somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি জানেন সত্যানুসন্ধান আপনার জীবনের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব?

২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





সত্যানুসন্ধান বলতে কি বুঝায়?
মানব জাতি শত শত চিন্তা-দর্শন, মত,পথ ও ধর্মে বিভক্ত।এর মধ্যে থেকে কোন মত, পথ বা ধর্ম ঠিক তা খুজে বের করাই হল সত্যানুসন্ধান।
সত্যানুসন্ধান কি সকলেরই দায়িত্ব?

যে যেই ধর্ম,মত বা পথের অনুসারি সে সেই ধর্ম,মত বা পথকে ১০০% সঠিক মনে করে। আর যখন আপনি মনে করবেন যে আপনার ধর্ম,মত বা পথ ১০০% নির্ভূল এবং এর বাইরে যা কিছু আছে সবই ভূল তখন তো আপনি মনে করবেন সত্যানুসন্ধানের দায়িত্ব আপনি ও আপনার ধর্মাবলম্বীরা/মতালম্বীরা ছাড়া পৃথিবীর বাকি সকল লোকের দায়িত্ব সত্যানুসন্ধান করা।আপনি মনে করেন সত্যানুসন্ধান অন্যের দায়িত্ব আর অন্যেরা মনে করে সত্যানুসন্ধান আপনার দায়িত্ব।সকলেই নিজ নিজ ধর্ম,মত বা পথ নিয়েই ১০০% সঠিক মনে করে সন্তুষ্ট। আর এ কারনেই প্রত্যেক ধর্ম,মত বা পথের অনুসারিরা তাদের নিজেদের মধ্যে আংশিক বা সর্ম্পূর্ণ বা যতটুকুই ভূল রয়েছে তা কখনো আর সংশোধীত হয় না।পৃথিবীর সকল ধর্ম, মত ও পথের লোকেরা যদি পরস্পর পরস্পরের চিন্তাধারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে শেয়ার করত তাহলে মানবতা বড়ই উপকৃত হত।
আপনি নিজ চোখে দেখছেন একটি হাতি দাড়িয়ে রয়েছে, উহাকে যখন কেউ ঘোড়া বলে তখন তার সাথে আলোচনা কিসের, সে তো আপনার দৃষ্টিতে চরম মূর্খ, তার সাথে কথা বললে আপনি তো তাকে শেখানোর মুড ও ‍দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মুখোমুখি হবেন। একই রকম দৃষ্টিভঙ্গি আপনার চিন্তা, মত বা পথের বিপরীত পক্ষের লোকেরাও করে থাকে। আপনি যেটিকে হাতি হিসাবে দেখছেন সেটিকে অন্য কেউ ঘোড়া বা গন্ডার হিসাবে দেখছে।কার দৃষ্টিতে কতটুকু সমস্যা তা কে সংশোধন করবে?কেউ তো মানতেই চায় না যে তার মত,পথ বা ধর্মে ভূল থাকতে পারে।সাধারন মত,পথ বা বাদ-মতবাদের ক্ষেত্রে পারস্পারিক আলোচন-সমালোচনা কিছুটা হলেও সহজ, কিন্তু ধর্মের বিষয়ে কথা বলা স্পর্শকাতর-যদিও ধর্মের নামেই সবচেয়ে বেশি মূর্খতা হয়ে থাকে। আপনার ধর্ম সঠিক কিনা বা স্রষ্টা আদৌ কোন ধর্ম দিয়েছেন কিনা এসব যাচাই বাছাইয়ের চিন্তা করাই তো বড় পাপ মনে করেন। শিশুকাল থেকে যাচাই-বাছাইয়ের বদলে নিজ ধর্মকে অতি শ্রদ্ধা ও পবিত্র মনে করতে শিখেছেন, তাতে যে ভূল থাকতে পারে তা ভাবার অবকাশ কোথায়?ভাল ও পবিত্র কিছুকে শ্রদ্ধা করা অবশ্যই ভাল কাজ।তবে আপনি যেটাকে ভাল বলছেন তা তো অবশ্যই বিবেক বুদ্ধি ও প্রমাণ দ্বারা যাচাই করে নিতে হবে, এরপর শ্রদ্ধার প্রশ্ন আসে। সবচেয়ে জ্ঞানী ও আলোকিত ব্যক্তি তারাই হতে পারবে যারা-১. অন্ধত্ব ও গোড়ামিত্ব পরিহার করে এরুপ চিন্তা করতে পারবে যে আমার নিজ ভাবনা যত সঠিকই মনে হোক না কেন কাল তাহা পরিবর্তন হতে পারে।
২. আমি মানুষ। আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারনে আমি আজ যা চরম সত্যে হিসাবে মনে করছি তা ভূলও হতে পারে।
