হ্যালোইন হচ্ছে ভুতের উৎসব। আয়্যারল্যান্ড থেকে আসা এই উৎসবটি মূল ছিল একটি বিশ্বাস, প্রতিবছর নভেম্বরের 1 তারিখ সে বছরের মৃত আত্মারা কোন জীবিত মানুষের ঘাড়ে ভর করতে আসে। আর তাই জীবিত মানুষেরা বিভিন্ন আয়োজন করে তাদের তাড়াতে চায়।
এই অনুষ্ঠানের সাথে দুটো ব্যাপার জড়িত। একটা হল ট্রিক অর ট্রিট (trick-or-treat), আর আরেকটি হল জ্যাকের বাতি (Jack-o-lantern)। ছোট ছোট বাচ্চারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে আর দরজা নক করে বলে ট্রিক অর ট্রিট, তখন আপনার দায়িত্ব হচ্ছে তাদের ঝুলিতে কিছু ক্যান্ডি বা খাবার দাবার দিয়ে দেয়া। অর্থাৎ আপনি তাদের ট্রিট করলেন, কিন্তু ট্রিকটা যে কিভাবে করে সেটা আমার জানা নেই।
জ্যাকের বাতি নিয়ে একটা গল্প চালু আছে। জ্যাক ছিল ভীষন মাতাল আর ধুর্ত। একবার সে খোদ শয়তানকে ধোকা দিয়ে এক গাছে ওঠাল আর গাছের গোড়ায় একে দিল ক্রুশ। এতে করে শয়তান গাছ থেকে আর নামতে পারেনা। শয়তান আর তাকে জ্বালাতন করবেনা এরকম একটা শপথ করার পর তাকে মুক্তি দিল। বিপত্তি বাধল যখন সে মারা গেল। ঈশ্বর তাকে স্বর্গে ঢুকতে দিলনা কেননা সে ছিল পাজী, আর শয়তান তাকে নরকে ঢুকতে দিলনা কেননা সে খোদ শয়তানের সাথে বদমাইশি করেছে। কিন্তু শয়তান তাকে সঙ্গে দিল একটা এম্বারের বাতি আর সেটা যাতে নিভে না যায় সেজন্য দিল টার্নিপ নামের মিষ্টি আলু জাতীয় সবজির খোলস। এই বাতি নিয়ে জ্যাকের যাত্রা অন্ধকারের দিকে। ইউএসএ তে এই প্রথা চালু হবার পর টার্নিপের পরিবর্তে লাল কুমড়ার ব্যবহার শুরু হয়, দামে সস্তা আর প্রচুর পাওয়া যায় বলে। বিস্তারিত পাবেন এখানে http://wilstar.com/holidays/hallown.htm আর এখানে http://en.wikipedia.org/wiki/Halloween
গত নভেম্বরে আমার প্রথম হ্যালোইন উৎসব দেখার সুযোগ হয়। পরের দিন আমার একটা প্রজেক্ট সাবমিশন ছিল তাই ঘন্টাখানেকের বেশী সময় কাটাতে পারিনি উৎসবটাতে। ইউনিভার্সিটির কাছে, টেম্পি শহরের ডাউনটাউন রাস্তা মিল এভিনিউতে শুরু হয় উৎসবটি। নীচে দেয়া ছবিতে দেখতে পাবেন বিভিন্ন মানুষের সাজগোজ করে আসা নমুনা। এরমধ্যে একটা ছবি আগের পোস্টে দিয়েছিলাম। একটি উল্লেখযোগ্য মেয়ের ছবি আমার তোলা হয়নি। মেয়েটির বয়স, 18/19 হবে। সে পরী সেজে এসেছিল, হাল্কা সবুজ রঙের ব্রা পেন্টি আর পাতলা একটা পাখা পরে। ছবিটি তুলিনি বলে এখনও আফসোস করি।
একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম, বিভিন্ন মুভির ক্যারেক্টার খুব উঠে আসে উৎসবটায়। বিশেষ করে সদ্য রিলিজ প্রাপ্ত ছবির। আর বেশ কয়েক যায়গায় গীটার, ড্রামস ইত্যাদি নিয়ে গানবাজনা হচ্ছিল। মিল এভিনিউ যায়গাটা অবশ্য এমনিতেই মজার, শুক্রবার রাতে হৈ চৈ গানবাজনা লেগেই থাকে।
এরই মাঝে লক্ষ্য করলাম এক লোক এই সমস্ত অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে ঈশ্বরের পথে আসার জন্য চেঁচিয়ে যাচ্ছে। কেউ শুনছে না কিন্তু সে তার মত চেঁচিয়ে যাচ্ছে। নীচের ছবিতে দ্রষ্টব্য ব্যাটম্যানকে দেখলাম লোকটার সামনে গিয়ে পাখা উঁচু করে ধরল, আর লোকটা আরো উত্তেজিত হয়ে চেঁচাতে শুরু করল। অথচ সবাই ব্যাটম্যানকে তালি দিতে লাগল। উইয়ার্ড এটিচিউড।
যাই হোক বেশ মজাই লেগেছিল সেখানে গিয়ে। ছবি পোস্ট করলাম বেশ কিছু, আশা করি মজাটা শেয়ার করতে পারব।
ছবি পরিচিতি:
1। কঙ্কালের সাথে
2। গ্রিম রিপার (আত্মা সংগ্রহকারী ভুত) এর সাথে আমরা
3। আরো কিছু ভুত
4। স্টার ওয়ার্সের ডার্থ ভেডারের সাথে
5। লর্ড অভ দ্যা রিংসের ক্যারেক্টারদের সাথে টুসি
6। ব্যাটম্যান ও রবিন
7। যুদ্ধাহত মানুষের বেশে
8। উ লা লা ...
9। নরকের মানুষদের সাথে
10। টুসি গ্লোডেন টিকিট পেয়েছে চকলেট ফ্যাক্টরীতে যাবার...
11। কয়েকজন বাংলাদেশীদের সাথে
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




