somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিভাবে খুব সহজে যে কোন তর্কে জিতবেন? আমার রহস্য বলে দেয়া হলো!

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনে নানা সময় আপনি কোন না কোন আর্গুমেন্টে জড়াবেনই। সেটা হতে পারে খুব পরিচিত কারো সঙ্গে কিংবা একেবারেই অপরিচিত মানুষের সঙ্গে।

কিভাবে আপনি যে কোন আর্গুমেন্টে জিতবেন এবং হাসিমুখে ফিরে আসবেন?

ফ্র্যাংকলি স্পিকিং, আপনার সব আর্গুমেন্ট 'আক্ষরিক অর্থে' জেতার দরকার নেই। কিন্তু শেষ হাসিটা যেন আপনিই হাসতে পারেন সেই উপায়ই আমি বলছি। একেবারে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে:

১। কোন অপরিচিত মানুষের সঙ্গে বিতর্কে জড়াবেন না- যদি না এতে সুনির্দিষ্ট কোন লাভ থাকে। যেমন: পাবলিক গাড়ীতে করে কোথাও যাচ্ছেন। কেউ একজন রাজনীতির কথা তুললো। আপনি দেখলেন আপনার প্রিয় দলটিকে তুলো ধুনো করা হচ্ছে। কি করবেন আপনি? হৈ হৈ করে আলোচনায় ঢুকে যাবেন? যা আসলে আলোচনা নয়, সস্তা কুতর্ক। কি লাভ হবে আপনার সেই তর্কে অংশ নিয়ে? প্রতিপক্ষের সিদ্ধান্ত কি পাল্টাবে? এই লোকগুলোর সাথে আপনার হয়তো জীবনে কখনও আর দেখা হবে না- তর্কে জেতা না জেতা কোন মানেই রাখে না। আপনি হয়তো আপনার সমর্থিত দলটির গুণগান গেয়ে গলার রগ ফোলাবেন। বিনিময়ে কি পাবেন আপনি এই অর্থহীন তর্কে? তর্ক জেতার বিমলানন্দ? ঠুনকো! এক্ষেত্রে একেবারেই ঠুনকো! অযথা শক্তি অপচয়।

২। প্রতিপক্ষের আগে উত্তেজিত হবেন না। গালি শুরু করবেন না। তর্কে প্রথমে প্রতিপক্ষকে এগিয়ে থাকতে দিন। প্রতিপক্ষের শক্তি ক্ষয় করে ফেলুন। এ অনেকটা রণকৌশলের মতো।

৩। প্রতিপক্ষ দাঁড়িয়ে কথা বললে আপনি বসে কথা বলুন। এ যেন শারীরিক ভাষায় বলা, 'আমি এখানেই আছি। চাইলে তুমি প্রস্থান করতে পার।'

৪। তর্কে জেতার সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো সঙ্গে সঙ্গে তর্কে জিততে না চাওয়া। কি, ঘোলাটে লাগছে? ফর্সা করে বলি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। অপেক্ষা করুন সুবর্ণ সময়ের। অতঃপর ঝোপ বুঝে কোপ মারুন। প্রতিপক্ষ কুপোকাত!

৫। প্রতিপক্ষকে বলতে দিন। তার কথার মাঝখানে হামলে পড়বেন না। তাকে এক নিশ্বাসে তার কথাগুলো শেষ করতে দিন। তার উত্তেজনা চরমে পৌঁছে যেতে দিন। যদি সে তার কথা শেষেই সটকে পরে, ফোনের লাইনটি কেটে দেয়- জেনে নিন সে একজন কাপুরুষ! তার পিছু নিবেন না, তাকে ডাকবেন না, কল ব্যাক করবেন না। নীরবতা পালন করুন। প্রতিপক্ষ অস্থির হয়ে যাবে কেন আপনি পাল্টা কিছু বলছেন না! এটাকে বলে সাইলেন্ট টর্চার।

প্রতিপক্ষ হয়তো এটাও ভাবতে পারে, সে-ই বুঝি তর্কে জিতে গেছে! কাপুরুষরা এভাবেই ভাবে। তর্কের ময়দানে তারা খুব সাহসের ভাণ দেখায়। আসলে তারা সাহসী না, ভেতরে ভীতু। তর্কের মাঠে খুব হম্বিতম্বি করে, গালাগাল-চিৎকার করে এরা সটকে পড়ে, ফোনে হলে লাইন কেটে দেয়। আমার সাইকোলজিকাল নিরীক্ষায় দেখেছি, এদের বেশির ভাগই বউ অথবা প্রেমিকা দ্বারা চালিত।

আপনি তর্কে জিততে চান? কাপুরুষদের সাথে তর্কে লিপ্ত হবেন না। এটা শিশু নিগ্রহের পর্যায়ে পড়ে যাবে!

৬। চুপ থাকতে শিখুন। প্রতিপক্ষ আপনাকে পাবলিকলি হিউমিলিয়েট করতে চাইলেও ইগনোর করুন। আমি হাজারটা তর্কে জিতেছি সময় মতো চুপ থেকে। আর্গুমেন্ট হচ্ছে মাইন্ড গেম। হাত-পা দিয়ে নয়, গলা দিয়ে হয়, মাথা দিয়ে তর্ক খেলুন। আমি খিলাড়ির মতো তর্ক নিয়ে খেলি। আমি প্রতিপক্ষকে আগেই দুটো গোল দিয়ে দিতে দিই। এরপর পুরো মাঠ আমার। হ্যাট্রিক করে তর্ক জিতেই মাঠ ছাড়ি।

৭। মনে রাখবেন, তর্কে জেতা মানে কথায় জেতা না, গালিগালাজে চ্যাম্পিয়ন হওয়া না, আমি এই-আমি সেই, আমার ফ্যামিলি এমন-আমার ফ্যামিলি তেমন, হেন করেঙ্গা-তেন করঙ্গে এই সব ছোটলোকি কথাবার্তা বলা না; তর্কে জেতা মানে পিস অফ মাইন্ড- মনে স্বর্গীয় সুখ। তর্কে জেতা মানে প্রতিপক্ষ আপনার কথা মানুক আর না মানুক তার মনে আপনার সম্পর্কে একটা শ্রদ্ধাবোধ- একটা বিস্ময় বোধ তৈরি করা। তর্কে জেতা মানে প্রতিপক্ষকে সময় পরিক্রমায় আপনার কাছে ফিরে আসার পরিস্থিতি তৈরি করা। তর্কে বিজয় মানে মাথা উঁচু আর মুখে হাসি- সত্যিকারের হাসি, কোন সাময়িক বা কুটিল হাসি নয়।

এই যা, অনেক গোপন রহস্য ফাঁস করে দিলাম! আপাতত আর কিছু বলছি না, গুরু মারা বিদ্যা হয়ে যাবে তো!

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: আমার কৌশলগুলো কাজে লাগে কিনা দেখার জন্য কারও সঙ্গে গায়ে-পড়ে লেগে যাবেন না প্লিজ! তখন আপনি কিন্তু 'জিরো গ্রাউন্ডে' চলে যাবেন। জিরো গ্রাউন্ডে কেউ কখনও তর্ক জিততে পারে না। গ্রাউন্ড শক্ত রাখুন, মাঠটা শেষ পর্যন্ত আপনারই হবে।

প্রথম প্রকাশ: SAIFSAMIR.COM
_______

পূর্ববর্তী পোস্ট: ধীর গতির পিসি বা ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনমুক্ত দ্রুতগতির ফেসবুক ব্যবহারের সহজ কৌশল!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩
৩৪টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×