somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্রষ্টার অস্তিত্ব:একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষন (আস্তিক-নাস্তিক উভয়ের প্রশ্নের সঠিক সমাধান)

২২ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে তাদের কাছে প্রমান বলতে একমাত্র যুক্তি আছে।অপরদিকে যারা স্রষ্টায় অবিশ্বাসী (নাস্তিক) তাদের কাছেও তাদের কথার স্বপক্ষে যুক্তি আছে। স্রষ্টায় অবিশ্বাস করলে কিছু প্রশ্ন বা কথা থেকে যায় যার উত্তর কোন নাস্তিক দিতে পারে নাই আর পারার সম্ভাবনাও নেই আবার স্রষ্টায় বিশ্বাস করলেও কিছু তা পুরোপুরি যৌক্তিক হয় না, যার জবাব কোন আস্তিক দিতে পারেনি আর পারার সম্ভাবনাও নেই। স্রষ্টায় অবিশ্বাস করলে কি পশ্ন বা কথা থাকে তা বলার প্রয়োজন বোধ করছি না। বরং স্রষ্টায় বিশ্বাস করলে কি কি অযৌক্তিকতা বা প্রশ্ন থাকে তা তুলে ধরছি সংক্ষেপে। অতঃপর ব্যখ্যা করবো সঠিক পন্থা কোনটি তা ।
স্রষ্টা ও সৃষ্টি:
১. স্রষ্টা: স্রষ্টার কোন শুরু নেই, শুরু থাকলে তিনি স্রষ্টা নন। কিন্তু শুরু নেই বলা যত সহজ কথাটি বাস্তবে কল্পনা করা বহুগুন কঠিন।যত বিলিয় বছর আগের কথাই বলুন না কেন একটি শুরু তো থাকা মানবীয় জ্ঞান দাবি করে। সুতরাং বিষয়টি বোধগম্য নয়। তবে স্রষ্টা যদি থেকে থাকেন তাহলে তার শুরু আছে কথা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।
সকল সৃষ্টির শুরু আছে এবং থাকতেই হবে। শুরু থাকাটাই সৃষ্টির গুণ।
২. যদি বলা হয় স্রষ্টার জীবন আছে-এ কথাটিও গ্রহণযোগ্য নয়।প্রশ্ন আসে স্রষ্টার জীবন বা জান কে সৃষ্টি করেছে?
সৃষ্টির জীবন আছে যা স্রষ্টা সৃষ্টি করেছে। একটি প্রাণীর মাঝে যতক্ষন তার জান থাকে ততক্ষন জীবন স্পন্দন থাকে। সুতরাং সৃষ্টি জীবনের মুখাপেক্ষি।
৩. স্রষ্টা সর্বশক্তিমান- এ কথাটিও গ্রহণযোগ্য নয়। সর্বোশক্তি বলতে সকল শক্তি বুঝায়। ’সর্ব’ বা ’সকল’ শব্দটি সীমিত কোন কিছুর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি বলেন অসীম শক্তির অধিকারী তাও যৌক্তিক নয়। কারন স্রষ্টাকে কোন শক্তির অধিকারি হতে হয় না। তিনি তো ‘শক্তি’রই স্রষ্টা কর্তা। ’শক্তি’ নিজেই একটি সৃষ্টি। স্রষ্টা তো উহার মুখাপেক্ষি হতে পারেন না।
৪. স্রষ্টা বিনা উদ্দেশ্য কিছুন করেন কি?
স্রষ্টা বিনা উদ্দেশ্য কিছু করেন না এ কথাও যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, আবার উদ্দেশ্য ছাড়া কিছু করেন তাও গ্রহণযোগ্য নয়। সৃষ্টি ’উদ্দেশ্য’র মুখাপেক্ষি, স্রষ্টা নয়। উদ্দেশ্য বলতে কোন লক্ষ্য অর্জন বোঝায়। স্রষ্টার কোন লক্ষ থাকতে পারে না, লক্ষ থাকে সৃষ্টির। যার কোন কিছু প্রয়োজন আছে সেই কিছু অর্জনের জন্য লক্ষ্য নির্ধারন করেন। স্রষ্টা সকল প্রয়োজনের উর্ধ্বে। স্র
আবার স্রষ্টা খেলাচ্ছলে কিছু করেন বললে প্রশ্ন আসে- স্রষ্টা কি বিনোদনের মুখাপেক্ষি?
৫. যদি বলা হয় স্রষ্টার ইচ্ছা হলে অমুক কাজ করেন-প্রশ্ন হল স্রষ্টার কি মন আছে? স্রষ্টার কি ইচ্ছা জাগরিত হয় যেভাবে মানুষের মনে বিভিন্ন ইচ্ছা জাগরিত হয়ে থাকে?মানুষের মনে যখন কোন ইচ্ছা জাগে তখন বলা হয় স্রষ্টা সে ইচ্ছা জাগিয়েছে, কিন্তু স্রষ্টার মনে কে ইচ্ছা জাগায়।যদি বলা হয় স্রষ্টার মনে ইচ্ছা এমনিতেই জাগে কেউ জাগায় না, তাহলে তো এ কথা মানা হবে সৃষ্টিও এমনিতেই হয় কেউ সৃষ্টি করে না।বস্তুত: স্রষ্টার মনে ইচ্ছা জাগে কথাটি স্রষ্টার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

