আমেরিকা হল কনজু্যমার ওরিয়েন্টেড সোসাইটি। কনজু্যমার সোসাইটির একটা ফমর্াল সংজ্ঞা পেলাম এখানে: Click This Link
সংজ্ঞাটা আপনাদের জন্য বাংলায় বলি - এটি এমন একটি আধুনিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমাজ যেখানে ভোক্তা এবং পণ্য উভয়েরই আধিক্য রয়েছে।
সোজা কথায়, আমার মত একজন ছাত্র, যার কিনা নুন আনতে পান্তা ফুরায়, চাইলেই 2007 মডেলের BMW, নিজের একটা বাড়ির মালিক হতে পারে। অনেকে বলবে ওয়াও, কি মজা! তাহলে আর পড়া লেখা করে কি হবে, কাজ কমর্্ম করে কি হবে, জীবনে আর কি চাই। একটু সবুর করুন আপনাকে সমস্যাটা ধরিয়ে দিচ্ছি। তার আগে আসুন আপনাকে আরেকটু জ্ঞান দেই কিভাবে ব্যাপারটা চলছে।
কনজু্যমার সোসাইটির পক্ষে কিছু পয়েন্টস পাবেন এখানে Click This Link
আমি কয়েকটা পয়েন্টের অনুবাদ করছি:
2। ভোক্তা বিশাল পরিমানের টাকা খরচের মাধ্যমে ইকোনমি তরল রাখে এবং ভাল সরকার তৈরীতে সাহায্য করে।
3 এবং 4। এর ফলে দ্রুত প্রোডাক্ট ব্যবহার এবং রিসাইকেল হয়।
6। এটি তৃতীয় বিশ্বকে সাহায্য করে।
এখন এর বিপক্ষে কিছু বলি। আমেরিকার অধিকাংশ লোকের কাছে মোবাইল ফোন আছে। অথচ সবার কাছে কিন্তু ল্যান্ড ফোনও আছে। ক'জনের একই সাথে দুটা দরকার? এখন মোটোরোলা নতুন একটা মোবাইল সেট বের করেছে, রেজর ভি থ্রি। যাদের মোবাইল আছে তাদের কি দরকার সেটটি? তাহলে তারা কিনবে কেন? সুতরাং মোটোরোলা রিবেট প্রস্তাব করল।
এই রিবেট জিনিসটি কনজুমার সোসাইটি ওরিয়েন্টেড ইন্ডাস্ট্রির একটি আবিষ্কার। মনে করুন একটি মোবাইল সেটের দাম 100 ডলার, তার উপর রিবেট 50 ডলার। আপনি প্রথমে 100 ডলার খরচ করে মোবাইল সেটটি কিনুন, কিছু শর্ত সাপেক্ষে কিছুদিন পরে এই 50 ডলার ফেরত পেয়ে যাবেন। তাদের লাভ হচ্ছে আপনার 50 ডলার বেশ কিছুদিন বাজারে খাটল। বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে না? কিন্তু শর্তগুলো এমন থাকে যে তা পালন করে, মনে করে অনেক সময় রিবেট ক্লেইম করাই হয়না। আর আমাদের মত তো আমেরিকানরা অতটা সর্তকও থাকে না। আমি নিজেই এতো সর্তক থাকার পরও 150 ডলারের রিবেট মিস করেছি।
তো আসা যাক পুরোনো প্রসঙ্গে। মোটোরোলা রেজর 200 ডলারে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তার রিবেট 300 ডলার অর্থাৎ মাস ছয়েক পর উলেটা আপনাকে 300 ডলার ফেরত দিবে যাতে মোবাইলের জন্য আপনার খরচ তো হলইনা বরং 100 ডলার লাভ হল। তো শুরু হয় ধুমধাম সেল। যার লাগে সেও কিনে, যার লাগেনা সেও কিনে।
এভাবে আমেরিকান পোলাপানগুলো দামী দামী গাড়ি হাঁকায় র্গালফ্রেন্ড বশে রাখার জন্য ক্রেডিট কার্ড চার্জ করে করে বড় বড় বার এ ফুর্তি করে। আর বছর শেষে দেখে তার মাথায় মোটা অঙ্কের ঋণ ঝুলছে। তখন বাধ্য হয়ে শুরু করে দোকানে কাজ করা। কিছু আয় হয়, শুরু হয় আবার খরচ। এভাবে চলতে থাকে কনজু্যমার সোসাইটির দুষ্টচক্র (vicious circle)।
ইন্ডাষ্ট্রির কিন্তু খুব লাভ। যেকোন প্রোডাক্ট বের হলেই চলে ধুমধাম। ছোটখাট ব্যবসা বানিজ্যও চলে সুরসুর করে। তাই তারা দেয় আরো ছাড় এবং তার সাথে অদৃশ্য ফাঁদ।
যাই হোক আমেরিকানরা বিষয়টা খুব এনজয় করে আর সেকারনেই এই ব্যপারটি চলতেই থাকবে এই সোসাইটিতে।
[দুঃখিত, খুব ভারী বিষয় নিয়ে আলোচনা করে ফেললাম।]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




