somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জেনে রাখুন, সুরক্ষিত থাকুন। (জনসচেতনতা মূলক মাস্ট রিড পোস্ট-০১)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ গুগল থেকে..



রিপন একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে। বাসায় বউ, ছোটবোন আর মা কে নিয়ে তার সংসার। আজ অফিসে বেতন হয়েছে। তাই মনটা একটু ভাল। বেতন যেদিন হয় সেদিন রিপনের মন ভালই থাকে। বাসাভাড়া দিতে হবে। বাড়িওয়ালা গতকালও এসেছিলো।

সাড়ে আটটা বাজে। আশেপাশের দোকানপাট সব বন্ধ। রাত আটটার পরে ধানমন্ডির এই রাস্তাটা কেমন নিরব হয়ে যায় এখন। দুয়েকটা রিকশা টুং টাং করে যাচ্ছে। রিপন অবশ্য প্রতিদিন হেটেই যায় রাস্তা টুকু। শুধু বেতনের দিনটা রিকশায় যায়।

রিপন এতক্ষণে রিকশাওয়ালার দিকে মনোযোগ দেয়। রোদে পোড়া শক্তসমর্থ ছেলেটা। চুপচাপ রিকশা চালাচ্ছে। কত কষ্ট করে টাকা কামাতে হয় এদের। এসব আনমনে ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ রিকশাওয়ালা রিকশা থামিয়ে দিলো। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে করতেই ছেলেটা রিকশা থেকে নেমে রাস্তায় পরে থাকা একটি ছোট ইটের টুকরোর মত পেঁচানো কাগজ তুলে নিয়ে এল।

কাগজটা খুলতেই ছেলেটার চোখ যেন চকচক করে উঠল। রিপন তাকিয়ে দেখল কাগজের টুকরোয় পেঁচানো লকেট সহ স্বর্ণের একটা চেইন। বুঝতে পেল অসাবধানতায় কারো কাছ থেকে পরে গেছে হয়ত।

রিকশাওয়ালাঃ ভাই, এইডা তো দেহি সোনার চেইন। দেহেন তো ভাই আসল নাকি? আর কাগজটার মইধ্যে কি জানি লেহা।

রিপনঃ আমিতো স্বর্ণ চিনিনা, তবুও দেখি।

বলেই চেইনটা হাতে নিয়ে একটু দেখল রিপন। সোডিয়াম লাইটের আলোতে চকচক করছে জিনিসটা। একটু দাঁতের নিচে নিয়ে কামড় দিয়েও দেখল। না! আসলই তো মনে হচ্ছে।
এবার কাগজের টুকরোর দিকে নজর দিল ও। এলোমেলো হাতের লেখা “শাহালম ভাইকে দিয়া চল্লিশ হাজার টাকা নিবা।“ চেইনটা আসল না নকল তা নিয়ে রিপনের মনে যেটুকু সন্দেহ ছিল লেখাটা পড়ার পর তাও চলে গেল।

রিপনঃ মনে হচ্ছে তো আসল তবুও স্বর্ণের দোকানে নিয়ে যাচাই করতে হবে, এই নাও।

বলে রিকশাওয়ালার হাতে চেইনটা দিয়ে দিল।

রিপনঃ তুমি এটার দাম জান?

রিকশাওয়ালাঃ না ভাই কেমতে জানমু, আমরা কি আর সোনার জিনিস কিনতে পারি?

রিপনঃ দেখ, এটা সম্ভবত এক ভরি ওজনের। এটার দাম কিনতে গেলে পঞ্চাশ হাজার টাকা, কিন্তু তুমি যদি বিক্রি করতে যাও তাহলে ত্রিশ হাজার টাকার বেশি মনে হয় পাবে না।

রিকশাওয়ালাঃ আমিতো ভাই এইডা বেচতে পারুম না। গরিব মানুষ, স্বর্ণের দোকানে লইয়া গেলে আমারে চোর মনে কইরা মারতেও পারে। তারচে ভাই আপনে এইডা রাইখা দেন। আপনে শিক্ষিত মানুষ, আপনেরে কেউ সন্দেহ করবনা। আপনে এইডা বেইচা টেকা লইয়া লইয়েন। আর পারলে আমারে কিছু টেকা দিয়া দেন।

রিপনঃ আমার কাছে তো ত্রিশ হাজার টাকা হবে না। (বেতনের ২৫ হাজার টাকা ওর পকেটে। একটু চালাকি করে বলল) দশ হাজার টাকার মত হতে পারে, চলবে?

রিকশাওয়ালাঃ ভাই আপনে যা দেন তাই চলব। চলেন আপনেরে নামাইয়া দিয়া আসি।

রিপনের মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল। যাক, কমপক্ষে বিশ হাজার টাকার মত লাভ হবে। রাপা প্লাজায় ওর পরিচিত একটা স্বর্ণের দোকান আছে। কাল সকাল সকাল গিয়ে একটা কিছু বানিয়ে বললেই হবে।

পরদিন সকাল ১১ টার দিকে অফিস থেকে একঘণ্টার ছুটি নিয়ে দোকানটায় গেল রিপন।
যথারীতি কুশল বিনিময়ের পর ও চেইনটা বের করে দিল। দোকানদার হাতে নিয়ে এবং সম্ভবত এসিডে চুবিয়ে দেখে যা বলল তাতে রিপনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরল। এটা নাকি সম্পূর্ণ পিতলের, উপরে গোল্ড প্লেটেড করা।

রিপন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেনা। পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছে। এত সহজে এত বড় প্রতারণার শিকার হল! হায়রে মানুষ, হায় ঢাকা শহর!!




প্রিয় পাঠক, উপরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য। আমরা যে কেউ রিপনের মত এই ধরনের অভিনব প্রতারণার শিকার হতে পারি।

তাই আগে থেকেই সাবধান থাকি, জেনে রাখি, সতর্ক থাকি এবং সুরক্ষিত থাকার চেষ্টা করি। পোস্টটি আপনার পরিচিত মানুষদের সাথে শেয়ার করুন। নিজে সতর্ক থাকুন, অন্যকে বিপদে পরা থেকে রক্ষা করুন।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১০
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×