সাব্বির হাসান ছেলেটির নাম গত কয়েকদিনে শুনে নাই এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না । অন্তত যারা খবরের কাগজ পড়ে কিংবা নিয়মিত ফেবু ,ব্লগে আসা যাওয়ার মাঝে থাকে । আজকে ৭ দিন পড়ে অনেকই নামটি শুনে বলবে চেনা চেনা লাগে কি যেন হয়েছিলো । হুহ এটাই স্বাভাবিক নয় কি আমাদের মত শর্ট টাইম মেমোরী লস করা জাতির কাছে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায়। যদি আশাই করা যেতে তা হলে গত ১৭ বছরে সাগর সাব্বির ইভানদের মত ১৫০ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারতো না ।
মাননীয় প্রশাসন বিউটিফুল বাংলাদেশ বানিয়ে যদি সেই বাংলাদেশ দেখার নিরাপত্তাই না দিতে পারি তাহলে দরকার নাই আমার টিভির পর্দার সেই বিউটিফুল বাংলাদেশ দেখার। আচ্ছা একটা বিদেশী পর্যটক আমাদের দেশে যখন এসে এসব ঘটনার স্বীকার হবে তখন আমরা বিশ্ব দরবারে কি দেখাতে পারবো আমাদের বিউটিফুল বাংলাদেশে এক টুকরো লাল কাপড় নাই তখন কি দেখাতে পারবো ইংরেজিতে তো দূরের কথা বাংলাতেও বিপদজনক জায়গাগুলো তে কোন সতর্কবার্তা নেই তখন কি আমরা বলতে পারবো যখন একটি মানুষ মারা যায় তাকে সাহায্য করবার মত কোন লোক আমাদের নেই উদ্ধারবাহিনী তো দিবাস্বপ্ন ।
সেন্ট মার্টিন গিয়ে ৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই বরাবরের মত শুরু হয় সমালোচনার ঝর। কিন্তু বরাবরের মতই নিশ্চুপ থাকা আমাদের প্রশাসন এবার ও তার বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে বিষয় টিকে তাদের আলোচনার বাহিরে রাখে ।
৬জনের প্রান আমার আপনার কাছে হয়ত প্রতিদিনের খবরের কাগজের খবর মাত্র ।কিন্তু একবার কি ৬ জন মায়ের কথা ভেবেছি কিংবা বাবা , ভাই আদরের বোনের কথা । না আমি আপনি
যদি বুঝেই ফেলতাম তা হলে গত ১৭ বছর ধরে আমাদের ধৈয্য অটুট রয়ে যেত না আমরা সোচ্চার হয়ে উঠতাম ।
সাব্বির তাঁর ফ্লিকারে সমুদ্রের একটি ছবি দিয়েছিলো তাঁর শিরোনাম ছিলো "মহাকালের প্রান্তে এসে " অনেক আগে ছবিটি তোলার সময় হয়ত সে জানতো না এখানেই সমুদ্রেই তাঁর জীবনকালের শেষপ্রান্ত।সেই ছেলেটির ফ্লিকারে কিছু ছবি দেখলাম মারা যাওয়াতে বলছি না এক কথায় সে সত্যিই অসাধারন ছবি তুলতো এখন আর তুলবে না । ২০১৪ সালে World Photography Award এরজন্য বাংলাদেশ থেকে যে ৪টি ছবি টিকে আছে এর মধ্যে একটি ছবি তাঁর।
কার কাছে দাবী করবো নিরাপত্তা হয়তো এই সরকার যে বিগত সরকারের মত বলে বসবেন না "আল্লার মাল আল্লাহ নিয়া গেছে" কি গ্যারান্টি আছে । ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চান গড়েন কেউ না বলে নাই , বাস ওয়াইফাই হবে হোক না সমস্যা নাই কিন্তু মানুষ গুলো কে বেঁচে থেকে সেই সুবিধা যদি ভোগ করতে নাই দেন তবে কি হবে এসব দিয়ে ।মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নির্বাচনী ইস্তেহারে না রেখে বাস্তবে প্রকাশ কি আদৌ পাবে ।
আর আমরা মানুষ বড়ই অদ্ভুত সাব্বির নামের একজন মারা গেছে তাঁর ফেবু আইডি তে গিয়ে সামনে ফলো আর ছবি স্ট্যাটাস কমেন্ট করা শুরু করি " যেখানেই থাকুন ফিরে আসুন ভাইয়া","অনেক হইছে এবার আসুন" এই টাইপ এসব নেকামী গুলা কি না করলেই নয়। কি হবে এসব করে সে ফিরে আসবে নাকি দেখবে । আবার কালকে দেখলাম তার স্ট্যাটাস দিয়ে ৯টা পেজ খোলা হয়ে গেছে আজব আমাদের যেথায় সোচ্চার হওয়া দরকার আমরা সেথায় করছি নেকামী । কি অদ্ভুত মানুষ আমরা তাই না ।
ওদিকে মন্ত্রী সাহেব আবার আমাদের শিক্ষা সফরের নিয়মাবলি বলছেন নিজেদের অপরগতা ঢাকতে আমাদের অনুমতির বুলি শুনাচ্ছে । আর আমাদের মিডিয়া কার আগে কে কি খবর দিবে সেই নিয়েই ব্যস্ত হয়ে একজনের লাশ পাওয়া গেলে অন্যজনের নামে ব্রেকিং নিউজ দিচ্ছে শনাক্ত করার পর আমার ব্রেকিং দেয়া হবে , আর বন্ধু হারানো বন্ধুকে সাংবাদিক প্রশ্ন করে আপনার কেমন লাগছে ?
মাননীয় সরকার কিংবা প্রশাসন বেডরুমে না হয় নিরাপত্তা নাই দিলেন বাহিরে একটু দিয়েন প্লিজ যাতে নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা নিয়ে ঠাকুমার ঝুলি থেকে ম্যান Vs Waild এর গল্প না বলতে হয়।
আমরা নিরাপদ পর্যটন কেন্দ্র চাই এই একটাই দাবী ।আজ মানববন্ধন হচ্ছে অনেকেই যাবে আমি তাদের একজন । আমাদের যা করার আমরা করছি বাকি যা পারে তা পারে রাষ্ট্র ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৫১