somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বাসঘাতক

০৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডা দিয়ে সারাদিন পার করেছি। ভেবেছিলাম বাসায় ফিরে একটু রেস্ট নেব। কিন্তু বাসায় ফিরে দেখি পুরা এলাকায় কারেন্ট আছে, আমাদের বাড়িতে আলো জলছে না। কাহিনী কি? আম্মা শুরু করলেন বকাবকি। বিদ্যুৎ বিল দিতে বলেছিলেন। বেমালুম ভুলে গেছি! তাই বিদ্যুতের লাইন দিয়েছে কেটে। বকার থেকে বাঁচার জন্য এসে কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম। এই সমস্যার মধ্যে আবার আবির এলো দেখা করতে। নিশ্চয়ই কোনও ঝামেলায় পড়েছে। আবির আমার অনেক দিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু সাধারণত ঝামেলায় না পড়লে আমাকে স্মরণ করেনা!

“নিশ্চয়ই ঝামেলায় পড়েছিস?” জিজ্ঞেস করলাম আমি। দুজনে বসে আছি আমার রুমে। আম্মা একটা মোমবাতি ধরিয়ে দিয়ে গেছেন। আবিরকে দেখে বকাবকি বন্ধ করেছেন।

আবির উপর নিচে মাথা ঝাঁকাল।

“এমন গোমড়া মুখে বসে না থেকে কি হয়েছে বলে বিদায় হ। আমি এমনিতেই খুব টায়ার্ড!”

“আমার একটা কাজ করে দিবি দোস্ত?”

“তোর আবার কি কাজ?”

“কাজটা খুব গোপনীয়”। আবির গলা খাদে নামিয়ে আনল।

“ব্যাটা উজবুক। কি হয়েছে খুলে বল! এখানে কেউ আমাদের কথা শুনছে না”।

“তুই তো জানিস আমি রিয়া নামের একটা মেয়ের সাথে নিয়মিত মোবাইলে কথা বলি”।

“নিয়মিত না, বল অতিরিক্ত কথা বলিস। আমি শুনেছি বাড়ি থেকে ফ্লেক্সিলোডের টাকা দেয়না বলে তুই নাকি গ্রাফিক্স কার্ড, স্পিকার সব বেচা ধরেছিস”।

“কি করব বল? মেয়েটা সব সময় ফোন দেয়, আমারও তো মাঝে মাঝে দেয়া লাগে”।

“এখন সমস্যা কি?”

“সমস্যা হল সম্পর্ক অনেক দূর গরিয়েছে, এখন মেয়েটা দেখা করতে চায়। কাল শাহবাগের যাদুঘরের সামনে আমার জন্য অপেক্ষা করবে বলেছে”।

“তো আর কি? দেখা কর”।

“ওখানেই তো সমস্যা রে! আমার ভয় করছে”।

“তাহলে না করে দে”।

“সম্ভব না, কথা দিয়ে ফেলেছি”।

“এখন কি করতে চাস?”

“কাল সারাদিন আমি মোবাইল অফ রাখব। তুই মেয়েটার সাথে দেখা করবি। দেখা করে ওকে বলবি আমি অসুস্থ, আসতে পারছিনা। তাই তোকে পাঠিয়েছি”।

“এই কথা তো তুই ফোন করেই বলে দিতে পারিস!”

“পারি, কিন্তু আমার অন্য একটা উদ্দেশ্য আছে”।

“কি উদ্দেশ্য?”

“তুই দেখে আয় মেয়েটা কেমন দেখতে। মানে সুন্দরী কিনা! গলার আওয়াজ শুনলে তো ফিদা হয়ে যাই! দেখতে কেমন কে জানে!”

“ওহ, এই ব্যাপার? যদি দেখি মেয়েটা সুন্দর না! তাহলে কি আর প্রেম করবি না?”

“সেটা পরে দেখা যাবে। আগে বল যাবি কিনা?”

“ওকে ডান, আমি যাব”!

