প্রাচীনকাল থেকেই সকল সমাজ ব্যবস্থা দুইশ্রেনীতে বিভক্ত ছিল এবং অধ্যবধি পর্যন্ত বিরাজমান। দুটি শ্রেনী হল: ধনী,গরীব। অপরদিকে শোষক এবং শোষিত। এই দৃই শ্রেনীর মাঝখানে তুতীয় কোন শ্রেনীর অবস্থান নেই। প্রাচীন মিশর ছিল প্রথিবীর মধ্যে জান্নাত। এমন কোন ফল বা শষ্য নেই যেটা মিশরে জন্মাতনা। খাবার-দাবার ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক গুন বেশি। কিন্ত তা সত্তেও প্রাচীন মিশরের লোকজন অনাহারে মারা যেত। তাদেরকে শুধুমাএ অথাৎ গরিবদেরকে খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশও প্রদান করত না, যদি সেটা ও প্রদান করত মনে হয় এত অভাব থাকতনা। অপরদিকে রোমান সাম্রাজ্য, ফিরআউনের শাষনামলে, বিভিন্ন গোএ শাষণ , জাহেলী আমল এমনকি বর্তমান সময়েও গরিবরা সর্বক্ষেত্রে শোষণের শিকার হচ্ছে। প্রাচীনকালে যেমন অনাহারের কারনে নিজেকে বিক্রি করত এখনও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তার আধুনিক রূপায়ন পাওয়া যায়। মোট কথা হল পুজিবাদী শাষণ ব্যবস্থার অবসান হয়নাই। ধনী আরো ধনী হচ্ছে, গরীব অরো গরীব হচ্ছে। মানুষ যখন এই অসাম্য অর্থনীতি ব্যবস্থার করালগ্রাসে নিপতিত হয়ে দিশেহারা হয়ে গেল। তখনি মহান আল্লাহ হযরত মোহাম্মদ স: এর মাধ্যমে যাকাতের বিধান প্রচলন করলেন । যেটা হল ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূল ভিত্তি।
যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হল ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়া ও পরিমানে বেশি হওয়া। লিসানুল আরব গ্রন্থাগার বলেছেন, যাকাতের আভিধানিক অর্থ হল পবিত্রতা,বৃদ্ধি পাওয়া, বরকত এবং প্রশংসা। ইমাম ইবনে তাইমিয়া র: বলেন: যেহেতু যাকাত প্রদানকারীর মন ও অাত্মা পবিত্র হয় ,তার সম্পদ বুদ্ধি পায়, পরিছন্ন হয় এবং পরিমানে বেশি হয় সেহেতু এইসব অর্থ করা হয়েছ।
কোরআনুল কারীমের মধ্যে অনেক জায়গায় যাকাত সম্পর্কে বলা হয়েছে। কোরআনের প্রায় ত্রিশটি আয়াতের মর্ধ্যে যাকাতের কথা বলা হয়েছে তার মর্ধ্যে ২৭ টি নামাযের সাথে একত্র করে আর বাকি তিনটি অপরিচিত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অপরিচিত বলতে এখানে নামাযের প্রসঙ্গ এর সাথে বলা হয়নি বুঝায়। নামাযের সাথে বলার মূল কারণ হল , নামায যে রকম ইসলামের একটা অবিচ্ছিন্ন ইবাদাত , সকলের উপর ফরয ,কোন প্রকার ছাড় নাই । তেমনি যাকাত হল ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলভিত্তি। এ্টা কোন ব্যক্তি গোঝামিলের মাধ্যমে বা কোন অযুহাতে না দিয়ে যেতে পারবেনা।। প্রত্যেক ধনি ব্যক্তি এটা প্রদান করতে বাধ্য
সুতরাং বুঝা গেল যাকাত ছাড়া কোন ব্যক্তি যত বড়ই পীর ,মৌলভী হোক না কেন কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। আসুন আমরা ইসলামী বিধান মেনে যাকাত প্রদান করি এবং আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করি।
এটা হল যাকাতের অলোচনার ভূমিকা মাত্র। অাশা করি অতিশিঘ্রই বাকি আলোচনা পর্ব আকারে লিখব ইনশাঅল্লাহ। আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে জানালে উপকৃত হব এবং উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:১৫