somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েদের দোষ ও ইভটিজিং প্রসঙ্গ

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রচলিত সাধারণ একটা তত্ত্ব- নিষিদ্ধের প্রতি মানবিক আকর্ষণ তীব্র। আমার মতে এটা মূর্খ সমাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, জ্ঞানসমৃদ্ধ সমাজের ক্ষেত্রে নয়। আমরা সবসময়ই একটি ব্যাপক-বিস্তৃত জ্ঞানসমৃদ্ধ সমাজগঠনে তৎপর। তথ্যনির্ভর, তত্ত্বসমৃদ্ধ, যৌক্তিক ও প্রকৃতিবিজ্ঞানের আলোকে একটি জ্ঞানসমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ ছাড়া আমাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। যদিও চেষ্টায় আন্তরিকতার কোন ঘাটতি না থাকে। ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিন, ‘এখান থেকে একটা শব্দ কপি করে কমেন্টে পেস্ট করুন, দেখেন কি হয়।’ মুহূর্তেই হাজার কমেন্ট, দেখা গেল কিছুই হয়নি। তবে কিছু যে হয়নি এটা অন্তত দেখা গেল। আমি এ জাতীয় বিষয়ে সাধারণত আগ্রহবোধ করি না। রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, দেখলেন মানুষের জটলা, ব্যস, আপনিও উঁকি দিলেন, দেখলেন একটা ইন্দুরের বাচ্ছা ড্রেনে সাতার কাটছে। হায়রে বাঙ্গালি! এটাও একটা দেখার বিষয়! জ্ঞান এ জাতীয় চরিত্র বদলে দেয়। জ্ঞানী বুঝতে পারে একটা নির্দিষ্ট হুজুগ বা নিষিদ্ধ বিষয়ের চরিত্র এবং এতে কি কি থাকতে পারে। এরচেয়ে বেশি কত কি যে জানার বিষয় আল্লাহর দুনিয়ায় পড়ে আছে! বাস্তবে দেখা গেছে যারা এ ধরনের বিষয়ে অতি উৎসাহী, তারা চঞ্চল, অস্থিরচিত্ত। কোন কিছুতেই শান্তি পায় না। এ গাছ থেকে ও গাছে বানরের মতো লাফানো ছাড়া তাদের জীবন গতি পায় না।

বিপরীত লিঙ্গের প্রতি স্বাভাবিক আকর্ষণ ও আসক্তির মাত্রা কমাতে নব্য চিন্তানায়করা নব্য ফর্মুলা পেশ করেছেন : একসঙ্গে চলতে দাও, পড়তে দাও, মেলামেশা করতে দাও, আগ্রহী হলে শুতে দাও। বাসনা যেন অপূর্ণ না থাকে। মন ভালো থাকবে, লেখাপড়া ভালো হবে, দুশ্চিন্তা থাকবে না। কিন্তু ফ্রি-সেক্সের শহরে আমরা কি দেখতে পাই? স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অসহযোগিতা, ছাড়াছাড়ি-মারামারি-ধর্ষণের দৈনিক পরিমাণ কত? সর্বাধুনিক প্রশাসনযন্ত্র প্রয়োগ করেও সেই অসভ্য জংলীদের দমন করা যায় না। এসব পাশ্চাত্য সংস্কৃতি-অসভ্যতা আমাদের উপমহাদেশের জনগণ মেনে নেয় না। তাই ভারত আজ এসবের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। জাগো বাহে!

আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা : সহশিক্ষায় শিক্ষিত ছেলেগুলার জ্বালায় পাড়ার মেয়েরা অতিষ্ঠ। অলিতে-গলিতে, দোকানে-মোড়ে এদের বাক্যবাণ, শিস দেয়া, গানের কলিতে সুর ধরা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি ও আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের পরও বিন্দুমাত্র কমতে দেখিনি। ইদানিং নতুন দৃশ্য চোখে পড়ল। আমার দৃষ্টিতে ছোকরাগুলা নাবালেক। কিন্তু পাশ দিয়ে যাওয়া কলেজের মেয়েগুলোকে যে ইঙ্গিত দিল তাতে আমি অবাক! সত্যিই বাংলাদেশ বদলে গেল! সরকার, প্রথম আলো ও বাংলালিংকের বদৌলতে। ছোকরাগুলারে সরাসরি ধরারও প্রসেস নেই। কারণ এরা নিজেরাই একজন অন্যজনকে ইঙ্গিতবহ কথা বলছিল, সরাসরি মেয়েগুলোকে নয়। ধরণী দ্বিধা হও!!

