ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী অধরার (ছদ্মনাম) কথাই ধরা যাক। অধরা পড়াশুনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর আগে বিয়ে করতে চায় না। কিন্তুতার পরিবার এটা মানতে নারাজ। পরিবারের লোকজন মনে করেন আর্থিকভাবে সচ্ছল পাত্রের সঙ্গে বিয়ে হওয়াই নারীর জীবনের মূল লক্ষ্য। আর এ জন্যই তার পড়ালেখা করা। চাকরি করতে হবে কেন? শুধু আর্থিক নিশ্চয়তা নয় -একটা মেয়ের মানসিক তৃপ্তির জন্যও যে সে চাকরি করতে পারে এটা তারা বুঝতে চায় না। আর্থিকভাবে পরিবারের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তাই অধরাকে মেনে নিতে হচ্ছে পরিবারের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তকে। তাকে প্রায়ই পাত্রপক্ষের সামনে সেজেগুজে উপস্থিত হতে হয় আর উত্তর দিতে হয় তাদের উদ্ভট কিছু প্রশ্নের। অধরা আক্ষেপ করে বললেন, 'আসলে মেয়েদের স্বাধীনতা মানে পরাধীনতার বেড়াজালে আটকে থাকা সংকীর্ণ স্বাধীনতা।'
ক্ষেত্র বিশেষ পিতা-মাতা বা অভিবাবক অধরার যুক্তি মানলেও আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা তা মেনে নিতে পারছেন না। তাদের একই প্রশ্নকোনোই তো সমস্যা নেই তুমি কেন বিয়ে করছো না?
আজকাল অনেক প্রগতিশীল বাবা-মাই বিয়ের ব্যপারে মেয়ের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে এই সংখ্যা একবারেই হাতেগোনা। অধিকাংশ পরিবারেই মেয়ের নিজের পাত্র নির্বাচন করাকে বাঁকা চোখে দেখে। মেয়েটির পছন্দের পাত্র যতোই গুণের অধিকারী হোক না কেন অভিভাবকরা তার দোষ খুঁজতে সিদ্ধহস্ত_ এ ব্যাপারে অবশ্য ছেলের বাবা-মায়েরাও কম যায় না।
নারীর প্রকৃত স্বাধীনতা তখনই বলা যাবে যখন একটি মেয়ে তার জীবনের সব ক্ষেত্রেই নিজের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হবে। আর এই অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য প্রথমে দরকার আমাদের সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন আনা। পরিবারের পাশাপাশি সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে তবেই একটি মেয়ে পারবে তার জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
- আমার সর্বশেষ পোস্ট "যৌতুক বিরোধী সামাজিক আন্দোলন চাই" এর ছায়া অবলম্বনে
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০