“থ্যাংক ইউ দোস্ত”!

“চিনব কি করে ওকে?”

“রিয়া বলেছে লাল ড্রেস পড়ে আসবে, আমার নীল শার্ট আর ক্যাপ পড়ার কথা!”

“ঠিক আছে বন্ধু”।

আবির চলে যেতেই আমার মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি এলো! আবিরের নীল শার্ট পড়ে যাবার কথা! এক কাজ করি না হয়। আমিই নীল শার্ট পড়ে যাই! মেয়েটা ভাববে আমিই আবির! পরে যখন বলব আবির অসুস্থ আসতে পারবে না, মেয়েটা কনফিউজড হয়ে যাবে! বেশ মজা করা যাবে! ওদিকে আবির চলে যেতেই আম্মা আবার চালু করেছেন বকার মেশিন, আমি আবার কাথা মুড়ি দিলাম।

***
আবির বলেছিল ৩টা বাজে দেখা করার কথা! সাড়ে তিনটা বেজে গেছে মেয়েটির আসার নাম নেই। ভীষণ রাগ লাগছে। ফিরে গিয়ে যদি আবিরকে একটা আছার না দিয়েছি!

“অ্যাই আবির!”

ডাকটা এলো পেছন থেকে। কোনও মেয়ের কণ্ঠ এত মধুর হতে পারে তা আমার ধারনা ছিলনা! আস্তে আস্তে ঘাড় ঘুরালাম। মেয়েটিকে দেখে যেন একটা শক খেলাম! মাই গড! এত্ত সুন্দর! লাল রঙের সালোয়ার-কামিজ, লাল ওড়না, কপালে লাল টিপ, ঠোঁটে লাল লিপিস্টিক, দুধে আলতা গায়ের রং, চেহারাটা যেন বিধাতা নিজ হাতে গড়েছেন। এত সুন্দরী মেয়ে লাইফে আগে কখনও দেখেছি বলে মনে হয়না। “জী... আমাকে বলছেন?”

“হ্যাঁ, তুমিই তো আবির তাইনা?”

আমি নিমেষে ভুলে গেলাম সব কিছু। এই মুহূর্তে সামনে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটি ছাড়া জগতের সব কিছু মিথ্যে বলে মনে হচ্ছে। আমি বিশ্বাসঘাতকতা করলাম আমার এত দিনের বন্ধুর সাথে। অস্ফুট কণ্ঠে বলে উঠলাম, “হ্যাঁ....আমিই আবির!”

মেয়েটি হাসল। “আমি রিয়া”।

আমি একটা ঢোক গিললাম। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে!

রিয়া হাত বাড়িয়ে আমার হাত ধরল। আরও একটা শক খেলাম যেন। আমার হাঁটু কাঁপছে। ঘামতে শুরু করেছি।

“কি ব্যাপার আবির? তোমাকে অসুস্থ মনে হচ্ছে!”

“না ঠিক আছি!” নিজের গলা শুনে নিজেই অবাক হলাম। গলা ভাঙল কখন?

“তোমার নম্বর অফ কেন? সেই কখন থেকে ট্রাই করছি!”

“মোবাইলটা না গতকাল চুরি হয়ে গেছে! আজ নতুন একটা সিম কিনেছি”। জানিনা আমি এত মিথ্যে বলার শক্তি কোথায় পাচ্ছি।

“ওহ তাই? তাহলে নতুন নাম্বারটা দাও”।

আমি নম্বর বললাম, রিয়া সেভ করে নিল। মোবাইল দেখে অবাক হলাম! আই-ফোন! মনে হচ্ছে খুব বড়লোকের মেয়ে!

“এখন থেকে এই নম্বরে কল দিয়ো, আমিও এই নম্বর থেকে যোগাযোগ করব!”

