somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আফ্রিকানরা আসলেই কী অসভ্য! বাংলাদেশকেও কি তারা দূষিত করছে?

০৩ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আফ্রিকান বলতে এক সময় আমরা বুঝতাম নির্যাতিত অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশের অসহায় লোকদের । তাদের ওপর ইউরোপীয় সাদাদের অমানবিক নির্যাতন ও দাসে পরিণত করার হৃদয় বিদারক গল্প পড়ে ও শুনে তাদের জন্য সব সময়ই কষ্ট অনুভব করতাম। কিন্তু তাদের প্রতি সে একাত্মকা আমার কেটে গেলো যুক্তরাষ্ট্রে ও দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত বাংলাদেশীদের উপর তাদের নিষ্ঠুর ও নির্মর অত্যাচারের ঘটনা শুনে শুনে। হলিউডের সিনেমায় কালোদের চরিত্র নিয়ে অঙ্কিত চিত্রগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও আফ্রিকায় এশীয়দের ওপর তাদের চালানো ঘটনাগুলোয় তাদের নির্মমতার দৃশ্যে মিল খুঁেজ পেতাম। যা হোক এতোদিন তো দেশের বাইরের ঘটনা থেকে তাদের নিষ্ঠুরতা সম্পর্কে ধারনা নিতাম। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে বসেই আফ্রিকান কালোদের নিশংসতা, অসভ্যতা, রূঢ়তা ও নষ্টাামি সম্পর্কে বেশ ভাল একটি ধারনা পেলাম।

আমাদের দেশে খেলতে আসার নাম করে অবস্থানরত আফ্রিকার কয়েকটি দেশের এসব কালোদের অসভ্যতা ব্লগার-পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে এখানে আমার পরিচিতদের থেকে শোনা ও নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে পাঁচটি ঘটনা তুলে ধরলাম।

ঘটনা ১. আফ্রিকার নাইজেরিয়ার ২৪ বছর বয়সী ওবুয়া ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের ফুটবল লীগে খেলতে আসে। উঠে উত্তরার আলাওল রোডের একটি ফ্যাটে। দুইজন থাকার নাম করে ফ্যাটটি ভাড়া নিলেও বাসার উঠার এক মাসের মাথায় সেখানে ১২ জন স্বদেশীকে নিয়ে বসবাস শুরু করে ওবুয়া। বাড়িওয়ালা সদস্য কমাতে বললে তারা বাড়িওয়ার উপর হামলা চালিয়ে টানা তিন মাস ভাড়া না দিয়েই বাসা পরিবর্তন করে।

ঘটনা ২. কঙ্গোর বুবুম্বসা (৩২) ও তার সাত সহযোগী বনানীর একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে বাংলাদেশে ব্যবসার নাম করে আর্ন্তজাতিক মাফিয়ার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে ও ইউরোপে নারী পাচার করে।

ঘটনা ৩. লাইবেরিয়ার কাতাম্বি বাংলাদেশের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এলেও সে মূলত জাল ডলার ব্যবসা করে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে সম্প্রতি ঢাকা ত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমায়।

ঘটনা ৪. গত জানুয়ারিতে মহাখালীর একটি আবাসিক হোটেলে গিলে একদল কালো আফ্রিকান প্রত্যেকে একাধিক যৌনকর্মীকে বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করে। সে হোটেলে দলটি এক ডজন মেয়েকে সম্ভোগ করে তাদের পারিশ্রমিক না দিয়ে জোরপূর্বক হোটেল ত্যাগ করে।

ঘটনা ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া আমার এক বন্ধু কক্সবাজারে খেলার জন্য ঢাকা থেকে একদল আফ্রিকান খেলোয়ারকে ভাড়া করে তিনদিনের চুক্তিতে কক্সবাজারে নিয়ে যায়। কক্সবাজারে তাদেরকে হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। যে হোটেলে তাদেরকে রাখা হয়েছে সে হোটেলের ফ্রন্ট অফিসের ডেস্কে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার নাম করে দুটি ল্যাপটপ ও ক্যাশে রাখাা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চুরি করে। চুরির বিষয়টি হোটেল কর্তৃপক্ষ বুঝার আগেই তারা কখন যে হোটেল ত্যাগ করেছে তা কেউই টের পায়নি। পরে আমার ঐ বন্ধুকে বিরাট অংকের জরিমানা গুনতে হয়েছে। কারণ হোটেলের লগ বুকে ঐ বন্ধু সাক্ষর করে তাদের হোটেলে উঠায়।