মানুষ নাস্তিক কেন হয়?
নাস্তিকেরা দু’টি প্রধান যুক্তির কারনে নাস্তিক হয়। যুক্তি দু’টি হল:
ক)তারা পৃথিবীতে বিদ্যমান কোন ধর্মেই স্রষ্টা, সৃষ্টির কারন ও মহাবিশ্ব ইত্যাদি সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য,বিজ্ঞোচিত ও যৌক্তিক জবাব ও নির্দেশনা পায়নি
খ)আর স্রষ্টা সম্পর্কে উল্লেখিত প্রশ্নের মত বহু প্রশ্নের কারনে।
আস্কিক,বিশেষত:মুসলমানদের যুক্তি:
ক)আল কুরআনেই স্রষ্টা, সৃষ্টির কারন ও মানুষের পরিণতি সহ মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে।
খ) স্রষ্টা সম্পর্কে উপরোক্ত প্রশ্ন উত্থাপন করলে তাদের জবাব স্রষ্টা সম্পর্কে এত প্রশ্ন করা ঠিক নয়।
বিশ্লেষণ:
মুসলমানগন কুরআনের পক্ষে কথা বলে এর প্রধান কারন তারা মুসলিম বংশে জন্মগ্রহণ করেছে।কুরআন আসলে স্রষ্টার বিধান হওয়ার যোগ্য কিনা তা কোন মুসলমান মাথায়ও আনে না। তারা শুধু পক্ষের লোকদের থেকে কুরআনের পক্ষের গুনগান শুনতে পছন্দ করে, কেউ সমালোচনা করলে তাকে অপছন্দ করে। নিজের ভূল তো সমালোচক তথা যিনি বা যারা ভূলকে খুজে পেয়েছে তাদের থেকে জানার কথা, তাদেরকে শত্রু মনে করলে সত্যে কখনো জানা যায় না।
এবার আসি স্রষ্টার ব্যপারে। আপনি যখন স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তির আশ্রয় নেন যে সবকিছু এমনে এমনে সৃষ্টি হতে পারে না, এত সুশৃঙ্খল সৃষ্টি অটোমেটিক হয়েছে তা বিশ্বাস করা অযৌক্তিক ঠিক তদ্রুপ আপনাকে স্রষ্টা সম্পর্কে বাকি প্রশ্নগুলোরও যৌক্তিক উত্তর দিতে হবে। আপনি প্রশ্ন করা থামিয়ে দিতে পারেন না। তাহলে নাস্তিকেরা আপনার প্রশ্ন- এতসুন্দর সুশৃঙ্খল সৃষ্টি স্রষ্টা ছাড়া অটোমেটিক কিভাবে হতে পারে? থামিয়ে দিতে পারে এ বলে যে এ বিশাল সৃষ্টির কাছে আমরা কিছুই নই; সুতরাং এ প্রশ্ন করা ঠিক নয়।আপনি একটি প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর খুজবেন আর অপর প্রশ্নগুলো যেগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে আপনি বেকায়দায় পড়ে যান সেগুলোর ব্যপারে প্রশ্ন করা থামিয়ে দেয়ার জন্য বলবেন যে ওসব প্রশ্ন করা ঠিক নয় সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।

