somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফারাক্কার কথা ভাবতে গিয়ে আমার অবাক লাগে.. আমরা কি স্বাধীন /:)/:)/:) না পাকিস্তানি তস্করদের হাত থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনার পর আমরা ভারতের অধীনে গেছি:((:((:((

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাড়ী পাবানার পাকশীতে । ঈদের ছুটিতে গ্রামে গেলে বন্ধুদের নিয়ে মোটর বাইকযোগে বেড়াতে গেলাম পদ্মার তীরে । কিন্তু অনেকক্ষন লাগলো নদীর পানি খুজেঁ পেতে কারন আজ আর সেই প্রবল প্রমত্তা পদ্মা নদী নাই । একে কোন খাল বললেও বোধকরি অতিরঞ্জন হবে না।
ফারাক্কায় আমাদের তথাকথিত দরদী রাষ্ট্র ভারতের নির্লজ্জভাবে পানি প্রত্যাহারের ফলে পানিশূন্য হয়ে সোনার বাংলাদেশ ধীরে ধীরে রাজস্থানের মরুভূমি হতে চলেছে তা স্পষ্টতো বোঝা যায় এখানে বেড়াতে এলে ।কুষ্টিয়াতে গড়াই নদী বা কালিগাঙের যেখানে নৌকা চলবে, সেখানে বাঁশের সাঁকো যা দেয়া হয় খালে। ভারতের পানি রাজনীতির বিশেষত উজানে নির্লজ্জভাবে পানি প্রত্যাহার কারণে আমরা আমরা নদীতে সাঁকো দিতে বাধ্য হচ্ছি। পানির অভাবে উন্মত্ত পদ্মা শুকিয়ে আজ শুধু ধু-ধু বালুচর নিয়ে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে ।পদ্মার করুন অবস্থা গুগল ইমেজে দেখলে আশাকরি ভারতের দালাল বাদে দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকই বুঝতে পারবেন ।

আমরা চুক্তি করেছিলাম ,হয়েছিলাম আশাবাদী কিন্তু ফলাফল শূন্য । কি পেলাম আমরা । কোথায় পাওয়ার কথা পানি আমরা সেখানে পেলাম রাজস্থানের বালিয়াড়ির আদলে বিশাল বালুর চর । আশার আলো দেখেছিলাম ভারত রাজি হয়েছে তিস্তা নিয়ে বৈঠক করতে কিন্তু এবারও হতাশ হলাম ,আমরা ভারতের যেকোন ঘটনাতে একটা ঘটনাই লক্ষ্য করি জো হুকুম জাহাপনা । ভারতের আদেশ অলঙ্ঘনীয় । মাঝে মাঝে ভাবি আমরা কি স্বাধীন । না পাকিস্তানি তস্করদের হাত থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনার পর আমরা ভারতের অধীনে গেছি । বিপ্লবী মেজর জলিলের কেন বলেছিলেন অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা তা আজ বুঝি। এ ধরনের বৈঠক তো হয় মাঝে মধ্যে। ‘ফটোসেশন’-এর মধ্য দিয়ে ওই সব শেষ হয় ঠিক যেমনটি ঘটেছিল টিপাইমুখ পর্যবেক্ষক দলের বৃষ্টির অজুহাতে পরিদর্শন না করেই রাজধানীতে প্রত্যাবর্তনের ঘটনা। ঢাকা বৈঠকে কিন্তু আমরা ভারতকে ইছামতি নদীতে ড্রেজিং করার অনুমতি দিয়েছি। তাতে করে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বিশাল এলাকা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। একই সঙ্গে আমরা রাজি হয়েছি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুমে সুপেয় পানির জন্য একটি শোধনাগার নির্মাণ করতে ফেনী নদী থেকে ভারতকে ১.৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার। এতে করে লাভবান কে হল? ভারত না বাংলাদেশ? ভারত তার প্রাপ্য আদায় করে নিল। আর আমরা তিস্তার পানির ভাগ চাইলাম, বলা হল শীর্ষ পর্যায়ে এ ব্যাপারে কথা হবে। কথা তো হল। কিন্তু কোন সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি আমরা আদায় করতে পারিনি। অথচ আমাদের জন্য তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৭ সালের আগ পর্যন্ত তিস্তা নদীই ছিল উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী। কিন্তু পানি বণ্টনের ব্যাপারে ভারতের একগুঁয়েমি, ঢিলেমি ও হঠকারিতার ফলে তিস্তা এখন রুক্ষ হয়ে উঠেছে। নদীর তলদেশে অজস্র পাথর, নুড়ি, বালু আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে তিস্তার বুকজুড়ে এখন শুষ্ক মৌসুমে কেবল বালু আর বালু। অন্যদিকে বর্ষাকালে মূল গতিপথ বদলে তিস্তা প্রচণ্ডভাবে আছড়ে পড়ে দুই তীরে। ফলে নির্দয় ভাঙনে ফি বছর ২০ হাজার মানুষ বাড়িঘর, গাছপালা, আবাদি জমি হারিয়ে পথের ভিখারি হয়ে পড়েছে।
