এক নির্জন দ্বীপের একধারে, দুপুর রাতের কোলে
ক্ষুধাতৃষ্ণাকে সহচর করে, আনুকূল্যের প্রত্যাশায় কাটছে সময়
দূরদূরান্তর আকাশের তিন সহস্র তারা ছাড়া
অধিক কোন আলো সমুদ্রের বুকে নজরে আসে না।
তবুও নিঃসঙ্গ বসে থাকা।
আনমনা মন পাগল গতিতে ছুটে চলেছে
প্রিয় বসন্তের সতেজ পাতার পিছে
পরিহাস! বসন্তের কোকিল সেই কবে
আমাকে একলা ফেলে চলে গেছে!
হৃদয়ে এক দুরন্ত অভিলাষ জাগে
মৃত্যুর পরে, আকাশের অপার সৌন্দর্য হয়ে
যদি অনন্ত নক্ষত্র সেজে রয়ে যেতে পারতাম!
যদি বিনিদ্র নিঃসঙ্গ রাতে 'বিষণ্ণ দৃষ্টি'
নিস্পন্দ চেয়ে থাকতো আমার পানে!
ঈশ্বরের শপথ! বাহু বাড়াতে না পারি
আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে দিতাম
প্রেয়সীর শরীরে-মনে গভীর থেকে গহীনে!
আমরা ক'জন তরুণ কবি তেপান্তরের খোঁজে
একটি সাম্পান নিয়ে রওনা হয়েছিলাম
পাঞ্জেরীহীন প্রত্যেকে পাঞ্জেরী হয়ে
ভয়ানক বেদনার্ত মনকে
নিরালায় নির্বাসন দেওয়ার প্রচেষ্টা;
পথিমধ্যে অন্ধকারের প্রবল প্রতিরোধ
সহ্য করতে না পেরে ছিটকে গেছি সবাই
ওদের কথা জানি না
হয়তো সলিল সমাধি ঘটেছে, হয়তো নয়;
এক টুকরো কাঠে ভর করে নির্জন একাকী দ্বীপে
অবশেষে নির্জনতা পেয়েছি, তথাপি এ নির্জনতার যন্ত্রণা
অসহ্য বোধ হচ্ছে, হয়তো তাই একা বের হই নি।
ইচ্ছে হচ্ছে আবার ফিরে যায় নাগরিক কোলাহলের মাঝে
না হয় সেখানেই খুঁজে নিব নির্জনতা, লিখব কবিতা।
কবিতার অতিথি মুক্তি, আর
মুক্তির প্রতীক আকাশ
আমি স্বপ্ন দেখি আকাশের দিকে তাকিয়ে
স্বপ্ন দেখি কষ্ট ও ভালবাসার
স্বপ্ন দেখি বিদ্রোহী ও প্রেমিকার
আমি কবিতা লিখি আকাশের দিকে তাকিয়ে
নিঃসীম শূন্যে আঁখি মেলে
কখনও নীল, কখনও কৃষ্ণ
কখনও শুভ্র আকাশের পানে চেয়ে
রৌদ্রস্নাত আকাশ, জ্যোৎস্নাপ্লাবিত আকাশ
বৃষ্টিক্লান্ত আকাশ সবই ভাল লাগে
সুখ স্বপ্ন দেখতে দেখতে মাঝে মাঝে
দুঃস্বপ্ন দেখে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে
গাল বেয়ে ঝরে পড়ে নোনা জল
তখন ভয় হয়, এই বুঝি আকাশ মুছে গেছে!
কথা ছিল জ্যোৎস্নালোকিত রাত্রির
সে আর নেই, আকাশে মেঘ জমেছে
মেঘের আড়ালে চাঁদ, চাঁদের বুকে ফাঁদ!
আকাশে মেঘ, হৃদয়ে দুঃখ
হৃদয় জানে হৃদয়ের দুঃখ
অথচ আমি একা! এ ব্যথা বড় কষ্টের
আমি কষ্টে আছি!
কথা ছিল কবিতার গাত্রদেশে চাঁদের চুম্বন
হে চাঁদ! ফিরে এসে দিও
-নিষিদ্ধ কবিতা, চলো চলে যাই
-ব্যর্থ কবি, একা বের হও
বিচ্ছেদের পাথেয় হয়েও মেঘ কাঁদে
পিছনে জলে ডুবা রাত, অন্ধকার, নির্বাসিতা চাঁদ!
কবিতার কোন হদিশ নেই
সে কি আত্মহননের পথ বেছে নেয় নি?
এই নিস্তব্ধ তেপান্তরে, অসহায় আমাকে
ভালবাসার ইন্দ্রছোঁয়া দিতে কেউ এলো না
হয়তো আসবেও না
অসহ্য অমানুষিক যন্ত্রণা ভোগ করে
অবশেষে একাগ্র চিত্তে প্রার্থনাদ করছি,
আত্মহত্যা, তুমি পুণ্য হও!
সর্বাগ্রে তোমাকে আমি বরণ করে নিব!
প্রিয় প্রেমিকা কবিতা! আমি পুনর্জন্মে বিশ্বাস করি না
শুধু তোমাকে পেতে আবার জন্ম নিব!
_______
এখানেও প্রকাশিত...
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:২৯