somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Light Novel Review: Hyouka / Koten-bu Series

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অ্যাডভেঞ্চার অথবা মিস্ট্রি জনরা চোখে পড়লে সাধারণত আমাদের মনে একধরণের ধারণা আসে, এই নভেলটির কাহিনী সেই ধারণার সাথে একেবারেই খাপ খায়না। কিন্তু তারপরেও, এই নভেলটি একটি নয়, বরং অনেকগুলো চমৎকার রহস্যের কাহিনী উপহার দিয়েছে পাঠকদেরকে।

প্রথমে কিছু তথ্য উপাত্ত দেয়া যাক-
Genres: Adventure, Mystery, School
Authors: Yonezawa, Honobu
Status: Publishing
Published: Oct 31, 2001
Score: 8.44
Ranked: 205 (MyAnimeList)

সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে, হাইস্কুল জীবন হল একজন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। পড়াশোনা, খেলাধুলা, বন্ধুবান্ধব অথবা নতুন কোন অভিজ্ঞতা অর্জন- সবকিছু মিলিয়ে এই জীবনটার জন্য প্রচলিত কথাটি হল "Rose-coloured life". এবং, ধরে নেয়া হয় যে, এই গোলাপ রঙা জীবনই যেকোন মানুষের সবচেয়ে আরাধ্য বস্তু।




কিন্তু কারও যদি এই রোজ কালারড লাইফ ভাল না লাগে? কারও যদি এই সবকিছুকে শুধু শক্তির অপচয় বলে মনে হয়, তাহলে তার জীবনকে কি বলা যায়? "Grey coloured"?

ওরেকি হোতারু নিজেকে তেমনই মনে করে। সে এই রোজ কালারড লাইফের প্রতি কোন আকর্ষণ অনুভব করেনা। এমন নয় যে সে যারা এভাবে জীবনযাপন করে তাদের অপছন্দ করে। তবে সে নিজে এসব থেকে দূরে থেকে নিজের শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে চায়, কারণ, নিজের সম্পর্কে তার নিজের বক্তব্য হল, সে একজন "Energy Saver".



হোতারুর জীবনের motto হল, "If I don't have to do it, I won't do it, If I have to do it, make it quick". যদিও এই ব্যাপারটা নিয়ে তার একমাত্র কাছের বন্ধু সাতোশি ঠাট্টা করার সুযোগ পেলে কখনো ছাড়েনা। সাতোশি নিজে হল ডেটাবেইস। পৃথিবীর যতধরণের তথ্য, সবই সাতোশির ঝুলিতে সযত্নে সংরক্ষিত থাকে। আর যেকোন কিছুতে বিশ্বাসযোগ্য ঠাট্টা করতে তার জুড়ি নেই। হোতারুর সম্পর্কে তার ধারণা, হোতারু নিজের ক্ষমতাকে ঠিকমত ব্যবহার করে না। করলে সে অনেক কিছু খুব সহজেই অর্জন করতে পারত।

এই নির্বিবাদ, শক্তি সঞ্চয়কারী হোতারুর জীবন পাল্টে দিল, বেনারস থেকে আসা একটি চিঠি।

হোতারুর বড়বোন তোমোয়ে হোতারুকে চিঠি পাঠায় একটি অদ্ভুত অনুরোধ (অথবা আদেশ) করে। হোতারুর বড়বোন হাইস্কুলের যে ক্লাবের সদস্য ছিল, সেই ক্লাবটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে হবে। হোতারুর মত এনার্জি সেভারের জন্য এটা খুবই অপ্রয়োজনীয় একটি অনুরোধ, তাও বড়বোনের কথায় রাজি হয়ে হোতারু পা বাড়ায় ক্লাসিকস ক্লাবকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে।



কিন্তু ক্লাবরুমে পা দেয়ার সাথে সাথে হোতারুর জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। কে জানত, স্পেশাল ব্লকের চারতলার শেষমাথার ঐ গোধূলীর স্নিগ্ধ আলোয় স্নান করা আলোকিত ঘরের কোনায় দাড়িয়ে থাকা এলিগেন্ট দেখতে বড় বড় কৌতুহলী চোখের শান্তশিষ্ট মেয়েটি এভাবে ঝড় তুলে দেবে ওরেকি হোতারুর জীবনে! কে জানত, এনার্জী কনসার্ভিং হোতারু একের পর এক কাজ করে যাবে চিতান্দা এরুর ইচ্ছায়, যা তার স্বভাবের পুরো বিপরীত! কি এমন আছে সেই মিষ্টি স্বরের "কিনিনারিমাস" এ?!



আমার মতে, নভেলটির একইসাথে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং দুর্বল দিক হল এর ট্যাগ। আমি নিজে যখন প্রথম শুরু করেছিলাম, আমার এক্সপেকটেশন ছিল মিস্ট্রি জনরার অন্যান্য কাহিনীর মতই মাথা ঘুরিয়ে দেয়া এবং প্লট টুইস্ট যুক্ত কোন কাহিনী হবে এবং পড়তে গেলে প্রতিটা লাইন গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে ক্লু বোঝার জন্য। কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা আসলে একেবারে উল্টো। একদম চিন্তাভাবনা ছাড়া হালকা মেজাজে যেকোন অবস্থায় পড়ার উপযোগী একটি নভেল এটি। প্রতিটা ক্যারেক্টারের নিজস্ব চার্ম আছে এবং আলাদাভাবে মনে ছাপ ফেলে দেবে। তাদের কথাবার্তা, কাজকর্ম নিজের অজান্তেই মনে একটা প্রশান্তির ভাব এনে দেবে। কিন্তু একইসাথে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব বলে মনে হওয়া সমস্যাগুলো যখন খুব সহজে সমাধান হতে দেখা যায়, চমৎকৃত না হয়ে পারা যায়না।



এর একটা দুর্বল দিক হল, ট্যাগ দেখে এক্সপেকটেশন নিয়ে পড়তে শুরু করার পরে প্রথম কয়েকটা চ্যাপ্টার একটু ধীরগতির এবং বোরিং মনে হতে পারে, যদি আপনি ধীরগতির কাহিনীতে অভ্যস্ত না হন। কিন্তু যত কাহিনী যত এগিয়ে যাবে, পাঠককে এর ভেতরে তত বেশি টেনে নেবে, তা নিশ্চিত।

নভেলটির এ পর্যন্ত তিনটি ভলিউম ইংরেজীতে অনূদিত হয়েছে, তবে আশার কথা হল, এর অনুবাদ এখনো চলছে, তাই আশা করছি এটা সম্পূর্ণ অনূদিত হবে কোন একদিন।

আরেকটা কথা না বললেই নয়, এর অ্যানিমে অ্যাডাপ্টেশন প্রায় নিখুঁত। স্টোরিতে দুএকটা ছোটখাট পার্থক্য আছে, তবে দুটো থেকেই একইরকম আবহ পাওয়া যায়।

কাজেই, আমার মতে, সকলের জন্য, বিশেষ করে যারা কখনো লাইট নভেল পড়েননি, তাদের শুরু করার জন্য এ নভেলটি আদর্শ। যদি পড়ে না থাকেন তাহলে আজই পড়া শুরু করে দিতে পারেন।

বি. দ্র. - "হিওকা" এই নামটিই একটি বড় রহস্য!

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×