somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে দ্বিতীয় বিতর্ক

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(জুনায়েদ গালিব, আমেরিকা-ইউরোপে শিক্ষাজীবন শেষ করে নাড়ির টানে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন কিছু একটা করবেন বলে। একটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতাও শুরু করেছিলেন। সমাজ-রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তনে কিছু একটা করার অদম্য স্পৃহা, বিরল প্রতিভা নিয়েও শেষ পর্যন্ত হার মানলেন আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতার কাছে। এ বাস্তবতা বড় নোংড়া, ঘৃণাব্যঞ্জক। সস্ত্রীক চলে গেলেন আমেরিকার লস এঞ্জেলেসে। তবে তিনি হারবার পাত্র নন, শীঘ্রই ফিরে আসছেন। এ দেশে তার পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস অত্যন্ত উজ্জ্বল। পিতার রাজনৈতিক মেধা ও অবস্থান খুবই মজবুত। চাইলে তিনি পিতার হাত ধরেই রাজনৈতিক মঞ্চে আবির্ভূত হতে পারেন। কিন্তু পিতার পরিচয়ে রাজনীতিতে আসতে তিনি রাজি নন, রাজনীতিতে পিতার সরব পদচারণা নিয়ে গর্ব করেন না, কারও সঙ্গে কথাও বলেন না। তিনি যা করতে চান, নিজের যোগ্যতা ও পরিচয়েই করতে চান। আমি অবাক, আমার প্রায় বক্তব্যের সঙ্গেই তার বক্তব্যের মিল দেখে। আমেরিকা-ইউরোপে দীর্ঘদিন শিক্ষা গ্রহণের পরও তার ধর্মীয় অনুভূতি, সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ, ধর্ম-দর্শন-বিজ্ঞান ও রাজনীতি নিয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করে। তবে মিল যতই হোক, অমিলগুলোই আমি বড় করে দেখব। ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে একটি বিতর্ক-এর প্রেক্ষিতে তার সঙ্গে )

Junaed Galib : ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে একটি বিতর্কখুবই ভালো আলোচনা বলে মনে হলো। কিছু বিষয় তুলে ধরতে চাই, বাংলায় ‘সমালোচনা’ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক অর্থ বহন করে। অন্যদিকে এর ইংরেজি প্রতিশব্দগুলি (Criticism, Critical evaluation, critical analysis) বাছ-বিচার, মূল্যায়ন, অপেক্ষাকৃত কিংবা পারস্পরিক উপলব্ধি- এসব অর্থে ব্যবহৃত হয়। যা কিনা যেকোনো জ্ঞানচর্চার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীর মধ্যে আলোচনায় তো এই নিয়ে আসতেই হবে...। অতএব, ধর্মীয় ‘ব্যাখ্যার’ ক্ষেত্রে তো বটেই; ধর্মের ক্ষেত্রেও সেটা করা যাবেনা এরকম কোনো নিষেধ আমি জানিনা। আপনি জানলে আমাকে বলবেন। বৈশ্বিকভাবে রাষ্ট্রীয় দর্শন এবং পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক দর্শনের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ধর্মকে বিচার করা যাবেনা। আবার এই পরিবর্তনশীল দর্শনগুলির বলয় থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে ধর্মকে মূল্যায়ন বা ‘সমালোচনা’ করাও এত সহজ কাজ না। ধর্মকে আমার বা আপনার অধিক পরিচিত মনে হয় কারণ আমি বিশ্বাসী; জ্ঞানের একটা পর্যায়ে গিয়ে ‘বিশ্বাস’ একটি বড় উপাদান। কিন্তু পরিবর্তনশীল দর্শনগুলিতে এই উপাদানটি নাই বা এর প্রয়োজনও নাই। কেননা ‘বিজ্ঞানসম্মত’ দর্শনগুলিতে ‘চাক্ষুষতা’ (empirical), যা ধরা যায়, ছোঁয়া যায়, দেখা যায়, গণনা করা যায়- এগুলোর প্রয়োজন আছে। অন্যদিকে ধর্মীয় জ্ঞানের প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন, ‘অনুভবতা’ কিংবা ‘উপলব্ধির’ জায়গা আজকের পৃথিবীর ‘বিজ্ঞানসম্মত’ রাজনৈতিক দর্শনে নাই। আমাদের ‘ইন্দ্রিয়’ যে শুধু পাঁচটি না এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। অনুভব করা, উপলব্ধি করা, ভারসাম্য রক্ষা করা, দিকনির্ণায়ক অনুভূতি, গতির অনুভূতি (sense of feeling, sense of balance, sense of direction/geography, sense of speed) ইত্যাদিও এখন ইন্দ্রিয় বলে স্বীকৃত। আমার মনে হয় ধর্মকে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অনেকে এখনো সেই ‘পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের’ সীমাবদ্ধতায় আটকে আছেন।

