somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম‌য়ের প্র‌য়োজ‌নে সবার জন্য

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মা মারা যাওয়ার কিছু দিন পর,,, মায়ের ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে মায়ের হাতের লেখা একটি চিঠি পায় তার একমাত্র ছেলে,।
চিঠিতে লেখা ছিল,,, খোকা, এই চিঠি যখন তোর হাতে পড়বে তখন আমি তোর কাছ থেকে অনেক দুরে চলে যাবো,,, যেখান থেকে কেউ কোনো দিন ফিরে আসে না,।

খোকা, তোর অনেক কথাই মনে নেই,,, তাই এই চিঠিতে লিখে গেলাম তোর মনে না থাকা সেই কথা গুলি,,,,। তুই যখন ছোট্ট ছিলি একবার তোর জ্বর এসেছিলো,,, আমি তিন রাত ঘুমাতে পারিনি তোকে বুকে নিয়ে বসে ছিলাম,,, কারন তোকে বিছানায় শোয়ালেই তুই কেঁদে উঠতি,,,।
তোর বাবা আমাকে বলেছিলো তোকে শুইয়ে রাখতে কিন্তু আমি পারিনি...! সে জন্য আমাকে অনেক কথা শুনিয়েছিলো তোর বাবা,,,।
তোকে যখন রাতে বিছানায় শোয়াতাম,,,, তুই প্রশ্রাব করে বার বার বিছানা ভিজিয়ে ফেলতি তখন আমি তোকে আবার শুকনো জায়গায় শোয়াতাম,,, আর আমি তোর প্রশ্রাবে ভেজা জায়গায় শুয়ে থাকতাম,,,।
তোর বাবা যখন মারা গেলো,,, তখন অনেক কষ্টে আমাকে সংসারটা চালাতে হয়েছিলো,,, একটা ডিম ভেজে দুই টুকরো করে তোকে দু'বেলায় দিতাম,,, এমনও দিন গেছে শুধু লবন দিয়ে ভাত খেয়েছি আমি,,, কিন্তু তোকে বুঝতে দেই নাই আমি,,,। একদিন রান্না করার মতো কোনো চাল ছিলো না ঘরে,,, তখন কোনো উপায় না পেয়ে একবাড়িতে কাজ করে কিছু চাল এনে ভাত রেঁধে খাইয়েছিলাম তোকে,,,।
হয়তো তুই ভুলে গেছিস,,, যখন তোর HSC পরিক্ষিার ফি দিতে পারছিলাম না তখন তোর বাবার দেয়া শেষ স্মৃতি নাকফুলটা বিক্রি করে দিয়েছিলাম,,, আরো অনেক কথা আছে যা লিখতে গেলে হয়তো খাতা শেষ হয়ে যাবে,,, কিন্তু লেখা শেষ হবে না,,,।
ভাবছিস এতো কথা তোকে কেন লিখে গেলাম,,, খোকা তুই যখন বড়ো হলি একটা ভালো চাকরি পেলি,, এর কিছুদিন পরে বিয়ে করলি,,, তখন আমি তোদের নিয়ে ভালোই ছিলাম,,,।
মনে আছে খোকা..? একদিন ঘর থেকে কিছু টাকা চুরি হলো,,, সেদিন তুই আমাকে জিগ্যেস করেছিলি আমি তোর টাকার ব্যাপারে কিছু জানি কি না,,, তুই আমাকে সরাসরি কিছু না বললেও আমি বুঝতে পেরেছিলাম তুই আমাকে চোর ভেবেছিলি,,,।
এর কিছুদিন পর তুই আমাকে চোরের অপবাদ দিয়ে অন্য একটি ঘরে রেখে দিলি,,,। খোকা আমার সেই ঘরটিতে থাকতে অনেক ভয় করতো,,, কারন ঘরটি তোদের কাছ থেকে অনেক দুরে ছিলো,,, খোকা তোকে একদিন বলেও ছিলাম আমার একা একা থাকতে ভয় লাগে,,, তুই বলেছিলি মরন আসলে যে কোনো যায়গায় আসবে,,,,।