“আচ্ছা ঠিক আছে!” রিয়া লক্ষ্মী মেয়ের মত মাথা ঝাঁকাল।

ব্যাস, হয়ে গেল। রিয়া এখন থেকে আমার। আবিরকে কি বলে মানেজ করব তা মনে মনে ঠিক করে নিলাম। ওকে গিয়ে বলব মেয়েটা দেখতে মোটেও ভাল না, গায়ের রং খুব কাল। এই মেয়েকে বিয়ে করলে, সাড়া জীবন তোকে নিয়ে আমরা সবাই হাসি-ঠাট্টা করব। এই মেয়ের কাছে থেকে বাঁচতে হলে তারাতারি সিম পাল্টা। নতুন নাম্বার নে! আমি জানি আবির আমার কথা শুনবে। ও আমাকে খুব বিশ্বাস করে!

“অ্যাই কি ভাবছ?”

“ভাবছি...ভাবছি আমার ভাগ্যটা কত ভাল! তুমি কত্ত সুন্দর!”

রিয়া লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। “আমাকে তোমার পছন্দ হয়েছে?”

“খুব...খুব পছন্দ হয়েছে”।

“তোমাকেও আমার ভাল লেগেছে। তুমি স্মার্ট, লম্বা, হ্যান্ডসাম!”

আমি একটু হাসলাম। বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। আবির আর আমি দেখতে প্রায় একই রকম। আবির যদি ওর শারীরিক বর্ণনা দিয়েও থাকে তবে তা আমার সাথে মিলে গেছে।

“চলোনা একটু টিএসসির দিকে যাই”। রিয়া আমার হাত ধরে টানল।

আমি মন্ত্রমুদ্ধের মত এগিয়ে চললাম। এক মুহূর্তের জন্য মেয়েটার মুখ থেকে দৃষ্টি সরাচ্ছি না। কত্ত সুন্দর! আবিরের মত বোকা সোঁকা ছেলের জন্য এই মেয়ে না! রিয়া শুধু আমার। রিয়ার জন্য শুধু আবির কেন, আমি সারা পৃথিবীর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি।

***
আজকের দিনটা আমি কখনও ভুলতে পারব না। দুজনে কত গল্প করলাম! সারাটি ক্ষণ হাত ধরে বসে থাকলাম। সময় কিভাবে যে কেটে গেল জানিনা! সন্ধ্যা হয়ে এলো।

রিয়া বলল, “চল ফেরা যাক”।

“এখনই? আরও কিছুক্ষণ থাক প্লিজ”! আমার কণ্ঠে আকুতি।

“ইস! কত শখ! আমার কাজ আছে”।

“কিভাবে যাবে?’

“আমার গাড়ি আছে। তোমাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে তারপর বাসায় ফিরব”।

আমি প্রমোদ গুনলাম। আবির কখনও ফোনে নিজের বাড়ির ঠিকানা বলেনি তো? তাহলে তো সর্বনাশ।

রিয়া ফোন করার ৫ মিনিটের মধ্যেই ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসল। বি এম ডব্লিউ! আমরা গাড়িতে উঠলাম। ড্রাইভার গাড়ি ছাড়ল।

ড্রাইভার একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বলল, "ম্যাডাম, স্যান্ডউইচ আনতে বলেছিলেন না, এই নিন।"

রিয়া প্যাকেট থেকে দুটো স্যান্ডউইচ বের করল। “নাও, স্যান্ডউইচ খাও”।

আমি নিলাম। খেতে থাকলাম। দুজনে ব্যাকসিটে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসেছি। রিয়ার শরীর থেকে দামী পারফিউমের গন্ধ আসছে। রেশম কাল চুল গুলো বাতাসে উরে এসে আমার নাকে মুখে লাগছে। আমার নেশা ধরে গেল। রিয়ার চুলে মুখ গুজে দিলাম। আবেশে জুড়িয়ে আসছে চোখ। আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।

