somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম ও রাজনীতি বিষয়ে একটি বিতর্ক

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(আঞ্জু ফেরদৌসী, বাংলাদেশি এক প্রতিভাবান নারী। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহু বছর ধরেই যার নিরব পদচারণা। প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের প্রস্তাবিত ক্যানসার হাসপাতালে যিনি উল্লেখযোগ্য একটা আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন বলে হুমায়ুন আহমেদ নিজেই একটি লেখায় উল্লেখ করেছেন। আমার ফেসবুক জীবনের শুরু থেকেই তার সঙ্গে পরিচয়, মাঝে মধ্যে বাদানুবাদ। গত একটি বছর বাংলাদেশে ফেসবুক-ব্লগে নাস্তিক-আস্তিক ধর্ম-অধর্ম নিয়ে বয়ে গেছে সিডর-নার্গিসের চেয়েও ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়। এরই ধারাবাহিকতায় যখন হেফাজতে ইসলামের মঞ্চে আগমন, আল্লামা আহমদ শফীসহ অনেকেই ব্লগারদের পাইকারীভাবে ‘নাস্তিক’ উপাধি দিচ্ছিলেন, তখন কে যেন বলে উঠল ‘আহমদ শফী বড় নাস্তিক’। আর ফেরদৌসী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন, ‘কে বলে আহমদ শফী নাস্তিক! নাস্তিক হতেও যোগ্যতা লাগে।’ ওদিকে তসলিমা নাসরিন, তার একজন আইডল বলা যায়- তেঁতুল তত্ত্বের পর আহমদ শফী সম্পর্কে বললেন, ‘লোকটা সহজ সরল। তাই মনের কথাগুলোই অকপটে বলেছেন। আমার তাকে খারাপ মনে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিক-বুদ্ধিজীবী-সুশীলরা মনের আসল কথাগুলো বলেন না। কিভাবে ধোঁকা দিতে হয়, প্রতারণা করতে হয় তারা তা শিখে নেন।’ এখানে দেখা গেল তসলিমার কথাগুলো অন্যদের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম। যাহোক, যার কথা বলছিলাম, তার মত-পথকে সমর্থন না করলেও ব্যক্তি হিসেবে আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। গার্মেন্ট সেক্টরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা গত সাভার ট্র্যাজেডির পর সেখানে যখন তিনি ত্রাণ বিতরনে ব্যস্ত, সেই মুহূর্তে তার মমতাময়ী মা পরপারে পাড়ি জমায়। তার মার জন্য তিনি দোয়া চেয়েছিলেন, আমরা তার মার জন্য দোয়া করি। শাহবাগ-হেফাজতের উত্তেজনাকর মুহূর্তে ফেসবুকে ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে তার সঙ্গে একটি বিতর্ক পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম।)

Anju Ferdousy : রাজনীতি একটি ব্যক্তিগত স্তরে মানুষ-প্রভাবিত শিল্প বা বিজ্ঞান। যার উদ্ভব হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা প্রবর্তন, এতে পরামর্শ প্রদান বা এর লক্ষ্যকে প্রভাবিত করার জন্যে। যার পরিবর্তন বা পরিমার্জন ঘটে আলোচনা, সমালোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে। অপরদিকে ধর্ম একটি ‘বিশ্বাস’ বা আচার। যার ভিত্তি ‘অতিমানবিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণকারীকে’ (গড, ঈশ্বর, আল্লাহ, ভগবান) পূজা বা বিশ্বাস স্থাপনে। ইসলামধর্ম এমন একটি ধর্ম যার পরিবর্তন বা পরিমার্জন সম্ভব নয়। মৌলবাদীদের মতে এর সমালোচনাও করা যাবে না। সেক্ষেত্রে ১৫০০ বছর আগের প্রেক্ষাপটে তৈরি ইসলাম আধুনিক একটি রাষ্ট্রের জনগণের রাজনীতির ধারক/বাহক হয় কিভাবে?

বাংলাদেশে এমুহূর্তে সবচাইতে অসহায় আমজনতা। নির্বাচন যত কাছে আসছে তারা ততই বিভ্রান্ত হচ্ছে। দুটি প্রধান দলের ক্ষমতার শোডাউন, সহিংসতা, করাপশন, প্রশাসনযন্ত্রের যথেচ্ছ রাজনৈতিক ব্যবহারে তিক্ত এই জাতি যদি ধর্মকারিদের বেছে নেয়, তাতে অবাক হবার কিছু থাকবে না। একটি দেশের জনতা যখন মরিয়া (ফবংঢ়বৎধঃব), ঠকার বা ভুল করার সম্ভাবনা তখনই বেশি। উগ্রবাদী (ধর্ম), প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি তখন আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। সর্বনাশ তখনই হয়। অনেক উন্নয়নশীল দারিদ্র-পীড়িত দেশকে আমরা সে পরিণাম বরণ করেত দেখেছি। সময় এসেছে ইতিহাস থেকে শেখার!