আমার হাঁটুর ব্যাথাটা বেড়ে ছিলো তাই তোকে বলেছিলাম খোকা, আমাকে কিছু ঔষদ কিনে দিবি,,, তুই বলেছিলি এই বয়সে ঔষধ খাওয়া লাগে না,,, এমনি এমনি ঠিক হয়ে যাবে,,,। খোকা বিছানা থেকে উঠতে পারতাম না,,, শরীরে ফোসকা পড়ে গিয়েছিলো,,, শরীর থেকে পঁচা গন্ধ আসতো,,,
কতো দিন যে স্নান করিনি তা ঠিক বলতে পারবো না,,, খোকা তোর ঘরটা ছিলো আমার ঘরের থেকে অনেক দুরে,,, কখন আশিস কখন চলে যাস আমি কিছুই দেখতে পারতাম না,,, তবুও পথের দিকে তাকিয়ে থাকতাম,,, খোকা, তুই যখন ছোট ছিলি আমি খেতে বসলে তোকে কোলে নিয়ে খেতে বসতাম,,, তবুও কখনো তোকে চোখের আড়াল হতে দিতাম না...।
খোকা, যখন তুই আমার কোলে পায়খানা করে দিতি,,,তোর পায়খানা পরিস্কার করতে আমার একটুও ঘৃনা লাগতো না,,, কিন্তু তুই যখন আমার কাছে আসতি তখন নাকে রুমাল দিয়ে আসতি,, ক্যানোরে খোকা আমার শরীর দিয়ে গন্ধ আসতো বলে,,,? এক কাপড়ে আমাকে কতো মাস যে থাকতে হয়েছে তা আমি ঠিক বলতে পারবো নারে, খোকা,,,।
তুই যখন অনেক দিন পর একবার আমাকে দেখতে এসেছিলি আমার খুব ইচ্ছে ছিলো তোকে বুকে জড়িয়ে ধরি কিন্তু খোকা পারিনি তোকে বুকে জড়িয়ে ধরতে,,,কারণ, আমার শরীরে তো অনেক ময়লা ছিলো,,, তাতে যদি তোর দামি সার্ট প্যান্ট নষ্ট হয়ে যায় এই ভয়েতে তোকে বুকে নিতে পারিনি সেদিন,,,।
খোকা কখনো আমাকে একবারও জিগ্যেস করিসনি, মা তোমার কিছু খেতে মন চায়,,,খাওয়ার কথা থাক,, কতদিন যে তোর মুখে মা ডাক শুনিনি,, তাও ঠিক বলতে পারবো না,,,।
খোকা, আমার কি অপরাধ ছিলো,,, যে আমাকে তোর কাছ থেকে অনেক দুরে রাখলি,,, খোকা, তুই কি পারতি না আমাকে তোর কাছে রাখতে,,,? খোকা তুই কি পারতি না,, আমাকে একটা কাপড় কিনে দিতে,,,,? খোকা, তুই কি পারতি না,, আমাকে একটা ডাক্তার দেখাতে,,,?
আমাকে একটা ডাক্তার দেখালে হয়তো এই পৃথিবীতে আরো কিছুদিন থাকতে পারতাম,,, খোকা, কোনো মা তার সন্তানের কাছে পেট ভরে খেতে চায় না,,, শুধু মন ভরে *_মা_* ডাক শুনতে চায়,,, যা তুই কখনোই বুঝতে চাসনি,,,।
খোকা তোকে একটি শেষ অনুরোধ করছি,, আমার এই চিঠিটা তোর সন্তানদের পড়ে শোনাবি,,, কারণ, তুই বৃদ্ধ হলে তোর সাথে তোর সন্তানেরা যাতে এরকমটি আর না করে,,,,।
ভালো থাকিশ খোকা,,,,,।
ইতি,,,,,,,,,,,,,
তোর,,,,,,, মা,,
হয়ত: গল্প ...! কিন্তু পড়তে গিয়ে কতবার যে কেঁদেছি তার কোন হিসেব নেই...!
তাই বলছি...প্লিজ, শেয়ার করুন... সবার জানা দরকার...যাতে এমন ভুল আর কেউ না করে...!
*মা*
আপনাকে অ-নে-ক ভালোবাসি..


গর্ভধারিনী মাকে রেলস্টেশনে ফেলে গেলেন বিসিএস কর্মকর্তা ছেলে!!

