somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই এর নাম নিজেকে জানো

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যৌনতায় ভরা একটি বই বিতরণ করা হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলে। স্কুলের শিক্ষকেরা অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক এ বই বিতরণ করেছেন। বইটির নাম ‘নিজেকে জানো’। কিশোর-কিশোরীদের জন্য রচিত এ বইয়ের নারী-পুরুষের স্পর্শকাতর অঙ্গের নাম উল্লেখ করে এমন খোলামেলাভাবে আলোচনা করা হয়েছে যা হুবহু প্রকাশযোগ্য নয়। বইটিতে ‘শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন’ অধ্যায়ে লেখা হয়েছে যখন একটি মেয়ে ১০-১২ বছর বয়সে পৌঁছে তখন তার শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয়। যেমন, উচ্চতা বাড়ে, মাসিক শুরু হয়, স্তন বড় হয়, বগলে ও ... চুল বা লোম গজায়। এ বয়সে ছেলেদের শরীরের শুক্রাণুযুক্ত রস মাঝে মাঝে মূত্রনালী দিয়ে বের হয়ে আসে, যাকে ... বলা হয়। বইটির ‘বন্ধুত্ব ও ভালবাসা’ শীর্ষক অধ্যায়ে একটি শিরোনাম হলো ‘প্রেম করলে কেন ছেলেমেয়েরা ধরাধরি করে?’ এখানে লেখা হয়েছেÑ প্রেম এমন একটি সম্পর্ক যেখানে প্রেমিক প্রেমিকা দু’জনের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ অনুভব করে, এ অনুভব হতেই তারা পরস্পরের খুব কাছাকাছি পেতে চায় এবং এ কারণেই অনেক সময় তারা পরস্পরকে স্পর্শ করে। আসলে কোনো সমাজেই এটা ভালো চোখে দেখে না। কৈশোর হলো জীবন গড়ার সময়। এ বয়সে এসব করে তাই সময় নষ্ট না করাই ভালো। এ অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো, ‘পরিস্থিতির চাপে যদি দৈহিক মিলনের সম্ভাবনা দেখা দেয় তবে আমি সে অবস্থায় কী করবো?’ এখানে লেখা হয়েছে, বিয়ের আগে ছেলেমেয়েদের দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে কোনো ক্ষেত্রে মেয়েরা পরিস্থিতির চাপে এরকম অবস্থায় পড়তে পারে। মনে রাখা প্রয়োজন, আবেগকে ‘না’ বলতে জানাটাও বড় হওয়ার একটা লক্ষণ। পরিচয়ের একপর্যায়ে দৈহিন সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। যদি কারো মনে হয় যে তার প্রেমিক এ ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, তবে মেয়েটাকে এ প্রস্তাবে সায় না দিয়ে বড় কারো সাথে বিষয়টি আলোচনা করা ভালো। যদি তা না করা যায় আর দৈহিক সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে গর্ভধারণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কোনো অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করা জরুরি। এরপরও যদি কোনো সমস্যা হয় তবে উপদেশের জন্য তুমি কাছের কোনো কিনিকে যেতে পারো। (বইটির শেষে বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত বেশ কয়েকটি কিনিক/সেবা সংস্থার তালিকা দেয়া রয়েছে এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণের জন্য)। বইটির এ অধ্যায়ে আরো লেখা হয়েছে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বা অন্য কোনো কারণে দৈহিক মিলনের ফলে একটি মেয়ের পেটে বাচ্চা আসতে পারে। তাই বিয়ের আগে দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকা উচিত। যদি পেটে বাচ্চা এসে যায়, তবে দেরি না করে উপদেশের জন্য মা-বাবা অথবা কাছের কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। মা-বাবাকে যদি ব্যাপারটা বোঝানো না যায় আর মেয়েটিকে তারা গ্রহণ না করে, তাহলে কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তার বা আত্মীয়ের পরামর্শ নেয়া ভালো। নিজেকে জানো বইটির আরেকটি অধ্যায়ের নাম ‘দৈহিক সম্পর্ক’। এ অধ্যায়ের শুরুতে লেখা হয়েছেÑ নারী ও পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপন খুবই স্বাভাবিক। তবে এতে সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলা অত্যাবশ্যক। অবৈধ যৌনমিলন তা যেকোনো বয়সেই হোক না কেন সেটা অনৈতিক ও সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। একমাত্র বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্কই বৈধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। এ অধ্যায়ে একটি শিরোনাম হলো ‘সতী পর্দা কি জানতে চাই?’ এ বিষয়ে যে বিবরণ বইটিতে দেয়া হয়েছে তা প্রকাশযোগ্য নয়। এ অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো ‘প্রথম মিলনে কি সব মহিলার রক্ত পড়বে? এই অংশের বর্ণনাও রীতিমতো রগরগে। দৈহিক সম্পর্ক অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো ‘মায়ের পেট থেকে কিভাবে বাচ্চা বের হয়ে আসে ?’ এখানে সন্তান প্রসবের যে বিবরণ দেয়া হয়েছে তাও প্রকাশযোগ্য নয়। ‘বাচ্চা কিভাবে হয়?’ শিরোনামে লেখা হয়েছে কিভাবে মায়ের গর্ভে সন্তান আসে তার বর্ণনা।‘বিয়ের আগে কেউ কেউ কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করে। সেটা কি ঠিক?’ শীর্ষক শিরোনামে লেখা হয়েছে এ দু’টি জন্ম নিরোধক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। দৈহিক মিলন অধ্যায়ের আরেকটি শিরোনাম হলো ‘অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা ক্ষতিকর। এরকম হলে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায়?’ এখানেও লেখা হয়েছেÑ অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক থাকলে কনডম ব্যবহার খুবই জরুরি। বইটিতে যৌনমিলন অধ্যায় আলোচনার আগে কিভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছেলেমেয়েরা পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, সে আকর্ষণ এবং ভালোলাগা প্রকাশের উপায় কী সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া যৌন অনুভূতি প্রকাশের বিভিন্ন উপায় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। বইটির পেছনে লেখা রয়েছে মহিলা ও শিশুবিষযক মন্ত্রণালয়। এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন অব চিলড্রেন অ্যান্ড উইমেন প্রকল্পের জন্য। ইউনিসেফের সহায়তায় মুদ্রিত। বইটি প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস (বিসিসিপি)। বইটি প্রণয়নে সহায়তা নেয়া হয়েছে এমন ১১টি সংস্থার নাম বইয়ের শুরুতে উল্লেখ করা হয়েছে। বইটি কী পরিমাণ স্কুলে বিতরণ করা হয়েছে জানার জন্য বিসিসিপি অফিসে ফোন করা হলে এক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে অফিসে আসতে হবে। তবে অনেক দিন ধরেই বইটি বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা তাদের কাছ থেকে এ বই নিয়ে বিভিন্নভাবে বিতরণ করেছে। বেসরকারি একটি সংস্থা সারা দেশে যাদের অনেক স্কুল রয়েছে তারাও এ বই তাদের স্কুলে বিতরণ করেছে বলে জানানো হয় বিসিসিপি অফিস থেকে। কয়েক দিন আগে রাজধানীর একটি স্কুলে এ বই বিতরণ করার পর অষ্টম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী তার বাবার কাছে দেয় বইটি। বইটি পড়ে উদ্বিগ্ন বাবা এ বই আর তিনি তার সন্তানকে পড়তে দেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বই নিয়ে রীতিমতো বিব্রত এবং অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছেন অনেক অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠেছে স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে এ ধরনের বই বিতরণের উদ্দেশ্য নিয়ে। সরকারের কোন কর্তৃপক্ষ কী বিবেচনায় তা অনুমোদন করল তা নিয়েও প্রশ্ন অভিভাবকদের।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×