somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ কি তাহলে,রাশিয়া দিকে ঝুঁকে গেল ?

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হঠাৎ নিউজটা দেখে অবাক হলাম। বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে, ৮০০০ কোটি টাকার সমরাস্ত্র কিনছে। যে রাষ্ট্র ৫০০ কোটি টাকা বাৎসরিক খরচ হবে বলে এম পি ও ভুক্তির জন্যে আন্দোলনরত শিক্ষকদেরকে সরিন গ্যাস মেরে মেরে ফেলে, সেই রাষ্ট্রে ৮০০০ কোটি টাকার সমরাস্ত্র কেনার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক একটা যৌক্তিক বিতর্ক, কিন্তু আমি ওই দিকে যাবনা।

আমার প্রশ্ন টা অন্য দিকে। আমার প্রশ্নটা, ঠিক কেন রাশিয়া কেনা হল সেই এঙ্গেল থেকে ।

সমরাস্ত্র কোন দেশ থেকে কেনা হচ্ছে সেটা একটা দেশের ভুরাজনৈতিক অবস্থান কোন পক্ষে তা নির্দেশ করে। ৮০০০ কোটি টাকার সমরাস্ত্র একটা বিশাল বড় পারচেজ। যে কিনছে তার জন্যে এবং যে বিক্রি করছে তার জন্যেও। কারন এই বিক্রয় অস্ত্র বিক্রয়কারী দেশের জন্যে অর্থকরী একটা বাণিজ্য। আজকে এই রিসেসানের দিনে, এই ধরনের একটা বিক্রয়ের জন্যে সব অস্ত্র বিক্রেতা দেশ মুখিয়ে থাকে। এবং এই বাণিজ্যের ফলে ক্রেতা রাষ্ট্র, বিক্রয়কারী রাষ্ট্র থেকে ভুরাজনইতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, আন্তর্জাতিক ফোরামে সমর্থন থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুবিধা নিয়ে থাকে। এবং এই ধরনের একটা পারচেজ জিও পলিটিকাল গেম এ, একটা দেশের পক্ষপাত বা ভবিষ্যৎ এলাইন্মেন্ট নির্দেশ করে।

আজকে রাশিয়া থেকে এত বড় পর্যায়ে একটা পারচেজের পর মাথা চুলকে অনেক বড় একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছিনা।

বাংলাদেশ কি তাহলে,রাশিয়া দিকে ঝুঁকে গেল ?

ঝুঁকলে, কেন ঝুঁকল। এবং এর বিনিময়ে আমাদের কি কি রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধার হল ? আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আমরা কোন বলয়ের প্রতি নিজেদের পক্ষপাতিত্ব ঘোষণা করলাম ? আমাদের আগামী বিশ বা ত্রিশ বছরের রাজনৈতিক অবস্থান তাহলে কি দাঁড়াল? রাশিয়ার কি উপমহাদেশের রাজনীতিতে তেমন কোন জেনুইন স্টেক আছে ? থাকলে সেটা কি ? সেই স্টেক এর সাথে আমাদের স্টেক মেলে ? তারা কি এই খানে কারো স্বার্থ রক্ষা করতে শক্ত কোন অবস্থান নিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতনের পর ? ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে ডিটারেন্স হিসেবে আমাদের আঞ্চলিক এলাইন্মেন্ট এর ভিত্তি কি হল ? এই অঞ্চলে আমাদের ন্যাচারাল এলাই কে ? কার সাথে আমাদের কোন ইস্যু নিয়ে কোন দখলদারির দ্বন্দ্ব নেই, কিন্তু আমাদের সাথে বন্ধুত্বের বিনিময়ে কার অনেক কিছু পাওয়ার আছে? মিয়ান্মার বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতের সাথে বার্মার অধিক সখ্যতার মুখে কে আমাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী ? আমাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় আমাদের অবস্থান কি ?

এই প্রশ্ন গুলোই বলে দেয়, নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে আমরাই আমাদের নিজেদের দেশের অবস্থান বুঝতে অক্ষম। তার মানে বাকি বিশ্ব এবং যারা আমাদের সাথে সখ্যতা গড়তে আগ্রহী এবং যাদের কাছে আমাদের কিছু পাওয়ার আছে তারাও বুঝতে অক্ষম হবে, আমরা কি কিনলাম, কেন কিনলাম, কাকে তুষ্ট করতে কিনলাম।

নাকি এই গুলো কোন বিষয় ছিলনা। কোন পরিকল্পনা ছিলনা। কেও একজন বুবুরে বুঝাইসে, এইগুলো দরকার, বুবুও বলসেন- কুল - আর হয়ে গেছে। উনি ত আর অর্থনীতি বুঝেন না তাই পররাষ্ট্রনীতি না বুঝলেও ওনার চলবে।

নাকি বুবুরে কেউ বুঝাইছে। রাশিয়া স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের সাপোর্ট দিছে। যেহেতু স্বাধীনতার সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের বন্ধু ছিল, আজকের ৪০ বছর পর, ক্রম ভুরাজনিতিতে প্রভাব হারানো রাশিয়াই হবে আগামী দিনগুলোতে আমাদের বন্ধু। তাই আমরা আজ রাশিয়া পন্থি। তাই আমরা রাশিয়া থেকে অস্ত্র কিনব।

এই প্রশ্ন গুলোর পরিষ্কার উত্তর না থাকাতে আর পরিষ্কার হল, আওয়ামী লিগ এর বিগত পাঁচ বছরের শাসনে, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি চরম একটা কনফিউজড স্টেটে পৌছাইসে। আমরা ভাব করি, কোন বিষয়ে আমাদের ভূ রাজনৈতিক কোন অবস্থান বা স্ট্রেটেজির প্রয়োজন নাই। আমরা সবার বন্ধু এই টা আওরাইলেই, আমাদের সব মুস্কিল আসান হয়ে যাবে। রোহিঙ্গা হোক, সীমান্তে গুলি হোক, জি এস পি বন্ধ, মার্কিন চাপে ইরান থেকে সস্তায় তেল পাওয়া বন্ধ হোক, মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক যাওয়া বন্ধ হোক আর যাই হোক আমরা চোখ বুজে থাকলেই সব আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

এই ৮০০০ কোটি টাকার অস্ত্র কেনাতে উর্দি পরা লোক কত মারল আর উর্দি ছাড়া লোক কত মারল, সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা কি বাড়ল এই সব বিষয়ে প্রশ্ন আমি উহ্য রাখলাম। কারন এই সব প্রশ্নের কোন উত্তর এই তুঘলকি দেশে পাওয়া যাবেনা।

এক ভদ্র লোক সব জামা কাপড় খুলে শুধু লুঙ্গি পরে পুকুরে গোসল করতে গেসলো। চোর এসে লোকটার সব জামা কাপড় চুরি করে নিয়া যায়। তো ভদ্রলোক চিন্তা করে দেখল, খালি গা দেখিয়ে বাসায় যাওয়ার চেয়ে লুঙ্গি টা তুলে মাথায় বেধে নিয়ে হেটে গেলে কেও বুঝতে পারবেনা সে কে। তো লোকটা লুঙ্গিটা মাথায় তুলে হাটতে হাটতে বাসায় পৌঁছে গেলো।

উদাহরণ টা ঠিক জুতসই হয়নাই, কিন্তু কেন জানি আমার আমাদের পররাষ্ট্র নীতিকে, ওই ভদ্রলোক এর নীতির মতন মনে হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪৫
১৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×