গতমাসে ঘটনাটি ঘটলেও আজ এ বিষয়ে লিখছি কারণ চোখের ঝর্ণাপ্রবাহ লেখার ক্ষমতাকে প্লাবিত করে যার ফলে বারবার বাধা পাচ্ছিলাম। কোনো মায়ের পরিণতি যেন তেমনি না হয়।

গর্ভধারিনী মাকে রেলস্টেশনে ফেলে রেখে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক বিসিএস ক্যাডারের বিরুদ্ধে। গত ২৯ মার্চ এমন অভিযোগ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয় ব্যারিস্টার এস এম ইকবাল চৌধুরীর ফেসবুক হ্যান্ডেলে। তাঁর পোস্ট তুলে ধরা হলো-

'কয়েকদিন পর্যন্ত শারীরিক অবস্হা ভালো যাচ্ছেনা। ব্লাডপ্রেসার ডিস্টার্ব করছে আর বন্ধুরা বলে, আমার মাথার মাদারবোর্ড নাকি কাজ করছেনা- হা হা হা। তারপরও রেলস্টেশন গিয়ে দু'জন হাটাহাটি করছি কারণ আমাদের একজন সিনিয়র কলিগকে রিসিভ করতে অর্থাৎ ট্রেনের অপেক্ষায়। কিছুক্ষণ পর একটি জায়গায় বসে আছেন একবৃদ্ধা, যাঁর বয়স সত্তর।

তিনি একজন মা। মায়ের মুখ হতে উচ্চারিত হচ্ছে- "খোকা কোথায় গেলি বাবা"।মায়ের কাছে জানতে চেয়েছি, খোকা কে ? তিনি বললেন,আমার একমাত্র ধন(ছেলে)। তাঁর সঙ্গে একটা ছোট ব্যাগ আছে। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে ব্যাগের বাহ্যিক পকেটে হাত প্রবেশ করালাম যাতে কোনও ফোন নম্বর পাওয়া যায় কি না। একটি চিঠি পেয়েছি তাতে কি লেখা ছিল নিম্নে সন্নিবেশিত।

ততক্ষণে ট্রেন উপস্হিত আর অতিথিসহ সিদ্ধান্ত নিলাম মাকে কোনো বৃদ্ধাশ্রমে ভর্তি করায় দেয়ার। স্টেশনমাস্টারের রুমে প্রবেশ করে নিজেদের পরিচয় দিলে তিনি যথার্থ সম্মান দিয়ে জানতে শশব্যস্ত হচ্ছেন কিন্তু আমরা মায়ের দূর্ঘটনার কথা বলাতে, তিনি মাকে নিজ চেয়ারে বসালেন।

মায়ের সন্তান একজন বিসিএস কর্মকর্তা। লোকের বাড়িতে কাজ করে আর রাতে কাপড় সেলাই করে বিসিএস ক্যাডারকে পড়িয়েছেন। আমি চেয়েছিলাম, সেই বদমাশ ছেলের নামসহ বিস্তারিত তুলে ধরতে কিন্তু মায়ের অনুরোধ যাতে তা না করি। মায়ের মতে,সন্তান ও বৌমা ম্যাজিস্ট্রেট আর তাদের সামাজিক মর্যাদা আছে। হায়রে মা........... সন্তানের সম্মান মায়ের কাছে কত মূল্য আর কুলাঙ্গারের কাছে মা কত 'বিপদ' !!

মায়ের বর্তমান ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম আর অভিভাবকের কলামে আমার নাম লিখাতে পেরে গর্বিত।

গতকাল বৃদ্ধাশ্রম থেকে ফোন আসলে রিসিভ করে অপরপ্রান্তে মায়ের কণ্ঠে- ''খোকা, আমার মন ভালো নাই, যদি পারো একটু দেখতে এসো।'' ছুটে গেলাম জননীর নিকট খোকা হয়ে তখন দেখি মাকে ডাক্তার অবজারভেশনে রেখেছেন। মায়ের কপালে হাত রাখতেই তিনি চোখ খুলে মুচকি হেসে পানি চাইলেন এবং আমি তাকে পানি খাওয়াই। তিনি বলেন, খোকা বেঁচে থাকবি সিংহ হয়ে। একদিন মা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে জান্নাতগামী হলেন।(সংগৃৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:১৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×