বিশ্বাস বাংলা শব্দ আর ঈমার এর আরবী প্রতিশব্দ।বিশ্বাস মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বিশ্বাস মানুষের কর্মকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে । যেমন বিশ্বাস তেমন কর্ম। বিশ্বাস প্রধাণত দু’প্রকারের হয়ে থাকে:
ক)যথার্থ বিশ্বাস
খ)অন্ধ বিশ্বাস (ধর্মীয় বিশ্বাস,সমাজের বিভিন্ন কু’সংস্কার ইত্যাদ)
না দেখে কি বিশ্বাস করা যায়?
বিশ্বাস কখনো না দেখে হয় না-হোক সে দেখা বাহ্যিক চোখ দ্বারা বা অন্ত:চক্ষু দ্বারা। প্রত্যেক মানুষের ৪ টি চক্ষু আছে-দুটি বাহ্যিক চক্ষু অপর দুটি অন্ত:চক্ষু।আমকে আম, কাঠালকে কাঠাল বলে আমরা বিশ্বাস করি বাহ্যিক চোখ দ্বারা দেখে।কেউ আপনার কাছে টাকা ধার চাইলে আপনার টাকা তাকে দেয়া না দেয়া নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু বিশ্বাস করেন। এ বিশ্বাস/অবিশ্বাস নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু চেনেন ও তার পূর্বের কার্য্যাবলি পর্যালোচনা করে। আপনি অন্তচক্ষু দ্বারা তার অতীত কার্যাবলী বিশ্লেষণ করে উপরে উল্লেখিত ৪ প্রকারের এক প্রকার বিশ্বাস আপনি করেন।
বিশ্বাস পরিবর্তন করা কি খারাপ?
আপনি আজকে যা বিশ্বাস করেন তা যদি কেউ ভূল প্রমাণিত করে, তাহলে সে ভূলকে আকড়ে ধরে রাখা তো কোনক্রমেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।বরং যে আপনার চিন্তার ভূল ধরে দিল সে তো আপনার অনেক বড় উপকার করল।জ্ঞান পিপাসুদের বিশ্বাস প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হতে পারে। নতুন নতুন জ্ঞানে পূর্বের অর্জিত ভূল বিশ্বাস পরিবর্তন করে সত্যের দিকে এগিয়ে যায় বুদ্ধিমানেরাই। আর যারা অন্ধত্ব ও গোড়ামিতে লিপ্ত তারাই পূর্ব পুরুষ থেকে পাওয়া বিশ্বাসকে যাচাই বাছাই ছাড়া অন্ধভাবে কঠোরভাবে আকড়ে ধরে থাকে।
বিশ্বাস কি জোর করার বিষয়?
বিশ্বাস/অবিশ্বাস হয় স্বত:স্ফুর্তভাবে।মানুষ তার ৪ চক্ষু দ্বারা কোন কিছু দেখে তা বিশ্বাস করে। কেউ যদি কোন কিছু অবিশ্বাস করে তার অর্থ হল সে তার ৪ চক্ষু দ্বারা উহাকে দেখতে পাচ্ছে না। সুতরাং না দেখে বিশ্বাস সম্ভব নয়।যা চার চক্ষুর কোন চক্ষু দ্বারা না দেখে বিশ্বাস করা হয় তা চরম মুর্খতা, অজ্ঞতা।কেউ যখন কোন কিছু তার চার চোখের কোন এক চোখ দ্বারা কোন কিছু দেখতে পায়, তখন সে স্বাভাবিকভাবেই তাতে বিশ্বাস করে।বরং যা সে দেখল তা অবিশ্বাস করানোই অতি কঠিন।
তাই আপনি কাউকে কোন কিছু বিশ্বাস করাতে হলে তাকে চার চক্ষুর কোন এক চোখ দ্বারা দেখান, সে এমনিতেই বিশ্বাস করবে।যারা সত্যে ও সঠিকের পক্ষে থাকে তারা আপনাকে কখনও কোন কিছু বিশ্বাস করতে জোর করবে না, বরং সে তার সঠিকত্ব আপনার কাছে প্রমান করবে যুক্তি ও বাস্তবসম্মত প্রমান দ্বারা।
কারা বিশ্বাস করতে জোর করে
যা মিথ্যা, অসার, ভন্ডামি তা কাউকে বিশ্বাস করাতে হলে তখন যুক্তিকে এড়িয়ে জোর করতে হয়।কারন যুক্তির কাছে গেলে মিথ্যার অসারতা ও ভন্ডামি ধরা পড়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা।
যারা বিশ্বাস করতে জোর করে তারা কি যুক্তি এড়িয়ে চলে?
না, পৃথিবীর কেউ পুরোপুরি যুক্তি এড়িয়ে চলে না।ধরুন, আপনাকে আমি বিশ্বাস করতে বললাম যে আমার মাথার উপর যে ফ্যন ঘুরতে দেখছেন এটা কিন্তু আসলে ফ্যন না, এটা হল একটি গরু যা ফ্যনের আকৃতিতে আপনারা দেখছেন।এমন কথা স্বাভাবিকভাবে বিশ্বাস করার কথা নয়, তাই আপনাদের আমি কিছু ছাগল মার্কা তেনা পেচানো যুক্তি দিলাম।আমি কিন্তু পুরোপুরি যুক্তিকে এড়ালাম না।
তাহলে কখন যুক্তি দিতে নিষেধ করি? যখন কোন বুদ্ধিমান কেউ এসে আমার কথা অসারতা প্রমান করে তখন আমার শেষ আশ্রয় হয় –জোর করে বিশ্বাস করানোর হুমকি। বিশ্বাস না করলে কি কি সর্বনাশ!!!
তখনই আমি বলি-বিশ্বাসে মুক্তি মেলে তর্কে বহু দূর। এবং -----।
যে কিতাব মানুষকে বিশ্বাসের জন্য জোর করে তা স্রষ্টার হতে পারে না (কুরআন মানব রচিত):
কুরআন স্রষ্টার কিতাব বলে মিথ্যা দাবি করা হয়, এ কারনেই আপনাকে বিশ্বাস করার জন্য এত হুমকি দেয়া হয়। এটা বিশ্বাস না করলে ভয়ংকর শাস্তি। এর অনুসারীদের শুরুতেই শেখানো হয় অমুক অমুক বিষয়ে মুসলমান থাকতে হলে অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে। আকিদা (বিশ্বাস)যাতে কোন ক্রমে ছুটে না যায় সেদিকে নজর রাখতে শিক্ষা দেয়া হয়।কুরআন আসলে স্রষ্টার কিতাব কিনা তা কল্পনায় করা যাবে না যাচাই-বাছাই তো দুরের কথা।
আমি ফ্যানকে গরু বলেছি, আসলে তা যৌক্তিক কিনা তা চিন্তা করাই মহাপাপ, গরু কিনা তা যাচাই করাতো দূরের কথা।আমার অনুসারীদের মাথায় শুধু এতটুকু ভাল করে প্রবেশ করাতে পারলেই তো কেল্লা ফতেহ। কারন আমার কথা ঠিক কিনা তা চিন্তা করারই সুযোগ নেই, এবার আমার সব ভন্ডামি সুন্দরভাবে বিশ্বাস করানো যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৯