Zakir Mahdin : আপনি বললেন, ’মৌলবাদীদের মতে এর সমালোচনাও করা যাবে না।’ আমার কথা হল, ধর্মের সমালোচনা করা না গেলেও যারা ধর্মের ব্যাখ্যা দেবেন, তাদের ব্যাখ্যা যেহেতু ভুলের উর্ধ্বে নয়, তাই অবশ্যই সমালোচনা করা যাবে। কেউ যদি নিজের ব্যাখ্যাকেই সঠিক ও পরিপূর্ণ মনে করেন তাহলে সেটা সমালোচনার যোগ্যই না।
Anju Ferdousy : জাকির মাহদিন, সেটা কিন্তু ধর্মের সমালোচনা হল না। বিখ্যাত ধর্মপন্ডিতদের মতে, পৃথিবীর কোন ধর্মগ্রন্থই সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। মূলত ধর্মগ্রন্থগুলোতে পরস্পরবিরোধী কথা এবং অনেক অলৌকিক বিষয়ের অবতারণা এর প্রধান কারণ। অনেক কঠোর সমালোচনা আমরা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের ক্ষেত্রে দেখতে পাই। সেই ধর্মানুসারিদের এই ব্যাপারে উদার দেখা যায়। ব্যতিক্রম শুধু ইসলাম। অনেক ইসলামধর্ম বিশেষজ্ঞ সংগত কারণেই নিজেদের কাজের বিস্তৃতি ছড়িয়ে দিতে পারেননি। ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু ইসলামই হয়েছে। বিশেষ করে মডারেট মুসলমানদের। ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে আল-কায়দার মত উগ্রবাদী টেররিস্ট দল।

Zakir Mahdin : আঞ্জু ফেরদৌসী, আমি আপনার এ সম্ভাব্য যুক্তিগুলি আগেই খেয়াল রেখে কথা বলেছিলাম। সব ধর্ম আর ইসলাম ধর্ম এক না। ইসলাম পূর্ববর্তী ধর্মসমূহের স্বীকৃতি দেয়, কিন্তু অন্যগুলো দেয় না। ইসলাম ধর্ম এখনো পর্যন্ত সর্বাধিক সংরক্ষিত, যা অন্যগুলো নয়। ইসলাম শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থার বাস্তব মডেল দেখিয়েছে। তবুও আলোচনা ও সঠিকভাবে উপস্থাপন বা বুঝাপড়ার অভাবে তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। শুধু আপনি কেন, অনেক বড় বড় চিন্তাশীলও এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। তাই এ নিয়ে আমাদের দীর্ঘ আলোচনা করতে হবে। এখানে শুধু একটি কথাই বলছি, আল্লাহ বা গডকে একক ও সর্বশক্তিমান বলে বিশ্বাস করা, আবার তার প্রদত্ত বিধানের মৌলিক সূত্রগুলোর সমালোচনা করা স্ববিরোধী। ‘বিখ্যাত ধর্ম পন্ডিতদের মতে’ বলতে আপনি কাদের কথা বলেছেন জানি না। তবে আমি এর বিপরীতও জানি। আর সবসময়ই নিজে কোনো প্রমাণ না পেলে আমরা সব বিখ্যাতদেরই ছুড়ে ফেলি। তার যুক্তিও আছে বটে। নতুবা পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিটি কে? আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমি কার কথা বলছি। কিন্তু আপনি কি তার সমালোচনা করতে এক মুহূর্তও দ্বিধা করবেন, যেহেতু আপনি হাতে কলমে এর প্রমাণ পাননি?