এ বিষয়ে একজন ব্লগারের সাথে কিছু কথোপকথন হয়েছে যা স্রষ্টা সম্পর্কে ধারনা আরো পরিস্কার করবে:


মেহেদী হাসান মিশন বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে আমার মনে হয়েছে আপনি সৃষ্টিকর্তাতে বিশ্বাসী। আপনার নিকট আমার প্রশ্ন হল আপনার সৃষ্টিকর্তা কে? যদি তার নাম ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানাতেন।
ধন্যবাদ।
লেখক বলেছেন: এ সুন্দর সুশৃঙ্খল মহাবিশ্ব এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে কথাটির চেয়ে মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছে কথাটি বেশি য়ৌক্তিক মনে হয়। যেহেতু যারা বলে স্রষ্টা আছে তাদের কাছেও যেমন স্রষ্টার পক্ষে যুক্তি ছাড়া কোন প্রমান নেই আবার যারা বলে স্রষ্টা নেই তাদের কাছেও যুক্তি ছাড়া কোন প্রমান নেই। যে বিষয়ে প্রমান নেই সে বিষয়ে অনুমান ছাড়া সুদৃঢ় কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না বা উচিত না। শুধু বোকারাই এ ধরনের বিষয়ে সুনিশ্চিত কথা বলে।
এ কারনে আমার বিশ্বাস যে এ মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছেন। আমরা মহাবিশ্বের তুলনায় খুবেই নগন্য। সুতরাং স্রষ্টা সম্পর্কে অনেক কিছুই আমাদের জ্ঞানের বাইরে।
স্রষ্টার যেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তেমন বৈশিষ্টে আমি বিশ্বাসি।
মেহেদী হাসান মিশন বলেছেন: তাহলে আমি কি ধরে নিব যে আপনি সুনির্দিষ্ট বা সুনিশ্চিত ভাবে জানেন না কে বা কারা আপনাকে বা এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছে?

"এ কারনে আমার বিশ্বাস যে এ মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছেন" আপনি কি আপনার এই বক্তব্য সম্পর্কে সুনিশ্চিত?

"স্রষ্টার যেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তেমন বৈশিষ্টে আমি বিশ্বাসি"। কেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিৎ?

ধন্যবাদ।
লেখক বলেছেন: শুধু আমি কেন, পৃথিবীর কেউ সুনিশ্চিত ভাবে জানে না।
কেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তা অনেক কথার দাবি রাখে। আপনি নিম্নের লিঙ্কটি দেখুন:
http://www.somewhereinblog.net/blog/wise/3013

মেহেদী হাসান মিশন বলেছেন: "এ কারনে আমার বিশ্বাস যে এ মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছেন" এই বক্তব্যের মাধ্যমে কি আপনি বুঝাতে চেয়েছেন যে এই মহাবিশ্বের মাত্র একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন একাধিক নয়?

