[আলোকিত মানুষ হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হল মিথ্যার বেড়াজল ছিন্ন করে সত্যকে উপলব্ধি এবং সে আলোকে জীবন যাপন। আমার লেখার গঠনমূলক সমালোচনাকে সাদরে গ্রহণ করা হয়। আমি কোন ভূল করলে বা ভূল বুঝলে তা সুন্দরভাবে ধরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব সুধী পাঠকের। তবে এভাবে যারা মন্তব্য করেন যে আপনি ভূল বা বিভ্রান্ত অথচ আমি কিভাবে ভূল পথে বা বিভ্রান্ত তার কোন সুনির্দিষ্ট ব্যখ্যা নেই, এমন অর্থহীন মন্তব্য না করায় শ্রেয়।]
সত্যর যেমন কিছু অনন্য বৈশিষ্ট আছে মিথ্যার ও কিছু বৈশিষ্ট বা চিহ্ন আছে। আমরা একটু সচেতন হলেই মিথ্যা দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বাচতে পারি।নিম্নে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করছি:
মিথ্যার চিরন্তন মানদন্ড:
১. মিথ্যা সাধারণত যুক্তি এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে। মিথ্যার পক্ষে যারা থাকে তারা কিছু খোড়া যুক্তি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এ সকল যুক্তির ভিত্তি যেহেতু অনেক নড়বড় তাই যে কোন চ্যলেঞ্জে এরা সত্য বের হওয়ার ভয়ে থাকে।কোন বিতর্কে সত্য প্রকাশের সম্ভাবনা দেখা দিলে তখন এরা তাড়াতাড়ি যুক্তি এড়ানোর জন্য কিছু ছল-চাতুরির আশ্রয় নেয় যেমন- বিশ্বাসে মুক্তিমেলে,তর্কে বহুদূর ইত্যাদি।
২. মিথ্যা তার দূর্বলতা এড়াতে আপনাকে বিশ্বাস করতে আহ্বান করবে, কারন যুক্তি ও পরীক্ষা-নিরিক্ষায় মিথ্যা সাধারণ টিকতে পারেনা।আকাশের চাদ কেবল যে হিরার তৈরি একটি বৃহদাকার বাতি বা গরুর সিংয়ের উপর আমাদের এ পৃথিবী এটা আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে।বিশ্বাস না রাখলে বা এর সত্যতা নিয়ে মনে একটু মাত্র সন্দেহ দেখা দিলে আপনার ঈমান থাকবেনা- এ কথা আপনার মনে একবার বদ্ধমূল করাতে পারলেই তো কেল্লা ফতেহ। আমার ভন্ডামি চির দিন টিকে যাবে।
৩.মিথ্যার উপর আশ্রিত কোন আদর্শ তার অনুসারীদেরকে নিজ শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে, অথচ সে চ্যলেঞ্জ এর জবাব দিতে পারে এমন যোগ্য কোন ব্যক্তি যাতে চ্যালেঞ্জ এর জবাব দিতে এগিয়ে না আসতে পারে তার জন্য কিছু কৌশলী ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।যেমন- বিভিন্ন ধরনের হট্টগোল ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণকারীকে বিভিন্নভাবে অপদস্তকরে, গালি-গালাজকরে, ইত্যাদি পন্থায়।
ইসলাম কি উপরোক্ত মানদন্ডে টিকতে পারে?