ধর্ম আর থিওরি এক না। ধর্মে অলৌকিক বিষয় থাকবেই। আপনি ধর্মগ্রন্থের সমালোচনার মাধ্যমে যে উন্নয়নের কথা বলছেন, সেটা বুদ্ধিপ্রসূত মতবাদের ক্ষেত্রে খাটে, আর খাটে কেউ যদি পরিত্যক্ত ধর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। আপনি যদি ধর্মই বলেন, অর্থাৎ কোনো না কোনোভাবে ধর্মের অস্তিত্ব ও যথার্থতা স্বীকার করেন, তাহলে ধর্মের সমালোচনার সুযোগটি আপনার থাকে না। আর যদি সমালোচনাই করতে চান তাহলে ধর্ম না বলে মানব রচিত মতবাদ বা থিওরি বলুন। ধর্ম আপনাকে সেই সুযোগটি দিয়েছে অর্থাৎ বিশ্বাস করা বা না করা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এক্ষেত্রে ধর্ম কোনো জবরদস্তি করে না। আমি আপনাকে কোনো একটি বিশেষ দিকে ঠেলে দিচ্ছি না। কিন্তু আলোচনার স্বার্থে কথা পরিষ্কার করে বলতে হবে। আপনি যদি ধর্মকে আল্লাহপ্রদত্ত হিসেবে বিশ্বাস না করেন, আবার একে ধর্ম বলেন তাহলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। কোনো রাষ্ট্র ধর্মের মৌলিক বিশ্বাসে আঘাত না করলে আমার জানামতে ধর্ম সেই রাষ্ট্রের আনুগত্যকে অপরিহার্য বলে। আবার কোনো ধর্মীয় রাষ্ট্র আপনার ‘বিশ্বাসের স্বাধীনতা’, অন্যান্য স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতা দিলে সেই রাষ্ট্রের আনুগত্য করতে আপনারইবা অসুবিধা কোথায়? এ বিষয়গুলো নিয়ে অন্তত আমরা খোলামেলা কথা বলতে তো কোনো সমস্যা দেখি না। তাহলে আপনি কেন আমাকে ঘৃণা করবেন বা আমিই আপনাকে ঘৃণা করব কেন?

Anju Ferdousy : জাকির মাহদিন, আমি সমালোচনার ক্ষেত্রে ‘ব্যবহারিক’ উন্নয়নের কথা বলেছি (হয়তো খুব স্পষ্টভাবে বলা হয়নি)। ধর্ম শব্দটিও সেই অর্থে ব্যবহার করা। আমি সেটাই করব। আর সমালোচনা যে করে সে কোন বিশ্বাস নিয়ে করে না। যাই হোক, ইসলাম ধর্ম নিয়ে সমালোচনা করলে যে উগ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, এর খুব ভাল সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা আছে। সেই ব্যাখ্যায় না গিয়েও বলা যায়, যে ধর্মগুলোর ধর্মানুসারীরা সমালোচকদের সহজভাবে গ্রহণ করেছে, তারা কিন্তু সমালোচনা শুনে ধর্ম ত্যাগ করেনি। বরং অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে উল্টো। পৃথিবীতে খ্রীস্টান ধর্মানুসারীর সংখ্যা সব চাইতে বেশি, অথচ এই ধর্মটিকে সব চাইতে বেশি কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে (বিশেষ করে ধর্ম) দেখা গেছে সমালোচনা সহজভাবে গ্রহণ করলে বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে এবং সমালোচক ও তার টার্গেট গ্র“পের দূরত্ব কমে যায় । তারা একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করে। উন্নয়নটি সেখানেই ঘটে।