আর আপনি যদি স্রষ্টার বৈশিষ্ট সম্পর্কে জ্ঞাত থাকেন একটু বর্ণনা করুন দয়া করে।

আর আপনার দেয়া সহায়ক লিংক থেকে আমি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট সম্পর্কে জ্ঞাত হতে পারি নাই।
বিবেক ও সত্য বলেছেন: হ্য, একজনকেই বুঝিয়েছি।
স্রষ্টা বিষয়ক কিছু ধারনা নিম্নের লিঙ্কে দেখুন:
স্রষ্টায় বিশ্বাস: কারা সঠিক?
মেহেদী হাসান মিশন বলেছেন: আপনার দেয়া সহায়ক লেখাটি পড়ে আমার মনে হয়েছে সৃষ্টিকর্তার কোন নাম নেই, শুরু বা শেষ নেই, জীবন নেই, গুনাগুন নেই, ইচ্ছা নেই, উদ্দেশ্য নেই, ক্ষমতা বা শক্তি নেই। কারন এই সমস্ত বিষয়াদি সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রজয্য স্রষ্টার ক্ষেত্রে নয়। এক কথাই তিনি চূড়ান্তভাবে আনলিমিটেড। আমি কি সঠিক?
যদি তাই হয় তবে এই সব কিছু তিনি কেন সৃষ্টি করলেন?
বিশেষ করে তিনি আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন আপনি কি জানেন?
যদি এমনিতেই করে থাকে তাহলে আপনার ভাষ্য মতে তিনি বিনোদন প্রিয়। অর্থাৎ বিনোদনের মূখাপেক্ষি। আর যদি কোন উদ্দেশ্য থাকে তবে তার তা থাকা উচিৎ নয়, কারন উদ্দেশ্য সৃষ্টির থাকে স্রষ্টার নয়।(আপনার স্রষ্টার উদ্দেশ্য সংক্রান্ত বক্তব্য পরিস্কার নয়) আর কোন কিছু আবিস্কার, প্রস্তুত ও সৃষ্টি করার জন্য নূন্যতম ইচ্ছা, যোগ্যতা/গুনাগুন ও ক্ষমতা/শক্তির প্রয়োজন আছে। আপনার ভাষ্যমতে এসকল স্রষ্টার ক্ষেত্রে গ্রহনযোগ্য নয়। আর আপনার লেখটিতে সৃষ্টি/সৃষ্টি জগত পরিচালনা সংক্রান্ত কোন বর্ণনা নেই। তবে কি আমি ধরে নিব সৃষ্টিজগত পরিচালনা করার কোন প্রয়োজন নেই। আর যদি পরিচালনা করার প্রয়োজন থাকে সেক্ষেত্রেও যোগ্যতা/গুনাগুন ও ক্ষমতা/শক্তির দরকার আছে।
আমার আগ্রহের প্রতি লক্ষ্য রেখে আসা করি বিস্তারিতভাবে উত্তর দিবেন।
ধন্যবাদ।
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আমাদের এ এ পৃথিবী আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের তুলনায় একটি অনুর সমতুল্য। আর মানব অর্জিত জ্ঞানানুপাতে মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের এ গ্যালাক্সি একটি অণুর সমান। সেখানে আমরা কোথায়?
একটি পিপড়াকে যদি আমাদের এ পৃথিবীর আকৃতি বা রহস্য নিয়ে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত পৌছতে গেলে তার কি অবস্থা হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আমরা এ মহাবিশ্বের সামান্যতমই জ্ঞান রাখি। আমরা বা আমাদের ততটুকুই মেনে চলা উচিত যতটুকু আমাদের বোধগম্য। মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানুষের বহু প্রশ্ন রয়েছে যার উত্তর আমরা কেউ জানি না। সেরুপ অজানা ও অবোধগম্য বিষয়ের মধ্যে স্রষ্টা ও সৃষ্টি রহস্য অন্যতম একটি।
স্রষ্টার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সামান্য যে কয়টি দিক আমি উক্ত লেখায় আলোচনা করেছি সেখানে আমি বোঝাতে চেয়েছি যে স্রষ্টা সম্পর্কে গুনাবলি বিশ্বাস করা হয় তাও যেমন গ্রহণযোগ্য নয় আবার তা অস্বিকার করাও গ্রহণযোগ্য নয়।যেমন-স্রষ্টার শুরু আছে বললে কথাটি গ্রহণযোগ্য হয় না, আবার শুরু নেই বিষয়টি মানুষের বোধগম্য নয়। শুরু নেই কথাটি বলা সহজ, কিন্তু কল্পনা করুন দেখি!!!!
