বাংলাদেশে যে ৭ ঋতুর দেশ এ ব্যাপারে কম- বেশি সবারই জানা আছে।
১) গ্রীষ্ম
২) বর্ষা
৩) শরৎ
৪) হেমন্ত
৫) শীত
৬) হরতাল
৭) বসন্ত
মাঝখানে যে নতুন ঋতুটা ঢুকে গেছে এই ঋতুর প্রভাব আমাদের দেশে এতই বেশি যে, ভবিষ্যতে হয়তো এই ঋতুকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু চলচ্চিত্রও নির্মাণ করা যেতে পারে। তাহলে চলুন দেখা যাক, হরতালকে কেন্দ্র করে কি কি চলচ্চিত্র আমরা দেখতে পারি সামনে-
কুং- ফু পাণ্ডা দেখে অনুপ্রানিত একজন যুবককে নিয়ে এই সিনেমার কাহিনী যে গাড়ীর কাঁচ ভাঙ্গতে মজা পায়। সারা বছর সে ঘরের চিপায় পরে থাকে তবে হরতালের মৌসুম এলেই গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে। নেমে পরে রাজধানীতে আর কুং- ফু স্টাইলে একের পর এক গাড়ীর কাঁচ ভেঙ্গে চলে। এতেই তার আনন্দ।
হরতাল, তাই বলে সব তো থেমে থাকতে পারেনা। ডেটিংটাও মাঝে মাঝে ইমারজেন্সি হয়ে পরে। এরকম একজোড়া ডেটিং কাপলকে নিয়ে এই সিনেমার কাহিনী। শান্তিপূর্ণ হরতালে তারা মনের সুখে ডেটিং করতে থাকে হঠাৎ মারা যায় শান্তির মা, শুরু হয় গণ্ডগোল। ভাংচুর। এরুপ অবস্থায় প্রেমিক 'নিজের যান বাঁচানো ফরয' এই বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার প্রেমিকাকে রেখেই পলায়। বাটে পরে বেচারি প্রেমিকা, এগিয়ে যায় কাহিনী...
বিশেষ এক ধরনের হাওয়া নিয়ে তৈরি হবে এই সিনেমা। এটা এমন এক বিশেষ হাওয়া যা নির্দিষ্ট একটি ঋতুতে ক্ষণে ক্ষণে বয়ে যায়। এ হাওয়া এমনই শক্তিশালি যে, যেসব জায়গা দিয়ে বয়ে যায় সেসব জায়গা নগদে তালা মেরে দিতে হয় নাহলে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। রহস্যময় এ হাওয়া বয়ে যাবে নিজের খেয়ালে, আর কাহিনীও এগিয়ে যেতে থাকবে।
দশ ইঞ্চি ইটার সাহায্যে কিভাবে হিরোইঞ্চিরা দেশের জনগণকে শায়েস্তা করে সে কাহিনী নিয়েই তৈরি হবে এই সিনেমা। এই সিনেমার মাধ্যমে এটাই বোঝানো হবে যে, দশ ইঞ্চি ইটা দিয়েও দেশ শাসন করা যায়, যদি টেকনিক জানা থাকে।
আইনের হাত লম্বা তা সবাই জানে, তবে আইনের পা নিয়ে কারও মাথা- ব্যাথা নেই। এই চিন্তাকে কেন্দ্র করেই গ্যাঞ্জাম পার্টি এবার নজর দিবে আইনের পায়ের দিকে। কৌশলে জ্বালিয়ে দিতে থাকবে আইনের পা যাতে করে তারা ভবিষ্যতে কাউকে ধাওয়া করতে না পারে। গ্যাঞ্জাম পার্টিরা ওদিকে মনের সুখে গ্যাঞ্জাম চালিয়ে যেতে থাকবে- এরকম ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তৈরি হবে এই সিনেমা।
মুখোমুখি সংঘর্ষের কাহিনী নিয়ে তৈরি হবে এই সিনেমা। এক পুলিশ এবং পিকেটার যারা কোনও এক হরতালের দিনে কঠিন হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তা ইটাইটি- তে পরিনত হয়। পিকেটারের ইটের আঘাতে নলি ফেটে যায় পুলিশটির। চাকরীতে ইস্তফা দিয়ে সে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, যে করেই হোক খুজে বের করবে সেই পিকেটারকে এবং তারপর তার নলি ফাটাবে। (মাইর হবে, সাউন্ড হবেনা)
হরতালে পুলিশের হাত থেকে পলাতে পারলেও র্যাপিড অ্যাকশন কাক্কুদের হাতে পড়লে জামিন নাই। এরকম একটি চিন্তাকে কেন্দ্র করেই তৈরি হবে এই সিনেমা। কান্না করেও লাভ হবেনা কারন র্যাব কাক্কুর চোক্ষে সানগ্লাস। এভাবেই সানগ্লাস পরে কান্না উপেক্ষা করে একের পর এক গ্যাঞ্জাম পার্টিকে আটক করতে থাকবে র্যাপিড বাহিনী। এগিয়ে যাবে কাহিনীও....
ষ্ট্রীট ড্যান্স মুভি 'স্টেপ আপ' দেখে উদ্বুদ্ধ কিছু পিকেটারকে নিয়ে তৈরি হবে এই সিনেমা। হরতালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা আত্মপ্রকাশ করবে। ড্যান্স বা নৃত্যের তালে তালে তারা ভাঙচুর চালিয়ে যাবে। মানুষ অবাক হয়ে দেখতে থাকবে, কিভাবে নৃত্যের সাহায্যে গাড়ি ভাঙচুর করা যায়। এভাবে তারা ষ্ট্রীট ড্যান্স চালিয়ে যেতে থাকবে এবং দেশের নতুন ধারার এই নাচ শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে থাকবে।
ঢাকা শহর সাধারনত হরতালে এরকম ফাকা থাকেনা। পিকেটার দিয়েই তো ভরা থাকে। যাই হোক, এই সিনেমার কোন কাহিনী নেই। টানা দুই ঘণ্টা ধরে এই একটা দৃশ্যই থাকবে পুরো সিনেমাতে। মুলত, ঈদের সময়কার একটা দৃশ্য এটা যা কিনা হরতালে রিলিজ দিয়ে বোঝানো হবে যে হরতালে আসলেই গাড়ীর চাকা ঘোরে না, দোকান পাটও খোলে না।
নামে যাত্রাবাড়ীকে ব্যাবহার করা হলেও মূলত ঢাকার প্রায় সব এলাকার কথাই তুলে ধরা হবে এই সিনেমায়। রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করার পদ্ধতি বেশ ভুয়া এবং এতে কম মানুষই গরম পোহাতে পারে। সবাই যেনো একসাথে গরম পোহাতে পারে সেটা চিন্তা করেই পিকেটাররা হরতালে মাঠে নেমে একের পর এক বাস জ্বালাতে শুরু করবে। তারা এ কাজটি করবে মূলত ভাসমান জনগনকে উষ্ণতা দেয়ার জন্য। কিন্তু এখানে একটা বিরাট ভুল বোঝাবোঝি হবে, আসল কাহিনী শুরু হবে এর পর থেকেই...
------------------------------------ ------------------------------------
বিঃদ্রঃ- এই পোষ্টের উদ্দেশ্য ভেজালমুক্ত খাটি ফান। কাউকে ছোট করা বা নির্দিষ্ট কোন দলকে ইঙ্গিত করা এই পোষ্টের উদ্দেশ্য নয়।