১৯৮৫ সালে ভারত তিস্তার উৎসমুখে এবং তিস্তার ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের মাত্র ৬৫ কিলোমিটার উজানে গজলডোবা নামক স্থানে ব্যারেজ নির্মাণ করে। এর ফলে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পটি সেচ প্রদানে অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ প্রকল্পের উপকৃত এলাকা ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর। এ অঞ্চলে প্রবাহিত বুড়ি তিস্তা, যমুনেশ্বরী, দেওনাই, চাড়ালকাটা, বুড়িখোড়া, বাগযোগড়া, ঘাঘটের এখন দুঃসময়। এর প্রধান নদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে এখন পানিশূন্য। ফলে এ অঞ্চলের প্রধান সেচনির্ভর ইরি-বোরো চাষাবাদ এখন হুমকির মুখে, যা কিনা আমাদের খাদ্য সংকটকে ঘনীভূত করছে এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে আরও ঝুঁকির মাঝে ঠেলে দিয়েছে। তিস্তা নদী এখন শুধু নামে আছে। পানি নেই বললেই চলে। ভরাট হয়ে গেছে ৬৫ কিলোমিটার নদী। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লালমনিরহাট জেলার নদীতীরবর্তী ১২টি ইউনিয়ন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০ সালে এ অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনে শতকরা ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ, ৩৯ ভাগ ভারত ও ২৫ ভাগ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ৮০ ভাগ দু’দেশের মধ্যে বণ্টন করে ২০ ভাগ নদীর জন্য রেখে দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু ভারত সে প্রস্তাব গ্রহণ না করে উল্টো তিস্তার কমান্ড এরিয়া তাদের বেশি, এ রকম দাবি তুলে বাংলাদেশ তিস্তার পানির সমান ভাগ পেতে পারে না বলে যুক্তি দেখায়। শুধু তাই নয়, ভারত তিস্তা ব্যারেজের সেচ এলাকা কমিয়ে দ্বিতীয় প্রকল্প বাতিল করার জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ দেয় এবং সর্বশেষ এক চিঠিতে তিস্তার মাত্র ২০ ভাগ পানি ভাগাভাগি করার বিষয়টি জানিয়ে দিয়ে হঠকারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় । গত ৮ বছরে কর্ণফুলীতে পলি জমা হওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ গুণেরও বেশি। এর ফলে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে উজানে ১৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রচুর ডুবোচরসহ নদীর দু’পাশে ছোট-বড় অনেক চর পড়তে শুরু করেছে। নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় বর্তমানে দিনের বেশির ভাগ সময় ৩টি জনগুরুত্বপূর্ণ ঘাট দিয়ে নৌযোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় জাহাজ এখানে ভিড়তে পারে না। বাংলাদেশ নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি অর্থনৈতিক ঝুঁকির পাশাপাশি বাংলাদেশ আজ আর্থিক ক্ষতি ও পরিবৈশিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন । আর ট্রানজিট সহ নানা বিষয় তুলে ঈদের আনন্দ মাটি করার ইচ্ছে আমার নাই । তাই সময় এসেছে সবাই মিলে বাস্তবতা বুঝে সোনার বাঙলাদেশ গড়ে তোলার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার । দেশের বিরুদ্ধে দানা বাঁধা সকল ষড়যন্ত্র কে রুখে দাড়ানোর । বোধকরি তা না হলে ত্রিশ লক্ষ্য শহীদের রক্ত আজ বৃথা যাবে। যা আমাদের স্বাধীন দেশের একটি নাগরিকের ও কাম্য নয়। দেশের আপামর জনতার প্রান সংহারের প্রশ্ন যেখানে সেখানে কোন ইস্যু নয় কোন লাভ লোকসান বা রাজনৈতিক মতাদর্শে দোহাই দেওয়ার সুযোগ নেই রুখে দাড়াতে হবে সবাই মিলে একসাথে । দেশ আমার আপনার সবার । দেশের এই করুন সংকটে এক হতে হবে আমার আপনার সবাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৪৫
৩৬টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×