একটু পর্যালোচনা করা যাক। একজন মুসলিম সন্তানকে জীবনের শুরু থেকে শেখানো হয় বিশ্বাস করতে, যুক্তি ও বিবেক-বুদ্ধি ব্যবহার করতে নয়।শেখানো হয় ইসলামের নামে যা কিছু বিশ্বাস করতে শেখানো হয় তা তাকে দৃড় ভাবে বিশ্বাস করতে হবে, তা নিয়ে কোন প্রশ্ন তো দূরের কথা তার সত্যতা নিয়ে মনের মধ্যে বিন্দুমাত্র সন্দেহ আনলেও তার ঈমান থাকবেনা।যে যত বেশি বিশ্বাস করতে পারল তার ঈমান তত বেশি পাকা।অতএব মুসলমান থাকতে হলে বিশ্বাসকে জোর করে আটকে রাখতে হবে।
এরপরও মানবরচিত কুরআনের মানবোচিত দূর্বলতা যে সকল ক্ষেত্রে প্রকাশ পেয়ে যায় এবং যখন আর এ বিশ্বাসবাদীরা লাজওয়াব হয়ে যায় তখন বলে যে এ সকল খটকাদ্বায়ক বিষয় এড়িয়ে চলা উচিত। এর অর্থ কি দাড়াল? যেখানেই ধরা খাচ্ছে সে বিষয়টিকে খটকাদ্বায়ক শিরোনামে আটকিয়ে বাকি বিষয়গুলো নিয়ে নিজ মনে আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে থাকে।
আপনি যখন উক্ত মিথ্যা দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া লোকদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন এবং যুক্তি দিয়ে মিথ্যার গোমর ফাস করেন তখন মিথ্যা দ্বারা চরমভাবে আক্রান্ত কিছু ব্যক্তি এবং উক্ত ধর্ম যাদের অর্থোপার্জনের মূলমাধ্যম তারা হৈ চৈ শুরু করে যাতে করে আপনি সত্যে প্রকাশ করতে না পারেন।
ধরুন,আপনি কুরআন মানব রচিত ধর্ম তার প্রমান আপনি দিবেন এবং ইসলাম মানবতার জন্য কি কি ক্ষতি করছে তা থেকে মানুষকে সচেতন করবেন এজন্য একটি জনসমাবেশ বা সম্মেলন আয়োজনের ঘোষনা দিলেন-এরপর লক্ষ্য করুর প্রতিক্রিয়া।
যেহেতু আপনার কথা যুক্তি দ্বারা মোকাবেলা করার শক্তি তাদের নেই এবং তারাও পুরোনিশ্চিত যে কুরআনের চ্যালেঞ্জ প্রকাশ্য গ্রহণ করতে দিলে তাদের সব গোমর ফাক হয়ে যাবে এবং সত্য প্রকাশিত হবে, অতএব এটাকে যেভাবেই হোক বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে তারা যে কৌশল অবলম্বন করে তা হল নিম্নরুপ:
১. কাফের-মুরতাদদের ঠাই নেই, ফাসি চাই দিতে হবে।
২. পবিত্র ধর্মের অবমাননা সহ্য করা হবে না (প্রকৃতপক্ষে এটাঅবমাননা ছিলনা, সত্য মিথ্যা পার্থক্য করার জন্য কুরআনের সত্যতার চ্যলেঞ্জ গ্রহণ মাত্র)
৩. ধর্মানুভূতিতে আঘাত সহ্য করা হবে না (আর্থ্যাৎ আপনি যদি ভূল কিছুও শিখে থাকেন, তার শ্রেষ্ঠত্বই শুধু গাইতে হবে, অন্যাথায় ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগবে)
৪. যিনি কুরআনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন তাতে বিভিন্নভাবে ব্যক্তিগত আক্রমন করে তার ইমেইজকে জনসমাজের কাছে খাটো করবে।
৫. সাধারণ লোকদের এর পিছনে লেলিয়ে দিয়ে ধর্মীয় হট্টগোল তৈরি করবে।
লক্ষ্য করুন, কুরআন মানব রচিত কিতাব তা প্রমান করতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেবে না। অথচ তারা যখন বক্তব্য দেয় বা বই লেখে তখন বড় গলায় বলে যে ১৪০০ বছরেও কেউ কুরআনের ভূল ধরতে পারেনি।বিষয়টি এমন যে আমি আবোল-তাবোলে বিশ্বাস করলাম এবং যে ব্যক্তি তা আঙ্গুলি নির্দেশ করতে গেল আমি তার গলা টিপে চুপ করিয়ে দিলাম। এরপর বললাম দেখ আমার বাণী কত মহান যে কেউ এর ভূল ধরতে পারে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




