গর্ত পানির ভেতর চলে যায়। দিনে এরা গর্তে বাস করে আর রাতে পানিতে ভেসে বেড়ায়।
প্রশ্ন: আমাদের দেশে কোন কোন প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে? এদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমরা কী করতে পারি?
উত্তর: প্রাণিজগতে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে এমন জীবজন্তুর সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। আমাদের দেশেও কিছু কিছু প্রাণী প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এদের মধ্যে রয়েছে গন্ডার, বুনো গরু, বুনো মোষ, বুনো ছাগল ও বুনো কুকুর। এসব প্রাণী পার্বত্য জেলাগুলোয়, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে পাওয়া যেত। বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর মধ্যে আরও আছে হাড়গিলা, মিঠা পানির কুমির, রাজশকুন, সোনালি বিড়াল, নীল গাই ও হনুমান। এ ছাড়া আরও কিছু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে বাঘ, হাতি, হরিণ, বনমোরগ, মদনটেক, কুমির, কচ্ছপ, গুইসাপ, বনরুই, বাঘডাস, সজারু, উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, সোনা ব্যাঙ প্রভৃতি।
বিলুপ্ত প্রায় এসব প্রাণী বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমরা অভয়অরণ্য গড়ে তুলতে পারি। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি। প্রচার মাধ্যমের সাহায্যে বন্য প্রাণী সংরক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার জন্য ব্যাপক প্রচারকার্য পরিচালনার ব্যবস্থা করতে পারি। এ ছাড়া ‘বন্য প্রাণী রক্ষণ দিবস’ পালন করে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি। কেননা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য বন্য প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