ঘটনা ৫. এ ঘটনা আমার সামনে ঘটেছে। গত মাসে আমাদের এক বড়ভাইয়ের বিয়ে খাওয়ার জন্য আমরা পাঁচ বন্ধু শাহবাগ থেকে উত্তরার উদ্দেশ্যে বেলাল পরিবহনের একটি বাসে উঠি। বেশ ভালভাবেই আমাদের বাস এগিয়ে যাচ্ছিল। বাসটি বনানীে চেয়ারম্যান বাড়ির কাছে একটি জ্যামে পড়লে একজন খাটো বাংলাদেশি মহিলাসহ দুইজন আফ্রিকান হুড়মুড় করে আমাদের বাসে উঠে। বাসে উঠেই মহিলাসহ তাদের একজন আমাদের পাশের ডাবল সিটে বসে। বাকিজন সামনের সুন্দরী এক আপুর পাশে খালি থাকা সিটে বসে পড়ে। জ্যাম ছাড়লে বাস চলতে থাকে। একটুপর তিনজনের সিটে বসা আমারই এক বন্ধু দেখ দেখ বলে আমাকে পাশের সিটের দিকে তাকানোর জন্য বলল। তাকিয়ে দেখি বাসভর্তি মানুষের সামনেই কালো লোকটি তার সঙ্গে নিয়ে আসা মহিলাটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত চালাচ্ছে আর বিভিন্ন ধরনের বিকৃত অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে আহ উহ উচ্চারণ করছে। এ ঘটনায় শুধু আমরা কেন বাসে যাদের চোখে ঘটনা পড়েছে কেউই অবাক না হয়ে পারলনা। একটু পর দেখলাম সামনে সিটে সুন্দরী আপুর সঙ্গে বসা অবশিষ্ট কালো লোকটি ঘুমের ভান করে হঠাৎ করে আপুর কাঁধে মাথা তুলে দিল। আপুটি সঙ্গে সঙ্গে প্রায় চিৎকার করে তার পাশ থেকে সরে অন্য সিটে গিয়ে বসলেন। এ ঘটনায় আমরা প্রায় সবাই বেশ লজ্জা পেলাম। তারপরও কেউই তাদের কিছুই বললনা, হয়তো বিদেশি বলেই ্এ সম্মান দেখালো। কিন্তু আমাদের লজ্জ্বা ও অবাককে ছাড়িয়ে গেলো তাদের সংঘটিত সর্বশেষ ঘটনাটি। তারা বিনা টিকেটে বাসে উঠায় কন্ট্রাকটর এসে তাদের কাছে ভাড়া চাইলে আমার পাশে বসা কালো লোকটি তিনজনের ভাড়া বাবদ মাত্র ১০ টাকা দিলো। এতে কন্ট্রাকটর প্রতিবাদ জানিয়ে ৩০ টাকা দিতে বললে কালো লোকটি সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রাকটরকে কয়েক ধাক্কা দিয়ে বাসের মাঝখান থেকে গেটে পাঠিয়ে দিলো। ঘটনায় কন্ট্রাকটর হতচকিত হয়ে তার দিকে বড় চোখ করে তাকালে লোকটি তাকে লাঠি দিতে উদ্যত হলে আমরা দুই বন্ধু তাকে থামাতে দাঁড়িয়ে তার হাত ধরলে জোরে ঝাড়া দিয়ে আমাদের হাত সরিয়ে কন্ট্রাকটের উদ্দেশ্য আধো আধো বাংলায় বলতে থাকলো, ‘ছ্যালা তিকেত দে, পুরো ভেরা দেব। তিকিত! তিকিট!!’ কন্ট্রাকটর তখন অসহায়ের মতো বলতে লাগলো, ভাড়া না দিতে পারলে বাংলাদেশে আসছো কেন, নিজের দেশে চলে যাও।“ অন্যদিকে কালো লোকটি তখনো বন্য শুয়োরের মতো ঘ্যোৎ ঘোৎ করে চেচাচ্ছিল।

এ ঘটনায় আমরা সহ বাসের সব যাত্রী প্রায় হতভম্ব হয়ে গেল। আমি চিন্তা করলাম পুলিশকে অভিযোগ করব। ভাবতে ভাবতেই আমাদের গন্তব্য স্থল এসে পড়লো । বাস থেকে নেমে আশপাশে পুলিশ খুঁজলাম পেলাম না। তারপর কমিউনিটি সেন্টারে উঠে গিয়ে বিয়ে খেয়ে চলে এলাম।

এরপর ঘটনাটি প্রায় ভুলেই গেছি, কিন্তু আজ দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় উত্তরা এলাকায় আফ্রিকান অপরাধীদের নিয়ে আসা প্রতিবেদনটি পড়ে ঘটনাটি আবার মনে পড়লো।

পুরো দৃশ্যটি কল্পনা করার পর বেশ খারাপ লাগলো আমার। আমাার মনে হচ্ছে, আফ্রিকানদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ করা এখনই উচিৎ। নয়তো এরাই একটি আমাদের সভ্য সমাজ ব্যবস্থার গলার কাটা হয়ে দাঁড়াবে সেদিন আর সংশোধনের সময় থাকবেনা।

উল্লেখ্য, পত্রিকার পাতায় প্রায়ই বাংলাদেশে অবস্থানরত আফ্রিকান কালোদের দূর্ষর্ধ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা পড়ে পড়ে নিজ দেশে নিজেকে পরবাসী মনে হচ্ছে।



২০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×