***

ঘুমের মধ্যে সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছি। একটা নদীর পাশে আমি আর রিয়া হাত ধরে হাঁটছি। রিয়া হঠাৎ থামল। নদীর পানি দুহাতে তুলে আমার মুখে ছুড়ে মারল। মুখে পানির ছোঁয়া লাগতেই ঘুম ভেঙে গেল। আমি ধর মর করে উঠে বসলাম। ঠিক বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি। কেমন যেন আবছা অন্ধকার চারিদিকে। রিয়াকে ডাকার চেষ্টা করলাম। অর্থহীন একটা শব্দ বের হল মুখ থেকে। কি ব্যাপার ? কথা বলতে পারছিনা কেন? খেয়াল হল মুখের উপর কিছু একটা আটকে আছে। টেপ নাকি? নড়াচড়ার করার চেষ্টা করতেই বুঝলাম হাত-পা বাঁধা আছে। ঘটনা কি?

“মশাইয়ের ঘুম ভাঙল তাহলে?”

রিয়ার কণ্ঠ! রিয়া কোথায়? আমি চোখ মিট মিট করে দেখার চেষ্টা করলাম। বুঝতে পারলাম আমি একটা চেয়ারের সাথে বাঁধা আছি। এটা একটা বদ্ধ রুম। কম পাওয়ারের একটা বাল্ব জলছে। রিয়া বসে আছে সামনেই, মুখে হাসি। সেই হাসিতে কি যেন একটা আছে, অশুভ কিছু।

“তারপর আবির? কেমন লাগছে এখন?”

আমার মুখ টেপ দিয়ে আটকানো। কিছু বলার উপায় নেই। বুঝতে পারছিনা কি হচ্ছে এখানে!

“আমারা এখন কোথায় আছি জান আবির?” রিয়ার কণ্ঠে রহস্য রহস্য ভাব। “আমরা এখন ঢাকা থেকে অনেক দূরে। এটা একটা পুরনো বাড়ি। আশে পাশের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও জনবসতি নেই”।
আমি বলার চেষ্টা করলাম, “আমরা এখানে কেন?” কিন্তু অর্থহীন কিছু শব্দ বের হল আবার।

“আমি বুঝতে পারছি তোমার মনে প্রশ্ন জাগছে তোমাকে এখানে কেন এনেছি। বলছি সবই। তার আগে ভেবে দেখোতো তিন বছর আগে ট্রেনে ঘটা একটা ঘটনা মনে পরে কিনা!”

আমি বুঝতে পারছি না কোন ঘটনা, প্রবল বেগে দুপাশে মাথা নাড়লাম।

“মনে পড়ছে না? এত তারাতারি ভুলে গেলে?” হঠাৎ রিয়ার কণ্ঠ কেমন যেন কর্কশ হয়ে উঠল। “তিন বছর আগে তুমি আর তোমার এক কলেজ ফ্রেন্ড ফাহাদ সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলে। ট্রেন তখন যমুনা ব্রিজের উপর। কোনও একটা বিষয় নিয়ে তোমাদের মাঝে ঝগড়া শুরু হয়, ঝগড়ার এক পর্যায়ে তুমি ধাক্কা দিয়ে ফাহাদকে ট্রেন থেকে ফেলে দাও। ব্রিজের রেলিং টপকে সরাসরি নদিতে পরে যায় সে। ফাহাদ সাতার জানত না। ডুবে মৃত্যু হল তার। আর তুমি ভীরের মধ্যে লুকিয়ে পড়লে। যারা যারা এই ঘটনা দেখেছে তারা কেউ তোমার হদিস দিতে পারল না”।

এই পর্যন্ত বলে একটু দম নিল রিয়া। তারপর আবার শুরু করল, “ফাহাদ বাসায় বলেছিল তার এক কলেজ ফ্রেন্ডের সাথে বেড়াতে যাচ্ছে। ফ্রেন্ডের নাম বলেনি, তাই তোমাকে ট্রেস করা গেলনা। এই ফাহাদ আমার কে ছিল জান?”