Zakir Mahdin : ধন্যবাদ জুনায়েদ গালিব ভাই, মাঝে মধ্যে আপনার কথাগুলো এত ভালো লাগে যে বলে বুঝাতে পারব না। তবে ‘অতএব ধর্মীয় বাখ্যার ক্ষেত্রে তো বটেই; ধর্মের ক্ষেত্রে সেটা করা যাবেনা এরকম কোনো নিষেধ আমি জানিনা। আপনি জানলে আমাকে বলবেন।’ এরপর আবার বললেন, ‘আবার এই পরিবর্তনশীল দর্শনগুলির বলয় থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে ধর্মকে মূল্যায়ন বা ‘সমালোচনা’ করাও এত সহজ কাজ না।’ আমার প্রশ্ন, এই পরিবর্তনশীল দর্শনগুলির বলয় থেকে বা এই পৃথিবীর পরিচিত পরিবেশ, আলো-বাতাস, বিশ্বাস, চিন্তা, শিক্ষা ইত্যাদি থেকে আপনি, যেকোনো ব্যক্তি বা নাস্তিক কিভাবে নিজেকে বের করবেন, এমন কোনো পথ বা ব্যবস্থা এ জগতে আছে কি না কাইন্ড্লি একটু বলবেন? থাকলে অবশ্যই তিনি ধর্মের সমালোচনা শুধু নয়, সম্ভবত পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও পরিমার্জনও করতে পারবেন।

Junaed Galib : জাকির মাহদিন, আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করছি। ‘পরিবর্তনশীল মতবাদ’ বলতে আমি ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে উদ্ভুত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক মতবাদগুলোকে বুঝিয়েছি। এই সব মতবাদের প্রচারকরাই স্বীকার করেন যে, এগুলো সংগত কারণেই পরিবর্তনশীল। আর এই প্রচারকরাই ধর্মকে বাদ দিয়ে দেয়ার অন্যতম কারণ হলো, তারা বলেন ধর্ম অপরিবর্তনীয়। তাদের দাবি, পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে অপিরবর্তনীয় ধর্ম ‘তাল’ মিলিয়ে চলতে পারেনা। কিন্তু আমার উপলব্ধি হলো, মানুষের মৌলিক আত্মিক চাহিদা পরিবর্তনশীল নয়। এগুলো স্থিতিশীল। যেমন সুখ, শান্তি, দুঃখ, ভালবাসা ইত্যাদি। আমি খুব গভীরভাবে জানিনা, তবে ইসলামধর্মে ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা’ নেবার কিছু সুযোগ, নিয়ম এবং ‘গাইডলাইন’ আছে। অবশ্যই কোরান এবং সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক কিছু টিকতে পারবে না। তা সে যার ব্যাখ্যাই হোক না কেন। আমি এ ব্যাপারে আরও জেনে তারপর আপনার সাথে আলাপ করতে চাই।

‘পৃথিবীর পরিচিত পরিবেশ, আলো-বাতাস, বিশ্বাস, চিন্তা, শিক্ষা’- মানুষমাত্রই এগুলো থেকে বের হওয়া যাবেনা। অতএব, অতিপ্রাকৃতিক সৃষ্টিকর্তার এবং তার প্রদত্ত ধর্মের অস্তিত্ব প্রচলিত প্রায়োগিক কিংবা বিজ্ঞানলব্ধ পরীক্ষার ‘সীমাবদ্ধতায়’ পাওয়া যাবেনা। সীমাবদ্ধতার একটা উদাহরণ হলো, সংখ্যা কিন্তু অসীম। গণিতবিদ এবং বিজ্ঞানীরা এটা যথারীতি জানেন। কিন্তু তারা যে পর্যন্ত একটা সংখ্যা লিখতে বা কল্পনা করতে পারেন তার চেয়ে আরও বড় সংখ্যার অস্তিত্ব রয়েছে বলে তারা স্বীকার করেন। শুধুমাত্র লিখতে বা ওটার রূপ কি হবে, আকার কি হবে, কতগুলো শূন্য ওটার পরে বসবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না (এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সংখ্যাকে নাম দেয়া হয়েছে ‘গ্রাহাম’স নাম্বার’)। অর্থাৎ ‘অসীম’-এর কোনো রূপ দেবার ক্ষমতা মানুষের নাই। আবার থিওরি বা মতবাদ হিসেবে ধর্মকে বিচার করতে গেলে, ‘ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে উদ্ভুত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক মতবাদগুলির’ দৃষ্টিকোণ থেকেও ধর্মকে বিচার করতে যাওয়া স্রেফ বোকামি। কারণ ধর্মকে বিচার করতে হলে সার্বজনীন উদার দৃষ্টিভঙ্গি লাগে যা কিনা ওই ‘প্রচারকরা’ পারবেন না। যাই হোক, আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলতে চাই, ‘সমালোচনা’ যদি শুধুমাত্র নেতিবাচক মন্তব্য হয় তাহলে তা জবাবের উপযুক্ত না। তবে আমি আগেই বলেছি (Criticism, Critical evaluation, critical analysis), বাছ-বিচার, মূল্যায়ন, বিরাজমানভাবে পালিত ধর্মগুলির মধ্যে অপেক্ষাকৃত কিংবা পারস্পরিক উপলব্ধি- এগুলো ধর্ম নিয়ে করা যেতে পারে। তাতে বোঝাপড়া বাড়বে বই কমবে না।