সহশিক্ষা ও সহসঙ্গের কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণের তীব্রতা কমতে, দুশ্চিন্তা কমতে, সমস্যা কমতে অন্তত আমি দেখিনি, আপনারা দেখে থাকতে পারেন। আমি দেখেছি আকর্ষণ আসক্তিতে রূপ নিতে, প্রেম কচি বয়সে শারীরিক সম্পর্কে গড়াতে। বিশেষ করে ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে কেউ নজরে পড়ে গেলে জীবনে তাকে ভুলা আর সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হয় এখানেই। ছোটবেলার সঙ্গীকে না পাওয়ার সম্ভাবনা নাইনটি নাইন পার্সেন্ট। বাকি ওয়ান পার্সেন্ট সম্ভাবনাও সমস্যামুক্ত নয়, বাল্যবিয়ে, শেষ পরিণতি ছাড়াছাড়ি। আর সহশিক্ষা ও সহসঙ্গের পরিবেশে কাউকে মনে ধরবেই, এ ব্যাপারে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। চাইয়েন, টেনশান নিয়েননা।

ইভটিজিংয়ের ক্ষেত্রে মেয়েদের মানসিকতাও দায়ি। কারণ ওরা চায় কাঙ্খিত ছেলেরা ওদের টিজ করুক। অবশ্য বখাটেদেরটা ওরা ভালোভাবে নেয় না। কিন্তু বখাটেরা যখন দেখে প্রকাশ্যে অন্যরা শুধু টিজ নয়, অনেক কিছুই করে, তখন ওরা টিজ না করে পারে না। মেয়েরা রাস্তার প্রায় প্রতিটি ছেলেকে দূর থেকে পরখ করে, কাছে এলে অবশ্য তাদের মতো ভালো মানুষ আর নেই। এটা তাদের দোষ নয়, স্বাভাবিক অবস্থা। অভিভাবক-শিক্ষকদের দায়িত্ব, কাউন্সিলিং ও জ্ঞান প্রদানের মাধ্যমে এ মানসিকতা বদলানো।

সঠিক পরিচর্যা, জ্ঞানদান ও ব্যবস্থাগ্রহণের মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের এ অবস্থা পরিবর্তন সম্ভব। এমনকি পরিবেশ যাই হোক, কোন সমস্যা হবে না। আমি অবশ্যই ইসলামি রাষ্ট্র ও ব্যাপকভাবে বোরখা সংস্কৃতি গ্রহণের কথা বলছি না। বর্তমান শাসন ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রকাঠামো ঠিক রেখেও আমরা অনেক কিছুই করতে পারি। মানবসমাজের জন্য যেকোন উপকারি সংস্কৃতি, প্রথা বা ব্যবস্থা প্রয়োজন পরিমাণে গ্রহণের অনুমতি গণতন্ত্র দেয়। এটা গণতন্ত্রের উদারতা। ইসলামেও এই উদারতা আছে। তবে সমকালীন কোন উদাহরণ নেই।

কেন সহশিক্ষা ও সহসঙ্গের দ্বারা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণের তীব্রতা না কমে বরং বাড়ে? এর কারণ- মানুষের ইচ্ছা, আকর্ষণ ও কৌতুহল অসীম। দাঁড়ালে বসতে চায়, বসার সুযোগ পেলে শুতে চায়, শুয়ার সুযোগ দিলে কাম সারতে চায়। একজন পেলে আরেকজন চায়। সুতরাং সাধু সাবধান!!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২১
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×