somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেজাজের কাফেলা

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা কোন বই রিভিউ না তবে নাসিম হেজাজির বইয়ের খন্ড কিছু ঘটনা।মুসলিমরা যখন ইরান জয় করে সেই কথা নিয়েই লিখেছেন তিনি হেজা্জের কাফেলা।
ঘটনাঃ১
হযরত সাদ রাঃ মদ পানের অপরাধে বন্দি করে রেখেছে বিখ্যাত কবি আবু মোহজেন কে।আর মাঠে চলছে ইরানী লাস্করদের সাথে মুসলিমদের লড়াই।লড়াই হচ্ছে হক আর বাতিলের। লড়াই হচ্ছে দুটি অসমাম দলের মধ্যে...
মুসলিমদের তুলনাই ইরানী সৈন্য সব দিক দিয়ে শক্তিশালী ওরা বর্মে আবৃত্ত আর মুসলিম সেনা বর্মহীন মুসলিদের সৈন্য ওদের সৈন্যের এক ভাগ।বীর বিক্রমে লড়াই করছে মুসলিম যেন প্রতিটি সেনা খালিদ বিন ওয়ালদি, কাকা বীন আমর,মুসান্না বীন হারেসা!লাসের স্তুপ জমে গেছে ইরানী সৈন্যদের কিন্তু হঠ্যাত ছন্দ পতন হল মুসলিম সেনাদের। আনেকে নিহত হল এস দৃশ্যই দেখছিল কবি আবু মোহজেন।কিন্তু কিছুই তার করার ছিল না সে যে বন্দি।এক বার হযরত সাদ রাঃ এর কাছে গিয়ে যুদ্ধে যাবার অনুমতি চাইল।কিন্তু হযরত সাদ রাঃ ধমক দিয়ে ফেরত পাঠাল আর বলল মদ ইসলামে হারাম এর জন্য অবশ্যই তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।
ব্যার্থ হয়ে ফিরে যুদ্ধ নিয়ে কবিতা আবৃতি করতে থাকল।হযরত সাদের সহধর্মিণী সেই কবিতা শুনে শিকল খুলে দিলেন মুক্ত করে দিলেন তাকে।ছাড়া পেয়ে চুপি চুপি হযরত সাদের আস্ত্র আর ঘোড়া নিয়ে যুদ্ধের মাঠে গেলেন।বীর বিক্রমে ঝাপিয়ে পড়লেন।যেন আকাশ টুটে পড়েছে শক্রু সেনার উপর! শক্রু সেনার যে লাইনে ঢুকলেন্তিনি সেই লাইন ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিলেন। তার মাথায় পরা ছিল শিরোনাস্ত্র। ঘরের সাদে বসে অসুস্থ সাদ রাঃ দেখছিলেন আর বললেন "আল্লাহর কসম আজ যদি আবু মোহজেন বন্দি না থাকত তাহলে আমি বলতাম ঐটা আমার ঘোড়া আর আমার ঘোড়ার পিঠে বসে আছে আবু মোহজান।
যুদ্ধ শেষ চুপি চুপি ফিরে এসেছে বন্দিশালাতে আবু মোহজান।পরে বসে আছে শিকল।কিন্তু এর বীর যোদ্ধা ভীষণ ভয়ে আছেন।হযরত সাদ রাঃ আসলেন দেখলেন কবি শিকল পরে বসে আছে।হযরত সাদ রাঃ বললেন উঠ কবি!আল্লাহর কসম যে ইসলামের জন্য এত নিবেদিত প্রাণ তাকে আমি শাস্তি দিতে পারি না!
বেড়ি একদিকে ছুড়ে ফেলে দিলেন একপাসে উঠে বললেনঃ ইয়া আমীর, প্রতীজ্ঞা করছি আর কখনও আমি মদ ছোব না।

কিছুদিন পর......