৩. আমার নিজ চোখে দেখা বিষয়ও ভূল হতে পারে। আপনি নিজ চোখে যদি দেখে একটি বিড়াল আপনার সামনে বসে আছে আর কেউ যদি বলে উহা বিড়াল নয়, সাথে সাথে আপনি তার থেকে বা তার অনুসারিদের থেকে উহার ব্যখ্যা জানার চেষ্টা করুন (শেখার নিয়তে, তর্কে পরজিীত করার স্বার্থে নয়)।গ্রহণযোগ্য হলে গ্রহণ করুন, গ্রহণযোগ্য ব্যখ্য না পেলে বিনয়ের সাথে বলুন আপনার বিবেচনায় আপনি তখনও সঠিক হিসাবে গ্রহণ করতে পারছেন না, পরবর্তী যদি কখনও তার বক্তব্য আপনার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয় তখন আপনি গ্রহণ করবেন।
৪. ভিন্ন মতের বা ধর্মের কারো সাথে গঠনমূলক বিতর্কে ভিন্ন মতের ব্যক্তি যদি তার বক্তব্য প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, তার অর্থ নিশ্চিতভাবে কখনও এই হয় না যে সে ভূল ছিল আর আপনি ১০০% সঠিক।কারন হতে পারে যিনি বিতর্কে তার বক্তব্য প্রমানে ব্যর্থ হলেন তিনি হয়ত গুছিয়ে কথা বলতে পারেন না বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন।তবে ইহা তার বিষয়টি ভূল হওয়ার সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে।
৫. যেহেতু পৃথিবীর সকল ব্যক্তির কাছে নিজ ধর্ম বা দর্শন ১০০% সঠিক বলে প্রতিয়মান হয়, কারো জন্য এ দাবি করা ঠিক নয় যে তার ধর্ম বা চিন্তা দর্শন এতটাই নির্ভূল যাতে বিন্দু মাত্র ভূল নেই বা থাকতে পারে না। কেউ এতটুকু বলতে পারে যে আমার জ্ঞানানুসারে এখন পর্যন্ত আমি যতটুকু বুঝতে পারছি সে আলেকে অমুক ধর্ম বা চিন্তা দর্শন ১০০% নির্ভূল বলে প্রতিয়মান হচ্ছে, তাই আমি উহাকে বাস্তব জীবনে পালন ও প্রচার-প্রসারে চেষ্টা সংগ্রাম করছি। যে কেউ আমার অনসৃত ধর্ম বা দর্শন নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করলে তাকে আমি বন্ধু মনে করি, কারন সে হয়ত আমার কোন ভূল থাকলে ধরিয়ে দিবে অথবা পারস্পারিক আলোচনার কারনে সে হয়ত কিছু শিখবে। বিশ্বের আমরা সকলেই সকলের ছাত্র।
কেউ প্রশ্ন করতে পারেন যে মানবীয় চিন্তা দর্শনে ভূল থাকতে পারে, তাই মানবীয় চিন্তা দর্শন ও বাদ-মতবাদের ক্ষেত্রে আমার উপরোক্ত বক্তব্য খাটে-কিন্তু স্রষ্টা প্রদত্ত কোন বিধান কেউ অনুসরণ করলে সে বিধানের ক্ষেত্রে কোন প্রশ্ন তোলা তো সাজেই না বরং স্পর্ধার শামিল। আমি আপনার কথার সাথে একমত যে স্রষ্টার কোন বিধানে ভূল থাকতে পারে না আর তার বিধানের কোন বক্তব্যর বিষয়ে প্রশ্ন তোলা চরম হঠকারিতা বৈ কিছু নয়। তবে কোন পুস্তক বা বিধানকে স্রষ্টা প্রদত্ত বলে কোন ব্যক্তি বা জাতি দাবি করলে তা আসলেই স্রষ্টা প্রদ্ত্ত কিনা তা যাচাই বাছাই না করে স্রষ্টার হিসাবে গ্রহণ করা চরম মূর্খতার পরিচয়। স্রষ্টার বিধান হিসাবে আপনার কাছে ১০০% প্রমানিত হলে তখন আপনি প্রশ্ন তুলতে পারেন না।সুতরাং কোন পুস্তক আসলেই স্রষ্টা প্রদত্ত কিনা তা প্রশ্ন করা ও যাচাই-বাছাই করা শুধু উচিতই নয় প্রত্যেক বুদ্ধিমান মানুষের দায়িত্ব।
অতএব সত্যানুসন্ধানের দায়িত্ব পৃথিবীর সকল মানুষের
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫৭
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×