somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউ: ওয়ান টেক ওনলি

২১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সিনেমাটি থাইল্যান্ডের, থাই ভাষার, বেশ ক'বছর আগে দেখেছিলাম। উমম... যতদূর মনে পড়ে ২০০৬-২০০৮'র ভিতর। তারপরেও হতে পারে, ঠিক মনে নেই। ছবিতে যে ডিভিডি'র পোস্টার দেখছেন, ওটাই। ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ঝা চকচকে প্রিন্ট। মুভিটা কেমন লেগেছিল সেটা পরে বলছি। বেশ লম্বা একটা সময় মাঝখানে কেটে গেছে। এতোদিনে এর গল্পটা পরিষ্কার মনে থাকলেও নাম আর কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না, শুধু ওয়ান শব্দটাই মনে ছিল। একবার ভাবি এটা তো আরেকবার ওটা। যা হোক ওয়ান'র সূত্র ধরে ইন্টারনেট সার্চ দিয়ে দেখলাম মুভিটা খুঁজে পাই কিনা! কিছুতেই পাচ্ছিলাম না। তারপর একটি বুদ্ধি মাথায় এলো, ওয়ান'র সাথে বেস্ট থাই মুভি এভার' যুক্ত করে সার্চ দিতেই মুভিটি পেয়ে গেলাম। IMDB ও আরও বেশ কিছু সাইটে সিনেমার নাম, ‘Som and Bank: Bangkok for Sale’ দেখাচ্ছে। উইকিতে দেখলাম ‘One take only’! ব্যাপারটা কিছুটা অদ্ভুত লাগল। পরে আরও দুয়েকটি সাইট দেখে নিশ্চিত হলাম, আসলেই তাই, সিনেমাটি ইংরেজিতে দুটো নামই ব্যবহার হয়ে আসছে!
শুরুতেই বলেছি সিনেমার নামটা ঠিক মনে না থাকলেও কাহিনী পরিষ্কার মনে আছে। এটা ভোলার নয়। সিনেমার শুরুটা হয় নায়িকা সোমকে দিয়ে। ও একজন খুব অল্প বয়সী পতিতা। নিজের পড়াশোনা ও অন্যান্য খরচ যোগাতে ওকে এসব করতে হয়। নায়ক ব্যাঙ্ক ড্রাগ এডিক্ট, পাশাপাশি ড্রাগের ছোটখাটো চোরা কারবারি ও মাদক ব্যবসায়ী। একে ওকে ড্রাগ সরবরাহ করে। ওকেও এসব টাকার জন্য করতে হয়। বলাই বাহুল্য দুজনেই অত্যন্ত গরীব এবং ভাল মানুষ, নিতান্তই একটু স্বচ্ছন্দ জীবনযাপনের জন্য ওরা এসব করে। দুজনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবে এক পর্যায়ে ব্যাঙ্কের প্ররোচনায় সোমও ড্রাগ'র কারবারে জড়িয়ে পড়ে। এসব ছোটখাটো কাজ করে দুজনের জীবন বেশ আরাম আয়েশে কাটতে লাগলো। তারপর এক পর্যায়ে বড় অর্থের লোভে বড় একটা মাদক পাচারের কাজ হাতে নেয় ব্যাঙ্ক, সোমকেও সাথে নেয়। পরিকল্পনা ছিল, এটা করেই ওরা এসব ছেড়ে দিয়ে সংসার পাতবে। এটাই শেষবার। কিন্তু এতে আছে বিরাট ঝুঁকি। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ এবার আর ছোটখাটো মাদকসেবী নয়, সরাসরি স্থানীয় মাফিয়ার সাথে ডিল করতে যাচ্ছে ওরা! সোম, ব্যাঙ্ক কী শেষ পর্যন্ত পারবে সফল হতে? আর সেটা জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে সিনেমাটি। আমি আর বলবো না।
আমি থাই ভাষায় দেখেছিলাম, সাবটাইটেল ছিল কিনা তাও ঠিক মনে করতে পারছি না। অসম্ভব সুন্দর একটা মুভি! সর্বকালের শ্রেষ্ঠ থাই মুভির যতোগুলো তালিকা দেখলাম, সবখানেই আছে। ছবিটা যদি নির্বাকও হতো, তাও আমি ততটাই উপভোগ করতাম যতোটা করেছি স্ববাকে। এসব চলচিত্র বোঝার জন্য ভাষার কোনও প্রয়োজনই হয় না। আমি সেসময় দু'তিনবার মুভিটি দেখেছিলাম, প্রতিবারই একইরকম মুগ্ধ হয়েছিলাম। আরেকটা কথা, সিনেমাটা আপনাকে খুব আবেগ প্রবণ করে তুলতে পারে, চোখের পানি ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই দেখার আগে প্রস্তুতি নেয়া ভাল, মানে চোখ মোছার জন্য টিস্যু পেপার, নরম তোয়ালে সাথে রাখবেন। এটা একটা খুব করুণ রসে সিক্ত একটি সিনেমা, কষ্টের সিনেমা।
এরকম সিনেমা হাজার সিনেমার ভিড়ে একটা দুটো পাওয়া যেতে পারে। নিঃসন্দেহে এটা একটা মাস্টারপিস। ব্যক্তিগতভাবে আমার চিরদিনের ভাল লাগার একটি মুভি। বারবার দেখলেও বিন্দু মাত্র বিরক্তি আসবে না। সকলকেই সিনেমাটা দেখতে বলব। আশা করি দেখার পর সবাই আমার মতোই অনুভব করবেন যে, পৃথিবীর অন্যতম ভালো একটি মুভি আমরা দেখলাম। এসব সিনেমা মানুষকে উদার করে তোলে। এ থেকে অনেক কিছু বোঝার আছে, শেখার আছে। সিনেমার লিংক আমার কাছে নেই। আশা করি সার্চ করলে পেয়ে যাবেন।

(রিপোস্ট)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×