somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের জন্য যারা জীবন বাজি রেখেছিলো তাদের প্রাপ্য সম্মান দিতে না পারার জন্যই আজকে স্বাধীনতা বিরোধীদের পতাকাতলে কেউ কেউ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের জাতির সর্বশ্রেষ্ট সন্তান বলা হয় অথচ আমার ঘরে চাল নেই - গতকাল প্রথম আলো পত্রিকায় একজন মুক্তিযোদ্ধার এই উদ্ধৃতি ট্যাগ করা হয়।

গত কয়েক বছর আগে প্রথম আলো পত্রিকাতেই একটা নিউজ চোখে পড়েছিলো। ১৬ই ডিসেম্বরে উত্তরবঙ্গে একজন মুক্তিযুদ্ধাকে বলা হয়েছিলো - আজকে ষোলই ডিসেম্বর। বাংলাদেশের বিজয় দিবস। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনের প্রতিক্রিয়া কি? উত্তরে সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেছিলো - খালি ক্ষিধা আহে বাহে।

কয়েকদিন আগে এই ব্লগে একটা পোস্ট এসেছিলো বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমানের মা ছিড়ে জুতো পড়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বসে আছে। কেউ তার দিকে একবার ফিরেও তাকায়নি।

আমরা প্রায়ই পত্রিকার পাতায় দেখি অমুক মুক্তিযোদ্ধাকে ভিটে-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ। অমুক মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে সন্ত্রাসীদের স্কুল বা কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিসে।

আরেকটা প্রবণতা আমাদের মাঝে চরম বিপক্ষের দলের মুক্তিযোদ্ধাকে মূল্যায়িত না করা। এমনও হতে দেখেছি যে তাদের মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বা বলা হয়েছে আদৌও মুক্তিযোদ্ধা ছিলো কিনা সেটা নিয়েই সন্দেহ আছে।

আসলে জাতি হিসাবে আমরা চরম অভাগা। কখনই আমরা এক বিন্দুতে মিলতে পারিনি। রেশারেষি- দলাদলি আমাদের মাঝেই এতোই চরম আকার ধারণ করেছে যে বিপক্ষের কাউকে আমরা সঠিক মূল্যায়নই করতে চাইনা বা পারিনা।

আমরা সোনার বাংলা চাই অথচ
- আমরা সোনার সন্তানদের দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে পারিনা
- আমরা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা দিতে পারিনা
- আমরা তাদের আর দশটা মানুষের চেয়ে আলাদা করতে পারিনা।

কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য, সেই সব সোনার সন্তানদের পুঁজি করে বছরের কয়েকটা নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের ভোটে মনোনীত নেতারা বড় দেশ প্রেমিক হয়ে উঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, বস্ত্র বিতরণ, হেন-তেন কতকিছু। দেশপ্রেম পা থেকে যেনো কপালের ভাজেঁ ভাজেঁ চলে যায়। টিভিতে সেই সকল নেতাদের দেখলে আমার কাছে তাই মনে হয়।

আসলে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে একটা ব্যবসা শুরু হয়েছে সেই ৭১ এর যুদ্ধের পর থেকেই। ক্ষমতালোভীরা কোটি কোটি টাকা লুন্ঠন করছে। প্রায়ই পত্রিকায় দেখি অতো কোটি টাকার টাকা এতো কোটি টাকায় রফাদফা। ভাগ্য দেবী নিশ্চিত তাচ্ছল্যের সুরে হেসে উঠে।

সুকান্তের একটা কবিতার লাইন বারবার মনে হয় -
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাদঁ যেনো জলসানো রুটি।

ক্ষুধার্থ সেই সব জাতির শ্রেষ্ট সন্তানরা যদি আজকে স্বাধীনতা বিরোধীদের পতাকাতলে চলে আসে সেই দায় কার?
অবহেলিত, অবজ্ঞিত সেই সব জাতির শ্রেষ্ট সন্তানরা যদি আজকে স্বাধীনতা বিরোধীদের পতাকাতলে চলে আসে সেই দায় কার?
সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় কেউ যদি নিরাপত্তার আশায় আজকে স্বাধীনতা বিরোধীদের পতাকাতলে চলে আসে সেই দায় কার?

কেউ কেউ হয়তো বলবেন বা বলতে চাইবেন- যারা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেশ স্বাধীন করেছে তারা কেন ঘৃণ্য রাজাকার, আলবদরদের পতাকাতলে এসে হাজির হবে? এই প্রশ্নটা করাই সমুচিত হবেনা বলে আমি মনে করছি কারন সেই সকল জাতির শ্রেষ্ট সন্তানরা একবার নিজের জীবন উৎসর্গ করেই স্বাধীনতার পতাটাকে এনে দিয়েছে। অথচ আজকে তারা অবহেলিত, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে। আর বোর্জোয়া শ্রেণীর নেতারা দেশপ্রেম নিয়া খই ফোটায়। লেখকরা লিখতে লিখতে কলম ভেঙ্গে ফেলে। কিন্তু কেউই জাতির সেই সকল শ্রেষ্ট সন্তানদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে কিছু লিখেনা বা বলেনা। কিন্তু ঠিকই স্বাধীনতার বিশেষ বিশেষ দিনগুলাতে তাদের নিয়ে টিভিতে মুখ দেখায়। জীর্ণ-শীর্ণ মুক্তিযুদ্ধাদের দেখে ভিনগ্রহের কোন প্রাণী মনে হয় আর নেতাদের কপালের ভাঁজ দেখে আমরা চোখ ভিজিয়ে ফেলি।
পত্রিকাগুলো বড়লোক মুক্তিযোদ্ধাদের কলামের ভারে দেড় কেজি ওজন হয়ে যায়। সেখানে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্দশার কথা খুবই কম আসে।

তাই এ প্রশ্ন করে আর কতো কষ্ট দিতে চান জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের?

[আমার হলো এই সমস্যা গুছিয়ে কিছু লিখে শেষ করতে পারিনা। ক্ষমা করবেন সবাই।]
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×