আংশিক দৃশ্যমান ল্যাম্প পোস্টের নিয়ন আলোতে
মধ্যরাত্রি,কেউ এগিয়ে আসছে উদ্যানের কোল ঘেঁষে
একটু দৃশ্যমান, হাতে লাল চুড়ি, লাল টিপ কপালে
রঙিন শাড়ি,ঝাঁঝালো ঘ্রাণ থামল এসে সামনে
সাদা দাঁতের মুখ বাঁকানো হাসি, আঁচল উড়ছে
মুখে বলেনা, ভাষাও নেই, তাও কি জানি বলছে।
কিরে লাগবে তোর? নিয়ে যানা আমাকে
চোখ তুলে তাকালাম আমি ওর দিকে
দোহারা গড়ন, ঠোঁটে হাসি, মায়া দৃষ্টিতে
চ্যাপ্টা কপাল,কালো চুল,বেণী বাঁধা সাদা ফুলে
নাক-কান চোখা, দৃষ্টি ঊরু থেকে বক্ষদেশে
কাঁধ থেকে কোমরে একটা ভাঁজ মিলেছে ।
কোথায় নিব,আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না
মুচকি হেসে,ও এবেলা তোর বুঝি লাগবেনা।
পেটের টান কি জানিস,এটাই আমার কাজ
শাড়ির আঁচল দেখ,খুঁজে পাবি দেহের ভাঁজ
এতকিছু দেখালাম, তাও তোর মনে ধরেনা?
চলনা রে, নিয়ে চল,আমার যে আর সয়না।
আপনার নামটা তো জানলাম না
অট্টহাসিতে,ললিতারে,আমি যে ললিতা
আপনিতো অনেক সুন্দর, ক্যান এ কাজে
ললিতা হেসে বলে, আমার যে ভাল লাগে
তোর কাছে একটা সিগারেট হবে,আগুন আছে?
দে একটা টান দেই,ওতে অনেক শান্তি আছে।
ললিতা কোথায় থাকেন,পরিবারে কে আছে?
তুই গর্দব,আহাম্মক,আমার আবার কে থাকবে
জন্ম থেকে থাকি রাস্তায় নতুবা বস্তিতে
আমাকে ওরা এসে নিয়ে যায়, বাড়িতে
একটু একটু করে খায়, হাসায়, নাচায়
কাজ শেষে কয়টা টাকা ধরিয়ে দেয় আমায়।
আড়াই ঘণ্টা অতিবাহিত হয় ললিতার সাথে
ও বিরক্ত নয়,কিন্তু কি জানি খুঁজছে আশে পাশে
আচ্ছা আপনার কি কষ্ট হয় না এ কাজে?
তুই সালা কিছু বুঝিছ না,আমি তো বাজে
নষ্ট মেয়ে আমি,কি আছে আমার,শুধু এই দেহ
ওটা ছাড়া কি আমায় কিছু দেবে কেহ?
মেঘের আড়ালে চাঁদ লুকোচুরি খেলছে
ঝাপসা আলো রিক্সা, আম্বুলেন্স, ট্রাক চলছে
ললিতা হাঁটছে, মৃদু বাতাসে ওর চুল উড়ছে
পেছন থেকে ললিতাকে কে জানি ডাকছে
কাছে এসে,মৃদুস্বরে এই চল আমার সাথে
দম নিতেই দেখি ললিতা একটু দূরে চলে গেছে।
রিক্সায় উঠে ও হাসছে,কেউ ওকে বলছে এই আস্তে আস্তে
শাড়ির আঁচল বাতাসে উড়ছে,স্পিড ব্রেকারে রিক্সা দুলছে
তাকিয়ে আছি, দৃষ্টি পড়লো ললিতার শাড়ির আঁচলে
সাদা পাড়, কালো সুতা, আর্তনাদ লিখা আছে সেখানে।