আমি দেখলাম রিয়ার দু চোখ বেয়ে অবিরাম অশ্রু ঝরছে। বাল্বের অল্প আলোতেও দুটি গালে অশ্রুধারা চিক চিক করছে।

“ফাহাদ আমার আপন বড় ভাই। তুমি আমার ভাইয়ার খুনি”।

আমার ইচ্ছা হল চিৎকার করে বলি, “আমি আবির নই, আমি আশরাফ”। কিন্তু আমি নিরুপায়।

“ভাবছ এতদিন পর কিভাবে তোমাকে খুঁজে পেলাম? সত্য কখনো চাঁপা থাকেনা আবির। দু মাস আগে ভাইয়ার একটা পুরানো বই ঘাটতে ঘাটতে একটা কাগজ পেলাম। তাতে সিরাজগঞ্জ যাওয়ার সময় যা যা নিয়ে যাবে তার একটা লিস্ট ছিল। সেই লিস্টে লেখা ছিল আবির কে বলব ওর ক্যামেরাটা সাথে নিতে। সেখান থেকে বুঝলাম তুমিই ভাইয়ার সাথে ছিলে। এরপর আমার পরিচিত ভাইয়ার কিছু কলেজ ফ্রেন্ডদের ধরলাম, তাদের কাছে থেকে তোমার নম্বরটা পেলাম। ব্যাস! বাকিটুকু তো তোমার জানাই!”

আমি অবাক হয়ে গেলাম। আবির এমন একটা কাজ করেছে! রিয়ার কষ্টটা আমি অনুভব করতে পারছি। কিন্তু ওকে কিভাবে বোঝাবো আমি আবির নই, আমি আশরাফ। আমার মুখতো টেপ আটকানো। বন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতার পরিনাম যে এত ভয়াবহ হতে পারে আমি তা চিন্তাও করিনি।

রিয়া বলে চলেছে, “তোমাকে কেন এখানে এনেছি জান? আমি জানি আইনের মাধ্যমে তোমাকে কোনও শাস্তি দেয়া সম্ভব নয়। তাই ভাবলাম নিজেই শাস্তি দেব। তুমি খুব বোকা! দু দিন ফোন করতেই আমার প্রেমে পরে গেলে। দেখা করার পরতো পাগলই হয়ে গেলে! স্যান্ডউইচে ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে। টানা তিন ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে এতদুর চলে এসেছি, তুমি টেরও পাওনি”।

মনে মনে নিজেকে গালি দিলাম। এতটা বেকুব আমি হলাম কি করে?

“আমার ইচ্ছা ছিল তোমাকে মেরে ফেলব। খুনের বদলে খুন”। ঠাণ্ডা গলায় বলল রিয়া। “কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে আমি আর নিজেকে শক্ত রাখতে পারছিনা। তোমাকে আমি এভাবেই রেখে যাব আবির। এটাই তোমার শাস্তি। এই বারিটাতে কেউ আসে না। তবে মাঝে মাঝে কিছু চোর-বাটপার আর হিরোইনখোর আসে। নেশা করে, জুয়া খেলে। তোমার ভাগ্য ভাল হলে কেউ এসে তোমাকে বাঁচাতেও পারে। তোমার পরিনতি আমি তোমার ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিলাম”।

আমি প্রবল বেগে হাত পা ছোড়াছোড়ি করতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু বাঁধনগুলো তাতে আরও শক্তভাবে এঁটে বসল। রিয়া লাইট নিভিয়ে দিল। রুম থেকে বেরিয়ে গেল। বাইরে বোধহয় গাড়ি দাড় করানোই ছিল। সার্ট নেয়ার আওয়াজ হল। অসহায় আমি একা বসে রইলাম বদ্ধ রুমের ভেতর।

সমস্ত শক্তি এক করে বলতে চেষ্টা করলাম, “আমি নির্দোষ!”

নিজের কানেই কথাটা যেন শোনালো, “আমি বিশ্বাসঘাতক!”
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×