একইভাবে অসীম শক্তিমান কথাটিও যেমন গ্রহণযোগ্য নয় আবার শক্তি নেই তাও গ্রহনযোগ্য নয়।দু’টির কোনটিই গ্রহণযোগ্য নয়। তাহলে কি? যা আমি বা আপনি বুঝি না সে বিষয়ে কথা বলা সম্ভব না্।এটা মানবজ্ঞানে অবোধজ্ঞম্য বিষয়।
আপনি আমার কথা থেকে ভূল (জীবন নেই, গুনাগুন নেই, ইচ্ছা নেই, উদ্দেশ্য নেই, ক্ষমতা বা শক্তি নেই) বুঝেছেন।আমি নেই বা আছে তার কোনটাই বুঝাতে চাইনি। আমি বুঝাতে চেয়েছি যে নেই বা আছে যে অর্থই গ্রহন করুন তার কোনটাই গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং একটি সমাধানহিন বিষয়।মানব জ্ঞানের বাইরের বিষয়।
আমরা স্রষ্টাকে মানবীয় প্রকৃতি দ্বারা বুঝার চেষ্টা করি সেটাই চরম অজ্ঞতা বা স্বল্প বুদ্ধির কাজ।
মেহেদী হাসান মিশন বলেছেন: আপনার নিকট আমার তিনটি প্রশ্ন ছিল- আপনার দেয়া সহায়ক লেখাটি পড়ে আমার মনে হয়েছে সৃষ্টিকর্তার কোন নাম নেই, শুরু বা শেষ নেই, জীবন নেই, গুনাগুন নেই, ইচ্ছা নেই, উদ্দেশ্য নেই, ক্ষমতা বা শক্তি নেই। কারন এই সমস্ত বিষয়াদি সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রজয্য স্রষ্টার ক্ষেত্রে নয়। এক কথাই তিনি চূড়ান্তভাবে আনলিমিটেড। আমি কি সঠিক?
যদি তাই হয় তবে এই সব কিছু তিনি কেন সৃষ্টি করলেন?
বিশেষ করে তিনি আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন আপনি কি জানেন?
যার মধ্যে একটির উত্তর পেয়েছি বাকি দুটির পাই নাই। আর আপনার উত্তর থেকে আমি যা বুঝেছি তা হল স্রষ্টার কোন ডেফিনেশন নাই। স্রষ্টা বা তার ডেফিনেশন একটি সমাধানহীন বিষয়। স্রষ্টার যেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তেমন বৈশিষ্টে আমি বিশ্বাসি।
তাহলে কি আপনি সংজ্ঞাহীন স্রষ্টাতে বিশ্বাসী? যার কোন জীবন, গুনাগুন, ইচ্ছা, উদ্দেশ্য, শক্তি বা ক্ষমতা আছে কি নাই আপনি জানেন না।
আমি আমার মানবীয় স্বল্প জ্ঞানে যা বুঝি তা হল ইচ্ছা, উদ্দেশ্য, শক্তি বা ক্ষমতা না থাকলে কেউ কোন কিছু আবিস্কার, প্রস্তুত ও সৃষ্টি করতে পারে না। স্রষ্টা যদি থেকে থাকে এবং তিনি যদি সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে তার অবশ্যই ইচ্ছা, উদ্দেশ্য, শক্তি বা ক্ষমতা থাকা উচিৎ। অন্যথায় তিনি সৃষ্টি করতে পারবে না। আপনার উত্তরের অপেক্ষাই থাকলাম।
ধন্যবাদ।
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনার বাকি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি, আপনি হয়ত সেভাবে লক্ষ্য করেননি। আমি লিখেছি:আমরা এ মহাবিশ্বের সামান্যতমই জ্ঞান রাখি। আমরা বা আমাদের ততটুকুই মেনে চলা উচিত যতটুকু আমাদের বোধগম্য। মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানুষের বহু প্রশ্ন রয়েছে যার উত্তর আমরা কেউ জানি না। সেরুপ অজানা ও অবোধগম্য বিষয়ের মধ্যে স্রষ্টা ও সৃষ্টি রহস্য অন্যতম একটি।
আদৌ সৃষ্টিকর্তা আছেন কিনা? সৃষ্টিকর্তা না থাকা বললে যেমন কথাটি গ্রহণযোগ্য হয় না, তেমনি ভাবে আছে বললেও বহু প্রশ্রের উদ্ভব হয়। আমি বলবো যা জানা নেই তা নিয়ে জানা নেই বলাই সবচেয়ে বৃদ্ধিমত্তার কাজ।
আপনি লিখেছেন:আমি আমার মানবীয় স্বল্প জ্ঞানে যা বুঝি তা হল ইচ্ছা, উদ্দেশ্য, শক্তি বা ক্ষমতা না থাকলে কেউ কোন কিছু আবিস্কার, প্রস্তুত ও সৃষ্টি করতে পারে না। স্রষ্টা যদি থেকে থাকে এবং তিনি যদি সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে তার অবশ্যই ইচ্ছা, উদ্দেশ্য, শক্তি বা ক্ষমতা থাকা উচিৎ। অন্যথায় তিনি সৃষ্টি করতে পারবে না।