এবার ‘স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতার’ কথায় আসি। স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতার কিন্তু কোন সীমারেখা নেই। সভ্যতার ক্রম-উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল মানবিক উন্নয়ন। সেই অনুযায়ী চাহিদার পরিবর্তন। সেই ধারায় আমরা দেখেছি সমাজ ব্যবস্থায়, রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে, প্রশাসনে সময়ের চাহিদার সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিমার্জন পরিবর্তন ঘটেছে। রাষ্ট্রব্যবস্থায় সেক্যুলারিজম স্থান করে নিয়েছে। মাত্র ১৭০০ শতকের শেষের দিকে হুইচ হান্টের মত একটি নির্মম কাজ রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় করা হয়েছে। অথচ মাত্র ২০০ বছর পরে সেই একই দেশে, একই এ্যাক্ট রাষ্ট্রীয় আইনে সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আজকে সিভিল আইনে যেখানে যে কোন অপরাধেই মৃত্যুদণ্ড জাষ্টিফায়াবল কিনা সেটা নিয়ে মত-পার্থক্য দেখা দিয়েছে এবং অনেক দেশে যেটা তুলে দেওয়া হয়েছে, সেখানে সাধারণ চুরির দায়ে হাত পা কেটে নেওয়া বা শিরশ্চেদ করা আধুনিক বিচারে কতটুকু ‘স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতাকে’ সংরক্ষণ করে বা আদৌ করে কিনা সেটা নিয়ে ভাববার প্রয়োজন আছে। একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র ‘সবাইকে স্বাধীনতা’ দেয় না। বৈজ্ঞানিকভাবে গে-কমিউনিটি একটি প্রকৃতির স্বাভাবিক সৃষ্টি। তার existence কোন ধর্ম স্বীকার করে না। মানবাধিকারের যে পরিব্যাপ্তি আজ একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রের সিভিল আইন সংরক্ষণ করে, সেটা কি কোনভাবে কোন ধর্মীয় রাষ্ট্র দিতে পারে? পারে না। পারে না যে সেটাও খুব স্বাভাবিক। কারণ সর্বশেষ ধর্মীয় আইন-কানুন তৈরি হয়েছিল ১৫০০ বছরের আগের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে। সেক্যুলারিজমও পারফেক্ট নয়। কিন্তু সেটাই স্বাভাবিক এবং মানুষ তা সময়ের দাবিতে ধীরে ধীরে পরিমার্জন পরিবর্তন করে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু পিছনে যাবে না। সেটা মানুষের প্রকৃতিবিরুদ্ধ বৈকি!

জাকির মাহদিন, আমার মতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে ভালবাসবে বা শ্রদ্ধা করবে সেটাই স্বাভাবিক। একজনের মতবাদের বিপরীতে অন্য একজনকে যদি জীবনও দিতে হয়, তার জন্য তাকে করুণা করা চলে কিন্তু ঘৃণা নয়। সবশেষে বন্ধুবর সেজান মাহমুদের একটি মন্তব্য সরাসরি তুলে ধরে আমি এই আলোচনা close করব। ভাল থাকবেন।

সেজান মাহমুদ : “আমি নিজেকে ধর্মের কোন পণ্ডিত বলে মনে করি না। কিন্তু আমি এই বিষয়ে পড়ালেখা করি। ধর্ম, ধর্মতত্ত্ব, ধর্মের দর্শন, ধর্মের ইতিহাস, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়ে পড়ি এবং মনে হয় যে কোন ব্যক্তির সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে পারবো, বিনয়ের সঙ্গে। আমি যদি মনে করতাম যে, যে কোন একটি ধর্ম দিয়েই পৃথিবীর মানুষের কল্যাণ হবে তবে আমি তাই মন-প্রাণ দিয়ে করতাম। আমার কাছে মনুষ্যত্ব, মানবতা বড়, মানবকল্যাণ বড়। তা যা দিয়ে হবে তাকেই আমি সমর্থন করবো। আমি মনে করি বিজ্ঞানসম্মত চিন্তা-চেতনা, অহিংসার দর্শন, মানবতাবাদ এগুলো দিয়েই মানুষের কল্যাণ সম্ভব। লক্ষ্য করো সব ধর্মের মূল কিন্তু এগুলো দিয়েই, কিন্তু বাস্তবতায় মানুষ এগুলো থেকে দূরে সরে গিয়ে ‘রিচুয়াল’কে বড় করে দেখে এবং মূলত কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই বেশি করছে। এ জন্যেই পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মের নামেই সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে, বেশি মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আমি নিজে কোনদিন কোন ধর্মকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করি নি, কোন ধর্মগুরুকে অশ্রদ্ধা করি নি। কিন্তু সত্য কথা বলেছি যা কখনো কখনো ধর্মের বিরুদ্ধে যায়, যাবে। কিন্তু যুক্তির বাইরে যাই নি। আমি এই একটি আয়াত আনলাম, আরো গোটা দশেক আয়াত আনতে পারি যা দিয়ে প্রমাণ করা যায় যে আসলে মানুষই সব কিছু করে। একটি ছুরি দিয়ে তুমি জীবন বাঁচাতে পারো আবার খুনও করতে পারো। তাহলে সেই মানুষ যদি ভাল না হয়, ছুরির দোষ যেমন দেয়া যায় না, তেমনি ছুরির গুণ গেয়েও লাভ হয় না। এটাই একমাত্র পয়েন্ট এখানে বলা। যদি সত্যি শান্তি চাও তাহলে ধর্মকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার আন্দোলন করো, ধর্মের অপব্যবহার বন্ধের জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করো। না হলে এই অশান্তি মধ্যযুগের মতো আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে।”
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×