Zakir Mahdin : অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাবছিলাম আঞ্জু ফেরদৌসী আপু উদ্ধৃত সেজান মাহমুদ সাহেবের লেখাটি নিয়ে অন্য জায়গায় আলোচনা করব। কিন্তু এখন দেখছি এখানেই আলোচনার ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়ে গেল। যাহোক, আপনি বিদেশ থেকে ফিরে আর কোনো চাকরিতে জয়েন করবেন না। কোনো অভাব-অভিযোগ চলবে না। আমার এখানে না খেয়ে পড়ে থাকবেন।

Junaed Galib : ভাই, পরিবার এবং সমাজের প্রতি যদি কোনো দায়বদ্ধতা না থাকত তাহলে তাই করতাম। পৃথিবীর কোনো এক কোণায় বসে জ্ঞানচর্চা করতাম। এক কোণা থেকে আরেক কোণায় যেতাম নিজে দেখে দেখে শেখার জন্য।

Zakir Mahdin : জুনায়েদ গালিব ভাই, পরিবার এবং সমাজের প্রতি ‘দায়বদ্ধতা’ বলতে আপনি কী বুঝাতে চেয়েছেন? আপনি কি আপনার পরিবার ও সমাজের আজকের সংকটগুলো দূর করতে পারছেন? অথবা দিতে পারছেন আপনার ‘মডার্ন ও উচ্চশিক্ষিত’ পরিবারের বহুমূখী সমস্যার মোকাবেলায় কোনো সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা? আমরা যদি মনে করি খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা ইত্যাদিই মানুষের ‘মৌলিক চাহিদা’ তাহলে ভুল। এবং উপরে আপনিও বলেছেন ‘আমার উপলব্ধি হলো, মানুষের মৌলিক আত্মিক চাহিদা পরিবর্তনশীল নয়। এগুলো স্থিতিশীল। যেমন সুখ, শান্তি, দুঃখ, ভালবাসা ইত্যাদি।’ সুতরাং নিশ্চয়ই আপনি আমার সঙ্গে একমত। তাহলে আপনি কোন্ ধরনের দায়িত্ব পালনের কথা বলছেন?

আপনার ও আপনার পরিবারের অভাব কি রাস্তার ওই ভিখারীর চেয়ে বেশি? যদি বেশিই হয় তাহলে ওই মরিচিকার পেছনে ছুটছেন কেন? আর যদি বেশি না হয় তাহলে চ্যালেঞ্জ করে বলুন সেইসব ভিখারীর চেয়ে আপনারা শান্তিতে আছেন; আপনাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা গাছতলায় বসবাসকারীদের চেয়ে কম। দুঃখিত একটু কঠোর হওয়ার জন্য। কিন্তু কঠোর হতে বাধ্য হয়েছি আপনার জ্ঞানের মাত্রানুযায়ী মানবসমাজের প্রতি ‘সর্বজনীন দায়বদ্ধতা’ অনুভব করে।