এটা হল ‘ ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য ইত্যাদি’ না থাকা কথাটি অগ্রহণযোগ্য হওয়ার পক্ষে যুক্তি। ঠিক একইভাবে ‘ ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য ইত্যাদি’ আছে বললেও কিছু প্রশ্ন উদ্ভব হয় যার ফলে আছে কথাটিও গ্রহণযোগ্য হয় না। আমরা আছেও বলতে পারছি না আবার নাও বলতে পারছি না। তাহলে কি বলবো? বিষয়টি সমাধানহীন, অবোধগম্য। যা মানব ব্রেইনে ধরে না তা নিয়ে চুড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত দেয়া যায় না।
এ কারনে, আমি দাবি স্রষ্টায় বিশ্বাস করি এর অর্থ এ নয় যে আমি সুনিশ্চিত, পৃথিবীর কেউ সুনিশ্চিত নয়।
বোকারাই অবোধগম্য, সমাধানহীন একটি বিষয়ের এক পক্ষ নিয়ে অর্থহীন বাড়াবাড়ি করে।
যিনি স্রষ্টা আছেন বলেন সুনিশ্চিত বা নেই বলে সুনিশ্চিত বলে দাবি করে- এটা তাদের বুদ্ধির স্বল্পতার প্রমান করে।
মেহেদী হাসান মিশন বলেছেন: স্রষ্টার যেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তেমন বৈশিষ্টে আমি বিশ্বাসি। তাহলে আপনার এই বক্তব্য দেয়া আমার মতে উচিৎ নয় কারন আপনি নিশ্চিত নয় স্রষ্টা আছেন নাকি নেই। উক্ত বক্তব্যে স্রষ্টার অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। যেহেতু আপনি সৃষ্টিকর্তাতে বিশ্বাস করেন
তাই আমি মনে করেছিলাম আপনি হয়তো সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আপনার উত্তর থেকে আমি বুঝতে পারলাম আপনি সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে জানেন না।
আর জ্ঞান-বুদ্ধি, ভালো-মন্দ আপেক্ষিক ব্যাপার। এগুলো মানুষের সংগৃহিত তথ্যে ও দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল।
ধন্যবাদ।
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আমি কেন, পৃথিবীর কেউ নিশ্চিত নয় যে স্রষ্টা আছে। পৃথিবীর কেউ সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে জানে না।
স্রষ্টার যেমন বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তেমন বৈশিষ্টে আমি বিশ্বাসি বলার কারন হল সৃষ্টিকর্তা যদি থেকেই থাকেন নিশ্চয় তিনি এমন বৈশিষ্টের হবেন না যেমন বৈশিষ্টে ধর্মে বিশ্বাসিরা বিশ্বাস করে থাকে। সৃষ্টিকর্তা যদি থাকেন তাহলে তিনি তার আপন বৈশিষ্টে বিরাজমান যা মানবজ্ঞানের আওতা বহির্ভূত, যা মানব ভাষায় প্রকাশের বাইরে।
সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে তার সম্পর্কে কিছু জানাননি সুতরাং সৃষ্টিকর্তা নিয়ে বেশি ভাবা ও বিতর্কের বিষয় নয়।
কোনটি মানুষের জন্য ভাল আর কোনটি খারাপ তা মানুষ তার জ্ঞান দ্বারা নির্ধারন করবে। তবে যা খারাপ সে ব্যপারে আমার মতে পৃথিবীর সকলেই একমত। তবে যাদের চিন্তা ধর্ম দ্বারা সংকীর্ণ তারা ধর্মীয় খারাপকে খারাপের মধ্যে অন্তভূক্ত করে-সে খারাপ গুলো ধর্ম ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়।

খারাপের সংজ্ঞা আমি এভাবে দেই- যা মানবতার জন্য ক্ষতিকর তাইই খারাপ- ধর্ম যাইই বলুক না কেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০২
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×