ঘটনাঃ২
কাসাদিয়ার মুজাহিদ সাদ ইবনে আবি আমিলকে বিজয়ের সংবাদ শোনাতে আমীরুল মুমীনের খিদমতে পাঠিয়েছিল আমীর হযরত সাদ রাঃ।উঠে সাওয়ার হয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে পথের শেষ মঞ্জিল অতিক্রক করছিলেন তিনি।সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই দেখা গেল ইয়াসরিবের খেজুর বীথি।আনন্দে নাচতে লাগল তার হৃদয়।
আনুমানের দুদিন আগেই তিনি পৌছে গেলেন ইয়ারীবে।সে পবিত্র শহরে দাখিল হতে যাচ্ছিলেন তিনি।আল্লাহর রাসূলের মেহমানদারির সৌভাগ্য হয়েছিল যার বাসিন্দাদের।কাদেসিয়ার বীজয়ের সংবাদ এনে দিতে পেরে যেমন খুশি তেমনি খুশি সেই মহান নেতার সাক্ষাতের সৌভাগ্য হবে তার,যিনি মাশরিক আর মাগরীবের সম্রাটদের অহংকার ধুলিতে মিশিয়ে দিয়েছেন।
ফারুকে আজমের কত ছবি তার মনে আকা।কত জমানো কথা, কিভাবে কথা বলব কি বলব কিভাবে উপস্থাপণ করব হাজারো চিন্তা তার।মনে মনে সে কথাও সাজিয়ে নিয়েছে।বার বার মনে মনে আওড়াচ্ছে সেগুলো।
রাস্তার পাসের এক পাহাড়ে চূড়াই দেখা গেল একজন লোক একা দাঁড়িয়ে আছে,অত্যন্ত সাধারণ পোশাক পরিহিত।কাছে আসতেই এগিয়ে এলেন লোকটি।পথ আগলে বললেন "কোথা থেকে আসছ তুমি?
ঃকাসাদিয়া থেকে।বেপরয়া জবাব দিলেন সাদ(এই সাদ কিন্তু আমীর সাদ না)
কোষে চাবুক মারলেন ঘোড়ার পিঠে।
তার পেছন পেছন ছুটতে ছুটতে লোকটি প্রশ্ন করলেনঃআল্লাহর বান্দা ওখান থেকে কি খবর নিয়ে এসেছ?
ঃআল্লাহ কাফেরদের পরাজিত করেছেন।
ঃ আমীর সাদ বিন আবি ওয়াক্কাসা রাঃ তোমাকে পাঠিয়েছে?
ঃহ্যা
ঃআল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন।কয়েক দিন ধরে তোমার পথ চেয়ে আছি।যুদ্ধের অবস্থা শোনাও'।
না থেমেই আগুন্তুকের দিকে তাকালেন সাদ।সাদাসিধা পোশাক সত্ত্বেও আকর্ষণীয় চেহারা দেখে যুদ্ধের কাহিনী শোনাতে লাগলেন সাদ।কখনো লড়াই সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে ব্যস্ত করে ফেললেন দূত কে।নিজের মনেই সাদ ইবনে আমেলা বলল এই লোকটি কে হতে পারে?
শহরে ঢুকতেই মদিনাবাসি আমিরুল মুমেনিন বলে সালাম দিতে লাগলেন এই সাধারণ পোশাক পরিহিত লোকটিকে!
এবার চিনতে পারল সাদ ইনিই যে আমিরুল মুমেনিম ওমর রাঃ!!!
সাদ অত্যন্ত লজ্জিত হয়ে দুঃখিত হয়ে বলল "আপরাধ মাফ করবেন ইয়া খলিফাতুল মুসলেমিন!আমায় ক্ষমা করুন।
ঃভাই আমার ' বললেন ওমর।তুমি কোন অপরাধ করনি।কথা চালিয়ে যাও।
ঘোড়া থেকে নামতে চাইলেন সাদ কিন্তু ওমর নিষেধ করলেন।এভাবে কথা বলতে ওমর রাঃ বলতে বাড়ি পর্যন্ত গেলেন সাদের সাথে। আর পথে নিজ মুখে ঘোষণা করতে লাগলেন।(সুবহানআল্লাহ সুবহানআল্লাহ)
কোন অহংকার নেই,নেই কোন অত্নঅভিমান!এই হল ওমর রাঃ এই হল আমাদের রাসুলে পেয়ারা দোস্ত!
আর এই সব লোক আমাদের মহা পুরুষ হওয়া সত্ত্বেও রিক্সা চালকের কলার ধরে বলি "আমি কে চিনস তুই?"
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×