আপনি আমি ইসলামকে বুঝতে হলে, আল্লাহর প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতে হলে, সর্বজনীন দায়িত্ব পালন করতে হলে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বস্তুগত অভাবের ঝুঁকি নিতে হবে। রাস্তায় নামতে হবে, মাঠে-ময়দানে যেতে হবে। যখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যে, এছাড়া উপায় নেই, তখনই সর্বশক্তিমানের সাহায্য কাম্য। এ ধরনের বাস্তব পরিস্থিতি ছাড়া আর যাই হোক, ধর্ম বা ইসলামকে বুঝা সম্ভব না। লক্ষ্য করুন জনাব সেজান মাহমুদের মন্তব্যটি। অন্যদিকে ইমাম গাজালি (রহঃ) বলেছিলেন, পৃথিবীর সবাই যদি বলে আল্লাহ নেই, আমি একা বলব আল্লাহ আছেন। আমরা এখন কার কথায় যাব? কারও কথায় যাওয়ার দরকার নেই। নিজেই খুঁজে নিতে হবে।

সেজান মাহমুদ বলেছেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মের নামেই সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে, বেশি মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’ আমার প্রশ্ন, অবিশ্বাসীরা ধর্ম ছাড়া অন্তত একটা ক্ষুদ্র শান্তিপূর্ণ সমাজ আজ পর্যন্ত এই পৃথিবীতে দেখাতে পেরেছেন কি? তাদের এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ, বাস্তবতা বা মডেল আছে কি? ‘আমি নিজেকে ধর্মের কোন পণ্ডিত বলে মনে করি না। কিন্তু আমি এই বিষয়ে পড়ালেখা করি। ধর্ম, ধর্মতত্ত্ব, ধর্মের দর্শন, ধর্মের ইতিহাস, তুলনামূলক ধর্ম-তত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়ে পড়ি’- সেজান মাহমুদ।

আমাদের পড়ালেখাগুলো আজ এ রকমই। এই সব ধারণার মধ্যে নিজস্বতা কদ্দুর, বাস্তবতা কতটুকু, পরিবার, পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধবদের প্রভাব কতটুকু তা বুঝতে হলে মানুষের অনিবার্য অক্ষমতা, স্বভাব, দুর্বলতা ইত্যাদি অনেক বিষয় বুঝতে হবে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, আমরা নিজেকেই বুঝি না, ‘মানুষ’ বুঝি না, মানুষের ‘চাহিদা’ বুঝি না, নিজে মানুষ হয়েও মানুষের ‘পরিচয়’ জানি না, অথচ আমরা ‘ধর্ম’ নিয়ে বড় বড় কথা বলি, লাফাই। যে নিজেকেই বুঝে না, সে ধর্ম বুঝবে কিভাবে?

আর নিজেকে বুঝলে জমি, টাকা, সামান্য বিষয়-সম্পত্তি, তুচ্ছ বিষয় বা সামান্য বাক্যের আঘাতকে কেন্দ্র করে মানুষে মানুষে মারামারি কাটাকাটি হানাহানি চলতে পারে? আজ সমাজ-রাষ্ট্রে এবং সারা বিশ্বে যা চলছে তা ধর্ম নিয়ে নয়, ক্ষমতা, অর্থ-সম্মান, বংশীয়-গোষ্ঠীগত-জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক অহমিকার কারণে। এগুলোকে ধর্মের কারণে মনে করলে চরম ভুল হবে। আর যেখানে ‘পরিবার, পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধবদের প্রভাব’ থেকে বের হয়ে ‘বর্তমান পরিস্থিতিরই’ সঠিক মূল্যায়ন আমরা করতে পারছি না, ন্যায়কে ন্যায় এবং অন্যায়কে অন্যায় বলতে পারছি না, চোখের সামনে হাজার হাজার লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষ মারছে প্রতিবাদ করতে পারছি না, সেখানে হাজার বছর পূর্বের মানবসমাজ, জিহাদ, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও পরিবেশের (নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মানুষের জীবন-যাপন পদ্ধতি ও স্বভাব-চরিত্র) সঠিক মূল্যায়ন আশা করা অবশ্য একটু বেশিই হয়ে যায়। আমি বলছি না যে সময়ের দূরবর্তীতা এবং স্বতন্ত্র ভূমি-বৈশিষ্ট্য প্রভাবিত মানবচরিত্রের কারণে এসবের সঠিক মূল্যায়ন একেবারেই করা যাবে না। কিন্তু কতটুকু এবং কি পরিমাণ সতর্কতা প্রয়োজন? তাছাড়া নির্মোহ-নিরপেক্ষ ও বিচারের শক্তিসম্পন্ন একদল মানুষের বিশ্লেষণাত্মক মতামত ব্যতীত কেউ ব্যক্তিগত রায় ও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে?

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×